অনুভবে ভালোবাসি

অনুভবে ভালোবাসি

আপনার ঠিক কতগুলো গার্লফ্রেন্ড? জানতে পারি?’ মেয়েটার এমন কথায় আমি বেশ হকচকিয়ে গেলাম। হকচকিয়ে যাওয়ারই কথা। কতগুলো! কথারা দ্বারা কি বোঝালো? আমার অনেক গার্লফ্রেন্ড? বাপরে বাপ! আমি বেশ অবাক হয়ে বললাম…

–কি মনে করে এমন প্রশ্ন করলেন?
-হুট করেই করলাম, মনে করার কি আছে।

–অবশ্যই আছে। আমার গার্লফ্রেন্ড আছে নাকি নাই সেটা জিজ্ঞেস করলে মানা যেত বাট কতগুলো আছে প্রশ্ন টা কেমন হলোনা?

-কেমন হলো শুনি?
–অদ্ভুত রকমের, এমন প্রশ্নের উত্তর প্লে-বয়রা দিতে পারবে।
-কেন? আপনি কেন পারবেন না?

–আমি কেন পারবনা? কারণ, প্রথমতো আমার গার্লফ্রেন্ড নাই, আর দ্বিতীয় প্লে-বয়রা অনেকগুলো মেয়ের সাথে প্রেম করে, ওরা বলতে পারবে ওদের কত গুলো গার্লফ্রেন্ড।

-চাপাও মারেন দেখছি।

–কই চাপা মারলাম?
-এইযে বললেন গার্লফ্রেন্ড নাই। কতবড় মিথ্যে কথারে বাব্বা।
–এইযে শুনেন, আমি মোটেও মিথ্যে কথা বলিনি, যা সত্যি তাই বলেছি।
-হ জানি, কতবড় সত্যবাদী আপনি।
–সত্যি বিশ্বাস করছেন না?

-উহু বিশ্বাস করছিনা, আর করবনা। তবে!
–তবে কি?
-বাই এনি চান্স যদি প্রমাণ করতে পারেন আপনার গার্লফ্রেন্ড নাই তাহলে বিশ্বাস করব।
–কি বলে! এটা কি গণিত বইয়ের অংক নাকি যে প্রমাণ করব….?
-অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে, তা নাহলে ভাববো আপনার অনেকগুলো গার্লফ্রেন্ড।
–আপনি যাই ভাবুন, আমিতো জানি আমি সিঙ্গেল।
-ঐ ঐ এত বেশি না বুঝে এখনই প্রমাণ করুন।
–উহু এটা কিভাবে প্রমাণ করব?
-প্রমাণ করতে হবে, নাহলে ঝাড়ি মারব একদম।
–ঝারি?

-কেন ঝাড়িতে কাজ হবেনা? নাকি ঝাড়ু পেটা করব?
–হায় আল্লাহ কোন জল্লাদির পাল্লায় পরলাম।
-ঐ আমি মোটেও জল্লাদি না, আমি অনেক ভালো, লক্ষ্মী একটা মেয়ে।
–সেটাতো বুঝতেই পারছি কত লক্ষ্মী, মনেতো হয় ঢংগি।
-এহ, ঢংগি বলবেননা একদম। তাহলে কিন্তু আপনার গলায় ঝুলে পরব হিহি…!
–ঠিক বুঝলামনা।
-বুঝতে হবেনা গাধা, আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দিন।
–গাধা বললেন কেন? আমি গাধা না।
-আচ্ছা বাবা আপনি অনেক ভালো মানুষ হয়ছে এবার।

–হুম হয়েছে গাধী, তবে প্রমাণ টমান করতে পারবনা। সত্য এটাই যে আমার গার্লফ্রেন্ড নাই। তবে আপনার কি বয়ফ্রেন্ড আছে?

-হ হ হ আছে। থাকলে কি আর আপনার সাথে কথা বলতাম?
–তা না, থাকতেও পারে।
-উহু না নেই। আমি জন্মগত সিঙ্গেল।
–হাহা আপনি বেশ মজার তো।

-মজার না ছাই, মজারতো আপনি কত সুন্দর সুন্দর রম্য লেখেন। মাথায় খালি কুটনামি বুদ্ধি, অথচ কথা বলছেন হাঁদারামের মতন। ভং ধরেন তাইনা?

–উহু ভং ধরিনা, ওটা জাস্ট লেখার চেষ্টা করি।
-আচ্ছা বাদ দিন, একটা কথা বলি?
–হু বলেন?
-আপনি এমন কেন? লাস্ট কবে কথা হয়েছে আমাদের?
–১৩ তারিখে, আর আমি কেমন? আপনিও তো বলছেন আর যেন কথা না বলি।
-হু হা এমন করে কথা বললে মেজাজ খারাপ হয়। আপনি বোঝেননা আমায়, একদম বোঝেননা।
–সরি, আসলে!

-দয়া দেখাতে আসবেননা। আমি নাহয় রাগ করে বলছি কথা বলবেননা তাই বলে সত্যিই মেসেজ দিবেননা? একটু রাগ ভাঙ্গালে কি হয়? আমি রোজ অপেক্ষা করি জানেন, এত্তগুলা মেসেজ লিখি পরক্ষণেই ব্যাকস্পেস দিয়ে সব মুছে দেই।

–কি হয়েছে তোমার?
-যেদিন আপনার অগোছালো জীবনের প্রতিচ্ছবি দেখেছিলাম সেদিনই আমার হয়েছিলো সুক্ষ্ম অনুভূতি, যেখানে শুধু আপনি ছিলেন, আছেন এখনো।

–আমি কারো মনের মতন হতে পারিনা।
-আমি ঠিক করে নিব, অনুমতি চাই।
–আর?
-ঠিক নিয়ম করে দু’বেলা একমুঠো ভালোবাসা।
–তাতে পেট ভরবে?
-আচ্ছা তিনবেলা তিনমুঠো করে নিব।
–এতটুকুতেই যথেষ্ট?
-মানুষটাকে চাই, শুধু চাইনা সেও আমাকে চাক এটাও চাই।
–আর?

-শুনেননা, আমি অনেক ছিচ কাঁদুনে অল্পতেই কেঁদে দেই। প্লিজ আমাকে ফেরাবেননা। অভিমান, রাগ, জেদে আমার কাছে সব হারমানে আর এইসবগুলো আমি আপনার মাঝে সপে দিলাম আমায় ফিরিয়ে দিয়েননা লেখক।

–আমি খুব করে চাই তোমায়, তোমার পাগলামি আব্দারগুলো….! রোজ, উহু, প্রতিটি মুহূর্তে ভালোবাসা দিব। কোথায় জানো? কপালে, চোখে, দুই ওষ্ঠোদ্বয়ের মাঝে।

-তবে আমায় ডাকেন একটু, প্লিজ।
–কবেইতো ঘর বানিয়ে রেখেছি।
-ঐ কান্না পাচ্ছে।
–কাঁদো আমার কি হা হা হা…!
-বিলাই, ইন্দুর, চামচিকা কথা বলবানা আমার সাথে।
–হাজার বার বলব, লক্ষবার বলব, কোটিবার বলব সমস্যা?
-না বললে খুন করব একদম।
–তারপর?
-উহু, ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি।
–ভালোবাসি।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত