–“হ্যালো,আশিক!”
–“উম!হুম, কে ?”
–“আশিক, আমি ছোয়া”
নামটা শুনে সারপ্রাইজ আর শকট একসাথে হলাম। কারন আপু কোন দিন আমাকে ফেসবুকেও নক দেয়নি, আর আজ রাত ৩ টায় ফোন দিয়েছে।
–“জ্বী আপু এত রাতে কি মনে করে?”
–“আশিক, তোমার ভাই আমাকে ঠকিয়েছে ”
কথাটি আপু বলার সময় খেয়াল করলাম তার গলা কাপছে, হয়তো কাঁদছে। আর “আমার ভাই” কথাটি শুনে মোটেও অবাক হয়নি।আমার নিজের মায়ের পেটের ভাই ছাড়াও কিছু অন্য মায়ের পেটের আপন ভাইও আছে। তাদের ভিতর একজন হল টুটুল ভাই।টুটুল ভাই এখন পেশাগতভাবে ক্রিকেটার।ব্যাটিং, বলিং এ সমান পারদর্শী।অলরাউন্ডার যাকে বলে।ছোয়া আপু হল টুটুল ভাইয়ের জিএফ।
.
মাঝরাতে কেউ যখন কাউকে এভাবে ঘুম ভাঙিয়ে কাপা কাপা গলায় এই কথা বলে তার মানে ব্যাপার মারাত্মক সিরিয়াস পর্যায়ের আর তাছাড়া বর্তমান যুগের ছেলে মেয়েরা সাধারণত “ঠকানো” কথাটা ব্যাবহার করেনা,তারা বলে “চিট করেছে”। সবার কাছে ঠকানো আর চিট করার পার্থক্য না থাকলেও আমার কাছে আছে।এর মানে উনি ভয়াবহ কোন সিদ্ধান্ত নিয়েও ফেলেছে। তাছাড়া চিটের কথা না বলে ঠকিয়েছে বলাতে উনার ভিতর এখনো টুটুল ভাইয়ের প্রতি ভালবাসা দৃশ্যমান। আর এখন যদি ওনাকে এভাবে কথা চালিয়ে যেতে হয় তাহলে কিছুক্ষণ এর ভিতরেই উনি হু হু করে কেঁদে ফেলবে। ওনাকে স্বাভাবিক হওয়ার সময় দেয়া দরকার।
.
–“আপু আমি একটু চোখে মুখে পানি দিয়ে ফ্রেস হয়ে আসি,আপনি ঠিক পাচ মিনিট পর ফোন দেন,আমার ফোনে মিসকল দেয়ারো ব্যালেন্স নাই।”
–“আচ্ছা আশিক তুমি যাও, ফ্রেস হয়ে আসো।”
মুখে পানি দেয়ার পরেই মনে হল যে টুটুল ভাই প্রিমিয়ার লিগে এবার ভাল দল পেয়েছে।তাছাড়া মোটা অংকের চুক্তিও হয়েছে। প্রিমিয়ার লিগ শেষ হলেই বিয়ে করবে বলে শুনেছিলাম কিন্তু এখন হঠাৎ তিন বছরের সম্পর্ক নষ্ট করার কারন কি হতে পারে!তাছাড়া এখন যদি আপুকে সরাসরি কারন জিজ্ঞেস করি তাহলে আবার কান্নাকাটি শুরু করতে পারে তাই কৌশল নিতে হবে। আপুকে অবাক করে, আপুর উপর নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে।
.
–“হ্যালো আশিক, ফ্রেশ হয়েছো?”
–“জ্বী আপু, আচ্চা হেডফোনে কি গান শুনলেন এইটুকু সময়?”
–“অদ্ভুত তো! তুমি কিভাবে বুঝলে যে আমি হেডফোনে গান শুনছিলাম? ”
হেসে উত্তর দিলাম,
–“আপু আপনার কি মনে আছে আপনিই কয়েক মাস আগে বলেছিলেন যে মানুষকে অবাক করার অসাধারণ গুন আছে আমার”
–“হুম মনে আছে! বিএল কলেজের মাঠে বসে বলেছিলাম তাই না?”
–“জ্বী আপু,তারপর তো আর কোন খোঁজখবরও নিলেন না,কখন অবাক করে ফেলি এই ভয়ে নাকি?”
–“আরেহ নাহ, তা না। আসলে অনার্সের পরিক্ষা তারপর টুটুলের প্যারা তো আছেই। তাই খোঁজখবর নেয়া হয়ে উঠেনি।”
যারা প্রেম করে তাদের আমি কখনোই বিশ্বাস করি না।তাই উনার এই কথাটাও বিশ্বাস করিনি। উনার যে আমার কথা ওইদিনের পর মনেই ছিল না এটাও বুঝতে পেরেছি।উনাকে বলে এখন বিব্রত করা যাবে না তাহলে হিতেবিপরীত হতে পারে।
.
–“তা আপু কি যেন বলছিলেন যে টুটুল ভাই নাকি ঠকিয়েছে?”
–“হুম”
–“কিভাবে বুঝলেন?”
–“ও আমার সাথে ব্রেকাপ করেছে!”
–“বিষয়টার তো কিছুই আমি জানিনা,টুটুল ভাই তো কিছুই বলে নি আমাকে”
–“আমি বলছি সব শোনো!”
পুরো ঘটনা জানার টোপটা কাজে লাগলো।দুপক্ষের যখন বিবাদ বাদে তখন প্রথমে যে পক্ষের মুখ থেকে কাহিনী শোনা হয়,রায়টা যে তার দিকেই যায় এটা ছেলেরা না জানুক, মেয়েরা ঠিকি জানে।
.
উনার কাহিনীটা টানা ২০ মিনিট ধরে শুনলাম।টুটুল ভাই হয়তো আরেকটা রিলেশনে জড়িয়েছে তবে এটা নিছক সন্দেহের উপরে বলেছে।তাছাড়া নাকি শেষ ছয়মাস উনি কেমন বদলেও গিয়েছে।ঠিক মত কথাও বলতো না,অল্পতেই খুব রাগ দেখাতো। শেষমেশ নাকি বলেছিলো,
–“অনেক তো দেখলাম ছোঁয়া, এভাবে আর সম্ভব না,আমাকে ভুলে যাও আর বাবামার পছন্দ মত বিয়ে করে সংসারী হও”।
এই বলে নাকি একদম হাওয়া হয়ে গিয়েছে।ফোন,ফেসবুক সব নাকি অফ।
কথা গুলি শেষ করতে উনি কতবার যে নাক টান দিয়েছে তার ঠিক নেই।এবার আসলেই খারাপ লাগলো কারন ঘটনা বলার সময় উনি কাঁদছিল কিন্তু কথা বলা একবারো থামাইনি কিন্তু কাহিনী শেষ হয়ার পর এখন খালি ওনার কান্নার শব্দই আসছে। আমি বললাম,
–“কয়েক মিনিট পর কথা বলি?”
আপু কাঁদতে কাঁদতেই বললো,
–“আচ্ছা আমিই কয়েক মিনিট পর কল দিচ্ছি”।
বলেই কল কেটে দিলো। আমি ভাবতে লাগলাম যে আপু হয়তো সুইসাইড করার ইচ্ছায় আছে।কেউ সুইসাইড করতে চাইলে তাকে আল্লাহ ব্যতীত কেউ সেদিক থেকে ফেরাতে পারে না তবে এই সুইসাইড এর ইচ্ছাকে অন্য দিকে কনভার্ট করা যাই।এখন আমার সেটাই করা উচিত।
.
–“হ্যালো আশিক,সরি আসলে খুবি খারাপ লাগে যখন ওর কথা ভাবি,আর এই কদিন আমি ওকে ছাড়া এক মুহুর্তও ভাবতে পারছিনা।”
–“আচ্ছা আপু আপনি কি জানেন সম্পর্ক সৃষ্টি হওয়ার উদ্দেশ্য কি?”
আপু নাক টান দিয়ে বললো,
–“না, তুমি বলো”
–“আপু সম্পর্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যই হল ভাঙার মানে সম্পর্ক সৃষ্টিই হয় ভাঙার জন্যে।তার মানে দাড়াচ্ছে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়াটা সূর্য পূর্ব দিকে উঠার মতই স্বাভাবিক তাইনা!?
–“তাই নাকি জানতাম না তো।”
–“জানতেন কিন্তু কখনো ওভাবে ভাবেননি, আচ্ছা থাক সে কথা, আপু বলেন তো এখন আপনার সম্পর্ক ভাঙার পর আপনি কি করতে চাচ্ছেন? ”
–“না মানে! আসলে!
–“আপু আমি বলি আপনি কি করতে চাচ্ছেন? ”
–“হুম বলো”
–“অনেক গুলি ঘুমের ওষুধ খেতে চাচ্ছেন তাইনা? তা কতটা আছে এখন আপনার ষ্টকে?”
ছোঁয়া আপু একরকমের চিৎকার করে বললো,
–“উফ আশিক! তুমি কিভাবে বুঝলে আমি এটা করতে চাচ্ছি?”
–“সেটা বড় কথা না,বড় কথা হল আপনি যেই কাজটা করতে চাচ্ছেন আপনি কিন্তু এতেও ঠিক মত প্রস্তুতও না!”
–“মানে! কি বলতে চাও! আমার কাছে ৬৩ টা ঘুমের ওষুধ আছে!এগুলা ৬টা দোকান থেকে নিয়েছি।আমি চাইলেই সুইসাইডটা এখুনি করতে পারি!”
–“না পারেন না! কারন আপনি প্রস্তুত না!”
–“প্রস্তুত না মানে!সুইসাইড এর প্রস্তুতি লাগে নাকি?”
–“হ্যা অবশ্যই আছে,আচ্ছা আপনি যে সুইসাইড করবেন তা খালি পেটেই ওষুধ গুলি খাবেন নাকি কিছু খেয়ে তারপর সব গুলা ওষুধ খাবেন? ”
আপু ভ্যাবাচেকা খেয়ে বললো,
–“উম!!কিছু খেয়ে তারপর খাবো”
আমিও আপুকে ভ্যাবাচেকা খাওয়াতে চাচ্ছিলাম। আমার কাজ হয়ে গিয়েছে ৬০ ভাগ।আপুকে পালটা প্রশ্ন করলাম,
–“কি খাবেন?”
–“আপু বললো কি খাবো এটা জরুরী কিছু না,কিছু একটা খেলেই হবে”
–“না আপু না,কিছু একটা খেলেই হবে না,একটু ভেবে দেখেন এটাই কিন্তু আপনার জীবনের শেষ খাওয়া তাছাড়া যখন আপনার লাশ পোস্টমর্টেম করা হবে তখন কিন্তু ডাক্তাররা দেখবে আপনার পেটে কি কি আছে। এখন আপনি যদি সুইসাইড এর আগে পান্তাভাত খেয়ে সুইসাইড করেন তখন ডাক্তাররাও কিন্তু পেট কেটে পান্তাভাত পাবে।ব্যাপারটা কেমন না!এটা নিয়ে কি ভেবেছেন?”
আপু আবার কাঁদছে।এবার তার ভিতরে তাকে নিয়েই সন্দেহ ঢুকিয়ে দিতে হবে।আপু কান্নাজড়িত কন্ঠে বললো,
–“না আশিক আমি কিছুই ভাবিনি”
–“আপু সত্য কথা হল আপনি সুইসাইড করতেই চান না,তাই না?”
–“চাই না তা না,তবে কোন একটা কারন দরকার বেচে থাকার”
–“আচ্ছা আপু আপনাকে একটা সহজ প্রশ্ন করি?”
–“হুম করো”
–“আচ্ছা আপনি যদি মারা যান তাহলে আপনার জন্যে কতজন চোখের পানি ফেলবে? ”
–“তা তো ভাবিনি তবে অনেকজনি পানি ফেলবে এটা জানি”
–“মানে যারা আপনার কাছের তারা পানি ফেলবে তাইতো?”
–“হুম ”
–“আপু আপনি কি জানেন একজন কাছের মানুষ নিজ থেকে দূরে সরে যাওয়াটা আপনার ব্যর্থতা তবে একসাথে সব কাছের মানুষকে দূরে সরিয়ে দেয়াটা কিন্তু গুরুতর অপরাধ।”
–“আশিক আমি কি করবো এখন?”
–“আপু প্রশ্নটা আমার,আপনার না।এখন কি ভেবেছেন? কি করবেন? আপনি চাইলে আমি টুটুল ভাইয়ের সাথে কথা বলতে পারি তবে যতদূর জানি ভাই এখন যশোরে আর আমার ফোনে আজ দুসপ্তাহ টাকা নেই”।
–“নাহ ওর সাথে আর কথা বলতেই চাইনা আমি! অন্য কোন উপায় বলো!”
–“আপু আপনি আপনার ভালবাসার বিচারটা নিজেই করে ফেলেছেন, এটা কিন্তু খুবি বাজে ব্যাপার।”
–“কিভাবে বাজে ব্যাপার?আমি যদি বিচার করতে পারি তবে কেন করবো না”
–“আপু ভালবাসার কখনই বিচার করতে হয়না কারন ভালবাসা কখনই খারাপ হয় না,খারাপ হয় মানুষ”।
আপু হু হু করে কেঁদে দিলো। বললো,
–“নাহ আশিক তুমি যেটাই বলো আমি টুটুলের সাথে আর সম্পর্ক রাখবোই না,ও আমাকে এই কদিন কত কষ্ট দিয়েছে তুমি জানো না,আশিক আমি রাখছি ফোন,এখন কথা বলা পসিবল না”
.
তারপরই টুট টুট শব্দ হয়ে ফোনটা কেটে গেলো। পরের কান্নাটি যে অভিমানের তা আমার কাছে পরিষ্কার। তবে আমার মাথায় এটা ঘুরপাক খাচ্ছে যে টুটুল ভাই এমন কাজ কেন করবে। তাছাড়া ভাইতো আপুকে অনেক ভালবাসে।কারন যে মানুষ তার ক্রিকেট প্রাকটিসে হেটে গিয়ে সেই টাকা দিয়ে তার জিএফকে শাড়ি কিনে দেয় সে আর যাই হোক ভালবাসেনা এটা সম্ভব না।এসব ভাবতে ভাবতেই ম্যাসেজের হাতুড়ি পিটানো শব্দটা বেজে উঠলো দুবার।ম্যাসেজ চেক না করেই বুঝতে পারলাম বাংলালিংকে আপু তার বিকাশ থেকে লোড দিয়ে দিয়েছে। ম্যাসেজ চেক করে দেখলাম ১০০ টাকা দিয়েছে।এত না দিলেও পারত।বড় লোকের মেয়েদের সাহায্য করে এজন্যে মজা আছে। এরা ভাল রেস্টুরেন্ট,ভাল খাবার ছাড়া অর্ডারো দেয়না।এসব পৈশাচিক কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম।
.
মেগা বিরিয়ানি হাউজে বসে আছি।আমার সামনের সিটেই টুটুল ভাই পাঞ্জাবি পরে বসা। ভাইকে বললাম,
–“ভাই অনেক দিন কথা হয়না তাই দেখা করতে চেয়েছিলাম, প্রাকটিস বাদ দিয়ে মেগাতে আসতে বলিনি।”
–“আরে কত দিন পর দেখা তাছাড়া প্রিমিয়ারে দল পাওয়ার ট্রিট টাও তো দেয়া বাকি তাই এক ঢিলে দুই কাক আরকি!”
বলেই হাসতে লাগলো।কিন্তু হাসিটার ভিতরে পূর্ণতা নাই মানে উনি অপ্রাপ্তির মধ্যেই আছে।
আমি মৃদু হেসে বললাম,
–“তার মানে তোমার ভিতরে ভালই অহংকার ঢুকেছে তাই তো”!
–“অহংকার ঢুকবে কেন?নাহ মোটেও না”
–“ভাই এত কনফিডেন্টলি অহংকার ঢুকেনি বলাটাও কিন্তু অহংকার এর মধ্যেই পড়ে !”
–“কি হয়েছেরে আশিক!এভাবে কথা বলছিস কেন?”
–“আসলে ভাই তোমার সাথে আমি আমার সব সম্পর্ক আজকেই শেষ করতে চাই তাই কারন খুজছিলাম, এখন পেয়ে গেলাম,কারনটা হল তোমার অহংকার! ”
–“তুই আমার সাথে উদ্ভট যুক্তি দিয়ে সম্পর্ক শেষ করবি কেন”?
–“ভাই আমি তো তাও উদ্ভট একটা কারন দেখিয়ে সম্পর্ক শেষ করছি,কিন্তু তুমি তো কোন কারন না দেখিয়েও সম্পর্ক শেষ করো!”
ভাই দেখলাম মাথা নিচু করে আছে।বুঝলাম খোঁচাটা কাজে দিয়েছে।আমি আরো বলতে লাগলাম,
–“ভাই জানো ছোয়া আপু অনেক গুলো ঘুমের মেডিসিন কিনেছে খাবে বলে,উনাকে তোমার ভাল নাও লাগতে পারে কিন্তু সেটা তো বলে দিবা উনাকে, কিন্তু একবারে কিছু না বলে এভাবে সম্পর্ক ভাঙার তো কোন মানে হয়না তাইনা?”
.
এবার দেখলাম ভাইয়ের চোখ থেকে কয়েক ফোটা পানি তার পাঞ্জাবি তে পড়লো।এ ঘটনার জন্যে আমি একেবারেই অপ্রস্তুত তাছাড়া রীতিমত আমি ঘটনাতে নিজেই অবাক হয়ে গিয়েছি। এবার ভাই আমার দিকে তাকালো এবং বলতে লাগলো,
–“আশিক ওকে ভাল না লাগলে ওকে বলে দিতে পারতাম এই কথাটার উত্তর আমার দিকে তাকালেই তুই পেয়ে যাবি। আর তুই আর ছোঁয়া অনেক কিছুই জানিস না!ওর সাথে এমন ব্যবহার আমি এমনিই করিনি। যথেষ্ট কারন ছিল করার। তুই কথা দে কাউকে বলবি না”
–“হ্যা ভাই কথা দিলাম বলবো না কাউকে”
–“ছোঁয়ার বাবা আমাকে ফোন করে যাচ্ছতাই বলেছে। আমি যদি ওর সাথে কথা বলি তাহলে উনি আমাকে পুলিশে দিবে বলেছে,তখন আমার সাথে উনার কথা কাটাকাটি বাধে। তবে শেষমেশ বলেছে যে আমি যদি ছোঁয়ার সাথে কথা বলি তাহলে উনি ছোঁয়াকে বিশ দিয়ে মেরে ফেলবে।”
ভাই প্রায় একদমেই কথা গুলি বলে চললো।কথা বলার ফাকে কখন যে ছোঁয়া আপু ভাইয়ের পিছে দাঁড়িয়ে মুখে হাত চেপে চোখের পানি ফেলছিল তা টুটুল ভাই খেয়ালি করেনি।ব্যাপারটা আমার আর আপুর পূর্বপরিকল্পিত ছিল।ভাইয়ের বলা শেষ হলে আমিই ভাইকে বললাম,
–“ভাই আমি কিন্তু কাউকে কিছু বলিনি,তবে তুমিই কিন্তু সব বলে দিলে,পিছনে দেখোতো উনি কে?”
ভাই পিছন ঘুরেই হুট করে দাঁড়িয়ে গেল।সাথে সাথে আপু ভাইকে জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা রেখে হু হু করে কাঁদতে লাগলো। তাদের এখন বিরক্ত করা একদম উচিত হবে না আমার তবুও স্বার্থপরের মত আপুকে পিছন থেকে ডাক দিলাম,
–“আপু ৬৩টা ওষুধ সাথে করে আনতে বলেছিলাম,এনেছেন?”
–“হ্যা এনেছি কিন্তু কেন আনতে বললে?”
–“আপনার যেহেতু কাজে লাগবে না তাই আমাকে দিয়ে দিন”
ছোঁয়া আপু আর টুটুল ভাই অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালো। আপু বললো,
–“তুমি কি করবে ওষুধ দিয়ে?”
–“আসলে কদিন ধরে আমার মোটেও ঘুম হচ্ছেনা তাই ভাবলাম অন্তত অর্ধেক করে প্রতিদিন একবার করে খেলে ১২৬ দিন অন্তত ভাল ঘুম হবে”
আপু দুইহাত দিয়ে চোখ মুছে ব্যাগ দিয়ে ওষুধ গুলি বের করে আমাকে দিয়ে দিলো। আমি তারপর তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসার পথে হাটতে থাকলাম আর ডাস্টবিন খুঁজতে লাগলাম।
আর যাই হোক মরনপিল গুলিকে তো আর বাসায় নেয়া যায়না।
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা