হঠাৎ পাওয়া

হঠাৎ পাওয়া

গুটিশুটি হয়ে বসে ওড়নাটা ঠিক করছে রিয়া।শুভ্র কাছে যেতেই রিয়া ভয়ে ভয়ে দৃষ্টিতে চোখ বন্ধ করে নিলো।আর হাত মুঠো করে বললো-

-আমি কোথায় আর আপনি কে?

-আমি শুভ্র।তোমায় এক নির্জন জায়গায় নিয়ে এসেছি।

-কেন?কী দোষ আমার?

-তোমায় আমার ভালো লেগেছে।ইউ নো হোয়াট ইউ আর ভেরি বিউডিফুল।

-প্লীজ ভাইয়া আমাকে যেতে দিন।

এবার শুভ্র মেয়েটার কাছে গিয়ে বসলো।মেয়েটা আবারও ভয়ে ভয়ে কান্নাভেজা স্বরে বললো- ভাইয়া আমায় ছেড়ে দিন।আমি তো আপনার বোনের মতো।প্লীজ ভাইয়া। শুভ্র হাসতে হাসতে রিয়াকে বললো- জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে যখন এই অন্ধকার ঘরে আবিষ্কার করলে তখন অজান্তেই তোমার মনে একটা ভয় জন্মেছিলো।তুমি কিছু মুহূর্তেই বুঝেছিলে কিছু খারাপ হবে।বোঝারই কথা কারণ এগুলো কমন তাই না?আচ্ছা বলো তো তুমি বুঝেছিলে নাকি?

-হু(বিস্ময়কর ভাবে)

তুমি গুটিশুটি হলে।যখন দেখলে ওড়নাটা গলায় জড়িয়ে আছে তখন বুকে টেনে নিলে।আমি কাছে আসতেই তুমি ভয় পেয়ে গেলে।এক পর্যায় বেঁচে যাওয়ার চেষ্টায় আমাকে ভাই উপাধি দিলে। আমি কিছু প্রশ্ন করি তুমি উত্তর দেও তো।

-হুম(বিস্ময়কর ভাবে)

যখন ওই আলোর পরিবেশে থাকো তখন বুকে কেন ওড়না দেও না?গলায় জড়িয়ে থাকে! তখন ভয় লাগে না? রিয়া প্রশ্নগুলো শুনে কোনো কথা বলছে না।সে নিশ্চুপ। ভাই উপাধি দিলে,বাহ বেশ ভালো।যখন রাস্তায় উচ্ছৃঙ্খলভাবে চলাফেরা করো তখন মনে হয় না কেউ তোমার ভাইয়ের মতো! কেউ তোমার বাবা,চাচা,নানা,দাদা এদের মতো।? ওদের কি বন্ধু বলবে? আচ্ছা বন্ধু হলে কি তাদের এইভাবে তোমার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দেখাতে হবে? তোমার এই শরীর কার জন্য?তুমি জনগণের সম্পত্তি?(রাগান্বিত স্বরে) এবারও রিয়া চুপ। কী হলো এভাবে চুপ করে আছো কেন?বলো এই শরীর কার জন্য?

-হাসবেন্ড(রিয়া)

হ্যাঁ হাসবেন্ড।তো হাসবেন্ডের হক তুমি অন্য কাউকে কেন দিচ্ছো?তুমি যদি নিজেকে মূল্যবান মনে করো তো পর্দায় থাকো।শুধু শারীরিক কিছুই হাসবেন্ডের হক না।তোমার এই চুল,তোমার এই নরম ঠোঁট,তোমার এই মায়াবি চোখ,আর যা আছে সব তার দেখা জায়েজ।নরমাল কিছু বাদে যেমন হাত,মুখ এগুলো বাদে তোমার বাবা,শ্বশুর,ভাই,এদের মতো মানুষরা আর কিছুই দেখতে পারবে না।আর তুমি ফ্রিতে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছো তাই না? তুমি তো মূল্যবান না তুমি সম্পত্তি জনগণের।খারাপ লাগলো শুনতে?অথচ যখন কেউ বলে আমি ক্রাশ খেয়েছি তোমার প্রতি তখন খুব ভালো লাগে তাই না? শোনো মেয়ে,আজ এই অন্ধকারে তোমায় নিয়ে এসেছি তোমায় ধর্ষণ করার জন্য না।এটা একটা বাস্তবিক শিক্ষা।শিক্ষা অর্জন করো।আর তোমার সঙ্গে যেসব মর্ডান মেয়েরা আছে তাদেরও ভালো করার চেষ্টা করো।

-ভাইয়া পর্দার কথা বলেন?পর্দায় থেকে কি মেয়েরা ধর্ষিতা হয় না?

-হয় কিন্তু খুব কম।আমি প্রকৃত পর্দার কথাই বলছি তারাও ধর্ষণ হয়।কিন্তু সেখানে তাদের দোষ নেই।আখিরাতে তাদের সম্মাননা দেওয়া হবে।আর তোমরা যারা নিজেই এরকম করে আকৃষ্ট করো তোমাদের দোষই বেশি থাকবে।

কথাগুলো শুনে রিয়া এবারও চুপ। শুভ্র মেয়েটার পায়ের সেঁকলটা খুলে দিলো।মেয়েটা শুভ্রের দিকে মায়ার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আজ যা তার সঙ্গে ঘটলো তা আনএক্সপেক্টেড।মেয়েটা দাঁড়ালো শুভ্রও দাঁড়ালো মেয়েটা শুভ্রকে জড়িয়ে ধরলো আচমকা!

-তুমি কী করছো?ছাড়ো! আমি বেগানা পুরুষ।

-ভুল করে ফেলেছি।এই ভুল সুধরানোর উপায় বিয়ে। এবার শুভ্র রাগান্বিত হয়ে মেয়েটাকে বললো

-তোমার বি এফ আছে। ও কষ্ট পাবে।ওকে বিয়ে করো এটাই ঠিক।

-আপনি কীভাবে জানলেন?

-আমার বাড়ির পাশের সবচেয়ে উচ্ছৃঙ্খল মেয়ে তুমি।তাই তো তোমাকেই ধরে নিয়ে এসেছি।আর ডিটেইলস তো অবশ্যই নিয়েছি।

-ও আমার বি এফ না।তাছাড়াও এগুলো আমার একদম ঠিক হয়নি।ও আমায় ফ্যাশন করতে উৎসাহ করতো আর আমিও গদগদভাবে রাজি হতাম।ভার্সিটি সেকেন্ড ইয়ারে যে এখন উঠেছি এই প্রথম রিলেশন তাও দুই মাসের।ওর ভাবসাব আমার ভালো লাগছিলো না।আমি এখন বুঝেছি তাই আপনাকে বিয়ে করবো।আপনার জি এফ আছে?

-না।আমার সব হক আমার বউয়ের।

-তার মধ্যে আমায় একটু দিয়ে দিয়েছেন মানে আপনিও পাপ করেছেন।

-আমি তোমার ভাইয়ের মতোন।

-আরে আজব তো! এই ভাই আর ওই ভাই অনেক তফাৎ।যতই হোক আপনি বেগানা পুরুষ তো।

-হুম।কিন্তু তোমার এগুলো এট্রাকশন যা কাল নাও থাকতে পারে।

-সেটা কালই দেখা যাবে এবার যে পাপ করেছেন তা ঠিক করার ব্যবস্থা করুন।

-কীভাবে?

-মেজাজ খারাপ হয় না?বিয়ের প্রপোজাল নিয়ে যাবেন বাসায়।সামাজিক প্রবলেম তো আর আপনার নেই।চাকরি আছে,চেহারা সুন্দর,মা বাবা আছে,আপনি ছেলেটা ভালো।শুধু এই অধম নারীকে বিয়ে করে পবিত্র নারী বানিয়ে নিজের জীবনকে আরো একবার স্বার্থক করা বাকি।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত