নিলা নতুন কলেজে ভর্তি হয়েছে। তার সাথে তার বন্ধু হাসনা। দুই জনে একসাথে কলেজে যাই। তারা দুই জনে ক্লাস করছে। প্রথম শিক্ষকের ক্লাস ভালো লেগেছে। কিন্তু তৃতীয় ক্লাসটা ভালো লাগে নাই। কারণ কাজল মেডাম তেমন ভালো না। খুবই কঠিন মনের মানুষ মুখে কোনো হাসি নাই।
.
.
সবসময় মনমরা থাকে। আর পড়া দিলে বলে,আর পড়া দিলে বলে, আরো ভালো করে পড়তে হবে। তো আজকের মতো ক্লাস শেষ।
পরের দিন
.
.
শিক্ষকের রুমে সব শিক্ষক এক সাথ আড্ডা দিচ্ছে। আর কাজল মেডাম রুম থেকে বের হয়ে জানালার পাশে দাড়িয়ে আছে। কাজল মেডাম সবসময় মনমরা থাকে । আর কি যেন ভাবে। তার মুখে একটুও হাসি নেই। মেডাম এর বিয়ের বয়স হয়েছে। কিন্তু সে বিয়ে করবে না। তো ক্লাস শুরু হয়েছে। কাজল মেডাম ক্লাস নিচ্ছে। নিলা জিজ্ঞেস করছে, কিরে এই মেডাম এর আচরণ এমন কেন? হাসনা বলছে, এই কাহিনী অনেক বড়। ক্লাস শেষ হলে বলবো। কিছুক্ষণের মধ্যে ক্লাস শেষ. হয়েছে।
.
.
কাজল: হ্যালো, আজকে বিকালে আমাদের এলাকার মাঠে দেখা করতে আসবে।
হাসান: ওকে বাবা।
কাজল: সময় মতো আসবে।
হাসান: ওকে আসবো। তুমি টেনশন করে না। কাজল ও হাসান একে অপরকে ভালোবাসে। সে কলজ লাইফ থেকে। বতর্মান দুই জনে ইউনিভার্সিটিতে পড়ে । তারা দুই জনে একেই এলাকায় থাকে। দুই বাড়ি পাড়ি দিয়ে কাজলের বাড়ি পড়ে। কাজল ও হাসানের পরিবারের সম্পর্ক খুবই ভালো। কাজল মাঠের গাছ তলার নিচে বসে আছে। কাজল হাসানের জন্য অপেক্ষা করছে। ছেলেটা সবসময় লেট করে । বলে দিলেও সময়মতো আসবে না। কাজলের রাগ হচ্ছে।
.
.
কাজল: এখন তোমার আসার সময় হলো? সে কখন থেকে বসে আছি। তোমাকে কত করে বলে দিলাম। সময় মতো করে আসবে। কথা বলছো না কেন?
হাসান: না, তোমার কথা শুনছি। আরে, বাবা। একটু কাজ ছিলো। তাই আসতে লেট হলো। বলো কিসের জন্য ডেকেছো।
কাজল: আমাদের ইউনিভার্সিটি লাইফ তো শেষের দিকে।
হাসান: হ্যাঁ।
কাজল: তো আমাকে কবে বিয়ে করছো।
হাসান: একটু ওয়েট করো। চাকুরীটা পাই। নিজের পায়ে দাড়াই। পরে বিয়ের কথা।
কাজল: আমার বাবা মা তো বিয়ের জন্য উঠে পরেছে। আমি এখন. কি করবো?
হাসান: দেখছি কি করা যাই। আর এসব কথা বাদ। এখন চলো একটু হাটাহাটি করি। পরে চলে যাবো। কাজল ও হাসান হাঁটার পর। তারা দুই জনে বাসায় চলে গেলো। হাসান তার বাবার মার কাছে বিয়ের কথা বলছে। তার বাবা মা রাজি হয়েছে। বলেছে, দুই মাস পরে তোদের বিয়ে। কাজলের বাবা মা রাজি হয়েছে। আমরা জানি, তোরা দুই জনে একে অপরকে ভালোবাসিস।
.
.
দুই মাস পর
.
.
বিয়ের আয়োজন চলছে। সবাইকে বিয়ের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া বিয়ের গায়ের হলুদের আয়োজন এর কাজ চলছে। বিয়ের জন্য যা লাগে তা কিনার জন্য ঢাকায় এসেছে। তার ভালোবাসার মানুষের সাথে বিয়ে বলে কথা। আসলে ভালোবাসার বিয়েতে কেউ সাফল্য পায়। আবার কেউ পায় না। কিছুক্ষণ আগে কাজলের সাথে মোবাইলে কথা হয়েছে হাসানের। কাজল বলে দিয়েছে, যেন সাবধানে আসে। হাসানের জন্য একটা আনন্দ এর ব্যাপার এই কয়েক দিন। তো হাসান বিয়ের সবকিছু কিনে ফেলেছে। সবকিছু নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছে, এমন সময় বড় একটা ট্রাক মেরে চলে যাই। গাড়ির তলে পড়ে গায়ের এবং কি মুখ চেনা যাচ্ছে না।
.
.
এই খবর চলে গিয়েছে হাসানের পরিবারের কাছে। অন্যদিকে কাজলের পরিবারের জানার অবকাশ রইলো না। কাজল উচ্চস্বরে কাঁদছে। তার বন্ধুবান্ধবীরা তাকে শান্তনা দিচ্ছে। এলাকায় কাঁদার দম পরে গেছে। হাসানের লাশ কাফন্ দাফন করার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। বুঝলি এই ঘটনা। তাই এমন থাকে সবসময় মানে মনমরা থাকে। তার ভালোবাসার মানুষ মৃত্যু বরণ করেছে। কার সাথে বিয়ের পিরিতে বসবে। তাই বিয়ে করছে না।
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা