খুব গম্ভীর গলায় মিষ্টি আমায় বললো,
– অরিত্র!!!
– হুম।
– এই হুম ছাড়া আর কোন কথা নেই?
খুব মনযোগ দিয়ে ফেসবুকে একটা গল্প পড়ছিলাম। মিষ্টির ঝাঝালো গলা শুনে চমকে উঠে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,
– বা রে! হুম বলাও দোষের।
– দোষের কি না তুমি বোঝনা? তুমি কি কেবল ফিডার খাচ্ছো নাকি? একদম ছোট বাচ্চার মতো আচরন তোমার!
– ওহ… ঝগড়া বাদ দিয়ে কি বলার আছে বলোতো। বলে কেটে পড়ো।
– কিইইই! আমি খুব বিরক্ত করি? আমি তো তোমার চোখে পুরনো হয়ে গেছি। তাই না?
– ওহ.. একটু শান্তি দিবা? শান্তি?
– কিইইই…তুমি আমায় তালাক দিতে চাও? এতই বিষাক্ত আমি তোমার চোখে?
– এই …. তোমার নাম মিষ্টি। গলায় একটু মিষ্টি আনতে পারোনা? আর এত বেশি বোঝ কেন? আমি কি বলেছি আমি তোমায় তালাক দেবো।
– মানেটা তো সেটাই দাড়াচ্ছে, আমি না থাকলেই তো তুমি শান্তি পাও।
আমি চুপ করে আর কথা না বলে ফোনে তাকালাম। ফোনে গল্পতে মন দিলাম। কারন তর্কের পর তর্ক আমার ভালো লাগেনা।
.
একটু পর মিষ্টি আমায় বললো, একটু ঠান্ডা গলায়,
– আমার ট্রাউজার টা পরেছো কেন? মেয়েদের ট্রাউজার পরতে তোমার লজ্জা করেনা?
গল্পে এতই মগ্ন ছিলাম, তড়িঘড়ি করে ট্রাউজার পরতে গিয়ে ভুল করে ওর টা পরে ফেলেছি। আমি বললাম,
– দুঃখিত, আমি আসলে খেয়ালই করিনি।
সে আবারও মিষ্টি গলায় বললো,
– হারামী, আমার ফেসওয়াশ দিয়ে সেভ করেছো কেন?
– ওহ ওটা সেভিং ক্রিম ছিলোনা?
– নাহ!
– ভুল হয়ে গেছে প্লিজ! মাফ করে দিও।
( এই ভুলটা অবশ্য জেনেশুনেই করেছি)
গল্প পড়া শেষে খেয়াল করলাম মিষ্টি ও আমার ফোনে গল্পটা পড়ছে। হঠাৎ খেয়াল করলাম ওর সমস্ত রাগ ডিলিট করে দিয়ে ও বললো,
– আমায় একটু কোলে নিবা?
– কেন?
– চাঁদ দেখতে বাইরে নিয়ে যাও না! প্লিজ।
.
আমি যখন মিষ্টিকে কোলে তোলার চেষ্টা করলাম, আমি বারবার ব্যর্থ হচ্ছিলাম। একটু পর আবিষ্কার করলাম আমি যাকে কোলে তোলার চেষ্টা করছি, ও আসলে আমাদের রিয়া ম্যাডাম। খুবই রাগী। বাংলা ক্লাস পান। আমি ম্যাডামের অনেক বকুনি খেতে খেতে চারিদিকে তাকিয়ে দেখলাম আমার ক্লাস ফ্রেন্ডরা সবাই মুখে হাত দিয়ে হাসি আটকিয়ে রেখেছে। মিষ্টিও বাদ নেই।
.
অদ্ভুত ভাবে আবিষ্কার করলাম,
আরে, মিষ্টির সাথে আমার বিয়েই হয়নি।
তারমানে এতক্ষণ নিশ্চয়ই ওকে নিয়ে জেগে জেগে কল্পনায় ডুবে ছিলাম। কল্পনা ভেঙ্গে গেলো।
.
তবে মিষ্টি কে এখন একটু তেতো লাগছে, ঐ হারামীটাকে নিয়ে রোজ যে কেন ভাবি, কেন যে বউ মনে করি।
ওর জন্য আজ বকা খেতে হলো!!!!!
.
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা