আমি যখন ক্লাস নাইন এ পড়ি। সব বন্ধুরা মিলে স্কুল মাঠের এক কোনে বসে আড্ডা দিচ্ছি। হঠাৎ দেখলাম আমার ক্লাসের বান্ধবী রিয়া আসছে। তার সাথে একটা মেয়ে আসছে। মেয়ে বললে ভুল হবে যেন একটা পরি। এসেই আমাদের সাথে বসলো। সব বন্দুরা তো হা করে তাকিয়েআছে তার দিকে। কিছুক্ষন পর রিয়াকে বললাম।
আমি : দোস্ত মেয়েটা কে রে?
রিয়া : আচ্ছা তোদের সাথে তো পরিচয় করানো হয়নি। ও হলো আমার ফ্রেন্ড। আমাদের পাশের বাসায় থাকে। এখন থেকে এই স্কুলেই পড়বে আমাদের সাথে।
আমি : আরে সব তো বুঝলাম নামটা তো বল।
মেয়েটি : হাই! আমার নাম আরজিনা।
আমি : হাই! আমি রিফাত। তারপর আরো অনেক কথা হলো। কিছুক্ষন পর ক্লাসের ঘন্টা বাজলো। সবাই ক্লাস করছি। এমন সময় পাশের এক বন্ধু বলল।
বাধন : দোস্ত দেখ ঐ মেয়েটা তোর দিকে তাকাই আছে।
আমি : কোন মেয়েটা রে?
বাধন : ঐ যে রিয়ার সাথে আসলো।
আমি : আরে বাদ দে। টিফিনে সবাই আড্ডা দিচ্ছি। এমন সময় দেখি ঐ মেয়েটা আসছে আমাদের দিকে। এসেই বলল কেমন আছেন?
আমি : জি ভালো। আপনি?
মেয়েটি : ভালো। আপনাদের সাথে কি বসতে পারি?
আমি : হ্যা বসুন। কিছুক্ষন কথা বলার পর।
মেয়েটি : আপনার সাথে কি বন্ধুত্ব করতে পারি?
আমি : অবশ্যই।
মেয়েটি : তাহলে তুমি করে বলতে পারি নাকি?
আমি : ওকে। আচ্ছা আমি কিন্তু তোমাকে আরজু বলে ডাকব।
মেয়েটি : ঠিক আছে।
পরে ক্লাস করে বাসায় চলে আসলাম। বিকালে বন্ধুদের আড্ডা দিতে গেলাম। বাসায় ফিরতে রাত হয়ে গেছে। এসে খাওয়া- দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে স্কুলে গিয়ে বন্ধুরা আড্ডা। পেছন থেকে আরজু এসে বলল।
আরজু : কেমন আছো?
আমি : ভালো। তুমি?
আরজু : ভালো। কখন আসছো?
আমি : এই তো একটু আগে। দাড়ায় আছো কেন? বসো।
আরজু : হুম বসছি। পাশ থেকে রকি কানেকানে বলল।
রকি : দোস্ত মেয়েটা কিন্তু হেব্বি সুন্দর। তোর ভাবি বানাবো। কেমন হবে?
আমি : এই ভুলেও চোখ দিস না। কথা বলে ক্লাসে গেলাম। ক্লাস করে বাসায় আসার সময় আরজু বলল।
আরজু :তোমার ফোন নাম্বারটা দাও তো।
আমি : কেন? তুমি নাম্বার কি করবা?
আরজু : দিতে বলছি দাও। (রাগি সুরে)
আমি : 01794****** ।
আরজু : ওকে। বাই। বাসায় চলে আসলাম। আজ আর আড্ডা দিতে যাই নি। রাতে খাওয়া-দাওয়া করে শুয়ে আছি। এমন সময় ফোন বেজে উঠলো। আননোন নাম্বার। রিসিভ করলাম।
আমি : আসসালামু আলাইকুম।
ও পাশ থেকে : ওয়ালাইকুম আসসলাম। কেমন আছো? (মেয়েলী কন্ঠ)
আমি : ভালো। আপনি?
ঐ : ভালো। কি করো?
আমি : শুয়ে আছি। এতক্ষণ ধরে কথা বলছি। পরিচয় টাইতোজানিনা।
আমি : আচ্ছা কে আপনি? আর কেন ফোন দিছেন।
ঐ : আমি আরজিনা। আর তোমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছা হলো তাই ফোন দিছি।
আমি : ওও তুমি। আগে বলবে তো। কি করো?
আরজু : তোমার সাথে গল্প করি। ডিনার করছো?
আমি :হ্যা। তুমি?
আরজু : জুম করছি।
আমি : ওকে বাই।
আরজু : বাই। গুড নাইট।
টু টু টু (ফোন কেটে গেলো) এভাবেই চলতে থাকে আমাদের বন্ধুত্ব। আমরা ক্লাস টেন এ উঠে যাই। এর মধ্যে অনেকেই ওকে প্রোপজ করে। কিন্তু সবাইকে রিজেক্ট করে দেয়। একদিন বিকালে ফোন দিয়ে ()স্থান ে যেতে বলল। আমি গেলাম। দেখি ও বসে আছে। কাছে গিয়ে জিজ্ঞাস করলাম।
:কেমন আছো?
: ভালো।
: কি হয়েছে। এখনে ডাকলে যে?
: তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো।
: কি বলো।
: আাআাআাআমি।
: আরে তোতলাচ্ছ কেন? বলো কি বলবে।
: আমি তোমাকে ভালোবাসি। (চোখ বন্ধ করে)
: কিহহহহ?
: হুম সত্যি। তোমাকে ছাড়া বাচবো না।
আমিও ওকে ভালোবাসতাম। তাই আর না করি নি। খুব ভালো ভাবেই কাটতে থাকে আমাদের দিনগুলো। অনেক রাত জেগে কথা বলতাম। একসাথে ঘুরতে যেতাম। এর মধ্যে আমাদের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়ে যায়। খুব ভালো ভাবে পরীক্ষা গুলো দিয়েছিলাম। এরপর একদিন ওর বাবা আমাদের কথা জেনে যায়। তখন আরজু আমাকে জায়গায় দেখা করতে বলে। আমি চলে গেলাম।
: কি হয়েছে? ডাকলে কেন?
: বাবা সব জেনে গেছে। তাই আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে।
: কি করব বুঝতে পারছি না।
: প্লিজ তুমি কিছু করো।
: আমাকে ভাবতে দাও।
: তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারব না। বাচবো না তোমাকে ছাড়া।
:দেখছি কি করা যায়।
আারজু চলে গেলো। আমি চেয়ে আছি ওর দিকে। কিছুদিন পর ওর বিয়ে হয়ে গেল। কিছুই করতে পারলাম আমি। নিকোটিনের ধোয়ায় শুধু কষ্টটাকে উড়িয়েছিলাম। বিয়ের এক সপ্তাহ পর ওকে দেখলাম ওর বরের হাসাহাসি করে কথা বলছে। মনেহচ্ছে কোথাও যাচ্ছে।আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। আমি দাড়িয়ে থেকে ওর চলে যাওয়া দেখছি আর ভাবছি।”যে মেয়ে আমাকে ছাড়া এক মুহুর্ত থাকতে পারে না। আমাকে ছাড়া বাচবে না “সে আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেল। আমি ওর চলে।যাওয়া দিকে চেয়ে আছি। শুধু বলব ভালো থাকো তুমি।