বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি, এমন সময় অচেনা একটা নাম্বার থেকে কল এলো,না নাম্বার টা অচেনা লাগছে না,কেমন যেনচেনা চেনা লাগছে। কলটা রিসিভ করলাম।
–হ্যালো…..
–কেমন আছো সাব্বির। এবার চিনতে পারলাম নাম্বার টা কার।
–এই তো চলে যাচ্ছে, কিন্তু তুমি হঠাৎ।
–কেন আমিকি কল দিকে পারিনা?
–রাহুল কোথায়?
–আমার আর তোমার মাঝে কথা হচ্ছে, এর মাঝে রাহুল কে না টানলে হয়না?
–ঈদের দিন আজ ঘুরতে বের হওনি দুজন এক সাথে?
–হ্যা,ও নামাযে গেছে, আমি দারিয়ে আছি,তোমার কথা মনে হওয়াই তোমাকে কল দিলাম।
–ওহ্
–কি করছো এখন
–তেমন কিছু না বন্ধুদের সাথে বসে আড্ডা এমন সময় একটা ফ্রেন্ড ডাক দিল। ওকে লাইনে রেখেই ফ্রেন্ডের সাথে কুসল বিনিময় করেআবার কথা বলা শুরু করলাম।
–ব্যাস্ত নাকি?
–হ্যা বন্ধুদের সাথে আছি।
–তাহলে ফোনটা রেখে দেবে?
–হ্যা, বাই।
ফোন টা রেখে দিলাম। আমি অয়ন সাধারন একটা ছেলে, কথা হচ্ছিলো রিধির সাথে। কয়েক বছর আগের কথা,নতুন কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। সেখান থেকে পরিচয় হয় আমার আর রিধির, রিধিকে প্রথম দেখাতেই ক্রাস খাই।সরাসরি গিয়েই প্রোপজ করেছিলাম। দেখতে খুব একটা খারাপ ছিলাম না, দু এক দিন সময় নিয়েই হ্যা বলে দেই রিধি। অনেক ভালোই কাটছিলো আমাদের রিলেশনের প্রথম দিকের দিন গুলো।খুব ভালোই ছিলাম আমরা। ভর্বিষ্যৎ নিয়ে কখনো চিন্তা করিনি। সেই ভালোভাবে যাওয়া দিন গুলোর মহতেই পরে ছিলাম। দেখতে দেখতে কিভাবে একটা বছর শেষ হয়ে গেল বুঝতে পারিনি।
হঠাৎ করে একদিন রাতে রিধির ফোন আসে।ফোনটা হাসি মুখেই ধরি।কিন্তু রিধির সাথে কথা বলার পর মুখে আর হাসিটা ধরে রাখতে পারিনি।ফোন করে বলে ওকে পাত্রপক্ষ দেখতে এসেছে।এবং আজি বিয়ে পড়াতে চাই। আমার মুখে কোন কথা ছিলোনা।ধিরে ধিরে বললাম,তুমি কি চাও।ও বলেছিলো, ওর পক্ষে বিয়েটা আটকানো সম্ভব না।ও এখন কিছু করতে পরবে না। ওর বিয়ের সাথে ওর মা বাবার মান সম্মান জরিয়ে আছে।ও ওর মা বাবাকে কষ্ঠ দিতে পারবে না। জানতে চাইলাম ছেলে কি করে।বললো ব্যাংকে চাকরি করে মাসে সেলারি ৬০ হাজার টাকা। বলেছিলাম তুমিকি এই ছেলে ৬০ হাজার টাকা বেতন পাই বলেই আমাকে ছেরে চলে যাচ্ছো।ভালো ছেলে পেয়েছো আর বিয়ে করে নিচ্ছো।আমার ভালোবাসার কোন মূল্যই নেই তোমার কাছে।এখন তো দেখছি তুমিই ওই ছেলেটাকে বিয়ে করার জন্য উঠে পরে লেগেছো।
ও কঠোর গলাই বলেছিল, ছি তুমি এত নিচ কখনো ভাবিনি। তুমি যা বোঝান বুঝে নাও, আমাকে আর কল করবে না। বলে লাইন টা কেটে দেয়। কখনো ভাবিনি এভাবে একটা ঝড় এসে আমার ভালোবাসাকে এভাবে উড়িয়ে নিয়ে যাবে।সে রাতে অনেক কেদেছিলাম। ও অন্য কারো হবে এটা ভাবতে কষ্ঠ হচ্ছিলো খুব। অনেক দিন লোকালয়ের আরালে ছিলাম, আমার কাছের বন্ধুরা আবার আমাকে স্বাভাবিক হতে সাহায্য করে। এ ঘটনার পরে আমি ওকে কখনো আর কল দেইনি। দিয়েই বা কি লাভ। আমি কখনোই ভাবিনি ও আমার সাথে এমন টা করতে পারবে।ওর সেদিনের কথা শুনে আমার একবারো মনে হয়নি ও ভয়ে ছিল।বরং মনে হয়েছিল ও বড্ড খুশি।
ও শুধু সেদিন কল দিয়ে ছিল ওর বিয়ের কথাটা জানানোর জন্য।আমার থেকে কোন মতামত নেবার জন্য না। এর পরে ওর সাথে থাকা সব স্মৃতি গুলোকে মুছে ফেলি। কিন্তু আজো আমার মন থেকে ওকে মুছতে পারিনি। শুধু এতটুকুই চেয়েছি,ও আমার থেকে ভালো যাকে পেয়ে বিয়ে করে নিল, তার সাথে যেন ভালো থাকে। জানিনা আজ কেন এতদিন পরে আবার কল দিল। ভালোই তো ছিলাম সব কিছু ভুলে।তবে কেন আবার পুরোনো স্মৃতি গুলোকে আবার জাগিয়ে দিল। মনটা খারাপ হয়ে যায়,মনটা খারাপ হয়ে যায়, বন্ধুদের আড্ডা ছেরে বাসার উদ্দেশ্যো রওনা দিই।
এমন কোন মেয়েকে ভালোবেসোনা, যে তোমার থেকে ভালো কাউকে পেলে, তোমার হাত ছেরে তার হাত ধরার জন্য একটা বার ও ভাবার প্রোয়োজন মনে করবে না।আমাদের চারপাশে এমন অনেক মেয়ে আছে যারা,এমন। একজনের মনে ভালোবাসা জাগিয়ে অন্য কোন ভালো ছেলে পেলে বিয়ে করে নেই।আর যাবার বলেই অজুহাত দেখায় আকাশ সমান।মেয়েরা বরই অদ্ভুত প্রাণী। এরা কখনোই একটা ছেলের সত্যকারের ভালোবাসা বুঝবে না।