-ভালো আছো দিহান?(আদিবা)
-হুম আপ্পি ভালো আছি,তুমি ভালো আছো?(দিহান)
-এইতো ভালো,পড়া শেখা হয়েছে?(আদিবা)
-উমমম..না আপ্পি(দিহান)
-কেনো?? কালকে কি করছো সারাদিন??যে পড়া শিখার সময় পাওনি?(আদিবা)
(আমতা আমতা করে বলল)
-আসলে,আসলে কিভাবে যে বলবো??ভয় হচ্ছে খুব(দিহান)
-ভয় পেয়ো না,কি বলবা বলো?(আদিবা)
-সত্যি বলতে পড়তে বসলেই শুধু তোমার কথা মনে পড়ে যায়।বইয়ের পাতা উলটালেই তোমার চেহারাটা বইয়ের পাতায় ভেসে উঠে।(দিহান)
-ওওওওরে বাবা..আমার কথা এতো ভাবার কি আছে??(আদিবা)
-জানি না আপ্পি।জানি শুধু তোমাকে আমার অনেক ভালো লাগে(দিহান)
-কিহহহহহহহ!!!এটা বলতে লজ্জা করলো না তোমার??
এই বলে রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দিলাম।।
দিহান আমার স্টুডেন্ট।আমার থেকে এক বছরের ছোট।মানে আমি আছি ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে,আর দিহান ক্লাস টেন থেকে এবার এস এস সি দিবে।
একই এলাকায় থাকি বিধায় ওর আম্মুর জোরাজুরিতে পড়ানো শুরু করেছি।কিন্তু পড়াতে এসে তো দেখি আসলে ও একটা স্টুডেন্ট না বরং স্টুপিড।
এতো দুষ্টু বলে বুঝানো যাবেনা।আমাকে ভাবতে ভাবতে নাকি ওর পড়ার সময় শেষ হয়ে যায়।
-এই তুমি এখনই পড়া করে দিবা,তারাতারি পড়(আদিবা)
-আপ্পি এমন করো কেনো??একটু আদর করে কথা বলতে পারোনা আমার সাথে?(দিহান)
-তুমি নিয়মিত পড়া দাও??পড়া দিলে তো আদর করবো তাই না??(আদিবা)
-সত্যি নিয়মিত পড়া দিলে আদর করবা??(দিহান)
-হুম।(আদিবা)
অদ্ভুত ব্যাপার তারপর থেকে ভালোভাবে পড়ালেখা শুরু করে দিহান।আমারো খুব ভালো লাগতে থাকে ওর আগ্রহ দেখে।
ঠিকঠাক মতো পড়া দেওয়া,সময়মত সব কিছু করা,আগের মত দুষ্টুমি না করা যেন তার ডেইলি রুটিন হয়ে উঠে।এভাবে চলতে চলতে
হঠাত একদিন বিকালে দিহান আমাকে কল দেয় ওর সাথে একটা পার্কে জরুরি ভাবে দেখা করার জন্য।
আমিও কিছু না ভেবে চলে গেলাম তার দেওয়া ঠিকানায়।
-কি হয়েছে দিহান??হঠাত এখানে ডাকলে কেনো??(আদিবা)
-….(চুপ করে আছে দিহান)
-কি হলো কিছু বলছো না যে?(আদিবা)
-আপ্পি যা বলতে চাচ্ছি জানি না এটা বলা উচিৎ কিনা,অথবা এটা তুমি মেনে নিবা কিনা?(দিহান)
-সমস্যা নেই বলো(আদিবা)
-কিভাবে যে বলি….(দিহান)
-আরো বলো বলো সমস্যা নেই(আদিবা)
-তোমাকে আমার খুব ভালো লাগে,অনেকদিন যাবত তোমার প্রতি অনেক মায়া এবং ভালোবাসা অনুভব করছি যা কোন ভাবেই বলার সাহস হয়নি।
কয়েকটা রাত ধরে ঘুমোতে পারিনি তোমায় ভাবতে ভাবতে,তোমাকে ছাড়া একটা মুহূর্তও ভাবতে পারছি না।তাই ভাবলাম তোমাকে এটা বলা উচিত।
কোন ভূমিকা করে বলতে পারিনা আমি ভালোবাসার কথা,জানিও না কিভাবে বলতে হয়,কিন্তু আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি তাই বলতে চাই তুমি
কি আমার পথ চলার সঙ্গী হবে??(দিহান)
-ছিঃ কি বলো তুমি এগুলো দিহান??আমি তোমার থেকে বয়সে বড়।তাছাড়া তোমাকে নিয়ে আমি কখনো ভাবিনি।(আদিবা)
-আচ্ছা ভালোবাসায় কি বয়সের কোন স্থান আছে??ভালোবাসার জন্য বয়স কোন সমস্যা না যদি এখানে ভালোবাসায় ভরপুর থাকে।
আর ভালোবাসাতো বয়স দিয়ে হয় না,ভালোবাসা হয় মনের টান থেকে।আমাকে একবার শুধু ভালোবাসার সুযোগ দাও আমি তোমায় ভালোবাসা দিয়ে পরিপূর্ণ করে রাখবো।(দিহান)
-কিন্তু আমি তো তোমাকে ভালোবাসিনা!!মনের টান আছে কিনা কিভাবে বুঝবো??(আদিবা)
-আমার ভালোবাসাটা বুঝার চেষ্টা করো প্লিজ(দিহান)
-সরি সম্ভব নাহ(আদিবা)
-আচ্ছা ঠিক আছে আমাকে শুধু একটু অনুভব করে দেখো আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি(দিহান)
-আর কিছু বলবা??নয়তো চলে এখন আমি(আদিবা)
-নাহহহ আর কিছু বলবো না,বলবো শুধু আমাকে একটু অনুভব করো…(দিহান)
-বাই(আদিবা)
ওখান থেকে চলে আসার পর বুঝতে পারলাম না বার বার শুধু দিহানের কথাই কেনো মনে পরছিলো।
ওর এইকথা গুলো বার বার কানে এসে লাগছিলো “ভালোবাসার জন্য বয়স কোন সমস্যা না যদি এখানে ভালোবাসায় ভরপুর থাকে।
আর ভালোবাসাতো বয়স দিয়ে হয় না,ভালোবাসা হয় মনের টান থেকে।আমাকে একবার শুধু ভালোবাসার সুযোগ দাও আমি তোমায় ভালোবাসা
দিয়ে পরিপূর্ণ করে রাখবো”।কি করবো আমি ভেবে পাচ্ছিলাম না।অবশেষে অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগার পর সিদ্ধান্ত নিলাম ওর সাথেই সাথেই রিলেশন করবো।
অতঃপর ওকে জানিয়ে দিলাম আমার ভালোবাসার কথা।চলতে থাকলো আমাদের নিয়মে অনিয়মে প্রেম।শুরু হলো আমাদের সমীকরণহীন পথ চলা,সেই পথের গন্তব্যহীন পথিক আমরা।।।।