ইমা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে সুন্দরী, ব্রিলিয়েন্ট এবংতার বাবার একমাত্র আদরের মেয়ে। অনেকেই ইমার সাথে প্রেম করতে এসে এই বিশ্ববিদ্যালয় ছেরে পালিয়েছে।হঠাৎ একদিন।
-হাই!!! কম্পিউটার রুম কোনটা একটু বলবেন প্লিজ?(অপু)
-ওই যে। ওই পাশের টা।(ইমা)
—-ছেলেটার নাম অপু। কলেজে আজ নতুন। অপু ও খুব ব্রিলিয়েন্ট এবং দেখতে শুনতে ওঅনেক স্মার্ট । আবার কিছুক্ষন পর।
-ধন্যবাদ।(অপু)
-স্বাগতম ।এই যে মিষ্টার নাম কি আপনার?
-আমার?
-আমিতো আপনার আশেপাশে আর অন্য কাউকে দেখছি না ।
-ওহ, হ্যাঁ । আমার নাম অপু। আপনার নামটা কি জানতে পারি মিস?
– আমার নামইমা । আপনি কি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন?
-হ্যাঁ।
-কোন ডিপার্টমেন্ট ?
– হিসাববিজ্ঞান। আপনি?
-হিসাববিজ্ঞান।
-আচ্ছা।আজ তাহলে বাই।
-বাই।
পুরা হিসাববিজ্ঞান ডিপার্টমেন্টে আজ অপু কে নিয়ে মাতামাতি। ইমা অপুর সাথে আগে কথা বলেছে । যে মেয়ে কিনা কোন ছেলেদের সাথেই কথা বলে না । অপু ক্লাসে প্রবেশ করতেই একজন বলে উঠলো এই আপনি কি অপু ?
-হ্যাঁ। আপনি?
-আমি এই ডিপার্টমেন্টের ই ছাত্র ।
-ওহ।
-হ্যাঁ। ইমার সাথে কথা বলতে পেরেছ দেখে আবার ভেবেন না যে ইমার সাথে আপনি প্রেম করতে পারবেন।
-আরে ভাই। কারো সাথে কথা বললেই কি কেউ কারো সাথে প্রেম করতে পারে ?
-আরে আজ পর্যন্ত কোন ছেলে ইমার সাথে কথা বলতে পারে নি তাই ও ভাবছে আপনি কথা বলতে পেরে হয়তো বা ভাবছেন যে আপনি তার সাথে প্রেম করতে পারবেন।
-আচ্ছা ও কি কারো সাথে প্রেম করে না।
-প্রেম! . কোন ছেলে তার সাথে কথাই বলতে পারে না।
-কি বলেন?
—— কিছু দিন যাবার পর ইমাকে পিছনে ফেলে অপু হয়ে যায় ডিপার্টমেন্টের ফাষ্ট বয়। তারপর অনেক বন্ধু হয় তার। অনেক মেয়েরা তাকে নিয়ে স্বপ্ন ও দেখতে থাকে। কিছুদিন পর আবার অপুর সাথে ইমার দেখা হয় মাঠে ।
-হাই!
-হাই!
-কেমন আছেন?
-ভাল। আপনি?
-ভাল। চলুন কোথাও বসে একটু গল্প করি।
-চলুন।
-আর।হ্যাঁ আপনি আমাকে তুমি তুমি করেই বলতে পারেন আমার কোন প্রবলেম নেই।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
—-এইভাবে অনেকক্ষন কথা বলার পর তারা একে অপরের ফোন নাম্বার চেয়ে নেয়।
তারপর থেকে তারা একে অপরের সাথে প্রতিদিন কথা বলে । এবং একে অপরের ভাল বন্ধু হয়ে যায়। তারপর তারা একসাথে অনেক সময় পার করে দেয় । এইভাবেই তারা একে অপরের সাথে চলতে থাকে । কিছুদিন পর অপু , ইমাকে বলে।
– ইমা , আমি তোমাকে একটা কথা বলব বলে ভাবছি, কিন্তু বলতে পারছি না এই ভঁয়ে যদি আমার আর তোমার বন্ধুত্ব টা নষ্ট হয়ে যায়।
-কি এমন কথা যাতে বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যাবে?
-ইয়ে মানে ইমা। না থাক কিছু না ।
– কি বল ?বলছি
—–অপু আস্তে আস্তে করে ইমার দুহাত ধরে বলছে ।
ইমা আমি তোমার সাথে কথা বলতে বলতে । তোমার সাথে একসাথে চলতে চলতে। সেই অনেক আগে থেকেই আমি তোমাকে অনেক ভালবেসে ফেলেছি। বিশ্বাস কর আমি তোমাকে সত্যিই খুব ভালবাসি।
-হাত ছাড় অপু
-প্লিজ বিশ্বাস কর
—-কিছু না বলেই ইমা সেখান থেকে চলে গেল।
অপু খুব টেনশন করছে , কিছুই ভাল লাগছে না তার । কি করবে ভেবে পাচ্ছে না সে, আবার সেটাও মনে মনে ভাবছে কথাটা এখনই বলা ঠিক হয়েছে নাকি । আর না বলেও যে উপায় নেই। কারন তার যেন শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে,আজ না বলতে পারলে হয়ত মরে যেত । এই ভেবে একের পর এক সিগেরেট খেয়ে যাচ্ছে। এই সব কিছু ভাবতে ভাবতে অপুর ফোনটা বেজে উঠল । ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে ইমার ফোন । কি করবে ভেবে পাচ্ছিল না ফোনটা কি রিসিভ করবে কি করবেনা এই রকম ভেবে ফোনটা রিসিভ করেই
– হ্যাঁলো! ইমা sorry। আমি আর এই রকম কিছু বলব না । বিশ্বাস কর আমি কোনদিনও তোমাকে আর এই রকম কিছু বলব না। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমার একটু ভুলের জন্য আমাদের এতদিনের বন্দুত্ব টা নষ্ট করে দিও না প্লিজ।
-এই,তুমি আর কি বলবা না বলছ?
-আমি তোমাকে ভালবাসি। এই কথাটি।
-যাও , তাহলে তোমাকে আমি আর ফোনই দিব না।
-কেন?
-তুমি আমাকে ভালবাস বলবে না কেন?
-(অপু কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না) না, মানে ইয়ে।
-কি?
-ইমা আমি তোমাকে ভালবাসি । আই লাভ ইউ।
-কি?
-হ্যাঁ।
-শুদুমাত্র এতটুকুই ভালবাস?
-না,না,অনেক অনেক ভালবাসি । আই লাভ ইউ সো মাচ।
-(কেঁদে কেঁদে) কখনো ছেড়ে যাবে না তো?
– কখনো না। তোমাকে ছাড়া আমি কি নিয়ে বাচবো । তুমিই যে আমার সব ।
– সত্যি ত?
-হ্যাঁ। এক সত্যি, দুই সত্যি , তিন সত্যি।
-আই লাভ ইউ অপু।
—-তারপর থেকে শুরু হয় তাদের মধুর ভালবাসার সম্পর্ক ।
শুরু হল হাতে হাত রেখে এক সাথে চলা । এভাবেই একে অপরের হাত ধরে কাটিয়ে দিয়েছে অনেক বেলা । প্রতিদিন অপু ইমাকে তার প্রিয় ফুল ইমার মাথার খোপায় গুঁজে দিয়ে বলত এই যে আমার ফুলপরী। অনেক ভালই কাটছিল তাদের ভালবাসার দিন গুলো। হঠাৎ কিছু দিন পর অপু ইমাকে ফোন করে জরুরী ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা করতে বলে । ইমা ও খুব বেশি দেরি না করে চলে আসে । ইমা এসে দেখে অনেক গুলা পরিচিত মুখ কি ব্যাপার আজ তো বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ তবে তারা সবাই এখানে কেন? একটু পরেই তাদের ভিতর থেকে অপু বের হয়ে আসলো।
-কি ব্যাপার অপু? এত মানুষ কেন , কোন সমস্যা?
-না , ইয়ে -মানে তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিল ।
-কি কথা বল।
-আসলে ইমা আমি sorry।
-sorry কেন?
-আসলে আমি তোমাকে ভালবাসি না ।
-কি? কি বল? এই সব তুমি? তুমি কি পাগল হয়ে গেছ?
-না। আসলে ।
-কি? যদি আমাকে ভালই না বাস তবে আমার সাথে কেন এই রকম করলে বল? ( কেঁদে কেঁদে)
-আসলে আমি চাই নি ।
তবুও ওদের কথায় ওদের সাথে বাজি ধরে তোমার সাথে আমি এই রকম করেছি । আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ ।
-ছ্বি, অপু ছ্বি তুমি আমার সাথে এই রকম করতে পারলে?
—-ইমা কাঁন্না করতে করতে চলে গেল।
কিছুদিন যাবার পরই ইমার ভালবাসা গ্রাস করে ফেলেছে অপুকে। ইমার সাথে কাটানো সৃতি গুলো অপুকে খুব কষ্ট দিচ্ছে । তাহলে কি অপু ও ইমাকে এইভার সত্যি সত্যি ভালবেসে ফেলেছে? অপু ইমাকে অনেক খুঁজেছ কিন্তু সেই দিনের পর থেকে ইমা আর অপুর সামনে আসেনি এবং তার ফোন নাম্বার , বাসা সব পরিবর্তন করে ফেলেছে । এই দিকে অপু ইমার ভালবাসার জন্য সে নিজের জীবনকে নষ্ট করে দিচ্ছে কিন্তু এই ভাবে চলতে থাকলে অপু হয়তো আর বাচবে না । তাই তার পরিবারের সবাই মিলে তাকে বিয়ে করানোর জন্য চেষ্টা করে তাতে যদিও সে একটু ইমাকে ভুলতে পারে । এইভাবে অনেক দিন যাবার পর আজ অপুর পরিবার অপু কে বিয়ে করানোর জন্য একটা পাত্রী ঠিক করল। আজ অপুর গাঁয়ে হলুদ। অনেকের মাঝে থেকে কে যেন বলে উঠলো
-অপু একটু এদিকে আয়।
-কিরে ?
-নে, এই চিঠিটা ইমা তোকে দিতে বলেছে।
—-অপু আমি তোমাকে খুব ভালবাসি । আর খুব ভালবাসতাম , ভালবাসবো আর সারা জীবন তোমার অপেক্ষা করে থাকবো যতদিন না তুমি ফিরে আস । আর সেই দিনই আমি এই দুনিয়া ছেড়ে চলে যাব যে দিন আমার স্থানে তুমি অন্য কাউকে স্থান দিবে । আর আমি জানি যে দিন তুমি আমার চিঠিটা পরবে সেই দিন তুমি হয়ে যাবে অন্য কারো চাইলে ফিরে আসতে পারবে না তুমি। আর তুমি যদি ফিরে না আস তাহলে আমার বেঁচে থেকেই কি লাভ বল । ভাল থেক সুখে থেক । ইতি , ইমা।
-অপু কেঁদে কেঁদে বলছে কিরে ইমা কোথায়?
-সেটা জানি না ।
-নতুন বাসার ঠিকানা টা দে ।
-এই নে।
-অপু পাগলের মত হয়ে ছুটে গেল ইমাদের বাসায় কিন্তু যেতেই দেখে তালা ঝোলানো । পাশের রুম থেকে জানতে পারল ইমাকে নিয়ে তার পরিবার হাসপাতালে গেছে । কারন ইমা বিষ খেয়েছে । অপু হাসপাতালে যাবার কিছুক্ষন পর ইমার জ্ঞান ফিরে আসে ।তারপর ইমার সাথে অপুর দেখা হলে।
-তুমি এইকি করছিলে?
-মরতে যাচ্ছিলাম ।
-আমাকে না নিয়েই তুমি এত স্বার্থপর। এই বলে অপু ইমাকে জড়িয়ে দরে বলে আমি তোমাকে কত খুঁজেছি। কোথায় ছিলে এতদিন? আই লাভ ইউ সো মাচ।
-আই লাভ ইউ অপু। তারপর দুজনে দুজনার হাত ধরে হেঁটে চলে যাচ্ছে আর তাদের ভালবাসার রং ছড়িয়ে যাচ্ছে। আর আবার ও প্রামান করে দিয়ে যাচ্ছে সত্যি কারের ভালবাসা কখনো শেষ হয় না ।