এই রাব্বি দাড়া একটু , আমি ফারেহার কন্ঠ শুনলাম, কিন্তু নাশুনার ভান ধরে হাটার গতি বাড়িয়ে চলে যাচ্ছি ক্লাসের দিখে, আর ভাবছি গতকাল মেয়েটি যা করছে এরপর আর ওর সাথে কথা বলা যায় না ,
-আচমকা খাম্বার মত কিছু একটা পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো, চলন্ত বাসের সামনে ঠেলা গাড়ি পড়লে যা হয় আর কি ১২০ কিঃমিটার স্পিডের এক ধাক্কাতেই ৩ হাত দূরে গিয়ে পড়লো মেয়েটি,অবশ্য আমি মানুষ তাই ওর তেমন কিছু হবে বলে মনে হয় না ।
-ফারেহা কান্না করতে লাগলো, আর বলতে লাগলো এই বজ্জাত টা আমায় মেরে ফেলেছে,এই কে কোথায় আছিস, দেখ এসে এই ছেলেটি আমায় একা পেয়ে কি করছে, উফ আমার হাত প্রচন্ড ব্যাথা হচ্ছে মনে হয় আমার হাত পা ভেঙ্গে গেছে
-আমি দাড়াতে পাচ্ছি না, যদি আমার কিছু হয় তুই আমার সারা জীবনের দাইত্ব নিবি শালার বেটা আন্ধা, বলেই চিৎকার শুরো করল, আরে থাম চিল্লাচ্ছিস কেন, কি এমন হইছে তর দেখি
– মনে মনে ভাবলাম স্যার রা এখানে চলে আসলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে, ও জোড়ে কেঁদেই যাচ্ছে ওর মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে কান্না থামাতে গেলাম, দিলো অম্নিতেই বিড়ালের মত এক কামড়, আমি ও ছেড়ে দিলাম, ভুলেই গেছিলাম বিড়ালের কান্না থামাতে কি মানুষ যায়
-আমার প্রচন্ড রাগ হচ্ছে এই নেকি বিড়াল টারে ধাক্কা দেয়ার আগে আমার পা কেনো ব্রেক করলনা, তাহলে এখন আর এই প্যারাটারে সহ্য করতে হত না কিন্তু কিছু করার নাই আমি ফাটা বাঁশের চিপায় আটকে গেছি,
-ভাবতে ভাতে বললাম আচ্ছা কান্না থামা চল তকে হাসপাতাল নিয়ে যাই , বলে হাটা শুরো করলাম ৫ হাত দূরে গিয়ে দেখি ও আমার সাথে নাই
-কি ব্যাপার বজ্জাত মেয়েটা গেল কই পিছনে থাকাতেই দেখলাম নাগিন সাপের মত ফুস ফুস করছে
-যেন অর বিষ দিয়ে আমার গ্রাস করে নিবে, আর চোখ দুটা পাতি হাসের আন্ডার মত বড় করে রেখেছে, মনে মনে ভাবছি এই দুটু চোখ বাজারে হাসের আন্ডা বলে চালিয়ে দেয়া যাবে, কম হলে ও দুটো ৪০ টাকা বিক্রি করা যাবে,
-আমার সর্বনাশ যা করার করেই ফেললি এখন আমি পঙ্গু হয়ে গেছি, কি করে হেটে যাবো বল, আমায় কুলে করে নিয়ে যা,
-মনে মনে ভাবছি তুইতো পঙ্গু হলেই ভালো হইতো তিন চাকার একটা বিয়ারিং এর গাড়িতে বসিয়ে তরে অই ব্রিজের উপর বসিয়ে রাখতাম ভিক্ষা করার জন্য
– আমার বুঝতে বাকী রইলো না ওর মতলব, যাই হোক অনিচ্ছা কৃতভাবেই বান্দরনি টারে নিয়ে যাচ্ছি, হঠাৎ ও আমার মুখের দিখে তাকিয়ে বলল তুইতো ঘেমে যাচ্ছিস
-ও ওর উরনাটা বাড়িয়ে দিয়ে বলল নে মুখটা মুছে নে আর আচ্ছা আমি তর কষ্ট কমিয়ে দিচ্ছি বলে উরনা দিয়ে বাতাস করতে চাইছে
-এই তর না হাত ভেঙে গেছে, তুই আমায় বাতাস করলি কিভাবে ? তর পা ও ঠিক আছে বলেই আমি অকে স্বজোড়ে এক আচাড় ( আছাড়) দিয়ে নামিয়ে দিলাম,
-এই এইটা কি সিনেমা পাইছিস? নাটক করে কুলে উঠতে চাস ? তর লজ্জা করে না এত্ত বর হাতি মার্কা মেয়ে হয়ে এইসব করছিস,? আসলে তর মাথার সব ইলেক্ট্রিক তার ছিরে গেছে, দারা তরে হাস্পাতাল না নিয়ে পাবনা পাগলাগারদে পাটানোর ব্যাবস্থা করছি
-এবার পেঁচার মত তাকাচ্ছে যেন কিছুই যানে না. আর সেই পাতি হাসের আন্ডার চোখ দুইটা দিয়ে চেয়ে আছে
-কি আমার হিরো আলম আসছে রে উনার সাথে অভিনয় করতে আমার বয়ে গেছে, তর মত হাবার সাথে কে অবিনয় করবে শুনি হ্যা মুখ ভ্যাংচিয়ে বলল
-আরে যা তুইত বাংলা সিনেমা দিলদারের নাইকা,মর্জিনা হা হা হহা এক ভয়ংকর হাসি দিলাম
-ওমা এ যেন এক বাঘীর পাল্লায় পরলাম আমি অসহায় হরিনের মত তাকিয়ে আছি, মনে হয় আজ এই বাঘীর শিকার হইয়েই গেলাম
-ব্যাঙের মত এক লাফে চলে এসেই ধরে ফেলল আমার গলায়, যেন পুটি মাছ শিকার করতে এসেছে, না না এত বক্সার,, অনেকটা মটু পাতলুর বক্সারের মত ঘুসি মারছে আর বলছে ইয়েলও ইয়েলও ইয়েলও অর লও, বলেই এমন একটা ঘুসি দিলো আমি শেষ
-আর লাগবি আমার সাথে বল হারামজাদা ?
-না না না, ছেড়ে দে শয়তাননি আমায় বলেই একদৌড়ে পালিয়ে গেলাম,
এখন একটু বিশ্রাম নিচ্ছি অনেক দখল গেল বাবা, ভাবতে না ভাবতেই ঘুম চলে আসলো,
-বিকেলে ঘুম থেকেই উটে ঘরেই বসে রইলাম, আজ আর বাহিরে যেতে ইচ্ছে করছে না, শয়তাননি টা অনেক ঘুসি মারছে যেন এইটা বালুর বস্তায় ঘুসি মারছিল যেন বক্সিং শিখছিল, বসে বসে ভাবছি আর গান শোনছি
-হঠাত, দরজায়, টুক টুক আওয়াজ শুনতে পেলাম,
-পরক্ষনেই দেখতে পেলাম ডাইনি টা হাজির, যাই হোক শরীর খারাপ লাগছিল বৃষ্টিতে ভিজায় একটু ঝ্বর ঝ্বর লাগছে, তাই আর অকে কিছু বলতে গেলাম না,
-কিরে আজ ছাদে গেলিনা?
-না এমিনিতেই ভালো লাগেনি তাই
-রাগ করছিস?
-না
-তাহলে কি হইছে?
-কিছুনা
-বলনা আমায় কি হইছে
-বললামত কিছুনা (একটু জোড়ে),
কেনো এক কথা বার বার জিজ্ঞেস করছিস, তুই কোন অধিকারে এত্ত সব জানতে চাইছিস কি হস তুই আমার?আর কলেজে সবার সামনে আমার কুলে উটে তুই কি বুঝাতে চাইছিলে?চলে যা আর কক্ষন ও তুই আমার সামনে আসবি না,
-বলতেই কান্না শুরো করে দিলো, আম্মু চলে এসেছে রুমে,
-কি হইছে তুরা আবার ঝগড়া করছিস, আর তুই কি বলছিস? মেয়েটা কাঁদছেই বা কেনো? অকে যেতে দাও মা
-চলে গেলো ও মা ও অকে ডাকতে ডাকতে চলে গেলেন
-১ ঘন্টা পর
দূর যা রাগের মাথায় কি বলতে কি বলে ফেললাম, এখন নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে, মেয়েটা একটু রগা টাইপের যা ভাবে তাই করে, আর ও ছোটবেলা থেকেই এই রকম আর বন্ধু বলতে সে আমাকেই বুঝে, আর আমি ও অর ছোট বেলার বন্ধু,তাই সে তার সব কিছু আমার সাথেই শেয়ার করে
-যাই হোক কাল ক্ষমা চেয়ে নিব, কাল কলেজে গেলাম ক্লাসে ও আজ সে আমার পাশে বসে নি, অজতা ডাকা ডাকি ও করছেনা ক্লাস শেষেই চলে গেল,একটা বার ও আমার দিকে তাকাচ্ছে না, কি ব্যাপার ফোন দিচ্ছি ফোন ও ধরছে না, ক্লাস শেষে ছাত্রি মিলনায়তনে চলে গেলো , দূর যা ভালই লাগছেনা, আমার ক্লাস্মেট মেয়ে একটারে দিয়ে খবর পাটালাম, ওএসে বলছে ও নাকি আস্তে পারবে না, আর আমি যখন যোহরের নামাজে যাই তখনই ও চলে যায় কলেজ থেকে,
-কেন জানি নিজেকে অসহায় ভাবতে শুরো করেছি,, বিকেল বেলায় ছাদে ও আসে না, আর অর বাসায় যাই না কারন আম্মু আগেই মানা করে দিয়েছে,
-যাই হোক পরের দিন আম্মুর ফোন থেকে লুকিয়ে ফোন দিলাম, ভাবছি ফোন ধরলে কি বলবো, রিং হচ্ছে ফোন রিসিভ করলো,
– হ্যালো হ্যালো বলতেই কেটে দিলাম, তিন বার এইভাবেই দিতে থাকলাম অবশেষে ফোন অফ করে দিলাম,, মনে মনে ভাঁবছি আম্মুর ফোন পেয়ে জরুরী মনে করে আস্তে পারে,
-আসরের আজান হলেই আমি নামাজে যাই, ও এই সময়টা জানে, দেখি এই সময়টায় আস্তে পারে,, যেহেতু সে অভিমান করে আছে তাই ওই টাইম টায় আস্তে পারে, যাতে আমার সাথে দেখা না হয়
-কেউ একজন ঘরে ডুকছে, আমি দরজার আড়ালে লুকিয়ে আছি, যেই ঘরে ডুকে দরজা লাগালো আমি ও প্রকাশ পেলাম,
-মুখে চেপে ধরলাম,নিয়ে গেলাম আমার রুমে, দরজা আটকিয়ে দিলাম, কি খুব রাগ হইছে না ?
-আসলে সে দিন অসুস্থ ছিলাম তাই রাগের মাথায় কি বলতে কি বলে ফেলেছি , আসলে বুঝতে পারিনি,ভুলহয়ে গেছে রে, আর আজ যখন তুই আমার থেকে দূরে চলে যাচ্ছিস তখনই বুঝতে পারলাম যে তুই কি আমার।
-কিরে এখন ও পাউরুটির মত গাল ফুলিয়ে আছিস যে, ক্ষমা করে দে না আমায়, বক্সারের মত মার আরও কয়েকটা ঘুসি , তবুও কথা বল আমার সাথে, তুই না বলতি আমরা সারা জীবনের বন্ধু,
-, তুইতো আমায় বুঝিস না,( ফারেহা)
-হুম কি বুঝিনা আমি, বল? (আমি) সব বুঝি রে, সব
-আচ্ছা ঠিক আছে এবার যেতে দে আন্টি চলে আসবে,
-থাক না আরও কিছুটা সময় ( আমি )
-কোন অধীকারে? একটু হেসে ( ফারেহা)
-দাড়া ( আমি)
-বালিশের নিচ থেকে গোলাপ ফুলটা বের করেই অর দিকে হাত বারিয়ে হাটু গেড়ে বলে দিলাম মনের সব কথা
-ভালোবাসি তকে, খুব ভালোবাসি
-ভালোবাসি তোর পাগলামি টাকে,
-ভালোবাসি তর জোড় করে অধীকার খাটানো ভালোবাসাকে
-ভালোবাসি আমায় চাওয়া টুকুকে তর নিশ্পাপ চাহনিতে হাড়িয়ে যেতে চাই অজানায়
-এ কেমন মায়া এই চোখে আগে তো কখন দেখিনি,ওর চোখের ভাষা বুঝে নিলাম, আমাকে টেনে দাড় করায়
-ঝাপ্টে ধরে আমার শার্ট,
-বুকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো.
চোখের জলে আমার বুকটা ভিজিয়ে দিচ্ছে , আমি ও আজ আর কাঁদতে বাঁধা দিলাম না,চোখের জলে ঝরে যাক মনের সব কষ্ট। সুখি হোক পৃথিবীর সকল নিষ্পাপ ভালোবাসা।