কি আজব ব্যাপার, এভাবে তাকায় কেনো আমার দিকে??? বোড়িং লাগে। ভাবছে নূপুর। ছেলেটার নাম রাজু। এই পাড়ার সবচেয়ে হ্যান্ডসাম এবং ব্রিলিয়ান্ট ছেলে। সব মেয়েই অর জন্য পাগল তাই রাজু এই ব্যপেরটা খুব enjoy করে। আর এটা নুপুর একদমই লাইক করে না। আর কিছু বলতেও পারে না। কারণ, ছেলেটা তার পাশের বাড়িতে থাকে। আর ওই ছেলে থেকে নোট নিতে হয়। তবে নিজে নেয় না , মেঝো ভোন নিয়ে দেয়। ছেলেটিও কিছু বলে না।
মুছকি হাসি দেয়। আর বলে যার লাগবে সে তো কিছুই বলে না কিন্তু আপনি খুঁজে দেন কেনো? নুপুর এর মেঝো ভোন আপু লিপি হাসে। আর বলে অ একটু লাজুক, আর কথা কম বলে তাই আমি খুঁজে দেই। রাজু বলে, আপু, ওকে বলবেন আমার সাথে কথা বলতে , আমি তো ওরই air mate তো আমার কাছে লজ্জা কি? একদিন নুপুর বাইরে তথেকে আসছিলো, আর মেইন গেট এ রাজু আর তার বাবা দাঁড়িয়ে গল্প করছে। রাজু তার বড় আপুর বাসায় থেকে পড়াশুনা করে। তাই তার বাবা প্রায় বেরাতে আসে রাজুকে দেখতে।
রাজুঃ এই যে নুপুর, উনি আমার বাবা, কাল এসেছে। নুপুর পায়ে ধরে সালাম করল। আর বলল, “আঙ্কেল, আমাদের বাসায় আসবেন কিন্তু।“ নুপুরের এক ফ্রেন্ড রাজুকে লাইক করে। তাই মাঝে মাঝে রাজুর ভোনের কাছে গিয়ে কথা বলে আসে। কিন্তু নুপুর এসব লাইক করে না। নুপুর একটু reserve টাইপের। তাই তো রাজু ওকে লাইক করে। রাজু নুপুর কে একটা বই আর কিছু গানের ক্যাসেট দেয়। কিন্তু বইটি পড়ে, গান গুলো শুনে গিফট গুলো ফিরিয়ে দেয়।
রাজু ভাবে এটা কি ধরনের মেয়ে??? এভাবেই দিন যায়, হঠাৎ একদিন রাজু ছাদে এসে দেখতে পায় নুপুর একা দাড়িয়ে। কেউ নেই তার সাথে। এই তো সুযোগ মনে মনে ভাবলো রাজু। নুপুরের কাছে গিয়ে বলল কি বেপার ? কেমন আছো? কি করছো? নুপুর বলল এইতো কিছুই না। রাজু বলে উঠলো আমি তো তোমাকে নোট দেই, পড়ায় হেল্প করি।
আমাকে একটু হেল্প করবে? নুপুর বলল হ্যাঁ বলো… কি করতে পারি? রাজু বলল আমি না একটা মেয়েকে ভালবাসি কিন্তু ভয়ে কিছু বলতে পারি না। কি করা যায়? নুপুর বলল যে ভয় না পেয়ে ডাইরেক্টলি ওকে বলে দিতে যে ও মেয়েটাকে ভালবাসে।
রাজু সাথে সাথে বলল যে, আমি তোমাকে ভালবাসি। অনেক দিন ধরে বলবো বলবো ভাবছি কিন্তু বলতে পারছি না। নুপুর অবাক হল আর রাগ করল কিন্তু কিছুই বলল না। বলল যে শুধু কয়েকদিন টাইম চাই। রাজু বলল ওকে!!!
কিছুক্ষন দুজনই চুপ। হঠাৎ রাজু বলে উঠলো তোমার হাতটা একটু ধরতে পারি? নুপুর বলল আমি কি তোমার প্রোপজাল এ হ্যাঁ বলেছি? তো হাত কেন ধরবা ? সরি!!! বলল রাজু।
অনেক দিন দেখা যায় না নুপুরকে। ওই ঘটনার পর নুপুরকে আর দেখেনি রাজু। রাজু বুঝতে পারলো যে নুপুর কি উত্তর দিবে। তারপরও তার মুখ থেকে শুনতে চায়। একদিন দেখা হল… রাজু বলল আমার উত্তর কৈ? নুপুর বলল দেখো আমার আর তোমার মধ্যে এফ্যায়ার কখনই না। আর তুমি অনেক স্মার্ট ছেলে, অনেক ভাল মেয়ে পাবা। So আমাকে আর ডিসটার্ব কর না। অনেকটা নিষ্ঠুর হয়ে কথা গুলো বলল। রাজুও কিছু বলল না শুধু দুচোখ চলচল করে তাকিয়ে দেখলো নুপুর চলে যাওয়া।
কিছুদিন পর নুপুর জানতে পারে রাজুকে পরিবার থেকে জোর করে বিয়ে করানো হচ্ছে। বেচারা বিয়ে করতে চাচ্ছে না। তারপরও জোর করায় মূলত বিয়েটা হয়ে গেল। বিয়ের পর নতুন বউকে নিয়ে বাড়িতে এসেছে। বউটাউ হয়তো বুঝতে পেরেছিল যে তার বর অন্যকোন মেয়েকে ভালবাসে।
রাজু নুপুরকে একটি ডায়রি দিল। আর বলল এটা আর ফেরত দিতে হবে না। বাসায় গিয়ে রাতে পড়িও। ডায়রিটা পরে নুপুর জানতে পারলো যে রাজু কতটা ভালোবাসতো নুপুর-কে। ওদের কখন কোথায় কি কথা হল? নুপুর কোন দিন কোথায় যায়? কোন দিন কি রঙের জামা পরে সব তো রাজু জানে। যেদিন নুপুর ওকে refuse করে সেদিন ও সারারাত বাইরে ছিল , বাড়ির ভিতরে যায় নি। সারারাত সুধু কেঁদেছে।
আর সবার শেস পেজে লেখা ছিল “আমাকে কখনো বুঝলে না যে তোমাকে কতটা ভালবাসি।” এই কথাটা পড়ার মাত্র নুপুরের চোক দিয়ে অশ্রু ছল ছল করে পরতে লাগলো!!! তারপর থেকে ওরা ওই বাসা ছেড়ে অন্য বাসায় চলে যায়। এর পর সেই চুপচাপ মেয়েটি আরও বেশি চুপচাপ হয়ে যায়। দিন কাটছে! ওরা একলা, নিঃসঙ্গ একাকিত্তে। নুপুর বিয়ে করে নি আজও…