নাজমুল : I Love you নীলা।
নীলা : কি বলতেছো তুমি নাজমুল এগুলো।
নাজমুল : বলছি যে তোমাকে ভালোবাসি।
নীলা : এত বড় সাহস হয় কেমন করে তর.?
নাজমুল : ভালোবাসার কথা বলতে সাহস লাগে না নীলা।
নীলা : তোর চেহারা তুই আয়নায় দেখেছিস কেমন দেখা যায়.?
নাজমুল : দেখেছি। আমি তো একটু কালোই। ভালোবাসা সাঁদা কালো দেখে হয় না নীলা।
নীলা : তুই কেন আমার পেছনে পড়ে আছিস?
নাজমুল : জানি না। আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি। তোমাকেই চাই জীবনের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার পরেও আগেও। শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।
নীলা : কোনো লাভ হবে না। শুধু শুধু পড়ে আছিস ২ বছর যাবৎ।কোনো কিছু হয়নি আর হবেও না।
নাজমুল : হবে কিনা তা আমি জানি না। তবু ও আমি তোমাকেই ভালোবাসি।
নীলা : যা এখান থেকে দুর হ। আর কখনও আমার সামনে আসবি না।
নাজমুল : ভালো যখন বেসেছি তখন আসব ই।
যদি পৃথিবীর রং ঘোলাটেও হয়। যদি তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু ও তবুও আমি আসবো তোমাকেই ভালো বাসব। ( নীলা কোনো কথা না বলেই চলে গেল) নাজমুল দেখতে কালো। হয়ত কালো বলেই নীলা নাজমুলকে পছন্দ করে না। নাজমুল তবু নীলাকেই ভালোবাসে। যেমনটা বেসেছে এই ২ টি বছর। কালো ছেলেদের কেন প্রেমিকা জুটে না কঁপালে। কালো বলে কি আমি মানুষ না। আমার কি হৃদয় নাই। আমার কেন ভালোবাসার মানুষ হয় না কেন কেন। এভাবে কেন কষ্ট পাই আমি।
আমার কেন আগা ঘুরা বুঝার মানুষ নাই। এইসব ভাবতে থাকে থাকে নাজমুল। ( এভাবেই কেটে যায় আরো ছয়টি মাস। আবারো নীলাকে একই কথা গুলো বলে নাজমুল তবুও কোনো লাভ হয় না) তখন থেকে আর ডিষ্টার্ব করে না নাজমুল নীলাকে। নীলার ও মনের ভেতর যেন কেমন লাগে। নাজমুলকে তেমন দেখাও যায় না। নীলাও কি নাজমুলের প্রেমে পড়ে গেছে তাহলে। নীলা খোঁজ নিয়ে দেখে নাজমুল অসুস্থ। নাজমুল তারপর নীলাকে একবার ডিষ্টার্ব করে। তবু কিছুই হয় না। তখন থেকে ৩ মাস আর কোনো দিন নাজমুল নীলার সামনে যায়নি। তারপর নীলা নাজমুলের শুন্যতা টা বুঝতে পারে। নাজমুলের আবার একটা ভালো বান্ধবী ছিল ঝিনুক। ঝিনুকের মনটা ছিল একদম সাঁদা সিধে। নীলা ঝিনুকের কাছে আসে আর বলে আমি নাজমুলকে ভালোবাসি। ঝিনুক : সত্যি বলছ তো নীলা?
নীলা : হ্যাঁ, খুব ভালোবাসি নাজমুলকে আমি। তুমি আমার নাজমুলকে এনে দাও প্লিজ।
ঝিনুক : অপেক্ষা করো আসবে নাজমুল।
নীলা : কখন আসবে।
ঝিনুক: বসো তুমি এখানে। আসবে ১ ঘন্টার মধ্যে। আচ্ছা তুমি নাজমুলকে এত অবহেলা করছো কেন.?
নীলা : আমি জানি না। ( নাজমুল আসল ঠিক দেড় ঘন্টা পড়ে)
ঝিনুক : আসতে দেরি করলি কেন?
নাজমুল : আগে বল নীলা এখানে কেন?
নীলা : আমি তোমাকে ভালোবাসি নাজমুল।
নাজমুল : কালো ছেলেকে কেন। অনেক সুন্দর ছেলে আছে। তাদের একটা দেখে প্রেম করো।
নীলা : আমি তোমার ভালোবাসার পরিক্ষা করলাম এতদিন। তুমি বলতে যে আমাকে সারাজীবন পাশে চাও?
নাজমুল : চাই ই তো।
নীলা : তাহলে আজ কেন এমন করছো। বলছো না কেন I Love You……
নাজমুল : I Love you নীলা।
নীলা : সারাটা জীবন এমন করেই কি ভালোবাসবে আমাকে।
নাজমুল : বাসবো। আজীবন ভালোবাসবো তোমাকে।
(এভাবেই বড় গেল নাজমুল ও নীলা। নীলা ধনী বাবার একমাত্র মেয়ে) নীলার বাবা নীলাকে বিয়ে দিবে বলে ঠিক করেছে। নীলাও বলেছে বিয়ে করতে হলে নাজমুলকেই করব। নীলাকে তার বাবা জোর করেই অন্য ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাচ্ছে। দুদিন পরেই নীলার বিয়ে। নীলা আর নাজমুল ঠিক করছে তারা পালিয়ে যাবে বহুদুর অজানায়। যেখানে তাদের কে কেউ বাধা দিতে পারবে না। ঠিক বিয়ের আগের রাতেই তারা পালিয়ে গেল। তারা ঠিক করছে রাতের ট্রেনেই টাংগাইল ছাড়বে।
দুজনেই ভালো ভাবেই এসেছে তাদের বাড়ি থেকে। রাতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় দুজনেরই ঠান্ডা লেগে যায়। ষ্টেশনে পৌছাতেই রাত ২ টা বেজে যায়। ট্রেন ছাড়বে ভোর ৫ টায়। তারা রাতটি কাটিয়ে চলে গেল পরের দিন চট্রগ্রাম। ঠিক সন্ধ্যায় তারা হোটেলে পৌছায়। রাতে নীলাকে রেখে খাবার আনতে গেছে নাজমুল। এখনও আসে না কেন নাজমুল। রাত বাজে নয়টা। এই চিন্তা নীলার মাথায় চাপের সৃষ্টি হয়। কেন আসছে না নাজমুল।আাবার বাহিরে কিশের যেন শব্দ শোনা যাচ্ছে এক্সিডেন্ট হয়েছে। নীলা বাহিরে গিয়ে দেখে অনেক মানুষের ভিড় জমেছে। এই ভাই শুনুন কি হয়েছে এখানে ( নীলা) একটি ছেলেএক্সিডেন্ট করেছে (প্রথিক) নীলা এগিয়ে গিয়ে দেখে নাজমুলের শরীর নিস্তব্ধ শুয়ে আছে নাজমুল।
না না না এ হতে পারে না। নাজমুল তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে পারো না। তোমাকে ছাড়া আমি কি নিয়ে বাঁচব। তুমি আমার, তোমাকে আমার কাছে থেকে কেউ আলাদা করতে পারবে না, পারে না। এইসব বলতে বলতে নীলা অজ্ঞান হয়ে যায়। যখন জ্ঞান ফিরে তখন নীলা আর কাউকে চিনতে পারে না। শুধু বলে নাজমুল কেন চলে গেলে আমাকে ছেড়ে কি দোষ করেছিলাম আমি। আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি। এভাবে আস্তে আস্তে নীলা পাগলে পরিনত হয়। এক সময় কোথায় যেন হারিয়ে যায় নীলা। কেউ নীলার কোনো খোঁজ খবর জানে না। কেউ দেখে নি কোথায় চলে গেছে নীলা।
( সমাপ্ত)