কয়েকদিন আগে আমার রিলেশন হয়েছিলো মার্ক জুকারের ফেসবুকের কল্যানে। রিলেশন বলে যেই সেই রিলেশন না। যাকে বলে চুটিয়ে প্রেম করা। ছেলেটার নাম রাহিদ। এই আধাবৃদ্ধ বয়সে যে শেষমেষ আমি সিঙ্গেল নামক চিরন্তন অভিশাপ কাটিয়ে উঠতে পারবো,এজন্যই আমার মহাআনন্দে পেটের ভেতর ঝড়-তুফান বয়ে গিয়েছিলো। আজীবন, “আপু আপনি সুন্দর লিখেন” “আপনার লেখায় অভিভুত” কিংবা “apo kob balo liken”…টাইপের মেসেজ পেয়ে গেলেও “আই লাভ ইয়্যু” টাইপের মেসেজ কপালে জোটেনি! তাই যখন রাহিদ বলেছিলো,সে আমায় ভালোবাসে! আমি আনন্দে তিন-চারবার লাম্ফঝম্ফ দিয়ে এক প্লেট বিরিয়ানি নিয়ে ল্যাপটপের সামনে বসলাম। আমার আবার অতি আনন্দে খিদে পায়! দেখলাম রাহিদ মেসেজ দিচ্ছে-
-আপনি হয়তো বিশ্বাস করবেন না। আমি সত্যিই আপনার প্রেমে পরেছি!
ওয়াহ! যতবার এই কথাটা শুনছি আই মিন চ্যাটস্ক্রীনে যতবার লেখাটা দেখছি খুশিতে আমার মনটা আঁকুপাঁকু করে উঠছিলো! তবুও ভাব নিয়ে বসে থাকলাম এই দেখার জন্য তার ধৈর্য্য কতটুকু। নাহ,দেখলাম ২০-২৫ বার লাভ ইয়্যু লাভ ইয়্যু করার পর ব্যাতিক্রম কিছু লেখা এলো। সেখানে লেখা ছিলো,
-তুমি কি আমার প্রোপোজাল এক্সেপ্ট করবা না? না হলে আমি গাড়ির নিচে ঝাপ দেবো! আহা! এতই ভালোবাসে যে গাড়ির নিচে ঝাপ দিবে। খুশিতে আমার ইচ্ছে করছিলো ১০০০ হর্স পাওয়ার বেগে লাফানো শুরু করি। আমি ভাবলাম নাহ,থাক। একটা রিপ্লাই দিয়েই দেখি। গাড়ির তলে পরলে টরলে তো কেস খাওয়ার আশঙ্কা আছে। তাছাড়া আমার এই অভিশপ্ত সিঙ্গেল জীবনের প্রথম আশার আলো বলে কথা! তারপর আমি বললাম,
-কি বলো! গাড়ির নিচে ঝাপ দিবা মানে?
-হ্যা। তুমি প্রপোজাল এক্সেপ্ট না করলে আমি তাই করবো।
-তুমি কি পাগল?
-না,আমি সুস্থ মস্তিস্কে বলছি।
সুন্দরীদের একটু ভাবটাব না থাকলে কেমন যেনো লবন ছাড়া তরকারীর মতো লাগে। যদিও নিজেকে কখোনোই সুন্দরী মনে হয় নি। তবুও এমন একটা হ্যান্ডসাম ছেলের কাছ থেকে প্রপোজাল পাওয়ার পর নিজেকে অতীব সুন্দরীদের কাতারে ফেললেও দোষের কিছু হবে না বোধহয়! তারপর সামান্য ভাব নিয়ে বললাম,
-আচ্ছা। আমায় দু’দিন সময় দাও।
সে দু’দিন সময় দিয়ে অফলাইন হয়ে গেলো। ওদিকে আমি তো চরমমাত্রার উৎফুল্ল। একেবারে আতশ বাজির মতো আমার মনে ঠুস ঠাস করে লাড্ডু ফুটছে। আমার আবার মোবাইলে কখোনোই টাকা কিংবা এম্বি কিছুই থাকে না। কি করবো? মহাসিঙ্গেল বলে কথা! তাড়াতাড়ি ভাইকে দিয়ে বিশ টাকা রিচার্জ করিয়ে চার টাকা দিয়ে এয়ারটেলে চারঘন্টার জন্য ২৫০ এম্বি কিনলাম। এই অফারটা আমার মতো দুস্থ অসহায় পাবলিকের জন্য! যাই হোক,এম্বি কিনেই রাহিদের প্রোফাইল ঘাটতে লাগলাম। প্রোফাইলে নিজের ছবি তেমন নেই,কেবল ‘রাহিদ’ নামে আর্ট করা একটা ছবি ঝুলানো! কভারে অবশ্য একটা ছবি আছে,কিন্ত উল্টো দিকের। কালো রঙের পাঞ্জাবী পরে হাঁটছে! “জোস তো!”… কিন্ত পুরো প্রোফাইল ঘেটেও মুখ বোঝা যায় এমন ছবি দেখতে পেলাম না।
“শালা ফেইক আইডি না তো!” নাকি কেউ মজা করছে আমার সাথে! মাথাটা গেলো বিগড়ে। ইচ্ছে করছে একটা ফেইক আইডি খুলে তারে টেক্সট করি, “caala toi akta pek ide”…কিন্ত না। বিপদে ধৈর্য্য ধরা জ্ঞানীর কাজ। আমি নিজের রাগ পূর্ননিয়ন্ত্রনে এনে ধৈর্য্য ধারন করলাম। এর মধ্যে মিনিট যায়,ঘন্টা যায় সে আর টেক্সট করে না। নিশ্চয়ই শালা ফেইক আইডি! দেখছো! আমার মতো একজন মহাজ্ঞানী মহাজনের ঘন্টা বাজিয়ে চলে গেলো! ইচ্ছা করছিলো তারে বিরিয়ানি দেখিয়ে এলাচ খাইয়ে দেই। আমি যখন রাগে গজগজ করছিলাম ঠিক তার তিন ঘন্টা পর ট্রুং করে একটা মেসেজ এলো। বাহ! মিস্টার ফেইক আইডি আবার মেসেজ দিলো!
– কি ভাবা হয়েছে?
-আপনি এখোনো আছেন? আমি তো ভেবেছিলাম মারা গেছেন!
-আমি মারা যাবো? তা যে কখোনো সম্ভব না!
-কেনো? আপনি মরবেন না?
-না,মৃত মানুষ মারা যায় না। বুঝলাম তিনি এখন নতুন কোনো ইমোশনাল গল্প ফাঁদতে চাইছেন। নাহ,তাকে সে সুযোগ দেয়া যাবে না। যা বলার স্ট্রেটকাট বলতে হবে।
-দেখুন,আপনার ইমোশনাল গল্প শোনার সময় নেই আমার।
-গল্প নেই কোনো আমার। তুমি চিন্তা করো না।
– তা বেশ! আপনি ফেইক আইডি ইউজ করেন কেনো?
– কোনটা ফেইক?
-সব ফেইক। একটা ছবিও নেই আইডিতে।
-এটা ফেইক? দেখো তো,সেই ২০০৯ থেকে ফেইসবুক চালাচ্ছি!
-যাই হোক। আপনার ছবি না দেখলে চিনবো কিকরে?
-আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও। আমার প্রোপোজালে রাজি তুমি?
ব্যাটা তো দারুন ঝামেলাদায়ক! রাজি না হলে ছবিও দেখাবেনা। নাহয় আমি শিওর হবো কিকরে কে এ? যা হবে হোকগা,ছবি দেখে যদি বুঝি সে পরিচিত,তাহলে ব্লক অপশন তো আছেই! আমি বললাম,
-দেখেন ভাই,আমার তিনকুল গিয়ে এককুলে ঠেকেছে। আমার নানীদের যুগে এই বয়সে তারা পান খাওয়া আরাম্ভ করতো। আমার কপাল ফাটা দেখে একটা প্রেমও করতে পারি নি। এখন বুড়ো হইছি। প্রেম করতে পারবো না,তবে আপনাকে পছন্দ হলে বিয়ের কথা ভেবে দেখতে পারি।
মনে মনে ভাবলাম,দারুন জ্ঞানগর্ভ কথাবার্তা বললাম দেখা যায়! এরপরেই সে তার দুই তিনটা ছবি দিলো। ছবি দেখে তো আমি ধ্রাম করে তার প্রেমে পরে গেলাম। তারপর তার ডিটেইলস জিজ্ঞেস করলাম। সে বললো তার পড়াশোনা কামপ্লিট। এখন বিজনেস বা জব। আমিতো মনে মনে মহাখুশি। আমার অনার্স শেষ হতে আরো দুই তিন বছর লাগবে। ততদিনে তো তার একটা হিল্লে হয়েই যাবে। আমি খেয়াল করলাম সে প্রেমিক হিসেবে অত্যান্ত সুপুরুষ। এবং তার সময়জ্ঞান প্রখর! সারাদিনে তাকে অনলাইনে দেখা যায় না,মাঝে মাঝে সন্ধ্যার দিকে অনলাইন হয়। দুই একটা টেক্সট তারপর গায়েব। তিনি আবার খুব ভালো কবিতা লিখতে জানতেন। এতই ভালো যে কবিতাগুলো পড়লে আমার গাপুস করে সেগুলো গিলে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে হতো।
আমাদের মধ্যে যতবার ভালোবাসা-বাসি আদানপ্রদান হতো,তার চাইতে বেশি আদানপ্রদান হতো কবিতার। শুনেছিলাম প্রেমিক নাকি প্রেমিকার ছবি চাইতে একেবারে মাহের! তা যা শুনেছি শুনেছি,কিন্ত আমার প্রেমিক রিলেশনের পাঁচদিনের মাথাতেও কোনো ছবি চাইলোনা ভাবতেই কেমন কেমন জানি লাগতো। প্রত্যেকদিন আমি শাড়ি চুড়ি পরে সুন্দর করে সেজেগুজে ছবি তুলে রাখতাম,তাকে দেবার আশায়। কিন্ত হতচ্ছাড়া নচ্ছর ব্যাটা ছবিই চাইতো না। নিজ থেকে ছবি দেয়াটা কেমন জানি। নিজেকে ছ্যাচরা মনে হয়। তাই আর নিজ থেকে ছবিটাও দেয়া হতোনা আর না শোনা হতো তার মুখে আমার প্রশংসা! এমন করেই সম্পর্কের এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলো। ভালো প্রেমিকই পেয়েছি বটে! শান্ত,সুশীল,শিক্ষিত আর দেখতেও মাশাআল্লাহ! আর কি চাই জীবনে? কিন্ত তাকে দেখার জন্য মনটা কেমন উসখুশ করতে লাগলো। তো একদিন সাহস করে জিজ্ঞেস করেই বসলাম,
-আপনার বাসা কোথায়?
-চট্টগ্রাম।
-চট্টগ্রাম, সে তো জানি। কিন্ত চট্টগ্রামের কোথায়?
-আগ্রাবাদ।
বাহ্। কাছেই তো। আমার বাসা থেকে আগ্রাবাদ টেক্সিতে আধাঘন্টার পথ। দেখা করে আসা যাবে। তারপর অনেক খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তার বাসার এড্রেসটাও নিয়ে নিলাম। এভাবেই আমাদের প্রেম চলছে। আমার গ্যালারিতে তখন তার ২০ টার মতো ছবি জমা হয়েছে। প্রায়ই সময় সেগুলো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতাম। অদ্ভুত ভালোলাগা কাজ করতো তখন। তার দেয়া কবিতাগুলি একটা ডায়েরিতে টুকে রাখতাম। আমি তেমন লিখতে পারি না। তেমন বলতে,আমার ওসব লিখালিখি আসে না। কিন্ত আমার প্রেমিকরত্নের লেখার উপর আমি একেবারেই ক্রাশড। তার প্রায় সব কবিতাতেই আমার চোখের বর্ননা,চোখের উপমা,চোখের প্রশংসা। দুই একটাতে হাসির উপমা। যাক গে। কবিতাগুলো পড়তে বেশ লাগতো। যতই হোক,নিজের উপমার কবিতা। আকর্ষনীয় তো বটেই!
এরইমধ্যে একদিন ঠিক করলাম তাকে সারপ্রাইজ দেবো। তার সাথে গিয়ে দেখা করবো। প্ল্যানমাফিক শুক্রবার সকাল সকাল তার দেয়া ঠিকানা অনুসারে পৌছলাম। তখন সকাল ১০.০০ টা বাজে। মোটামুটি সাজানো একটা বাসা। ঘরদোর গোছানো। রাহিদের নাম ধরে দু’তিনবার ডাক দিলাম। নাহ্,কেউ এলো না। আরেকবার ডাক দিতেই ভেতর থেকে একজন বয়স্ক ভদ্রলোক বেরিয়ে এলেন। তিনি অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বললেন,
-কে তুমি মা? কাকে চাই?
-চাচা,রাহিদ কে প্রয়োজন ছিলো।
-কাকে?
-এই যে এই ছেলেটা। এমন বলেই আমি ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে রাহিদের ছবি দেখালাম। তিনি খুব অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন। তারপর বললেন,
-তুমি কি নিশ্চিত তুমি এর খোঁজেই এসেছো?
-নিশ্চিত মানে চাচা? একশো ভাগ নিশ্চিত। সে এই ঠিকানাই দিয়েছে আমায়।
-আসো ভেতরে আসো।
আমি ভেতরে গেলাম বাসার। সেখানের দেয়ালে রাহিদের অসংখ্য ছবি টাঙানো। সুন্দর একটা হাসি। দেখেই চোখ জুড়িয়ে যায়। যেনো হাজার বছর তাকিয়ে থাকা যায় সে হাসির দিকে!
-মা তুমি রাহিদের কি হও?
-চাচা,আমি তার বন্ধু।
-মনে হয় অনেকদিন যাবৎ তার সাথে তোমার দেখা সাক্ষাত নাই। তাই কিছু জানো না।
-কি জানার কথা বলছেন চাচা? বুঝতে পারছি না।
– রাহি বাবা তো দুই বছর আগেই মারা গেছে!
-কি!
বয়স্ক লোকটার কথা শুনে মোটামুটি মাথার উপর আকাশ ভেঙে পরলো আমার। এ লোক কি বলছে এসব! কিন্ত তার চেহারা তেখে মনে হচ্ছে সে বড্ড সিরিয়াস ব্যাপারটা নিয়ে।
-কি বলছেন আপনি? মারা গেছে মানে? তার সাথে আমার গতকাল রাতেও কথা হয়েছে।
-মা,এসব কি বলো তুমি? রাহি বাবা আজ থেকে দুই বছর আগেই একসিডেন্টে মারা গিয়েছে। আমি পাথর বনে গেলাম। সারপ্রাইজ দিতে এসে যে আমি নিচেই সারপ্রাইজড হয়ে যাবো একথা কে জানতো? আমার অবাক মুখের দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন,
-তার একজন মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছিলো। মেয়েটার নাম ছিলো ফিয়োনা। মেয়েটা খ্রীষ্টান ছিল। খ্রীষ্টান ছিলো বলে রাহি বাবার মা তারে মেনে নেয়নি। তারপর তারা লুকিয়ে লুকিয়ে বিয়ে করে। বিয়ে করে ফেরার সময় হঠাৎই একটা ট্রাক এসে ধাক্কা মারে তাদের ট্যাক্সিকে। সব লন্ডভন্ড হয়ে যায়। রাহিদ বাবা সেখানেই স্পটডেথ! কিন্ত তার স্ত্রী তখোনো বেঁচে ছিলো। তরিঘরি করে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। ডাক্তার রাহিদ বাবাকে মৃত ঘোষনা করে। তার স্ত্রীর চিকিৎসা চলতে থাকে। কিন্ত ডাক্তাররা বুঝতে পারে মেয়েটাও আর বাঁচবে না। তাই তার শেষ ইচ্ছাটা তার পরিবার সেই হাসপাতালের মেডিকেল টিমের কাছে বলে। মেয়েটার শেষ ইচ্ছা ছিলো তার শরীর দান করে যাওয়া। সেই মোতাবেক কাজ হলো। মেয়েটি মারা যাওয়ার মুহুর্তে তার শরীর দান করে গেলো।
ব্যাপারটা কি ঘটছে তা আমি কিছুই বুঝতে পারলামনা। লোকটা কি আমার সাথে ইয়ার্কি করছেন? কিন্ত না,লোকটার কথা যে ইয়ার্কি ছিলো না তা বুঝতে পারলাম রাহিদ এর ডেথ সার্টিফিকেট দেখে। তার মানে আমি একটা ভুতের সাথে প্রেম করেছি এতদিন! এসব কি ভাবছি? কিন্ত কিভাবে? একটা মৃত মানুষ কিকরে আমার জন্য কবিতা লিখতে পারে। কিন্ত এই ডেথ সার্টিফিকেট টা যে রাহিদের তা নিশ্চিত। ছবিগুলোও তো তারই! নাকি কেউ ফাজলামো করছে আমার সাথে একজন মৃত মানুষের ছায়ার আড়ালে। লোকটার কথা শুনে এও জানলাম,সে রাহিদের চাচা। রাহিদের মায়ের মৃত্যুর পর সে এই বাংলো দেখাশোনা করে। আমি চলেই আসছিলাম এই ভাবতে ভাবতে শেষমেশ একটা মৃত মানুষের সাথে প্রেম! নাকি অন্যকিছু?… হঠাৎই আমার মনে একটা প্রশ্ন এলো। আমি মুখ ঘুরিয়ে রাহিদের চাচাকে জিজ্ঞেস করলাম,
-চাচা,ফিয়োনা মারা গিয়েছিলো কবে?
-রাহিদ মারা যাওয়ার সাতদিন পর। অর্থ্যাৎ,১৬ই আগষ্ট,২০১৬।
-হোয়াট!
আমার মাথা ভনভন করে ঘুরতে লাগলো। দু’বছর আগের কথা। আমি ছাদ থেকে আকস্মিকভাবে পরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলি। ডাক্তাররা বলেছিলেন,আর্জেন্ট চোখ পাওয়া না গেলে অন্ধও হয়ে যেতে পারি। কিন্ত কিছুদিনের মধ্যেই চোখ ম্যানেজ হয়ে যায়। শুনেছিলাম,এক মৃত্যুপথযাত্রী রোগী নাকি আমায় চোখ দান করেছেন স্বেচ্ছায়। তবে সেই কি ফিয়োনা? মাথাটা ঘুরতে লাগলো ভনভন করে।
-মা পানি খাবা?
-জ্বি,জ্বি…
আমি থরথর করে কাঁপছি। আমি কি তবে রাহিদের স্ত্রীর চোখ নিয়ে ঘুরছি? আমার মনে পড়লো রাহিদের সেই কবিতাটি, “হরিনীর সেই চোখজোড়াতে হাজার তারার মেলা ডুবছি সদা চোখের তারায় ভাসিয়ে প্রেমের ভেলা।” না না,আর কিছু ভাবতে পারছি না আমি। দ্রুত ব্যাগ থেকে ফোন বের করে রাহিদের মেসেজ বক্সে গেলাম। দেখলাম আগের কোনো কনভার্সেশনই নেই। সব অটো ডিলেট। কেবল লাস্ট একটা মেসেজ যেটা সবেই এসেছে। সেখানে চোখ পরতেই দেখলাম লেখা, “আমার ফিয়োনার খেয়াল রেখো। বিদায়” মেসেজটা আমি পরার সাথে সাথেই অটো ডিলেট হয়ে গেলো। ততক্ষনাৎ আমি রাহিদের আইডিতে ঢুকে দেখলাম সেখানে লেখা ঝুলছে “Remembering”।