টিউশনিতে বিয়ে

টিউশনিতে বিয়ে

ঘুম থেকে উঠেই দেখি আমার চার হাত পা বাঁধা। নড়া চড়াও করতে পারছিনা। ওমা এমন কি হলো মাথায় কিছু আসছেনা।।

—আমি স্বপ্ন দেখছিনা তো?

আমি নিম্ন বিত্ত ফ্যামিলর মেয়ে। বরাবরই পড়ালেখায় অনেক অাকর্ষণ। ক্লাশে সর্বদাই আমি ফার্স্ট হই। কিন্তু লেখাপড়ায় যে মাল মসলা লাগে তা কোনো দিনও পাইনি। অনেক সময়ই না খেয়ে কলেজ যেতে হয়েছে। আবার কলেজ থেকে ফিরেও খাবার পাইনি। ক্লান্ত দেহে এক গ্লাস জল পান করে কাটিয়ে দিয়েছি। তবু ঠোঁটের কোণে হাসির ঝিলিক টা লেগেই থাকতো। পিছনে কেউ না আবার বুঝে ফেলে। বিকাল হতেই টিউশনি করতে বেরিয়ে পড়ি। ছাত্র পড়াতে গিয়ে অনেক সময় চা নাস্তা পাই আবার অনেক সময় পাইওনা।

আমাদের প্রাচুর্য্য সমৃদ্ধি বৈভব না থাকলেও আত্ম সম্মান অনেক উপরের লেভেলের। নভেম্বর শেষ হতেই ডিসেম্বর ছুঁই ছুঁই করে। বুকটা ধুক ধুুক করে কখন ছাত্র-ছাত্রীর গার্ডিয়ান আসতে মানা করে দেয়। আবার অনেকে ডিসেম্বরে পনের তারিখ অর্ধেক মাইনে হাতে ধরিয়ে অন্তরে লাল বাতি জ্বালিয়ে দেয়।
কারণ ডিসেম্বরের পনের তারিখের মধ্যে পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়। তো তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। এটা হলো নিম্ন বিত্তের লাল কার্ড দেখানোর মাস। সারা বছর যুদ্ধ করে ছাত্র-ছাত্রীকে পড়িয়ে শেষ প্রহরে এসে রেফারি লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠের বাইরে বের করে দেয়। হয়তো চোখের কোণে জল রেখে বা হৃদয়ে দগ্ধতা নিয়েই হাসির নাটকীয়তায় পূর্ণ অভিনেতা বা অভিনেত্রীর মত হস্ত কর মর্দনে বেজে উঠে বিদায়ের ঘনঘটা।

আর হাঁটতে পারছিনা। মায়ের অসুধ, ভাইয়ের আবদার, ছোট বোনের হাসির মুখটা আর দেখতে পারবোনা। নিজ চোখটা বন্ধ করেই অনুভবের স্বপ্ন পেয়ালা বারবার ক্ষত বিক্ষত হচ্ছে। হৃদয় মন্দিরে শুরু হয়েছে ক্ষতের রক্ত ক্ষরণ। রাস্তাটা পার হয়ে রিক্ত শূন্য হস্তে বাসায় পৌঁছালাম। সবাই তাকিয়ে আছে উদাত্ত নয়নে। সবার উৎসুক চাহনী আমাকে আরও ডুবিয়ে দিচ্ছে যন্ত্রণার মহা সমুদ্রে। আমাদের গায়ে টিউশনির সীল মোহরে পেরেক মারা থাকে। আমি যে সংসারের বড় মেয়ে। এই সব বড় মেয়েদের কখনও প্রেম করতে নেই। সংসার নামক ছাতাটা সব সময় মাথার উপর বিদ্যমান থাকে। শিক্ষানবিশ থাকা কালে ছোটদের কথা ভেবে প্রেম নামক বস্তুটির গলা টিপে ধরতে হয়।
আর কিইবা করার আছে। যাই হোক আরও দুটো টিউশনিতে যেতে হবে কাল। দেখা যাক উনারা কত দেয়। খালি হাতে না পারি কারও দরজায় দাঁড়াতে না পারি মানুষের বাড়িতে কাজ করতে।

তবু বের হতেই হবে আমাকে। ডিসেম্বর মাসের বেতন না পেলে ছোট ভাই বোন মা তাদের কি খাওয়াবো! ভাইটার জন্য জুতা বোনের স্কুলের ব্যাগ মায়ের জন্য একটা সস্তা দামের শাড়ি আনতেই হবে । এখন যেগুলো পেয়েছি মায়ের ঔষধ আর চাল কিনতেই শেষ হয়ে যাবে। মা আগে সেলাই করতো এখন আর চোখে দেখেনা।একটা চশমার খুব দরকার। এভাবে টেনে টুনে আর কত চলা যায়! আমি এখন অনার্স পড়ছি ইকনোমিক্সে। স্যারদের বেতন বাকী বই কিনতে হবে আরও কত কিছু যে দরকার বলে বুঝানো যাবেনা। নুন থেকে শুরু করে আদি অন্ত সব আনতে হবে। এখন আর মানুষ দোকান বাকী দেয়না। সময় মত টাকা দিতে পারিনা বলে অনেক অপমানিত হয়েছি। শয়তান দোকাদার কাকা বাজে কথা বলে, “এই সুন্দরী টাকা দিতে হবেনা শুধু একটু রজনী সুখ দিও,আমাকে একটু আদরে বুকে তুলে নিও”।

আরও কত ফালতু প্যাচাল পারে। কাকা ডাকি তাও এমন বাজে কথা বলে। মায়ের পুরনো এক জোড়া বালা রেখেছিল আমার বিয়েতে দিবে বলে। সেই বালা জোড়া বেঁচে দোকানের ঋণ পরিশোধ করে ঋণ মুক্ত হই। মায়ের সে কি কান্না আমি সহ্য করতে পারিনি। গিয়েছিলাম গলায় দড়ি দিব বলে কিস্তু পারলাম না। সবার অসহায় মুখটা চোখের সামনে ভাসছে। জানেন, আপন চাচা বলে আমাদের মানুষের বাড়িতে কাজ করার জন্য। মায়া মমতা কিছু নেই। পাষান মানুষ আজ আমাদের খেলার পুতুল বানাচ্ছে। বাবা নেই বলে আজ আমাদের এই করুণ হালত। আমি তারিন ছোট বোন জেরিন, iভাই তানিন। আমার এক বান্ধবি ক,’দিন আগে একটা নাইট শিফটের কাজের কথা বলেছিল। আট হাজার টাকা মাইনে দিবে।এক বুড়ো মহিলা খুব অসুস্থ।রাতে উনাকে পাহাড়া দিতে হবে আর নিয়মিত অসুধ খাওয়াতে হবে।

এই তাজিন চল আমার বান্ধবী শ্যামার বাসায যাই। দেখি কাজটা নেয়া যায় কি না। আসতে বড্ড লেট হয়ে গেল। কাজটা অন্য জনে নিয়ে নিলো। আসলে ভাগ্য প্রসন্ন না হলে যা হয় আর কি! ঘরে মেশিনটা একমাত্র সম্বল। জেরিন একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। তারও কলেজ বেতন আরো খাতা কলম কিনতে হবে। মাথায় রাজ্যের একগাদা চিন্তা নিয়ে ঘরে প্রবেশ করেই দেখি ভাইটা কান্না করছে। ওর জুতো গুলো ছিঁড়ে গেলো বলে স্কুল মাষ্টার বের করে দিয়েছে।

ওকে সান্ত্বনা দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম এক নামী দামী জেলা প্রশাসকের একমাত্র বেগবান ইতর ছেলে রওনক চৌধুরিকে পড়াবার জন্য। বাসায় পৌঁছেই দেখি বেশ থমথমে পরিবেশ কাজের বুয়াও দেশের বাড়িতে গেছে। বাসায় ও একা একা খাটের উপর বসে টিভিতে ভয়ংকর কার্টুন দেখছে। রওনক,ম্যাম আজ পড়বোনা আপনার সাথে গল্প করবো। এটা কি বলছো সামনেই পরীক্ষা একটু পড়ে নাও সোনা। না,ম্যাম আপনাকে বলছিনা পড়বোনা। মানে পড়বোই না। ইট্স ওকে বাবু। আচ্ছা বাবু আজ কি খেয়েছো? কাজের মাসীতো বাসায় নেই। আজ খাবনা কিছু শুধু আইসক্রিম খাব ম্যাম। আপনাকে নিয়েই খাব। ক্লাশ এইট-এ পড়ে রওনক। আজ খুব গম্ভীর দেখাচ্ছে ওকে। খুব মায়া লাগছে ওকে দেখে। ওর আম্মু ওকে রেখে বয় ফ্রেন্ডের সাথে আমররিকা চলে গেছে। বলতে গেলে মোটামুটি ছাড়াছাড়ি হয়েই গেছে। ও প্রায়ই আমাকে বলে ম্যাম তুমি আমার মম হবে? আমি তোমাকে ভালোবাসি ম্যাম। প্লীজ ম্যাম রাজী হয়ে যাও ম্যাম।

ওর কথা আমি হেসেই উড়িয়ে দেই। এই যে রওনক বাবু খুব দুষ্টুমি করছো কিন্তু। কত বুঝিয়ে শুনিয়ে ওকে পড়াতে হয়। কত বায়না ওর। ওর বাসায় এলে দু’ঘন্টা নয় অনেক সময় তিন ঘন্টা সময়ও পার হয়ে যায়। কিন্তু সেলারি বেশি পাই বলে তেমন খারাপ লাগেনা। এত দুষ্টুমী করে মাঝে মধ্যে রাগ লাগে। তাও প্রকাশ করিনা। আমাদের মত অনাহারীদের রাগ করতে নেই। চারটে পয়সার জন্য গার্ডিয়ানদের কত কথা শুনতে হয়। রওনক, ম্যাম চলো আইসক্রিম খাই। ফ্রিজে থেকে দু’টো আইসক্রিম বক্স এনে আমার সামনে রাখলো। রওনক আমিতো আইসক্রিম খাইনা তুমি খেয়ে নাও বাবু। না ম্যাম আজ খেতেই হবে। আজ না খেলে আপনাকে বাসায় যেতে দিবনা। কি আর করা অনিচ্ছা সত্তেও আইসক্রিম খেলাম। শুধু এতটুকু বুঝতে পারছি মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছে। আর কিছুই মনে নেই। কিন্তু হঠাৎ আমাকে আবিষ্কার করলাম বিছানায় হাত পা মুখ বাঁধা অবস্থায়। পাশেই দেখি রওনক দাঁড়িয়ে হাসছে। ওর হাসি যেনও অাকাশ ছোঁয়া। শুধু হেসেই যাচ্ছে হেসেই যাচ্ছে। আমি বুঝেই পাচ্ছিনা ও আমার সাথে এমন টা কেন করলো।

প্রচন্ড জোরে চিৎকার করে হাসছে আবার একটু পরেই হাসি থামিয়ে চিৎকার করে কাঁদছে। উফফ ছেলেটার কি হলো? পাগল হয়ে যায়নিতো? মুখের বাঁধন খুলতে না পেরে খুব অসহায় ভাবে ওর কান্না দেখতে লাগলাম। একটু পর ওর পাপ্পা বাসায় এসে দেখে রওনক জোরে জোরে চিৎকার করে কান্না করছে। আশে পাশের মানুষ জন চিৎকার শুনে দৌড়ে এসে আমাকে বাঁধন অবস্থা দেখে আশ্চর্য্য হয়ে আমাকে দেখছে। কিন্তু রওনক চিৎকার করে কান্নাই করছে। ওর পাপ্পা আমার হাতের বাঁধন খুলতে চাইলে রওনক এক ধাক্কায় উনাকে ফেলে দিল। উনিও হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। উনি কিছু বুঝতে না পেরে ডাক্তার ডাকলেন। হয়ত মানসিক কোনও প্রবলেম হয়েছে। হঠাৎ কান্না থামিয়ে বলল,”ম্যাম বলো তুমি আমার মম হবে কি না! আজ তোমাকে বলতেই হবে আমার মম হবে আর না হয় তোমার বাঁধন খুলে দিবনা”। ওর কথায় দাঁড়িয়ে থাকা সবাই হো হো করে হেসে উঠলেন।

ওর পাপা এ কথা শুনে মুচকি হেসে এ রুম থেকে বােরিয়ে গেলেন। এতক্ষণে ওর কথা শুনে হাসব না কাঁদবো বুঝতে পারছিনা। ও একটু এগিয়ে এসে আমার মূখের বাঁধন খুলে দিয়ে বলল, এখন বল তুমি রাজি কিনা। তুমি রাজি না হলে আমি মরে যাব”। এক দৌড়ে ওর পাপ্পা কে ধরে নিয়ে আসল আমার কাছে। বল পাপ্পা তুমি উনাকে আমার মম বানিয়ে দিবে। আমি উনাকেই আমার মম হিসেবে চাই। আর কিচ্ছু শুনতে চাইনা। ওর পাপ্পা বোকা বনে গেলো। উনি শুধু এটুকুই বললেন, ‘শোন রওনক আগে উনার বাঁধন খুলে দাও উনি কষ্ট পাচ্ছেন’।

—আগে তোমরা দু’জনেই আমাকে কথা দাও আমার কথা রাখবে। বলো পাপ্পা তুমি রাজি! বিয়ে অনেক বড় ব্যাপার মাই সান। ঠিক আছে তুমি বাঁধন খোল আমরা বসে আলোচনা করছি। আমিও বললাম, রওনক বাবা উনি ঠিকই বলছেন বাঁধন খুলো দেখি কি করা যায়। রওনক, ঠিক আছে ম্যাম আমি বাঁধন খুলে দিচ্ছি কিন্তু আমার কথা না রাখলে সোজা ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আকাশের তারা হয়ে যাব। আচ্ছা বাবু আজ অনেক রাত হয়ে গেছে বাসায় চলে যাই।সবাই চিন্তা করছে হয়ত আমার কিছু হয়েছে ভেবে মা অসুস্থ হয়ে যাবে। ম্যাম আপনি শুধু মায়ের দিকটাই দেখলেন! আমার মরা মুখটা দেখেন না? আমি আপনার সাথে বাসায় যাবো আপনার সাথেই থাকবো। চলেন তাহলে যাই।

রওনকের বাবা কিছু বলছেনা। চুপ করে দাঁড়িয়ে আমাদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। ছেলের পাগলামীর কাছে উনি হেরে গেলেন। রওনক যে পরিবেশ বৈভবে মানুষ আমাদের বাসায় ও কিভাবে থাকবে? শুধু কাঁথা বিছানো চৌকি ছাড়া কিছু নেই। কি খেতে দিবো তাকে! রাজ্যের চিন্তা নিয়ে ওদের বাসা থেকে বেরিয়েছি। রওনকের বাবা গাড়ির ড্রাইভার কে আমাদের বাসায় দিয়ে আসতে বললেন। গাড়িতে ওঠেই রওনক আমাকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে। আমি আর কিছু না বলে ওকে আদর করতে লাগলাম। বাড়ি পৌঁছাতেই মা বোন ভাই দৌড়ে গাড়ির কাছে এলেন। ওরা সবাই আমাকে ধরে কান্না করতে লাগলো। রওনক কে দেখে ওরা পুরো অবাক!

এই তারিন মা তোর কি হয়েছিল? সেই কোন দুপুরে বেরিয়েছিস আর এখন রাত দশটা বাজে তুই বাড়ি আসলি।
মা ঘরে চলো বলছি,রওনক এসো ঘরে যাই। হ্যাঁ চলুন মম।(রওনক) ওর সামনে আমার লজ্জার শেষ নেই কোথাই যে বসতে দেই। মা ও আমার স্টুডেন্ট রওনক। ওর আমাকে চাই মম হিসেবে তাই হাত পা বেঁধে রেখেছিলো। মা,হাহাহা কি বলিস তারিন? এইযে আমার নাতি রওনক সত্যি নাকি? রওনক, জ্বী নানু, আজ থেকে ম্যাম আমার মম আর আপনি আমার নানু। এই যে তানিন মামা তুমি আমার সাথে খেলবে! আর জেরিন হলো আমার অাদরের খালামণি। আমি তোমাদের সবাইকে চাই। সবাই খুব আনন্দ করছে কিন্তু রওনক কে কি খাওয়াবে হাড়িতে কিছুটা ভাত আর পড়ে রইলো একটু শুটকীর তরকারী। এই ভেবে আমি অস্থির!

রাত এগারোটা বাজে হঠাৎ গাড়ি হর্ণ বেজে উঠলো। রওনক গাড়ির আওয়াজ পেয়েই নানির পিছনে গিয়ে লুকিয়ে পড়ল। মনে করেছে তার বাবা নিতে এসেছে বোধ হয়। আমি কি করে উনাকে ঘরে আনবো এত বড়লোক পদে ডি,সি। আমার মত গরীব মেয়ে কিভাবে উনার সেবা করবে ঘরেতো কিছুই নেই। আসসালামু আলাইকুম স্যার আপনি! হ্যাঁ ওয়ালাইকুম আসসালাম। রওনক কোথায়? স্যার ও আপনার আসার শব্দ পেয়ে মায়ের পিছনে লুকিয়েছে। আমার ছেলেটা কি যে পাগলামী করছে বলুনতো ওকে কি করে বুঝাই! স্যার আসুন ঘরে যাই। হ্যাঁ চলুন। ড্রাইভার জিনিস গুলো নিয়ে এসো। ড্রাইভার, জ্বী স্যার।

স্যার একটা কথা বলি, আমরা খুব গরীব মানুষ। আপনাকে যত্ন করার মত কোনও কিছুই নেই। আমার অনেক লজ্জা লাগছে। আরে এসব কি বলেন! সবার সব কিছু থাকেনা কিন্তু অনেক বড় মন থাকে। যে মন দিয়ে আপনি আমার ছেলের মন কেঁড়ে নিয়েছেন। আসুন স্যার বসুন। হুমম। রওনক আমার অনেক অদরের সন্তান। তাকে আদর করার মত কেউ নেই। আপনার অনেক মায়া। তাইতো আপনার মধ্যে সে ‘মা’ খুজে পেয়েছে। রাতে ঘুমুতে গেলেই ও আমাকে প্রায়ই আপনার কথা বলতো। কিন্তু আমি কিছুই ভেবে পেলাম না। কি করে আপনাকে বলবো! একটা বাচ্চা ছেলের আবদার কি করে রাখবো! যদি আপনি মাইন্ড করেন।

সাত পাঁচ ভেবে আর বলা হয়ে ওঠেনি। আমি আপনার আম্মার সাথে কথা বলতে চাই। উনাকে একটু ডেকে দিন প্লিজ! রকিব, আসসালামু আলাইকুম। মা,ওয়ালাইকুম আসসালাম। জ্বী বাবা বলুন কি বলবেন! রকিব,আমি আমার রওনক কে ছেড়ে একরাতও কাটাইনি। ওর চলে আসাতে আমি খুব শূন্যতা ভোগ করতে থাকি। মা,জি আপনার আপত্তি না থাকলে আমি আমার ছেলের কথার সত্যিকারের রূপ দিতে চাই। আপনার মতামত কি? আর তারিনের কি মত তাও জানাবেন। রওনক মাই সান এদিকে আসো। রওনক,পাপ্পা আমি যাবনা। আমি একেবারে আমার মম, নানু,খালামণি মামাকে নিয়েই একসাথে বাসায় যাবো। রকিব, আরে পাগল কি বল এসব? আমি কি করে থাকবো তোমাকে ছাড়া? রওনক,পাপ্পা তুমি যাবে কেন?

তুমিও আমাদের সাথে এখানে থেকে যাও ব্যাস প্রবলেম সল্ভ। রাকিব,বাবু সোনা আমিতো তোমার কথা রেখেছি। এখন উনারা উনাদের মতামত জানালে তবেই এটা সম্ভব। রওনক,ম্যাম, নানু এদিকে এসোতো! বল তোমরা কি রাজী না? নানু, ঠিক আছে রওনক বাবু দেখি তেমার ম্যাম কি বলে। ম্যাম সবার সামনে বল আমার মম হবে কি না। ম্যাম,আমি কি বলবো আমার আম্মা যা বলবে তাই করবো। আরেকটা কথা আমি বিয়ে করে নিলে মা,ভাই বোনকে কে দেখবে? রকিব,আপনি এটা কি বললেন? আমাকে আপনার এতটা অমানুষ মনে হয়? যদি আপনি রাজি হন তাহলে সবাই আমার বাসায় থাকবে। রওনক,আমার পাপ্পা পৃথিবীর সর্ব শ্রেষ্ঠ পাপ্পা। উমমমমমমমাহ। চল নানু, মম এক্ষুনি চল। ম্যাম,রওনক বাবু সোনা রাতে কি করে যাবো? এলাকার সবাই আমাদের খারাপ ভাববে।

রকিব,সম্ভব আপনি এলাকার গন্যমান্য দুু,একজন লোক আর চাচা মামা যা হোক দু,একজন লোককে বলুন এখানে আসতে। আমি একটু আসছি। ড্রাইভার চলোতো একটু মার্কেটে যাবো। এদিকে এলাকার চেয়ারম্যান আর কয়েকজন লোক আর দু,চাচা এসেছেন। উনারা সবাই হতবাক। এটা কি করে সম্ভব? ওরা যে অনেক গরীব। এত ভালো ঘরে বিয়ে হচ্ছে বলে সবাই হিংসে জ্বলে মরছে। মার্কেট থেকে দামী দামী জিনিস পত্র সুন্দর গয়না আরো অনেক জিনিস কিনে নিয়ে আসলেন রকিব সাহেব। সবার সামনে কাজী সাহেব তারিন আর রকিব সাহেবের বিয়ে পড়ালেন। রওনক হলো বাবার বিয়ের এক নম্বর সাক্ষী! গাড়ি চলল বরের বাড়ি রইলো পরে পাতিল হাড়ি এখানেই টানলাম গল্পের দাড়ি।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত