আমি আহমেদ আরিফ। আমি আম্মা-আব্বা এবং আমার আদরের ছোট বোন নিয়ে আমাদের সংসার। ছোট বোন পড়ে ক্লাস টেনে।
ওর নামে হল তমা।আর আমার পড়েলেখা শেষ হল কয়েকদিন আগে।
আমি বর পরিবারের ছেলে নয় আমার বাবা ছট একটা চাকরি করতেন। আমাকে খুব কষ্ট করে বাবা মানুষ করেন।
কয়েকদিন হলো একটা ছোট চাকরি পেলাম বেতন ১০ হাজার টাকা। এই টাকা দিয়ে সংসার চালানো অনেক কষ্টের
তবু আম্মা খুব সুন্দর ভাবে হিসাব করে পুরো মাস চালিয়ে নেন।
–
কয়েকদিন থেকে আব্বা-আম্মা বিয়ের জন্য অনেক চাপ দিচ্ছেন।
রাতে সুয়ে আছি রুমে আব্বা-আম্মা আমার রুমে আসছেন।
আম্মা-আমরা কিছু কথা বলতে এসেছি বাবা
আমি-বলো আম্মা
আম্মা-আমাদেরতো বয়স হলো বাবা এখন একটা বিয়ে করে নে কখন কি হয়ে যাবে জানিনা তাই এবার বিয়ে করে নে বাবা।
তোর আব্বা চাই তুই বিয়ে করে বউ নিয়ে ঘরে আয় তাই আমরা চাই এবার বিয়ে করে নে বাবা।
আমি-উফ তোমরা আমাকে বিয়ে না দিয়ে ছড়বেনা দেখছি। আচ্ছা যাও আমি রাজি কিন্তু আমার শর্ত হল আমাদের পরিবারের
মতো দেখে বউ আনতে হবে কোনো বড় ঘরের বউ আনতে রাজিনা।
আম্মা-আচ্ছা তুই যা চাস তাই হবে বাবা
(আম্মা-আব্বা কে খুব খুশি দেখলাম আমার কথা শুনে নিজেকে ও অনেক খুশি লাগছে তারপর ওরা চলে গেলো)
এর একটু পরে আমার ছোট এসে বললো
তমা-ভাইয়া কাল তুমি অফিস থেকে একটু তাড়াতাড়ি ফিরে এসো
আমি-কেন রে
তমা-কাল আমরা সবাই তোমার বউ মানে আমার ভাবী দেখতে যাবো
আমি-আচ্ছা যা তুই বিয়ের আগে ভাবী হয়ে গেছে
তমা-হবেতো হুম
–
পরদিন বিকেলে ছুটি নিয়ে আসলাম। সবাই মিলে দেখতে গেলাম মেয়ে।
মেয়ে দেখে পছন্দ হয়েছে সবার আমার ও ভালো লেগেছে। (মেয়ের নাম জানতে পারলাম ইমরানা)
ভালো পরিবার ওদের আমাদের লেভেলের। (আমি যেটা চেয়েছিলাম)
সব কিছু ঠিক হয়ে গেলো।
পাকা কথা হয়ে গেলো আগামি মাসের ২০ টারিখ বিয়ে।
–
আজ আমার আর ইমরানার বিয়ে।
বাবার জমানা সব টাকা দিয়ে বিয়ের সব কিছু ভালো ভাবে আয়োজন করলেন বাবা।
আম্মা-আব্বা অনেক খুশি আজ সেটা দেখে নিজের ও অনেক ভালো লাগলো।
আর ছোট বোন তমা সেতো আরো বেশি খুশি। ওর সব বন্ধু কে নিয়ে বিয়ে বাড়ি আসছে অনেক আনন্দ করছে মজা করছে।
–
বিয়ের সব কিছু সেড়ে বাড়ী ফিরলাম ইমরানা কে নিয়ে।
–
এখন বাসর ঘরে ডুকলাম ইমরানা এসে আমাকে সালাম করলো।
আমি কাটে নিয়ে বসালাম।
আমি-আজ আমাদের জীবনের সবচেয়ে সেরা রাত আজ তোমাকে কিছু বলতে চাই।
ইমরানা-জি বলুন।
আমি-বিয়ে নিয়ে সবার স্বপ্ন থাকে যেটা তোমার আমার আজ পূরন হলো। আজ থেকে এটাই তোমার পরিবার।
আজ থেকে তুমি আমার বউ আমার বোনের ভাবী আমার আম্মা-আব্বার ছেলের বউ তুমি তাদের মেয়ের মতই।
আজ থেকে তোমার অনেক দায়িত্ব . আর জানো আমার আম্মা-আব্বা আমাকে অনেক কষ্ট করে বড় করেছেন।
আর আমি আশা করি তুমি সবার মন জয় করে নিবে সবার দেখাশোনা করবে ভালভাবে। আর ওদের ভালবাসা মানে
আমাকে ভালবাসা মনে করবে। আর আম্মা-আব্বা-বোন কে কখনো কষ্ট দিও না প্লিজ। সবাই কে সব সময় হাসি খুশি রাখবে।
ইমরানা-দোয়া করবেন আমি যেন সব কিছু ভাল ভাবে করতে পারি আম্মা-আব্বার আর আপনার সেবা করতে পারি।
আর আপনি সব সময় আমার পাশে থাকবেন।
আমি-হুম আমি তোমার পাশে আছি সব সময়। আজ থেকে আমাকে তুমি করেই বলবে আপনি না কেমন। এখন চলো ঘুমিয়ে পড়ি
–
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি ইমরানা নেই পাশে ঊঠে গিয়ে দেখি আম্মা আর ইমরানা মিলে রান্না করছে আর খুব হাসি খুশি দেখছি।
আম্মা বললেন যা ফ্রেশ হয়ে তমা আর তোর বাবা কে নিয়ে টেবিলে আয় আমি নাসতা দিচ্ছি।
খাবার টেবিলে বসে আছি সবাই আম্মা আর ইমরানা সব কিছু নিয়ে আসছে টেবিলে
আম্মা-আজ সব কিছু রান্না করছে বউমা
তমা-ও তাই নাকি
আব্বা-আহা খুব ভালো হয়েছে বউমাতো অনেক ভালো রান্না করে।
আমি-হুম
আম্মা-আজ থেকে সংসার সব কিছুর দায়িত্ব আমি বউমা কে দিলাম মা তুমি সংসার টা ঠিক মতো সুন্দর করে চালাবে আশা করি।
ইমরানা-দোয়া করবেন আম্মা আমি যেন সব কিছু ঠিক মতো পালন কর্তে পারি।
–
খুব ভালো ভাবেই দিন যাচ্ছে আমাদের। অনেক সুখেই আছি সবাই কে নিয়ে ইমরানা সব কিছু খুব ভালো করেই ঘুছিয়ে
নিয়েছে আজ নিজেকে অনেক সুখি মনে হচ্ছে কারন সবাই খুশি আর তার কারন ইমরানা।
আম্মা-আব্বা পেয়েছে একটা মেয়ে তমা পেয়েছি বন্ধুর মতো ভাবি আমি পেয়েছি ভালবাসার মানুষ।
.
৪ দিন পর সামনে আমাদের বিয়ের পর প্রথম ঈদ আজ বেতন পেলাম বোনাস সহ ২০ হাজার টাকা পেলাম কিছু রেখে সব টাকা দিলাম ইমরানার হাতে।
একটু পর দেখলাম ইমরানা আর তমা শপিং করতে যাচ্ছে সবার জন্য কেনাকাটা করতে।
আমি ঘুমিয়ে পরলাম।
সন্ধায় সব কিছু নিয়ে বাসায় আসলো ইমরানা আর তমা সবাই কে ডাকছে গেলাম ঘুম থেকে আম্মা-আব্বা অ আসলেন।
ইমরানা-আমি সবার জন্য আমার পছন্দে ঈদের কাপড় নিয়ে আসছি আশা করি সবার পছন্দ হবে আম্মা এই শাড়ি আপনার জন্য
(আম্মা অনেক খুশি হলেন)
ইমরানা-আব্বা এই পাঞ্জাবি আপনার জন
(আব্বা ও অনেক খুশি হলেন)
আর আমার বোন তমা নিজের দ্রেস পরে এসে দেখাতে লাগলো সবাই কে।
ইমরানা-এই পাঞ্জাবি তোমার জন্য আমার নিজের পছন্দে নিয়ে এসেছি আশা করি ভাল লাগবে তোমার
আমি-খুব সুন্দর হয়েছে।
আম্মা-আব্বা বল্লেন বউমা নিজের জন্য কিছু কিনলে না সবার জন্য আনলে
ইমরানা-আসলে আম্মা টাকা শেষ হয়ে গিয়েছিলো
আম্মা-বাবা আরিফ তুই কাল বউমার জন্য একটা সুন্দর দেখে শাড়ী কিনে নিয়ে আসবি
আমি-আচ্ছা আম্মা।
(সবাই যার যার রুমে চলে গেলো)
আমি-সবার জন্য কাপড় কিনলে নিজের জন্য কিনলএ না কেন
ইমরানা-আরে বাবা টাকা শেষ হয়ে গেছেতো
আমি-আচ্ছা এখন চোখ বন্দ করো
ইমরানা-কেন
আমি-আরে বাবা করনা
ইমরানা-আচ্ছা বাবা করলাম
আমি-থাকাও এখন এইটা তোমার জন্য আমার পছন্দে কিনলাম পছন্দ হয়েছে তোমার(ওর প্রিয় রঙ্গের শারি নিয়ে আসলাম)
ইমরানা-তুমি এসব কখন কিনলে আর খুব সুন্দর হয়েছে
আমি-আমাদের প্রথম ঈদ এইটা আর তোমাকে কিছু দিবোনা বলো
(মেয়েটা আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো)
………………………………………………………………………………………
( একটা ভাল মনের মেয়ে ই পারে সংসার-পরিবার কে সুখে রাখতে।
আশা করি সবাই পরিবার পরিজন নিয়ে ভাল-সুখে থাকবেন। )