উড়ে এসে জুড়ে বসা ভালবাসা

উড়ে এসে জুড়ে বসা ভালবাসা

-দেখলেন তো কিভাবে বাঁকা লেজ সোজা করতে হয়?? ইলমাার কথাটা শুনে আমি হেসে ইজি চেয়ারটাতে বসে বলা শুরু করলাম। “কয়েক মাস আগের কথা। সেদিন আমি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বন্ধুদের সাথে টিএসসির মোড়ে আসলাম। উদ্দেশ্য গরীব দুঃখিদের জন্য কম্বল বিতরণের জন্য টাকা কালেকশন করবো। আমি এসে মাইক্রোফোন টা হাতে নিয়ে যখন বললাম

-অ্যাটেনশন প্লিজ। গরীব দুর্গত মানুষদের এই শীতে কম্বল বিতরণ এর জন্য আপনারা যে যা পারুন তা দিয়ে সহায়তা করুন।তখনি ভিড় ঠেলে একটা মেয়ে এসে হঠাৎ আমার হাত থেকে মাইক্রোফোনটা হাতে নিয়ে বলল…

-অ্যাটেনশন প্লিজ। উনারা যে টাকাটা তুলছে সেই টাকাটা উনারা পুরোটাই যে গরীবের সেবার জন্য নিচ্ছে তার কি গ্যারান্টি আছে??

মেয়েটার কথা শুনে সবাই তখন হতবাক। কেউ কেউ হাসছে। কিন্তু আমি মেয়েটার দিকে এক পলকেই তাকিয়ে আছি। মেয়েটার কাজলনয়ন দেখায় ব্যস্ত হয়ে পরলো আমার মস্তিষ্ক।মেয়েটা মাইক্রোফোন টা আমার হাতে ধরিয়ে আবোলতাবোল অনেক কিছু বলতে লাগলো। আমি সেদিকে খেয়াল না করে ওকে দেখতে লাগলাম। সৃষ্টিকর্তা মানুষের রুপের সাথে আচরণগত মিল এতটাই মাধুর্যযুক্ত করে সৃষ্টি করতে পারে আমার জানা ছিলো না।আমার নীরবতা দেখে মেয়েটা আমার চোখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলল

-মানুষকে সেবার নাম করে এভাবে ঠকাবেন না। তাহলে মানুষের মন থেকে সেবা নামক শব্দটা হারিয়ে যাবে।
আমি তখনো হাসতেছিলাম। মেয়েটাকে তার বান্ধবীরা টেনে নিয়ে গেল। আমার সাথের অন্যান্য কর্মীরা এসে বলতে লাগলো…

-কি বজ্জাত মেয়েরে বাবা। আমাদের চোর বানিয়ে দিলো সবার সামনে। আমি হেসে বললাম

-মেয়েটাতো সত্যিই বলেছে।জনগণকে আমরা কি গ্যারান্টি দিতে পারবো যে কালেকশনের টাকাটা থেকে আমরা এক কানা কড়িও নিজেদের জন্য খরচ করবো না। আমার কথা শুনে সবাই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো। তারপর সবাই একসাথে বলল

-তুই কার দলে আছিস বল তো।

আমি তাদের কথার কোনো উত্তর দেইনি। উত্তর নেই আমার কাছে। আমি কেবল চোখের চশমাটা নেড়ে চলে আসছিলাম তাদের সামনে থেকে। সেদিনের পর থেকেই মেয়েটাকে দেখতে ইচ্ছা করতো।টিএসসির মোড়ে মেয়েটাকে এক পলক দেখতে কত দিন দাঁড়িয়ে ছিলাম তার সঠিক কোনো ইয়ত্তা নেই। টিএসসির মোড়ে এত মেয়েদের মাঝে মেয়েটার মুখের প্রতিচ্ছবিটা আস্তে আস্তে হারিয়ে ফেলতে শুরু করলাম। বছরে দুবার আমার গ্রামে যাওয়া পরে। কেন যাইনা সেটাও জানি না। কিন্তু একদিন বিকাল বেলা হঠাৎ ভাইয়া কল দিয়ে বলল

-সাজিদ তোর ভাবী অসুস্থ!

আমি এদিকটা একা সামলাতে পারছি না। অফিসে কাজের খুব চাপ। তুই একটু ছুটি নিয়ে চলে আয়। বসকে সাথে সাথে কল দিয়ে বুঝিয়ে রাতের বাসেই আমি গ্রামে আসলাম। পুরো বাড়িটা দেখলে বুঝা যাবে না যে এটা গ্রামে। গ্রামের মধ্যে এরকম দালানবাড়ি আর সাথে এরকম পরিবেশ তৈরি করেছে যে শহুরে একটা ভাব এসে পরবে। ভাইয়া বলল ওর এনজিও অফিসের কাজের জন্য কিছু তথ্য লাগবে তাই গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য জোগাড় করছিলাম। গ্রামের কাউকে আমি তেমন ভাল করে চিনিও না। এমনকি এই বাড়িটাও আমি আগে কখনো দেখিনি। হঠাৎ বাড়ি টার দাড়োয়ান আমাকে আটকিয়ে বলল

-কাকে চান? আমি বললাম
-আমি একটা এনজিও থেকে এসেছি। একটা সমীক্ষার জন্য কিছু তথ্য লাগবে। এ বাড়িতে আছে তো মানুষ??
দাড়োয়ান আমার দিকে তাকিয়ে গোফ নেড়ে বলল
-কোনো বদ মতলব নেই তো?? আমি কিন্তু পুলিশের মতো বুলেট ছাড়া বন্দুক নিয়ে ঘুরি না। এটা মাথায় রাখিও।
-আচ্ছা। কয়জন আছে এখানে?
-সাহেব মারা গেছে কয়েক বছর হলো।

এখন মেমসাহেব আর ছোটমণি থাকে। মাঝে মাঝে আসে এখানে শহর থেকে। সাবধান কোনো চাটুকারিতা করার চেষ্টা করবা না। আমি ওনার কথা শুনে হাসলাম। আমি চাইলে ভাইয়ার নাম বলতে পারতাম। কারণ গ্রামের মানুষ ভাইয়াকে খুব ভাল করে চিনে। আমি বাড়িটার চার পাশে তাকিয়ে দেখলাম এক কোনে একটা চেয়ারে এক মহিলা বসে পত্রিকার পাতায় চোখ বুলাচ্ছে। আমি সামনে গিয়ে বললাম

-আসসালামু আলাইকুম। মহিলা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-ওয়ালাইকুম আসসালাম। কে তুমি বাবা??
-আমি একটা এনজিও থেকে এসেছি। একটা সমীক্ষার জন্য একটু তথ্য দিতে হবে আপনাদের পরিবারের।
-ওহ। বসো বসো। আমি একটা হাসি দিয়ে বসলাম। পিছন থেকে কে যেন বলে উঠলো
-এই এই। আপনি এখানে? আপনার সাহস তো কম না। আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি মেয়েটা দাঁড়িয়ে আছে। আমি সাথে সাথে দাঁড়িয়ে গেলাম। ও আমার সামনে এসে বলল
-আপনি এখানে কি করতে এসেছেন?? বলুন। মেয়েটা তারপর মহিলার দিকে তাকিয়ে বলল

-মা তুমি জানো এই লোকটা কে?? মহিলা সাথে সাথে দাঁড়িয়ে পরলো। পত্রিকাটা সামনের টি টেবিলে রেখে বলল
-নাকি একটা এনজিও থেকে এসেছে।তুই চিনিস ওকে? কথাটা শুনে মেয়েটা ওর মার কাছে গিয়ে বলল

-হ্যা। খুব ভাল করে চিনি। উনি কিছুদিন আগে ঢাকায় গরীব দুঃখীদের সাহায্যের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলো আমি তখন হাতে নাতে গিয়ে ধরেছি। কে জানে এখন কি মতলবে গ্রামে আসছে! রহিম চাচা ওনাকে ভিতরে আসতে দিলো কেন?? রহিম চাচা। রহিম চাচা। কই আপনি? মেয়েটার ডাক শুনে দাড়োয়ান এসে বলল

-জ্বী ছোটমণি।
-উনি কে?
-আমি তো আমার পঞ্চাশ বছর বয়সে আজ দেখলাম।

তবে আমার বউ কইছে কয়েক বছর আগে আমার মাথা শর্ট সার্কিট নামের কি জানি হয়েছিলো। আমি দু তিন মাস আগের সব ভুলে গেছিলাম। আমি উনার কথায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে বললাম

-শর্ট টাইম মেমরি লস হয়েছিলো। লোকটা দাঁত বের করে হাসতে হাসতে বলল “একই কথা”উনি হাসি দিলে উনার উপরের দাঁত গুলো গোফের কারণে দেখা যায় না। লোকটা আবার বলল

-ঐ দুমাসের মধ্যে আপনার সাথে কি আমার দেখা হইছিলো?? মেয়েটা চিৎকার দিয়ে বলল…
-এত বেশি কথা বলো ক্যান তুমি?? এখনি বের করে দাও লোকটাকে। মেয়েটার কথা শুনে ওর মা বলল…
-ইলমা কোথাও তোর ভুল হচ্ছে। ওকে দেখে সেরকম মনে হয় না। আমি হাসি দিয়ে বললাম…
-আপনার নাম ইলমা?? মহিলাটি বলল…
-হ্যা।
– ওহ। আসলে আন্টি আমি সেরকম ছেলে না। আসলে ইলমা আমাকে ভুল বুঝতেছে।
-মা তুমি ভুলেও এই লোকটার ফাদে পা দিবানা। এখনি বের হয়ে যান বলছি। নইলে পুলিশকে কল দিবো।

আমি হাসতে লাগলাম ইলমার কথা শুনে। ইলমার মা আমাকে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেলেন। উনি বার বার আমাকে বলতে লাগলেন…

-বাবা তুমি মাইন্ড করো না। ও একটু বদমেজাজি টাইপের মেয়ে। আমি বললাম…
-না না। আমি মাইন্ড করিনি। আমার গ্রামের বাড়ি এখানেই। ঢাকাতে জব করি।
-তোমার বাবার নাম কি??
-আপনি আমার ভাইয়াকে চিনবেন। উনার নাম ফারুক আহমেদ।
-ওহহহহ। তুমি ফারুকের ভাই? ফারুককে আমি খুব ভাল করে চিনি। এই গ্রামের জন্য ও অনেক কিছু করেছে।
-আমি আসলে ভাইয়ার কাজটাতে হেল্প করতে আসছি।

ইলমা এবার প্রায় অপমান করেই আমাকে গেইট দিয়ে বের করলো। তবে অপমানবোধ হয়নি আমার। আমি কেবল হেসেছি ওর কথায়। তারপর থেকে ইলমার বাড়ির আশেপাশে ঘুরাঘুরি করা শুরু করলাম। আর সুযোগ পেলে আন্টির সাথে আড্ডা জমিয়ে দিতাম।এ কয়দিনে খুব ভাল সম্পর্ক হয়ে গেছে ওনার সাথে। আন্টি খুব সহজ সরল মানুষ। ইলমা আমাকে দেখে সহ্য করতে পারত না। একবার আমি আন্টির সাথে বসে কফি খাচ্ছিলাম। তারপর আন্টিকে বলে ফেললাম…

-আন্টি ইলমাকে দেখলে মনে হয় না যে ও আপনার মেয়ে। ইলমা কোথা থেকে যেন এসে বলল…
-তাহলে কি আমাকে কুড়িয়ে পেয়েছে? আমি হেসে বললাম…
-তুমি কোথথেকে আসলে?
-মা এই লোকটা আমাকে নিয়ে আজেবাজে কথা বলছে তুমি কিছু বলছ না কেন? আন্টি ওকে বলল…
-সাজিদ তো ঠিকই বলেছে। তোর চেহারার সাথে আমার চেহারার কোনো মিল নেই। তোর বাবার চেহারার সাথে মিল আছে। আমিও আন্টির কথার সাথে তাল মিলাতে লাগলাম। ও রেগে বলল…

-এই আপনি নাকি জব করেন তাহলে ঢাকা যাচ্ছেন না কেন?
-যাবো তো। তুমি কবে যাবে? আমার প্রশ্ন শুনে বলল..
-আপনাকে কেন বলব। এখন যান এখান থেকে। আন্টি ওকে ধমক দিয়ে বলল…
-তুই ওর সাথে এমন করিস কেন??
-যা করছি বেশ করছি। তুমি এই লোকটার থেকে দূরে থাকবে।

আমি হেসে চলে আসলাম। ইলমা আমাকে যখন দেখল ওর ইন্টার্ভিউ আমি নেওয়ার জন্য বসে আছি তখন ওর চোখে মুখে একটা নিরাশ ভাব দেখলাম। ও হয়ত চাকরীর আশা ছেড়ে চেয়ারটাতে বসলো। আমি তখন ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম এক পলকে। ওর মুখটাতে কি যেন মিসিং লাগছিলো। আমার পাশে ছিলেন জুনায়েদ ভাই আর সিয়াম ভাই। সিয়াম ভাই আমাকে বললেন…

-সাজিদ তুমি প্রশ্ন করতে পারো এখন। আমি ইলমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললাম…
-আজ চোখে কাজল দেন নাই কেন?

আমার প্রশ্ন শুনে ইলমা হা করে তাকিয়ে আছে। জুনায়েদ ভাই আর সিয়াম ভাই আমার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললেন। আমি ভীষণ লজ্জা পেয়ে গেলাম। আসলে ওর মুখে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মুখ ফসকে কথাটা বের হয়ে গেলো। ইলমা কিছু না বলেই উঠে চলে গেলেন। সিয়াম ভাই আর জুনায়েদ ভাই আমার সিনিয়র হলেও আমার সাথে বন্ধুর মতোই থাকেন। উনারা দুজন জিজ্ঞাসা করলো ‘ইলমা কে??’ আমি হেসে বললাম…

-টিএসসির মোড়ে উড়ে এসে জুড়ে বসা ভালবাসা। আমার ডেস্কের সামনে এসে ইলমা বলল…

-আপনি গ্রাম থেকে কবে এসেছেন??
-তোমরা যেদিন আসছো সেদিন।
-আপনি এখানে জব করেন বলেন নাই তো।
-তুমি তো আমাকে জোচ্চোর ভাবো। সুযোগ তো দাওনি।
-আগে জানলে আসতাম না এখানে। আমি হাসতে হাসতে বললাম…
-তোমার চাকরী করার কি দরকার।
-আমি নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই।
-ওহহ। আচ্ছা চাকরী হয়ে গেছে। মিষ্টি নিয়ে বাসায় যেতে পারো। ওর মুখে কোনো হাসি ফুটলো না। দরজা খুলে ইলমা যখন দেখলো আমি দাঁড়িয়ে ও ভড়কে গেল। আর বলল…

-আপনি এই বাসার ঠিকানা কোথায় পেলেন?? আমি বললাম…
-তোমার চাকরীর জন্য যা ইনফর্মেশন দিছো সব আমার কাছে আছে। ইলমা ঠোট কামড় দিতে লাগলো। আন্টি অন্য রুম থেকে বলল…
-কে আসছে রে ইলমা?? ও বলল…
-কেউ না মা। আমি তখনি জোরে বললাম…
-আন্টি কেমন আছেন?? আমার কথা শুনে আন্টি সাথে সাথে এসে বলল…
-আসো বাবা ভিতরে আসো। এই তুই “কেউ না” বললি কেন? ইলমা কোনো উত্তর দিলো না। আমি আন্টিকে বললাম…

-ওর বিয়ে দিয়ে দিন আন্টি।
– কোথাও ভদ্র কোনো ছেলে পাচ্ছি না। দেশে এখন ভদ্র ছেলে নেই বুঝলে!
-আমি কি অভদ্র আন্টি?? তখনি ইলমা বলে উঠলো…
-আচ্ছা আপনার স্ত্রীকে নিয়ে আসেন না কেন?? ইলমার কথার কোনো কিছুই বুঝলাম না। আন্টি বলল…
-মানে?? সাজিদ বিবাহিত? ইলমা বলল…
-হ্যা মা। কেন উনি তোমাকে বলেনি?? এতদিন যাবত এত বড় কথাটা তোমার কাছ থেকে লুকালো?? আমি দাঁড়িয়ে গেলাম। আন্টি বলল…
-তুমি আমাকে একবার ও বললেনা কেন? আমি তোতলাতে তোতলাতে বললাম…
-আন্টি আসলে…
-তোমার সাথে কোনো কথাই বলব না আমি।

এটা বলেই আন্টি রাগ করে রুমে চলে গেলো। ইলমা এভাবে আমার উপর রিভেঞ্জ নিবে বুঝিনি। ইলমা হাসতে হাসতে পরে যাচ্ছে। আমি ওর কাছে গিয়ে বললাম…

-এত নিষ্ঠুর কেন তুমি?? এভাবে আমাকে বাশ দিলে কেন? ইলমা হাসতেছিলো। আমি সাথে সাথে বের হয়ে গেলাম।
-আমি আপনার অযোগ্য?? ইলমা হঠাৎ অফিসে এসে আমার সামনে প্রায় জোরেশোরে বলল কথাটা! আমি ওকে বললাম…

-কি হয়েছে? সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিলো। ইলমা আমাকে বলল…
-আপনি এখনি আমার সাথে চলুন। ইলমা চেঁচামেচি করছে। আমি তাই ওর সাথে অফিস থেকে বেরিয়ে গেলাম। ইলমা একটা রিক্সা ডেকে বলল…

-উঠুন রিক্সাতে। আমি চুপচাপ রিক্সায় উঠে বললাম…
-কি হয়েছে বলবে তো!
-আপনি আম্মুকে বলেছেন আমি আপনার অযোগ্য?? আমি হালকা হেসে বললাম…
-কথা তো সত্যি। ও রিক্সার মধ্যেই ধমক দিয়ে বলল…
-এক ধাক্কা দিয়ে রিক্সা থেকে ফেলে দিবো। কথাটা শুনে আমি ফুলস্টপ হয়ে গেলাম। রিক্সা এসে ওদের বাসার সামনে থামালো। আমি আস্তে করে বললাম…

-কই নিয়ে যাচ্ছো?
-আপনি এই মুহুর্তে মাকে বলবেন আপনি আমাকে বিয়ে করবেন।
-আন্টিতো জানে আমি বিবাহিত। ও কোমড়ে হাত দিয়ে বলল..
-আপনি আম্মুকে সেদিনি বলে দিয়েছেন আপনি অবিবাহিত সেটা আমি জানি। আমার আম্মু আমার থেকে আপনাকে বিশ্বাস বেশি করে। আমি হেসে ফেললাম হো হো করে।

-হাসবেন না।আপনাকে বিয়ে করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আমার নেই। কিন্তু আপনি মার কাছে আমাকে অযোগ্য বলেছেন। আর আমি প্রমাণ করবো আপনার যথেষ্ট যোগ্য আমি। আন্টির সামনে গিয়ে বললাম…

-আন্টি আমি আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে চাই। আন্টি কথাটা শুনে আমার কাছে এসে বলল…
-তুমি ইলমাকে বিয়ে করবে?? উনার প্রশ্ন শুনে আমি ইলমার দিকে তাকালাম। ইলমা চোখ রাঙিয়ে বলল উত্তর দিতে। আমি বললাম…
-জ্বী বিয়ে করতে চাই ওকে।” ইলমা আমার সব কথা শুনে বিছানা থেকে গোলাপ নিয়ে ফুলটাকে ছিড়তে লাগলো। আমি বললাম…

-এখন তোমাকে আরেকটা শকিং নিউজ দেই। আন্টি প্লান করেই তোমাকে বলেছে যে আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাইনা। যাতে তুমি আমাকে বিয়ে করতে উঠেপড়ে লাগো। এখন বলো কে কাকে সোজা করেছে?? ইলমা রেগে একটা চিৎকার দিলো জোরে। আমি তখন ইজি চেয়ারে ঢুলছি আর হাসছি। পৈশাচিক হাসি।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত