চোখের জল

চোখের জল

গতকাল কলেজ যাওয়ার পথে রিফাতের জন্য একটা চিঠি ফেলে যায় কাজল।চিঠিতে কাজল বলেছিল রিফাত যেন আজ বিকালবেলায় গণি মিয়ার কবরের পাশের মাঠটিতে কাজলের জন্য অপেক্ষা করে।ঠিক সাড়ে চারটায়।

গনি মিয়ার কবরের পাশের মাঠটাতে দাঁড়িয়ে আছে রিফাত।ঠিক চারটা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিটে কাজল এলো।
-তুমি আমাকে ভুলে যাও,রিফাত!
রিফাত বললো,”ক্যান!কি হয়সে?কেন ভুইল্লা যামু তোরে?”
-আমার মা-বাবা আমার বিয়ে ঠিক করেছে।
রিফাত বললো, “চল,মোরা পলাইয়া যায় কাজল। তোরে আমি রাণীর মতো রাখমু রে কাজল।কোনো কষ্ট তোরে ছুঁইতে পারবো না।এই কথা দিলাম।
-না তা হয় না।আমি পালায় বিয়ে করলে মা-বাবার অসম্মান হবে।আর আমি তা চায় না।আর তুমি আমাকে কোনোদিন সুখী করতে পারবে না,রিফাত।সুখী হওয়ার জন্য ভালোবাসার পাশাপাশি টাকাও লাগে।
রিফাত করুণ সুরে বললো, “আমি তোর জন্যে অনেক পরিশ্রম করমু।অনেক টাকা আনি দিমু তোরে।তুই আমার সাথে চল,কাজল।”
-না।আমি কোথাও যাবো না।আমি শহরে চলে যাবো কালকে।দশদিন পর আমার বিয়ে।তুমি আমার সাথে দেখা করার চেষ্টা করো না,রিফাত।

রিফাত চওড়া গলায় বললো, “যা বেডি যা।দেখমু নে, কে তোরে প্রতি মাসে লাল-লাল চুড়ি দেয়!চুলে বাদার ফুল কে তোরে প্রতিদিন আইন্ন্যা দেয়!কে তোরে এমন সুন্দর নুপূর জোড়া কিইন্না দেয়!”

“আমি হবু স্বামী এর থেকে ভালো জিনিশ আমাকে দিবে।সে তোমার মতো ছোটলোক আর মূর্খ না।শহরের নামি উকিল সে।” —কথাটা বলেই কাজল হাঁটতে লাগলো।রিফাত শূণ্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।রিফাতের চোখে জল।

কাজল চলে গেছে প্রায় পাঁচ বছর।এই পাঁচ বছরে রিফাত অনেককিছু করার চেষ্টা করেছে।কিন্তু কোনো কাজেই তার মন বসলো না।মাত্র দুইবছর আগে সে ঢাকা শহরে এসেছে।তার চাচা তাকে একটি ভবনে দারোয়ানির চাকরি ঠিক করে দেয়।এই ভবনটার মালিক আলিবদি সাহেব পরিবারসহ বিদেশে চলে যাচ্ছে।এই ভবনটাও তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন।কিন্তু আলিবদি সাহেব তার এক বন্ধুর বাংলোতে রিফাতের জন্য কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।রিফাত আগামীকাল থেকেই নতুন মালিকের জন্য কাজ করবে।

কিছুদিন পর-
নতুন চাকরিটা আগের মতোন সুখের না।এখানে প্রায়ই সারাদিনই মালিক আর মালিকের বৌ এর ঝগড়া লেগেই থাকে।মাঝেমধ্যে মালিক তার স্ত্রীকে পেটায়।আবার এই বিরাট বাংলো বাড়িটায় রিফাতের অনেক কষ্টও হচ্ছে।রাত তিনটা বাজে ঘুম থেকে জেগে গেইট খুলে দিতে হয়।মালিকে কালো গাড়িটা করে প্রতিদিন রাত তিনটায় কে যেন বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।আবার ভোর ৫ টায় ওঠে পানির মোটর ছাড়তে হয় রিফাতকে।এদিকে বেতনও আগের চেয়ে ৫০০ টাকা কমে গেছে।রিফাত সিধান্ত নিয়েছে সে এরপরের মাসেই চাকরিটা ছেড়ে দিবে।

এরপরের রাতে-
গাড়ি হর্ণের আওয়াজে রিফাতের ঘুম ভাঙলো।সে দৌড়ে গিয়ে গেইটা খুলে দিলো।এক মহিলা গাড়িতে ওঠা মাত্রই গাড়ি গেইটের বাইরে বেড়িয়ে গেল।রিফাতের ঘরটা মালিকের ঘরের পাশেই।গেইট বন্ধ করে এসে যখনই সে ঘরে ঢুকবে ঠিক তখনই সে দরজার সামনে কাজলকে দেখতে পেল।রিফাতের ঘরের আলোতে কাজলের গায়ের বেল্টের দাগগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে।চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়া পানির রেখাগুলো দেখা যাচ্ছে স্পষ্ট।

-রিফাত,আমি বাঁচতে চায়।আমি সুখী হতে চাই রিফাত।তোমার ভালোবাসা পেয়ে সুখী হতে চাই।চলো, আমরা পালিয়ে যায়।
রিফাত বললো, ” সুখী হইবার জন্যে ভালাবাসার পাশাপাশি ট্যাকাও লাগে, ম্যামসাব।”
এই বলে রিফাত ঘুমোতে গেল।আজ কাজল শূন্যে তাকিয়ে আছে।কাজলের চোখে আজ জল

গনি মিয়ার কবরের পাশের মাঠটাতে দাঁড়িয়ে আছে রিফাত।ঠিক চারটা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিটে কাজল এলো।
-তুমি আমাকে ভুলে যাও,রিফাত!
রিফাত বললো,”ক্যান!কি হয়সে?কেন ভুইল্লা যামু তোরে?”
-আমার মা-বাবা আমার বিয়ে ঠিক করেছে।

রিফাত বললো, “চল,মোরা পলাইয়া যায় কাজল। তোরে আমি রাণীর মতো রাখমু রে কাজল।কোনো কষ্ট তোরে ছুঁইতে পারবো না।এই কথা দিলাম।
-না তা হয় না। আমি পালায় বিয়ে করলে মা-বাবার অসম্মান হবে।আর আমি তা চায় না।আর তুমি আমাকে কোনোদিন সুখী করতে পারবে না,রিফাত।সুখী হওয়ার জন্য ভালোবাসার পাশাপাশি টাকাও লাগে।
রিফাত করুণ সুরে বললো, “আমি তোর জন্যে অনেক পরিশ্রম করমু।অনেক টাকা আনি দিমু তোরে।তুই আমার সাথে চল,কাজল।”
-না।আমি কোথাও যাবো না।আমি শহরে চলে যাবো কালকে।দশদিন পর আমার বিয়ে।তুমি আমার সাথে দেখা করার চেষ্টা করো না,রিফাত।

রিফাত চওড়া গলায় বললো, “যা বেডি যা।দেখমু নে, কে তোরে প্রতি মাসে লাল-লাল চুড়ি দেয়!চুলে বাদার ফুল কে তোরে প্রতিদিন আইন্ন্যা দেয়!কে তোরে এমন সুন্দর নুপূর জোড়া কিইন্না দেয়!”

“আমি হবু স্বামী এর থেকে ভালো জিনিশ আমাকে দিবে।সে তোমার মতো ছোটলোক আর মূর্খ না।শহরের নামি উকিল সে।” —কথাটা বলেই কাজল হাঁটতে লাগলো।রিফাত শূণ্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।রিফাতের চোখে জল।

কাজল চলে গেছে প্রায় পাঁচ বছর।এই পাঁচ বছরে রিফাত অনেককিছু করার চেষ্টা করেছে।কিন্তু কোনো কাজেই তার মন বসলো না।মাত্র দুইবছর আগে সে ঢাকা শহরে এসেছে।তার চাচা তাকে একটি ভবনে দারোয়ানির চাকরি ঠিক করে দেয়।এই ভবনটার মালিক আলিবদি সাহেব পরিবারসহ বিদেশে চলে যাচ্ছে।এই ভবনটাও তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন।কিন্তু আলিবদি সাহেব তার এক বন্ধুর বাংলোতে রিফাতের জন্য কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।রিফাত আগামীকাল থেকেই নতুন মালিকের জন্য কাজ করবে।

কিছুদিন পর-
নতুন চাকরিটা আগের মতোন সুখের না।এখানে প্রায়ই সারাদিনই মালিক আর মালিকের বৌ এর ঝগড়া লেগেই থাকে।মাঝেমধ্যে মালিক তার স্ত্রীকে পেটায়।আবার এই বিরাট বাংলো বাড়িটায় রিফাতের অনেক কষ্টও হচ্ছে।রাত তিনটা বাজে ঘুম থেকে জেগে গেইট খুলে দিতে হয়।মালিকে কালো গাড়িটা করে প্রতিদিন রাত তিনটায় কে যেন বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।আবার ভোর ৫ টায় ওঠে পানির মোটর ছাড়তে হয় রিফাতকে।এদিকে বেতনও আগের চেয়ে ৫০০ টাকা কমে গেছে।রিফাত সিধান্ত নিয়েছে সে এরপরের মাসেই চাকরিটা ছেড়ে দিবে।

এরপরের রাতে-
গাড়ি হর্ণের আওয়াজে রিফাতের ঘুম ভাঙলো।সে দৌড়ে গিয়ে গেইটা খুলে দিলো।এক মহিলা গাড়িতে ওঠা মাত্রই গাড়ি গেইটের বাইরে বেড়িয়ে গেল।রিফাতের ঘরটা মালিকের ঘরের পাশেই।গেইট বন্ধ করে এসে যখনই সে ঘরে ঢুকবে ঠিক তখনই সে দরজার সামনে কাজলকে দেখতে পেল। রিফাতের ঘরের আলোতে কাজলের গায়ের বেল্টের দাগগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে।চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়া পানির রেখাগুলো দেখা যাচ্ছে স্পষ্ট।

-রিফাত,আমি বাঁচতে চায়।আমি সুখী হতে চাই রিফাত।তোমার ভালোবাসা পেয়ে সুখী হতে চাই।চলো, আমরা পালিয়ে যায়।
রিফাত বললো, ” সুখী হইবার জন্যে ভালাবাসার পাশাপাশি ট্যাকাও লাগে, ম্যামসাব।”
এই বলে রিফাত ঘুমোতে গেল।আজ কাজল শূন্যে তাকিয়ে আছে। কাজলের চোখে আজ জল।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত