ছ্যাঁকা খাইলাম কেন

ছ্যাঁকা খাইলাম কেন

সকাল বেলা মাত্র বাসা থেকে বের হলাম। পথের মধ্যেই বন্ধু অভির সাথে দেখা.

__> কি রে রাজ কেমন আছিস.-( অভি )
__> ভালো রে অভি, তুই কেমন আছিস-( আমি একটু মন খারাপ করে কথা বললাম )
__> কি রে তোর কি হইছে.
__> আর বলিস না বন্ধু নন্দিনী আমারে ছ্যাঁকা দিছে.
__> কবে বন্ধু.
__> গতকাল.
__> কেমনে দিলো.
__> আব্বে হালা ছ্যাঁকা কেমনে দেয় .
__> না মানে, আমি বলতে চাই তরে ছ্যাঁকা কেমনে দিছে, সমানাসামনি দিছে না ফোনের মাধ্যমে দিছে.
__> সামনাসামনি.
__> কি বলছে.
__> বলছে, আমি তাকে ছেড়ে দিতে. সে না কি আমার যোগ্য না.
__> এটার দ্বারা কি বুঝাইছে জানছ.
__> না.
__> এটার দ্বারা তরে বুঝাইলো, তুই নন্দিনীর যোগ্য না. আর মনে হয় এটাও বলছে, যে তুই তার থেকেও ভালো মেয়ে পাবি.

__> হ বন্ধু এটাও বলছে,তুই কেমনে জানলি.
__> বন্ধু তুই তার থেকেও ভালো কাউকে পাবি, এই কথার দ্বারা তরে বুঝাইছে. তর থেকে নন্দিনী আরো ভালো কাউকে পেয়ে গেছে.

__> তাই নাকি.
__> চল বন্ধু এবার ব্যাকআপ উপলক্ষে একটা পার্টি হবে.
__> পার্টি হবে কেন বন্ধু.
__> তুই চার বছর প্রেম করার পর ছ্যাঁকা খাইছত, এখন যদি পার্টি না দেছ কেমন লাগেনা বন্ধু.
__> আরে বন্ধু এখন আমার দুঃখের সময়, পার্টি দিবার সময় না.
__> কেন পার্টি দিবি না বল.
__> কেন পার্টি দিবো বল.
__> তর নদিনীর সাথে রিলেশন কতদিনের.
__> ৪ বছরের.
__> কয় বার দেখা করছত.
__> কমপক্ষে ৭০/৮০ বার.
__> দেখা করতে কত টাকা খরচ হইলো.
__> একবার দেখা করতে তো কমপক্ষে হাজার গেছে.
__> ৭০/৮০ মিলিয়ে কত টাকা.
__> প্রায় অনেক টাকা.
__> যদি তুই প্রেমের পিছনে এত টাকা খরচ করতে পারছ, তবে সেই প্রেমের ছ্যাঁকা খাওয়া উপলক্ষে কেন তুই পার্টি দিতে পারছ না.

__> বন্ধু এখন আমার মনটা খারাপ,তাই পার্টি দিতে পারবো না.
__> আব্বে হালা, এখন তো আনন্দে ড্যান্স দেওয়ার কথা.
__> ছ্যাঁকা খাইলে কি ড্যান্স দেওয়া লাগে.
__> আচ্ছা বল তুই আর কতবছর প্রেম করতি নন্দিনীর সাথে.
__> কমপক্ষে আরো ৩ বছর.
__> কত টাকা খরচ হইতো.
__> আরো কমপক্ষে ৫০ হাজার.
__> তার মানে তুই ৫০ হাজার টাকা থেকে বেঁচে গেছিস. আমাদের কমপক্ষে ৫ হাজার টাকার একটা পার্টি দে.
__> তার মানে তুই আমার কাছ থেকে পার্টির টাকা নিবি.
__> না নেওয়ার কি আছে. একটা অপরিচিত মেয়ে যদি তর কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ করাতে পারে. তাহলে আমি তর ছোটকালের বন্ধু, তর নুনু ধরে ধরে এত বড় হইছি, তবে আমি কেন তর থেকে ৫ হাজার খেতে পারবো না.

___> আমি যে ছ্যাঁকা খাইছি, এটার কোনো শান্তনা দিবিনা.
__> না দিবো না, তর এত টাকা বাচঁলো এটার জন্য তো আনন্দ করা উচিৎ, শান্তনা দেওয়ার কি আছে.
__> তার মানে পার্টি তদের চাই চাই.
__> আবার জিগায়, -( বলেই অভি আমার বন্ধুদের কল দেওয়া শুরু করে ) দশ মিনিটের মধ্যে সকল বন্ধুরা চলে আসে.

__> বন্ধু তুই নাকি ছ্যাঁকা খাইচত, আজকে কিন্তু বিশাল পার্টি হবে বন্ধু-( সুজিত )
__> মামা পার্টি কিন্তু পাচঁ ভাই রেস্টুরেন্টে হতে হবে.-( বাপ্পু )
__> সাথে বিদেশি পানি লাগবো মামা -( অশেষ )
__> বন্ধু আজকের পার্টি পরে, একটা প্রার্থনা করবো তুই যেন প্রেম করে বার বার ছ্যাঁকা খাবি.
__> এই তরা মানুষ না অন্য কিছু.
__> আমরা মানুষ, কিন্তু বন্ধুদের কাছে না, বন্ধুদের কাছে এক-একটা হাতি,গরু,ছাগল. -( অভি )
__> আমার কাছে টাকা নাই,আজকে পার্টি দিতে পারবো না.-( আমি )
__> চিন্তা নাই আমরা সবে মিলে ছাঁদা তুলবো, পরে এটা সবাইকে পরিশোধ করে দিবি -( অভি )
__> আচ্ছা ঠিক আছে চল. না গিয়ে কোনো উপায় নাই. নয়তো তারা লেংটা করে কাপড় নিয়ে যাবে. তবুও তাদের পার্টি চাই.

বলেই রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া শুরু, এক-একটা মনে হচ্ছে এ জীবনে খায় নাই. ২০মিনিটের ভিতর সব শেষ. বিল ৩ হাজার. খেয়ে তারা সব নিজ দায়িত্বে বের হয়ে গেলো. বিলটা অবশেষে আমাকেই দিতে হলো. কারন তারা জানে আমার কাছে টাকা আছে. কারন আমি চাকরী করি, আর তারা সবাই বেকার কমিটির সদস্য. এরা আবার কেমন বন্ধু, ছ্যাঁকা খাইছি শুনেও শান্তনা দেওয়ার বদলে পার্টি চায়.

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত