নীল যেদিন ভার্সিটিতে প্রথম এসে ছিল ওইদিন সব মেয়ের চোখ আটকে গেছিলো তার উপর।ওর মতো ৬ ফুট উচ্চতার ফর্সা বর্ণের একটা হ্যান্ডসাম ছেলেকে যে কোনো মেয়েরই চোখে পড়ার কথা।কয়েকদিনের মধ্যেই সে মেয়েদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে গেল।কিছুদিন পরে দেখা গেলো সে মেয়েদের সাথে কথা বলে না।এভাবে একবছর চলে গেল।হঠাৎ একদিন একটা মেয়ে তার সাথে পরিচিত হতে চাইলো,
-হাই!আমি লিজা।তুমি নীল চৌধুরী না?(লিজা)
-জ্বী।(নীল)
-আমি হিসাববিজ্ঞান বিভাগে ২য় বর্ষ।
-আমি মার্কেটিংয়ে ২য় বর্ষ।
-ও!ফ্রেন্ডস? বলে হ্যান্ডশেক করার জন্য হাত বাড়িয়ে দিলো।
-স্যরি।আমি মেয়েদের সাথে ফ্রেন্ডশিপ করি না।(নীল)
কথা শুনে লিজা অনেকটা আহত হলো।সে ভাবতেও পারে নি যে কেউ তার সাথে এমন করতে পারে।যথেষ্ট সুন্দরি সে।ভার্সিটির অনেক ছেলেই তার পিছনে ঘোরে।আর কেউ তাকে এভাবে অপমান করবে এটা সে মানতে পারতেছে না।
অন্যদিকে অনন্যা দেখতে অত সুন্দর না।কালো বর্ণ।ছেলেরা তার দিকে কেউ তাকাতো না।মেয়েরা ওকে নিয়ে হাসাহাসি করত।ওর তেমন কোনো ভালো ফ্রেন্ড ছিলো না।নীল আর অনন্যা ছোট থেকে একই সাথে বড় হয়েছে।একই স্কুলে পড়ত ওরা।ছোট থেকেই খুব ভালো ফ্রেন্ড ওরা।অনন্যা সবসময় ভয় করত অন্য মেয়ে সাথে ঘুরলে নীল ওকে আর পাত্তা দেবে না।তখন ওর আর কোনো ফ্রেন্ড থাকবে না।অনন্যা অনেক ভালো স্টুডেন্ট।একদিন ওদের ডিপার্টমেন্টের এক ছেলে নোটস নিতে অনন্যার কাছে যায়।নীল তা দেখে ফেলে।পরে অনন্যাকে জ্ঞিগেস করে ওটা কে রে?
-নোট নিতে আসছিলো।(অনন্যা)
-ও!(নীল) নীল আর কিছু বললো না।
-সত্যিই নোট নিতে আসছিলো (অনন্যা)
-হুম।আমি কিছু বললাম নাকি?(নীল)
-তোকে দেখে মনে হচ্ছে তুই কথাটা বিশ্বাস করিস নি।
-করব না কেন?আজব!
-দেখে মনে হচ্ছে রাগ করছিস।স্যরি
-স্যরি বলার কি হলো?
-আমি সবসময় ভয়ে থাকি জানিস?তুই আমার সাথে কথা না বলিস!আমাকে ছেড়ে চলে যাস!তুই ছাড়া আমার কোনো ফ্রেন্ডও নাই।
-ধুর পাগলি চল।
দুজন জনের বাসায় চলে গেলো।পরের দিন নীল ভার্সিটিতে এসে অনন্যাকে খুঁজে পেল না।ক্যান্টিনে গেলো।দেখল অনন্যা বসে আছে।অনন্যার সামনে গিয়ে বসল,
-কিরে এতো দেরি কেন?(অনন্যা)
-এমনি।(নীল)
-খাবার অর্ডার দে। নীল খাবার অর্ডার দিলো।
-দোস্ত তোর সাথে একটা কথা আছে।(নীল)
-কি?বল(অনন্যা)
-দোস্ত আমাকে বিয়ে করবি?(নীল) কথাটা শুনে অনন্যা হকচকিয়ে গেলো।
-কি বলতেছিস এসব?(অনন্যা)
-ঠিকই বলতেছি।
এভাবেই ওদের গল্পটা শুরু হয়।এরপর মাঝেমাঝেই ক্যান্টিনে,ক্যাফেটেরিয়ায়,মাঠে ওদের একসাথে দেখা যেত।একদিন নীল তারাতারি ভার্সিটি আসলো।অনন্যা তখনও আসে নি।নীল ক্যান্টিনে একা বসে চা খাচ্ছে।লিজা আসল,
-২ মিনিট কথা বলা যাবে?(লিজা)
-বলো।(নীল)
-আচ্ছা ওই অনন্যা কি খুব সুন্দর?আমি কি খারাপ?কি দেখে ভালোবাসলে ওকে?যা আমার মধ্যে ছিলো না?বলো!
নীল চুপচাপ চায়ে চুমুক দিলো।
-কি হলো বলো!(লিজা) এবার নীল বলতে শুরু করল,
-কি যেন বলছিলে!অনন্যা সুন্দর কিনা?হ্যাঁ ও সুন্দর।খুব সুন্দর ও।ওর মনটা খুব সুন্দর।কি দেখছি ওর মধ্যে?ওর চোখে আমার জন্য ভালোবাসা দেখছি।যা অন্য কারো চোখে দেখি নি।যে ভালোবাসায় কোনো ছলনা ছিলো না।কোনো ভেজাল ছিলো না।
-আমিও তোমাকে ভালোবাসি!
-না তুমি আমাকে ভালোবাসো না।
ভালোবাসো নীলের চেহারাকে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নীলকে।কিন্তু ও আমার সাথে যখন থেকে আছে তখন আমার কিছুই ছিলো না।না ঢাবির ছাত্রের তকমা ছিল!না এই চেহারা ছিল।তাই কখনো ভাববে না তোমাদের দুইদিনের ছলনার জন্য আমি অনন্যার নিখাদ ভালোবাসা ভুলে যাবো!