— ঘুম থেকে উঠবা নাকি পানি দিতে হবে (মিতু)
—আরেকটু ঘুমাই না প্লিজ,,বাবুনি (রাতুল)
— তোর ঘুমের গুস্টি কিলাই,, কয়টা বাজে খেয়াল আছে, অফিস যাবিনা,?? (মিতু)
— সোনা আজ না আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে, আজ ঘুমিয়ে নেয় কাল থেকে অফিস যাবো। (রাতুল)
— দাড়া তোরে ঘুমটা পারাচ্ছি, তারপর এক মগ পানি এনে ভিজিয়ে দিলো রাতুলকে,।
— উফফ দিলাতো ঘুমটার বারোটা বাজায়,। (রাতুল)
— চুপ কুত্তা, তারাতারি ফ্রেস হয়ে নাস্তার টেবিলে চলে আয়,।
তারপর অনিচ্ছা সর্তেও উঠতে হলো, ফ্রেস হয়ে নাস্তার টেবিলে চলে গেলাম,।
অহ স্যরি স্যরি আমাদের পরিচয়টাই তো দেওয়া হয়নি, এতক্ষন যার সাথে কথা বললাম উনি আমার স্বামি মিতু,
অহ স্যরি,স্বামি না আমার বউ মিতু,। ছাত্র জিবনে সে ছিলো আমার বন্ধু তারপর আস্তে আস্তে প্রেম, আসলে একটা প্রবাদ আছে ”
একটা ছেলে একটা মেয়ে কখোনো বন্ধু থাকতে পারে না। আমার বেলাতেও তাই হয়েছে, কিভাবে প্রেম হয়েছে তা অন্য একদিন বলবো, ঘটনায় আসি,
,
— এই চলোনা আজ কোথাও ঘুরে আসি (মিতু)
— আমি ঘুরতে পারবো না আমার অফিসে গুরুত্বপূর্ন কাজ আছে, (আমি)
— প্লিজ বাবু আজকেই তো, আর কখোনো বলবো না,। (মিতু)
— তুমি থাকো আমি চলে গেলাম অফিসে, (আমি)
— আচ্ছা যাও, বিকাল 5:00 টার মধ্যে চলে আসবা, না আসলে দেখবা আমি কি করি। (মিতু)
— এইইইই মিতু তোমার কপালে এইটা কি???
— কিইইই???
—এইদিকে আসো দেখাই দিচ্ছি।
কাছে আসার পর, কপাল দেখার নাম করে, কপালে আলতো একটা চুমু দিলাম,।
পাগলিটা তেমন কিছু বললো না,। জানেই প্রতিদিন যেকোনো অজুহাতে তাকে কপালে চুমু দেয়।
তারপর পাগলিটা আমার ট্রাই বেধে দিলো।
,
অফিসে চলে আসলাম, অফিসে আসার পরই স্যার কয়েকটা নতুন কাজ দিলো,
বেসি কাজ থাকলে মোবাইলটা সাইলেন্ট করে করে কাজ করি আজও তাই করলাম।
,
সারাদিন অনেক কাজ করতে হলো, ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি রাত 9: 00 টা বাজে, মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখি পাগলিটা অনেকবার কল দিয়েছিলো,।
তারাতারি বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।
বাড়িতে এসে দেখি দরজাটা খোলা, আমি মিতু মিতু বলে কয়েকবার ডাকলাম, কিন্তু কোনো সাড়া পেলাম না।
বিছানার উপর একটা চিঠি দেখতে পেলাম, চিঠিটা পড়া শুরু করলাম :
”’ রাতুল, বাবা খুব অসুস্থ। আমি তোমাকে কয়েকবার কল দিলাম কিন্তু তুমি ধরোনি, তাই তোমাকে না জানিয়ে বাবার বাড়ি চলে গেলাম,
আর হ্যা তুমি কিন্তু আমাদের বাড়িতে আসতে পারবেনা। তোমাকে এত্তবার কল দিলাম তুমি কেনো রিসিভ করোনি তা আমি জানি,
আমার থেকে তোমার কাজ বড় তাই তুমি তোমার কাজ নিয়ে থাকো। আজ আমাদের বিবাহ বার্ষিকী ছিলো কিন্তু তোমার সেটা মনেই নেই,
আজ অনেক কিছু ভেবেছিলাম তোমাকে নিয়ে কিন্তু তুমি সব ভেজ্ঞে দিলা।
ইতি
মিতু”
‘ উফ সত্তিই তো আজ বিবাহ বার্ষিকী ছিলো, ধুর কি করলাম, নিজেকেই নিজের থাপড়াইতে ইচ্ছা করছে,। আমার সোনা বউটাকে কষ্ট দিলাম।
কি করে মেডামের রাগ ভাজ্ঞানো যাই, ।
দারুন একটা বুদ্ধি আসলো আমার মাথায়।
তারাতারি দোকান থেকে অনেক গুলা মোমবাতি কিনলাম।
এবং একটা শাড়িও কিনলাম।
তারাতারি শশুড় বাড়ির সামনে চলে আসলাম, এবং ওদের বাসার সামনে মোমবাতি দিয়ে স্যরি লিখলাম।
তারপর তাকে মেসেজ দিলাম তোমাদের বাসার সামনে একটু আসো প্লিজ।
যতই রাগ করুক মিতুকে আসতে হবেই কারন, সেও আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে।
কিছুক্ষন পর মিতু বাসার সামনে আসলো, এসেই এসব দেখে সে অবাক হয়ে গেলো।
—তোমাকে এসব করতে বলেছে কে? আমি রাগ করেছিলাম কয়েকদিন পর সব ঠিক হয়ে যেতো (মিতু)
— তুমি জানোনা আমি আমার বাবুই পাখিটা ছাড়া একদিনো থাকতে পারিনা, আর কয়েকদিনের কথা বলছো, ততোদিনে হয়তো মরেই যেতাম।
—ওই কুত্তা তুই মরবি, তুই মরলে আমার কি হবে?? আর কোনোদিনো মরার কথা বলবি না (মিতু)
— স্যরি বাবুনি, আর বলবো না।
— এই বাড়িতে আসো, আর কতক্ষন বাহিরে দাঁড়াই থাকবা। (মিতু)
–চলো।
শশুড় বাড়িতে ঠুকার পর, সবার সাথে কথা বলা শেষ করে রাতের খাওয়ার অধ্যায় শেষ করে ঘুমিয়ে পড়লাম।
মাঝরাতে
— এই চলোনা ছাদে যাই, চাঁদ দেখবো (মিতু)
পাগলিটা প্রায় এরকম আবদার করে। তাই আমিও হ্যা বলে দিলাম।
—তুমি ছাদে যাও আমি চা নিয়ে আসছি। (মিতু)
— ওকে।।
ছাঁদে চলে আসলাম, ছাদে অনেক সুন্দর চাঁদ উঠেছে সেই সাথে অনেক জোছনা ছড়াচ্ছে।
কিছুক্ষন পর বউ আসলো, নীল শাড়ী পরে, কপালে একটা নীল টিপ পড়ে। আমি যেনো চোখই সরাতে পারছিনা, আমার বঊটাকে পরির মতো লাগছে।
–এই এভাবে কি দেখো,?? (মিতু)
—তোমাকে দেখি।
তারপর মিতু আমার পাসে বসলো। আমি তার দিকে অপলকে তাকিয়ে আছি।
–আচ্ছা তুমিকি একসাথে দুটো চাঁদ কখোনো দেখেছো?? (আমি)
— চাঁদ তো একটা দুইটা দেখবো কিভাবে,,???(মিতু)
— এই যে আমার পাসে আরেকটা চাঁদ দেখতে পাচ্ছি। (আমি)
মিতু লজ্জাই লাল হয়ে গেলো,
–তুমি কি জানো তুমাকে জোছনার আলোতে তুমাকে জোছনাকুমারী মনে হচ্ছে।
–আর তুমাকে একদম জোছনাকুমার লাগছে। (মিতু)
তারপর আমি একটা গান গাওয়া শুরু করলাম, ” চাঁদেরও আলোতে মুখ খানি দেখবো,
জোছনার আলোতে দু জনে ভাসবো।
,
তারপর দুজন দোজনার চোঁখের দিকে তাকিয়ে থেকে স্বপ্ন দেখাই ব্যস্ত হয়ে গেলাম।
,
ভালোবাসা একটি পবিত্র সম্পর্ক, ভালো থাকুক সবার ভালোবাসা সেই কামোনা করি।