ভালোলাগার ভালোবাসার শাস্তি

ভালোলাগার ভালোবাসার শাস্তি

অনেকদিন ধরে ভেবে রেখেছি আমি তোমাকে অনেক বড় শাস্তি দেব। দু’দিন পর পর তোমাকে ছেলে পক্ষ দেখতে আসে। তখন আমার বুকের ভিতরে যে ঝড় তুলে দাও, তার জন্য তোমাকে কঠিন শাস্তি পেতে হবে। তুমি কী জানো? হারিয়ে ফেলার চেয়ে হারানোর ভয় বেশি কষ্ট দেয়। যারা পরীক্ষায় ফেল করে তাদের একটা কষ্ট, তারা ফেল করেছে। যাদের এখনো পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়নি তারা সারাক্ষন কতটা কষ্টে থাকে তুমি জানোনা। কতটা ভয় নিয়ে প্রতিটা সময় তাদের কাটাতে হয়।

কত নদী-নালা, সাগর পেরিয়ে দূরে বসে আছি। নাটক দেখি, ছবি দেখি। কত গল্প পড়ি। ভালোবাসার মানুষের সাথে হাতে হাত ধরে পাশাপাশি হাটার যে আনন্দ সেটাও আমি পাইনি কখনো। দিনের পর দিন স্বপ্ন বুনি, একদিন আমিও তোমার খুব কাছাকাছি থাকব। তোমাকে দেখার যে প্রবল ইচ্ছে মনে প্রতিনিয়ত জাগ্রত হয়, তার ক্ষানিকটা কষ্ট মুছে দেই তোমার ছবির দিকে তাকিয়ে। তোমার কাছে ছবি চাইলেও যে অনেকদিন ঘুরিয়ে তারপর দেও, তারজন্যও তোমাকে শাস্তি পেতে হবে। এখনতো তোমার ছবিই দেখতে দেওনা। কত অনুরোধ করে ছবি পেতে হয়। দেশে এসে আমার চোখের চাহনিতে তোমাকে ঘায়েল করব। তোমার দুই চিবুক ধরে চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে থাকব ঘন্টা অবধি। তোমাকে দেখতে হবে আমার দুই চোখে কত উছলে পড়া ঢেউ এতদিন তোমাকে দেখার জন্য আছড়ে পড়েছে দুই চোখের কিনারায়।

তোমাকে রাগাতে বলেছি, “এখানে ইথোপাহিনী দেশের এক মেয়ের দিকে তাকিয়েছিলাম। তাকানোর কারণটাও তুমি। সারাক্ষন যদি তোমার মাঝে ডুবে থাকি, ভুল তো হবেই আমার। আমারতো মনে হয়েছিল সেই মেয়েটাই তুমি, তাই তাকিয়েছি। একদম ছলনা করছিনা। ছয় সাত ঘন্টা কাজের সময় আমার কাছে কয়েক মিনিট মনে হয়। কারণ তোমাকে ভাবতে ভাবতেই সময়গুলো চলে যায়। যেদিন ঝগড়া করো, সে দিনটা মনে হয় শেষই হতে চায়না। খুব কষ্টে কাটে সেদিন। এই ঝগড়া করার জন্যও তোমাকে শাস্তি পেতে হবে। বিয়ের এক বছর পরই আমাদের সন্তান হবে ইনশা আল্লাহ। সারাক্ষন তোমার কাছাকাছি আমাদের সন্তান ওয়া ওয়া করে কান্না করবে। তুমি হিমশিম খাবে সামলাতে। আমাকে ডাকলেও তখন তোমার কাছে যাবনা। এটাই তোমার শাস্তি।

কারো সাথেতো ফোনেও কথা বলতে দাওনা। কাজের জন্য কেউ ফোন দিলেও ভেবে নাও হয়তো কোনো মেয়ে আমাকে ফোন দিয়েছে। এই বুঝি তোমার কাছ থেকে আমাকে কেড়ে নিল। শাস্তি পেতে হবে তোমাকে। ঘরে বসে নাম্বার ডায়াল না করেই মোবাইল কানে নিয়ে বলতে থাকব, “আর বলোনা জান, বউটা কেমন যেন। সারাক্ষন সন্দেহ করে। আমি ফ্রি হয়ে তোমাকে ফোন দেব।”তুমি তখন জ্বলে পুঁড়ে ছাড়খার হবে। তুমি ঝগড়া করতে চাইবে আমি বাড়ির বাইরে বের হয়ে যাব। তুমি প্রচন্ড অভিমানে কান্না জুড়ে দিবে। তোমার শাস্তি তখন মওকুফ হবে। গাল বেঁযে টপটপ করে পড়া পানি মুছে দিয়ে বুকে টেনে নেব।

কাজের ব্যস্ততায় তেমন সময় হয়না কথা বলার জন্য। প্রবাস জীবনে সময় বের করতেও অনেক চেষ্টা করতে হয়। যতটুকু সময় পাই ততটুকুও কথা বলতে চাওনা। বাহানা দেখিয়ে আড়ালে থাকো। এর জন্যও শাস্তি পেতে হবে। গভীর রাত অবধি বাইরে থাকব। তুমি ভাতের থালা নিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করতে করতে ঝিমুনি চলে আসবে। শাস্তি শেষ হলে বাসায় ফিরব। একই থালায় ভাত মেখে তোমার মুখে খাবার তুলে দিয়ে আমিও খাব তোমার হাতে।

কথা বলতে গেলে ঘুমিয়ে পড়ো, মেসেজ করতে গেলে ঘুমিয়ে পড়ো। তারজন্যও তোমাকে চরম শাস্তি ভোগ করবে। সন্ধারাতে খেয়েই আমি নাক ডেকে ঘুমাব। আমার সাথে অনেক গল্প করবে বলে যে ভেবে রেখেছো সে আশায় গুঁড়োবালি। দাঁতে কিড়মিড় করে পাশ ফিরে শুয়ে পড়বে তুমি। ঘুম আসবেনা আসবেনা করেও যখন তোমার ঘুম আসবে তখন তোমাকে ধাক্কা মেরে জাগিয়ে তুলব। তুমি আধো ঘুমে যখন মিটমিট করে তাকাবে তখন বুকে নিয়ে গল্প শুনাব।

আমি তোমাকে আগের মতো ভালোবাসিনা বলে যে মিথ্যে অপবাদ দাও তার জন্য সবচেয়ে বেশি শাস্তি পাবে। রান্না করার সময় পেছন থেকে জড়িয়ে ধরব। আয়নার সামনে যখন সাজুগুজু করবে তখনো তোমার সাজ নষ্ট করব। ভালোবাসিনা বলে যে মিথ্যে অপবাদ দিতে তাই সারাক্ষনই তোমাকে ভালোবাসব। শাস্তির জন্য তৈরী হও। সামনের বছর থেকেই তোমার শাস্তি শুরু।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত