-আপনাকে একটা কথা বলতে পারি?
-হুম। বলো।
-যদি কিছু মনে না করেন, আপনার সাথে হাঁটতে পারি। মাহিম মেয়েটির দিকে কিছুক্ষণ দম ধরে তাকিয়ে থেকে বলে,
-হুম,,। কিন্তু, তুমি হঠাৎ আমার সাথে হাঁটতে চাচ্ছো যে।
-হঠাৎ কেনো হবে। প্রায়-ই হাঁটার জন্য মন চায়। (আস্তে করে বলে)
-কিছু বললে?
-কই নাতো! কিছু শুনেছেন?
-না! স্পষ্ট ভাবে শুনতে পাই নি। তবে মনে হচ্ছে কিছু একটা বলেছ! যাহোক বাদ দাও,,। তোমার নাম কি?
-এমা আমার নামটাও ভুলে গেছেন!
-আমি ভুলে যাব মানে?
-কিছু না। আমার নাম সিদরাতুল মুনতাহা।
-খুব সুন্দর নাম।
-ধন্যবাদ।
-তা কি মনে করে আমার সাথে হাঁটতে চাচ্ছো? তাও আবার পরন্তু বিকেলবেলা!
-ওই এমনি। আপনি প্রতিদিন প্রায়-ই হাঁটেন দেখি। তাই মন চেয়েছিল আপনার মত বড় মহত্ত্ব মনের মানুষের সাথে একটু হাঁটতে পারি কি-না!
-বাহ্ বেশ তো। সুন্দর করে কথা বলতে পারো দেখছি। আর আমি বিশেষ কোন বড় মহত্ত্ব মনের মানুষ না। আমি অতি ক্ষুদ্র।
-আমার কাছে তো আপনি বড় মহত্ত্ব মানুষ। তবে জানি না পারি কিনা। তবে সবাই বলে, আমি নাকি সুন্দর করে কথা বলতে পারি।
-চলো সন্ধ্যা গনিয়ে আসছে। এখন আমাকে বাসায় ফিরতে হবে।
-আর একটু থাকি না প্লীজ।
-দেখ সব আবদার সব সময় রাখা যায় না। আমাকে আমার রবের সাথে সাক্ষাৎ করতে হবে।
-আপনি নামাজও পড়েন!
-হুম নামাজ পড়ি।
-বাহ্ বেশ সুন্দর তো।
-চল যাই এখন।
-আপনাকে একটা কথা বলতে চাই। যদি কিছু মনে না করেন বলতে পারি।
-অবশ্যই বল।
-আমি আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
জানি না কখন ভালোবেসে ফেলেছি! তবে প্রতিনিয়ত আপনাকে কথাটা বলব, বলব বলে বলা হচ্ছে না। আজকে পরন্তু বিকেলবেলা বলে ফেললাম। সত্যি আমি আপনাকে ভালোবাসি। মেয়েটার কথা এড়িয়ে চলে যায়। কিছু না বলেই হাঁটা দেয়। মেয়েটা একটু দৌড়ে এসে মাহিমের সামনে দাঁড়িয়ে পরে।
-কি হলো! রাস্তার মাছে দাঁড়িয়ে আছো কেনো?
-আমার উত্তরটা দিয়ে যান।
-কিসের উত্তর?
-ওই যে বললাম আমি আপনাকে ভালোবাসি। আপনি অ্যাক্সেপ্ট করেছেন কি না, সেটা জানতে চাইছি।
-আমি কাউকে ভালোবাসি না।
-আমি আপনার সম্পর্কে সব জেনেছি, শুনেছি। আমি অতীত শুনতে চাই না। অতীত ভাবতে চাই না। মাহিম মেয়েটার কথায় বিব্রত হয়ে যায়। এখন কি বলার প্রয়োজন সেটা জানে না মাহিম।
-শোন মেয়ে, জোর করে ভালোবাসা হয় না।
-আমি তো জোর করছিনা।
-দেখ তুমি যেটা বলছো সেটা আমার পক্ষে সম্ভবনা।
-কেনো সম্ভবনা?
-আমি আমার জীবনে দ্বিতীয় বার কাউকে জরাতে চাই না। আমি পথচলা শিখে গেছি। আমার গন্তব্য আমি পেয়েগেছি। যেখানে, হাজারও মনের আকাঙ্খা, মনের বাসনা, চাওয়া, পাওয়া সব পাব। তিনি আমাকে দিবেন। তাই আমার পক্ষে সম্ভবনা।
-আমি যে আপনাকে ভালোবাসি।
-তার প্রেমে মসগুল হও, যে তোমাকে সৃষ্টি করেছে। যিনি তোমাকে আঠারো হাজার মাখলুকাতের ভেতর তোমাকে শ্রেষ্ঠতম বানিয়েছে। আমি চাই তুমি তার প্রেমে মসগুল হও,,। তিনি তোমার মনের আকাঙ্খা, মনের বাসনা সব পূরণ করবে।
-সত্যি কি পূরণ হবে?
-এমন তো বলি নি। বলেছি, তার প্রেমে মসগুল হও। তিনি চাইলে তোমার ভালোবাসার মানুষটার সাথে বাকীটা পথ হাঁটতে পারবে। আর হ্যা, মনে রেখ মন থেকে কিছু চাইলে “মহান আল্লাহ্” তায়ালা ফেরৎ দেন না।
-“মহান আল্লাহ্ ” তায়ালা যদি আপনার সাথে একি বাঁধনে বেঁধে রাখে। আপনি কি সুখি হবেন?
-তিনি যদি চান তো “ইন শা আল্লাহ্” সুখি হব। আমার বিশ্বাস আছে। তিনি আমাকে এমন কিছু করবেনা, যাতে আমি কষ্টে থাকি। আর থাকলেও কোন সমস্যা নেই। হয়তো কষ্টের মাঝে আমার মঙ্গল রয়ে গেছে।
-আমি তাহলে তার প্রেমে মসগুল হয়ে গেলাম। আমি আমার ভালোবাসার মানুষকে যেন, পবিত্র ভালোবাসার মানুষ হিসেবে কপালে লিখে রাখে। “আমিন ”
-রবের ডাক এসেছে। মাগরিবের সালাত কায়েম করুন। আমি চলিলাম তার সাথে সাক্ষাৎ করতে। বিদায়!
সমাপ্ত