হলুদ শাড়ি

হলুদ শাড়ি

দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছি আমি।কেমন যেন একটা অসস্স্থি অনুভব হচ্ছে।ভেতরে ডুকতে।অথছ ঘরটা আমার।

এই মুহুর্তে দাঁড়িয়ে আমার সকল কৃতকাজের ফলাফল গনছি।হয়ত কোন এক পাপের ফলাফল হিসাবে আমার এই দুর্গতি।

জানিনাহ।আচ্ছা ডুকব ?আজ নাকি আমার বাসর রাত।অথছ কয়েক ঘন্টা আগেও আমি জানতামনা আমার বিয়ে।

কি এক অদ্ভুত নিয়ম তাইনা আল্লহর।??আমি কাকে বিয়ে করব তা আমি অন্তিম মুহূর্তে এসে জানতে পারলাম।

নাহ আমি এখনো জানিনাহ আমার গলায় মা কাকে ঝুলিয়ে দিয়েছে।আচ্ছা বন্ধুগুলা ?থাক বললামনা।

বিপদে ওগোলার সাহায্য পাওয়া যায়না।বাসর রাত ।আহা কতইনা মধুর একটি শব্দ ।মধুর সময় ….মধুর এক রাত।

আহা ভাবলেই কত রোমান্টিক মনে হয়।নতুন একটা মানুষ।তার সাথে পরবর্তী জীবন একসাথে চলার দরজা এই বাসর রাত।

কিন্তু আমার একদম ইচ্ছে হচ্ছে না ডুকতে।কারন আমি এখনো জানিনা বিয়েটা আমি কাকে করলাম।

হয়ত কোন সুন্দরী বা কোন কালো মেয়ে ।যেটাই হোক দুইটাতেই সমস্যা ।

এখন আবার বলবেন কালো হলে না হয় বুঝলাম কিন্তু সুন্দরী হলে কি সমস্যা? আমাকে হয়ত পাগল বলতেও ছাড়বেন না অনেকে।

আচ্ছা দেখেন কালো হলে সমস্যা আপনারাই জানেন…কিছু বললামনা আর।কিন্তু সুন্দরী হলে ?আরে ভাই আমি দেখতে কালো।

বিয়ের পর সুন্দরী বউ এর ভাব থাকবে আমার চেয়ে ৭ গুন বেশি।নিজের রুপচর্চা নিয়ে থাকবে ব্যাস্ত।আমাকে দিবেনা সময় ।

আর আমি বেচারা বউ এর কসমেটিক্স এর পিছনে টাকা ডালিতে ডালিতে হয়ে যাব কাঙাল। ভাবতে ভাবতে দুচোখ ভরে উঠছে।

বউকে কিছু জিগ্যেস না করেই বিয়ে।এটা মানতে পারছিনা।আমার কিছু চাওয়া ছিল বিয়েটা আমে ঐ মেয়েকেই করব যে সুন্দর

করে শাড়ি পরতে পারে আমার পছন্দের (আমার পছন্দের রং সবাই জানে) আর যে খুব ভাল বিরিয়ানি রান্না করতে পারে।

আর বউ হবে দেখতে ভাল না হলেও মনের দিক থেকে উন্নত মানের।খুব সুন্দয করে কাজল দিতে পারে ওবে খালি কাজল আর কিছু না।

উপরের দিকে তাকালাম ।দুহাত তুলে আল্বাহর কাছে বললাম …আমি ভিতরে প্রবেশ করতেছি।আমাকে শক্তি দাও।

আচ্ছা ভিতরে ডুকতে ডুকতে আমি আমার পরিচয়টা দিয়ে নেই
.
আমি খালিদ।একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করি…স্বপ্নটা হুট করেই শেষ করে দিল মা।বাসর রাত।একটা মধুর রাত।

এমন একটা রাত যেটা সব রাত থেকে আলাদা।যেটাতে থাকে কিছু আলাদা মুহূর্ত কিছু আলাদা অনুভুতি কিছু অন্যরকম ভাবনা।

বাসর রাত একটা রোমান্টিক সময় ।সবার মতো আমারো ইচ্ছে ছিল বাসর রাত নিয়ে ।ভাবনাগুলু সবার মতই।

ইচ্ছে ছিল আমি ধিরে ধিরে ঘরে ডুকব।দেখব বালিকা বিয়ের শাড়িতে লম্বা এক ঘোমটা দিয়ে বসে আছে।যদিও শাড়িটা আমার পছন্দের রঃয়ের।

আমি ধিরে ধিরে আগাব।বালিকা লজ্জায় তার আলতা পাগুলি শাড়ির ভেতরে নিয়ে নেবে।আমি গিয়ে বিছানায় বসব।

দেখব বালিকা তার মেহেদি আঁকা শুভ্র হাতজোড়া ভেতরে নেওয়ার চেষ্টায় ব্যাস্ত।আমি স্বাভাবিক হবার জন্য জিগ্যেস করব কেমন আছেন ?
হয়ত কিছুটা সময় নেবে তারপর চাপা স্বরে বলবে ভাল।
হয়ত বালিকা লজ্জায় ঘোমটার নিচে তার গোলাপের পাপরির মত ঠোটগুলি কামরাতে থাকবে।

আমি বলব আমি কি আপনাকে দেখতে পারি ?বালিকা কোন শব্দ করবেনা।বালিকার মৌনসম্মতি তা প্রকাশ করে দেবে কি চায়।

আমি বালিকার আরো কাছে যাব।দেখব বালিকা কিছুটা ভয় আর কিছুটা লজ্জা নিয়ে বসে আছে।আমি ধিরে ধিরে বালিকার লম্বা ঘোমটা উঠাব।

দেখব একজোড়া কাজলটানা চোখ ।চোখজোড়া নিচে নামানো ।দেখব ভীষন লজ্জার এক মায়াভরা চেহারাখানি।আমি তখন তাকিয়েই থাকব।

কোনও কিছু ভাববনা।শুধু দেখেই যাব….
.
আরে দেখেন আমি এখনো ঘরের বাইরেই দাঁড়াই আছি।ঘরের ভেতরে ডুকা উচিত।হয়তো সপ্নপা এখানে বাস্তব হতে চলেছে।

রুমে প্রবেশ করলাম।হায় হায় ।এটা কি দেখছি আমি ।
.
.
.
. 3মিনিট নিরবতা আর শক আমার জন্য ।
এটা কি আমার রুম ?আর এই মেয়েটা কে ?আমার বউ কই ?একটা মেয়ে জিন্স আর শার্ট পরে পা এর উপর পা তুলে মোবাইল টিপছে।

আমার বউ কই।আমি কিছুটা খুজলাম।তারপর বউ বউ বলে চিৎকার দিলাম।তারপর দেখলাম মেয়েটা আমার দিকে বিরক্ত হয়ে তাকাল…
-আপনি কি অন্ধ? (মেয়েটি)
-জিনা আমি দেখতে পাই ।
-তাহলে এভাবে বউকে খুঁজছেন কেন?
-আজব আমি আমার বউকে খুজবনা ?
-নাহ।কারন বউতো আপনার সামনেই আছে ।কানা কোথকার।
হায় আল্লাহ্ ।এটাকি করলা আল্লাহ।আমি কি অপরাধ করছিলাম যে আমাকে এই মেয়ে থুক্কু এই ছেলেটার সাথে বিয়া দিলা।আম্মুউউউউউউউউ
-ঐ ফাইযলামি করেন ?আপনি আমার বউ হতে যাবেন কেন।আমার বউতো শাড়ি পরা ছিল।আপনিতো কি পরে আছেন এগুলা
-আমি চেন্জ করে ফেলছি।
-কিইই।আচ্ছা চেন্জ করলেতো হালকা শাড়ি পরতে পারতেন এগুলি কেন ?
-আমার ইচ্ছে ।আপনার কি ??
-আমার কি মানে ?আপনি আমার স্ত্রী ।
-যেটা বলি সেটা করেন ।আপনাকে বিয়ে করছি ঠিকাছে।কিন্তু আমাকে জোড় করে আমাকে কোন কাজ করাতে পারবেন না।
-দেখেন বিয়েটা কিন্তু আপনার বিপদে আমি করছি
-সেই জন্যই তো এতক্ষণ ভাল আছেন ।
-ভাল আছেন মানে কি ?
-কিছুনা।যান ঘুমিয়ে পরুন।
-কিই ঘুমিয়ে পরব ?মানে কি বাসর রাতের সব ভাবনা ইচ্ছে কি শেষ হয়ে যাবে নাকি???
-কিসের কি ইচ্ছে টিচ্ছে জানিনা।আমার ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমালাম।আর হ্যাঁ আপনি নিচে ঘুমাবেন।
-নিচে ঘুমাব মানে??ঘর আমার।আর আমার আপনি নিচে ঘুমাবেন
-পারবনা
বলেই বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পরল।খুব রাগ হচ্ছে আমার এখন।কি ইচ্ছে ছিল আর কি হল।

ভেবেছিলাম হলুল শাড়ি পরা টুকটুকে মিষ্টি একটা বউকে দেখব বাসর রাতে।এটাতো নির্ঘাত একটা ডাইনি।যদিও দেখতে কিন্ত মিষ্টি।

খুব রাগ হচ্ছে আমার।ইচ্ছে হচ্ছে বাড়ির প্রতিটা মানুষকে জড়ো করে দেখিয়ে দেই এই মেয়ের কান্ড।কিন্তু করিনি।

পরিবারের সবাই বলেছিল মেয়েটা নাকি দেখতে শুনতে ভাল।আচার ব্যবহার খুব ভাল।কচু আমার।

পরিবার আমাকে এত বড় শাস্তি দিলেও আমি কিন্তু দিবনা।ঘর থেকে বেরিয়ে আসলাম।হাটতে লাগলাম রাস্তা দিয়ে ।

গায়ে এখনো বরের পোশাক।হাহা বর।যে বরের কোন স্ত্রী নেই তাঁকে বর বলেনা।রাত মোটোমোটি দুইটা বাজে।

শহরের মেইন রাস্তাটা এখন মোটামোটি খালি।বুকের বামপাশটা কেন জানি খুব ব্যাথা হচ্ছে ।কিছুটা ঠান্ডা বাতাশ বইছে।

মনে হয় বৃষ্টি আসবে।হাটছি।দুরে একটা ছোট দোকান।আচ্ছা একটা সিগারেট খেলে মন্দ হয়না।দোকানে গেলাম।

একটা সিগারেট কিনে বেরিয়ে আসলাম।ধোঁয়া উরাচ্ছি উপরে ।আজ কেন কষ্ট হচ্ছে জানিনাহ।

কিছুটা দুরে গিয়ে দাড়ালাম একটা ব্রিজের উপরে ।সিগারেট টা শেষ করে আবার হাঁটা দিলাম।

বৃষ্টিটা শুরু হয়ে গেছে।প্রথমে ফোঁটা ফোঁটা তারপর মুশল ধারে।আমি হাটছি।আমার পছন্দের কাজ এটি রাতে বৃষ্টির মধ্যে হাটা।

কতক্ষণ হাঁটছি রাতে মনে নেই ।সকাল বেলা নিজেকে আবিষ্কার করলাম রাস্তার পাশের একটা গাছের নিচে।ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম হয়ত।

বাসায় ফিরে আসলাম।
.
সবাই দেখছি একটা রুমে বসে আছে।মনে হচ্ছে কিছু একটা আলোচনা করেছিল।আমি গেলাম।সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।

আম্মু এসেতো আমাকে চর লাগিয়ে দিল।গালে হাত দিয়ে সবার উদ্দ্যেশ্যে ঘটনা বোঝার জন্য দাঁড়িয়ে আছি।
-কোথায় ছিলি সারারাত ?(আম্মু)
-বাইরে
-কেন ?
-রুমে জায়গা পাইনি তাই
-মিথ্যে বলছিস কেন ?তুই মেয়েটাকে কালকে বকেছিস কেন ?এত মিষ্টি একটা মেয়ে তিন্নি
ওহ ঐ মেয়েটার নাম তাহলে তন্নি…কিহহ আমি বকেছিস ??এত বড় একটা মিথ্যে কথাটা কিভাবে বলতে পারল মেয়েটা ?কিন্তু বললই বা কেন ?
-আমি কিছু করিনি মা।উ মিথ্যে কথা বলছে।
-চুপ ।আমি কোন কথা শুনতে চাইনা।তুই উর কাছে মাফ চাবি।কত ভাল একটা মেয়ে ।
কিছু বলিনি আমি।রুমে চলে আসলাম।মাথায় একটা জিনিস ঘুরছে।মেয়েটা মিথ্যে বলল কেন ?জানিনাহ।রুমে চলে আসলাম।

দেখি মেয়েটা পা এর উপর পা তুলে বসে আছি।ভীষন রাগ উঠে গেছে।সামনে দাড়ালাম।
-এগুলার মানে কি ?
-ও হাই কেমন আছেন ?
-আপনি মিথ্যে বললেন কেন?
-কি মিথ্যা বললাম ?
-কাল রাতে আপনি আমাকে বের করে দিয়েছিলেন ।তাহলে সবাইকে কেন বলেছেন আমি আপনাকে বকেছি আর ছলে গেছি ?
-হাহাহাহ
-হাসছেন কেন ?
-বেশ করেছি ।আরো বলব।আর শুনেন আপনি আমাকে এভাবে বলতে পারেন না।কারন আপনাকে সেই অধিকার দেইনি আমি।
-অধিকার দেননি মানে কি
-মানে আপনাকে বিয়েটা মন থেকে করিনি।আমিতো ভালবাসি আরেকজনকে।
-কিহহহহহহহ
কথাটা শোনার পর একটা চিনচিন ব্যাথা অনুভব করলাম।কিন্তু কেন ?বুঝতে দিলামনা।

যেই মেয়েটাকে আমি কালকে রাতেই দেখলাম তার জন্য আমার মায়া তৈরি হওয়া নিছক একটা পাগলামি।
-কিন্তু তাহলে বিয়েটা করলেন কেন ?
-আরে দেখলেন না বিয়েটা আরেক জনের সাথে হচ্ছিল কিন্তু হে বিয়ের দিন মানা করে দেয় আর আমার বিয়ের রাতে

পালানোর সব রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে।আর পরে আপনার সাথে বিয়েটা হল।কি করার এখন বিয়ের পর পালাতে হবে।
-আপনি এগুলু আগে কেন বলেন নি ?তাহলে আমার জীবনটা এত নষ্ট হতনা।
-হাহা।শুনেন বললে কিছু হতনা।দেখেন আপনাকে পরিবার ভালবাসে তাই আপনাকে কষ্ট দিয়ে পরিবারের কাছে

খারাপ করে তারপর আমি সুযোগ বুঝে চলে যাব।
-আপনি এগুলো কি বলছেন ?ছিহহ এতটা খারাপ আপনি?
-জানিনাহ।আর এখন চলে যান এখান থেকে সহ্য হচ্ছে না আপনাকে আমার।
চলে আসলাম ওর সামনে থেকে।
.
.
কি করব জিবনটা বৃথা লাগছে।একটা ঘৃনা জন্মে গিয়েছিল তন্নির উপর।এভাবেই চলছিল আমাদের জীবন।উঠতে বসতে আমাকে কষ্ট দিত।

আমার পরিবারের কাছে আমাকে নিচু করত।আমি অনেকবার আমার পরিবারকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি পারিনি।

তারা কিছুতেই বিশ্বাস করবেনা যে তন্নি আমাকে শুধুশুধু কষ্ট দিচ্ছে ।উ এমন ভাবে আমার পরিবারকে মানিয়ে চলেছে

যে কেওই ওর কথার অবিশ্বাস করতনা।মাও না।এসব যখন চরম পর্যায়ে একদিন তো আমাকে সরাসরি বলে দিয়েছে ঘর

থেকে চলে যেতে।আমার মতো খারাপ ছেলের নাকি ওনার দরকার নেই।খুব কষ্ট লেগেছিল সেদিন।জানিনা কি করব।

রুমে এসে তন্নির দিকে তাকালাম ।
-কি এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন
-আচ্ছা আপনি এগুলা কেন করছেন?চলে যেতে চাইলে চলে যাবেন ।আমি তো বাধা দেইনি চলে যান প্লিজ।আমি আর পারছিনা।
-হিহিহি
রাগে বেরিয়ে আসলাম নিচে।এভাবে থাকা যায়না আর আর বোঝানো যাবেনা ।যেদিন তন্নি চলে যাবে সেদিন মা আর বাকি সবাই বুঝবে।

মাকে বিদায় বলে বেরিয়ে গেলাম।অবাক করা বিষয় নিজের ছেলে ঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছে কিন্তু আটকালোনা।

চলে আসলাম একরাশ বিরক্তি নিয়ে তন্নির উপর
.
.
ঐ ঘটনার আজ 3মাস।আমি এখন অনেক দুরে ।অন্য একটা জব করি।কিন্তু তবুও শান্তি তে নেই।

একটিবারো আমরা পরিবার থেকে আমাকে আমার খোঁজ নেয়নি।এতদিনে হয়ত তন্নি ওর ভালবাসার মানুষটির সাথে চলে গেছে।

যাক আমার কি।আমার কিছু করার নেই ।একটা দির্ঘশ্বাষ ফেলা ছাড়া ।
.
আজ আকাশটা কালো।মনে হচ্ছে একটু পরেই ঝুম ঝুম বৃষ্টি নামবে ।আজকে ভিজলে মন্দ হয়না।

তাই অফিস থেকে বেরিয়ে পারলাম ছাতাটা না নিয়েই।বৃষ্টি পরছে ফোঁটা ফোঁটা ।হয়ত একটু পর মুশল ধারে পরবে।

পরছেও।ইচ্ছেমত মন খুলে ভিজলাম।বাসায় চলে আসলাম ।ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসলাম।আজকে লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে কিন্তু কিছুতেই

আমার ডাইরিটা পাচ্ছিনা যেখানে আমর সব ইচ্ছে চাওআ পাওয়া মনের কথা লেখা আছে।নেই মনে হয় বাসাতেই ফেলে এসেছি।

মনটা খারাপ হয়ে গেল।বাসা থেকে বেরিয়ে একটা পার্কের বেন্চে গিয়ে বসলাম।

আকাশের কালো মেঘগুলি আর পাখিদের এলোপাথাড়ি ওড়াটাখে দেখছিলাম
.
হঠাৎ আমার চড় মারল কেও একজন…তাকালাম ।একটা হলুদ শাড়ি পরা একটা মেয়ে ।খুব সুন্দর করে কাজল দেওয়া ।অসম্ভব সুন্দর রাগছে তাকে।

মনে হচ্ছে যেন এই চেহারাটি দেখে আমার সব কষ্ট এক নিমিষেই দুর হয়ে যাবে…. আরে এটাতে তন্নি।কিন্তু মারল কেন ?

কোন অধিকারে।আর তন্নি এখানে এসেছে কিভাবে ?
আমি দাড়ালাম।হঠাৎ আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল তন্নি।খুব শক্ত করে।জানিনা কেন খুব ভাল লাগছিল।

শক্ত করে ধরে অঝরে কেদে চলেছে।আমার বুক ভিজিয়ে দিল।।আমি এক ঝটকায় ছাড়িয়ে নিলাম তাকে।
-এখানে কেন এসেছেন ?
-প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও ।আমি সত্যিই তোমাকে ভালবাসি।(কেঁদে কেদে)
-হাহাহাহাহা।তোমার ভালবাসার মানুষটার কি ডিভোর্স দিয়েছে নাকি?
-একবার শোন আমার কথাটা।আর কোন ভালবাসার মানুষ ছিলনা।আমিতো তোমাকে দেখতে চেয়েছিলাম এত কষ্টের পরেও কি আমাকে ভালবাস কিনা ।

কিন্তু আমি তোমাকে সত্যিই ভালবাসি।ঐ একটাই ছিল আমার ভুল (কেঁদে কেদে)
-ক্ষমা কর আমাকে।আমি ভুল মানুষকে ভালবেসে কষ্ট পেতে চাইনা আর ।অনেক কষ্ট পেয়েছি আমি ।আরনা।
-প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও।আমি আজ পর্যন্ত একটা রাতো ঘুমুতে পারিনি।খুব কষ্ট হচ্ছে আমার ।আমি হয়ত মরে যাব….আমাকে ক্ষমা করে দাও।
-কিছু ভুলের ক্ষমা হয়না কোনদিনো।
.
এই বলে আমি চলে আসলাম।হাঁটছি আর পিছন থেকে তন্নির জোরে জোরে কান্নায আওয়াজ শোনা যাচ্ছে ।

ভাবছেন আমি উকে মেনে নিলেই পারতাম?হ্য ঠিক বলেছেন।উর চোখের জল দেখে আমি বুঝলাম আসল ভালবাসাটা সত্য ।

কিন্তু কি জানেন এতটা কষ্ট পেয়েছি তাই ওকেও এক্টু কষ্ট দিয়ে বোঝাব যে ভালোবাসার মানুষদের থেকে কষ্ট টা সবচেয়ে বেশি ।

থাক কাদুক।কিছুদিন পর ওকে আগলে নেব।
.
.
পিছন ফিরে তাকালাম ।লোভটা সামলাতে পারিনি ওকে হলুদ শাড়িতে আবার দেখার।

তাই দুর থেকেই দেখলাম হলুদ শাড়ি😍কেঁদে কেদে কাজল চোখ লেপ্টে গেছে…..

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত