দীর্ঘদিন ধরে এক মেয়ের উপর ক্রাস খেয়ে আছি।কিন্তু কোনভাবেই বলতে পারছিনা।আগেও নাকি তাকে অনেকে প্রপোজ করেছে।কিন্তু কেউ তার মনের মতো হতে পারনি।তাই এখনো সিঙ্গেল আছে। আজ অবশেষে গিয়ে তার সামনে দাড়ালাম।বুকের মধ্যে কেমন জানি করছে।মনেও ভীষণ ভয়।যদি মনের মতো হতে না পারি তাহলে সব শেষ।সাহস করে বলেই ফেললাম আমি তোমাকে ভালোবাসতে চাই। মেয়েটি এখন আমার দিকে তাকিয়ে আছে।বলল,তোমার ফ্রেন্ডলিস্টে কতজন ফেসবুক সেলিব্রিটি আছে?আজিব একটা প্রশ্ন করে বসলো।বললাম,একজন ও নাই।তবে অনেকজনকে ফলো করি।
মেয়ে দেখি আমাকে আর পাত্তাই দিচ্ছেনা।বলল,যেদিন সব ফেসবুক সেলিব্রিটিকে এড করতে পারবে সেদিন আমার সামনে আসবে।আমাকে সত্যি ভালোবাসতে চাইলে এটা করে দেখাও।না হয় আর কখনো আমার সামনে আসবে না।এই বলে চলে গেলো আমার ক্রাস। মনে মনে অনেকটা খুশি।এ আর এমন কি! ভালোবেসে মানুষ কত কিছু করে।আর আমি সামান্য এটাই পারবোনা তা হয় নাকি!বাসায় এসেই খুঁজে খুঁজে সবাইকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়ে দিয়েছি।কাল সকালেই তাহলে ক্রাসের সামনে যেতে পারবো।আহা!কি খুশি।
একঘন্টা হয়ে গেছে এখনো কেউ একসেপ্ট করলোনা।কি ব্যাপার!রিকুয়েস্ট কি চোখে পড়েনি নাকি ওদের?মনে হয় সবাই ব্যস্ত তাই।রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেও যখন কেউ একসেপ্ট করেনি তখন আর স্হির থাকতে পারলাম না।রেগে গিয়ে অনেককে মেসেজ পাঠিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছি।অনেক্ষণ হয়ে গেলো মেসেজের রিপ্লে পেলাম না।রিপ্লেত দূরের কথা কেউ সিন ও করলো না। পরে চিন্তা করে দেখলাম ফেসবুক সেলিব্রিটিদের ফ্রেন্ড হওয়া মোটেই সহজ কাজ নয়।অনেকজনের প্রোফাইলে ডুকে একবছর আগের ছবিতেও লাইক দিয়ে এসেছি আকর্ষণ পাওয়ার জন্য।তাতেও কোন কাজ হলো না। দুইদিন পরেও কেউ রিকু একসেপ্ট করলো না দেখে ব্যাপক হতাস হলাম।তাহলে ক্রাস আমার সাথে রিলেশন না করার জন্যেই এমন কাজ দিলো।কিন্তু আমিও সহজে হারার পাত্র না।
আরেকবার গিয়ে সবার স্ট্যাটাসে কমেন্ট করে আসলাম সুন্দর করে।কমেন্টগুলো ছিলো এমন- আপনার লেখাগুলো আমার অনেক ভালো লাগে।আপনি এত ভালো কেমনে লিখেন?অনেক বড় মাপের লেখক আপনি। আমি আপনার অনেক বড় ভক্ত।প্রতিদিন আপনার স্ট্যাটাস না পড়লে আমার পেটের ভাত হজম হয় না। এইরকম উরাধুরা সব পাম্প দিয়ে আসলাম।এতে তিনজন একসেপ্ট ও করে ফেলেছে।কিছুটা খুশি হলাম।এবার বুঝি কাজ হচ্ছে।কিন্তু আর কেউ একসেপ্ট করছে না।আবারো হতাস হলাম।অবশেষে গুগলে সার্চ করলাম,কিভাবে ফেসবুক সেলিব্রিটিদের ফ্রেন্ড হওয়া যায়?মনের মতো একটা উত্তরো খুজে পেলাম না।
অবশেষে দুই রাত তিন দিন অনেক ভাবার পর আবিষ্কার করলাম এক নিন্জা টেকনিক।প্রথমেই যাকে রিকু দিব ভাবলাম তার কিছু স্ট্যাটাস টাইমলাইনে শেয়ার করলাম।নজর কাড়ার জন্য পাম্পপূর্ণ ক্যাপশন সংযুক্ত করলাম।ক্যাপসন গুলো হলো -স্যার আপনি অনেক বড় মাপের একজন লেখক।আজ আপনার মতো একজন সেলিব্রিটির লেখা পড়তে পেরে অনেক ভালো লাগলো। এত ভালো কেমনে লিখেন আপনি? এটা ছিলো আমার ফেসবুক ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা স্ট্যাটাস।ধন্যবাদ প্রিয় স্যার। সবশেষে,আপনার মতো একজন লেখকের সন্ধান পেয়ে আমি সত্যিই গর্বিত।আপনার ফ্রেন্ড হতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করবো। এরপর আগের রিকু বাতিল করে আবার রিকু দিলাম।কিছুক্ষণ পরেই একসেপ্ট।একসেপ্ট করার পরেই শেয়ারগুলো ডিলেট করে আরেকজনকে পাম্প দিলাম।একসপ্তাহের মধ্যেই সবার সাথে ফ্রেন্ড হয়ে গেলাম।এবার ক্রাসের সামনে যাওয়ার পালা।
পরেরদিন মনের খুশিতে ক্রাসের সামনে গিয়ে অনেকটা ভাব নিয়ে বললাম,কি ভেবেছিলে পারবোনা?এখনতো ভালোবাসতেই হবে।ক্রাস খুশি হয়ে বললো দেখি।মোবাইল আমাকে দাও।ক্রাস কি যেন দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লো।চোখের পানি গড়িয়ে পড়ছে।মনে হয় আবেগে কান্না করছে।কান্না জড়িত কন্ঠে বলল,তুমিও হিরো আলমকে ফ্রেন্ড বানাতে পারলেনা।কেউ আমার প্রিয় মানুষটির সাথে বন্ধু হতে পারলেনা।তুমিও বাকিদের মতোই আমাকে ভালোবাসনা। ধপাস করে মাটিতে পড়ে গেলাম।শিট!শিট!হিরো আলম নাকি প্রিয় মানুষ।হুদাই সময়টায় নষ্ট করলাম।শিট!জীবনটায় বেদনা।থাক তুই তোর হিরো আলম নিয়ে। এ জীবন আর রেখে কি হবে!