টুইন বয়ফ্রেন্ড

টুইন বয়ফ্রেন্ড

নিজের আপন বয়ফ্রেন্ড কে অন্য মেয়ের সাথে দেখলে যেকোনো গার্লফ্রেন্ড”ই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠবে। সেইক্ষেত্রে আমি আর ব্যতিক্রম কিছুই ছিলামনা। সকাল সকাল বান্ধুবীরা সব মিলে একটা পার্কে গেলাম। পার্কের এক কোণে অনেকগুলো ফুচকার দোকান দেখে আমরা একটা দোকানের বাহিরে বসেই ফুচকার অর্ডার দিলাম। ৫মিনিটের মধ্যে চার প্লেট ফুচকা আমাদের সামনে হাজির। ফুচকা দেখেই আমার আর তর সইছিলোনা , ওমনি ঝাপিয়ে পরলাম ফুচকাগুলোর উপর।

ইয়ে মানে খেতে আরম্ব করলাম। বান্ধুবী রুহি কণুই দিয়ে গুতো মেরে বলল সায়মু দ্যাখ ত্য ওটা তুহিন ভাইয়া না…! (তুহিন আমার সেই বলদ) আমি ওর চোখের আন্দাজ অনুযায়ী তুহিনকে দেখার চেষ্টা করলাম। হুমম আসলেই ত্য তুহিন একটি বেঞ্চে বসা আর তার কোলে একটি শিশু শুয়ে আছে। আমি একসাথে শেষের দুটো ফুচকা মুখের ভিতর ঢুকিয়ে বসা থেকে উঠে আরও কাছ থেকে দেখার চেষ্টা করলাম। হায় আল্লাহ এটাতো দেখি এক মেয়েকে কোলে শুয়ে রেখে বাদামের খোসা ছাড়িয়ে মেয়ের মুখে দিচ্ছে। দেখেছো কান্ড..!

আমার মতো একটা কিউটি বিউটি গার্লফ্রেন্ড রাইখা হারামজাদা শেষে কিনা অন্য মেয়েকে কোলে শুইয়ে রাখে…! আজ ওর নিস্তার নেই, জামার হাতা বটে হন্তদন্ত হয়ে ওদের মারতে যাবো ওমনি আমার বান্ধুীরা পেছন থেকে ঝাপটে ধরে বললদোস্ত এখানে কিছু করিসনা ঠান্ডা মাথায় বাসায় চল। বাসায় গিয়ে টুশ করে ব্রেকআপ করে দিবি। নাজু বলল চিন্তা করিসনা আমার এলাকা নিলয় হেন্ডসাম টার সাথে তোর রিলেশন করিয়ে দিবো। আমি আর কিছু না বলে পায়ের জুতো দুটো খুলে মেরে দিয়ে আসলাম। যদিও ওদের গায়ে পরেনি, পার্কের বাহিরে এসে পরেছে। বের হয়ে সেগুলো পায়ে দিয়েই চলে এলাম। খালি পায়ে যাবো আমি..? নো, নেভার,কাভি নেহি বাসায় এসে তিন পেকেট টিস্যু শেষ করলাম শুধু চোখের জ্বল আর নাকের জ্বল মোছার জন্য। এ জীবন পুরানো বদনার মতন হয়ে গেলো। এরপর,,, তুহিন এর কল এলো…

—হ্যালো…
—আমার ময়না পাখি টা কি করে…!
—মূলার পায়েস বানাই হারামজাদা।
—ছিঃ ছিঃ এভাবে বলেনা বাবুতা। আজ কল দেইনি বলে রাগ করছে আমার বাবুটা…?
—এই শোন তোর সাথে ব্রেকআপ। আমায় আর কল দিবি ত্য আস্ত গিলে খাবো হারামজাদা।
— এহহহ বললেই হলো। রোজ ৩,৫০০ বার ব্রেকআপ হয়। আবার ঠিক হয়ে যায়।
— এবার আর ঠিক হবেনা,, পার্কে অন্য মেয়েকে কোলের উপর শুইয়ে রাখা? এত্তোবড় সাহস তোর।
— ইয়ে মানে সায়মু টুট টুট টুট এরপর অনেকগুলো কল,, আর প্রতিটা কলই রিজেক্ট করলাম। তারপর একটা ছোট্ট ম্যাসেজ,,, Saymu asole amra jomoj vai… ওর এই ম্যাসেজ দেখে সাথে সাথে কল দিলাম।

— হ্যালো
— এটা কি সত্যি?
— ১০০%। বিশ্বাস না হলে কাল দেখা করো দুই ভাই একসাথেই আসবো।

যাক ওর কথা অনুযায়ী সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে আমিতো ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম। সেম কালার, সেম ডিজাইন ও সেম সাইজের দুটো তুহিন দাঁড়িয়ে আছে। ইয়ে মানে এর মধ্যে আমার তুহিন কোনটা বোঝা যাচ্ছেনা। আর,ওদের দুই ভাইয়ের মাঝখানে সেই মেয়েটা দাঁড়িয়ে আছে যাকে পার্কে শুয়ে থাকতে দেখেছিলাম। আমার চোখ কপালে প্রায় ১’৫” উঠে গেছে। দুজনের মাঝে কোনটা তুহিন বোঝা যাচ্ছেনা। মেয়েটা আমাকে বলে উঠলো সায়মু বলোতো এরমধ্যে তোমার তুহিন কোনটা। আমি ভালো ভাবে লক্ষ করছিলাম। ছোট একটা ইঙ্গিত পেলেই বুঝে নিবো দুজনের মধ্যে আমার তুহিন কোনটা।

হুমম একটা ব্যাপার স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে মেয়েটা যে দুজনের মাঝখানে দাঁড়িয়েছে একজনের দিকে একটু বেশি ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। সুতরাং এতেই বোঝা যায় ওটা তুহিন এর ভাই, আর অপর পাশেরটা তুহিন। আমিও খুশিতে ঝাপটে এসে তুহিনকে জড়িয়ে ধরলাম। সাথে সাথে ছেলেটি বলে উঠলো এই কি হচ্ছে এসব ছাড়ুন ছাড়ুন আমি তুহিন না। আমারতো আক্কেলগুড়ুম পাশের ছেলেটার দিকে তাকিয়ে দেখি সে জিহ্বায় কামড় দিয়ে তাকিয়ে আছে। এইদিকে মেয়েটা দাঁত কিড়মিড় দিয়ে বলল আমার বয়ফ্রেন্ড কে জড়িয়ে ধরা হুহ এই মাহিন তোর সাথে আমার ব্রেকআপ।

তারপর মেয়েটি হেঁটে চলে যাচ্ছে পেছন পেছন তুহিনের ভাই ছুটলো ওকে ম্যানেজ করতে। এইদিকে আমার মেজাজের তেল দারুণ ভাবে গরম হয়ে গেছে,, আমার মেজাজে ভুট্টা দিলে নির্ঘাত পপকর্ণ হয়ে বের হবে। কত্তবড় সাহস আমার বফ হয়ে অন্য মেয়ের সাথে গা ঘেঁষে দাঁড়ানো।

ব্রেকআপ, ব্রেকআপ, ব্রেকআপ

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত