রাতে মা মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো আর কতদিন বাবা এবারতো একটা বিয়ে করে নে। আর রাইসাও তো এখন বড় হয়েছে ওকে না হয় আমার কাছেই রেখে দিব। আমি মায়ের কথায় মোটেও বিচলিত হয়নি। কারণ মা মাঝে মাঝেই আমাকে বিয়ের কথা বলে। সাদিয়া যখন রোড এক্সিডেন্ট এ মারা যায় তখন রাইসার বয়স দেড় বছর। মাঝে কেটে গেছে আর সাড়ে পাঁচ বছর রাইসার এখন সাত বছর বয়স।
মা আবার ও বলে উঠলেন সিয়াম, আমরাতো এখানে নতুন এসেছি তাই কাউকে না হয় বলবো না রাইসা তোর মেয়ে। আমি মাকে থামিয়ে দিয়ে বললাম তুমি কি পাগল হয়ে গেছো নাকি মা। আমার মেয়েকে আমার মেয়ে বলবো না। আর আমার বিয়ে করার কোন ইচ্ছে নেই। তুমি যাওতো আমি ঘুমাবো। মা বললেন তোর দরকার না থাকতে পারে আমার আছে, আমার এখন বয়স হয়েছে কয়দিন বাঁচি না বাঁচি তখন তোকে কে দেখে রাখবে আর রাইসাকেই বা কে দেখে রাখবে। উফ মা তোমাকে এতো তাড়াতাড়ি মরতে দিলেতো। যাওতো যেয়ে দেখ রাইসা মনে হয় ঘুমিয়ে গেছে তুমিও যেয়ে ঘুমিয়ে পড়। মা, হ্যাঁ যাচ্ছি তবে এবার তোকে বিয়ে করতেই হবে এই আমার শেষ কথা বলে মা দরজা লাগিয়ে চলে গেল।
সাদিয়া আর আমার সংসারটা বেশ সুখেরই ছিল। দুই বছর প্রেম করার পর বিয়ে করি আমরা। দেড় বছরের মাথায় আমাদের সংসার আলো করে আসে রাইসা। মেয়েকে নিয়ে সারাদিন পুরো ঘর মাতিয়ে রাখতো সাদিয়া। কত প্লান ছিল মেয়েকে নিয়ে, যদি কখনো অফিস থেকে এসে একটু কঠিন কথা বলতাম তখনি কান্না কন্ঠে সাদিয়া বলে উঠতো আমাকেতো এখন সহ্য হয়না। একদিন বাসায় এসে দেখবে আমি আর নেই।
আমি তখন আরও রেগে বলতাম কার সাথে যাবে শুনি কাউকে পেয়েছো নিশ্চই আমার চেয়ে ভাল? সাদিয়া কান্না করতে করতে বলতো তোমার চেয়ে ভাল কাউকে খোঁজার আগে যেন আমার মরণ হয়। বলেই দৌড়ে বুকে ছুটে এসে বলতো আর কখনো আমি এমনটা করবো না। আমি মাথায় হাত বুলিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে বলতাম পাগলী আমিতো তোমাকে রাগানোর জন্য এমনটা বলেছি বড্ড ভালবাসি তোমাকে।
সেদিন খুব সকালে উঠে নাস্তা বানিয়ে দেয় সাদিয়া নাস্তা খেয়ে যখন অফিসে যাবো তখন সাদিয়া বলে, বাসায় মিষ্টি শেষ যদি পাড়ি নিয়ে আসার জন্য, আমি যেন কি মনে করে বলে ছিলাম পাশেইতো দোকান তুমিওতো আনতে পারবে। সাদিয়া হেসে বলেছিলো ঠিক আছে আমিই নিয়ে আসবো তুমি বরং বেলী ফুলের মালা নিয়ে এসো কতদিন খোপায় পড়ি না। আমি ওকে জড়িয়ে ধরে বললাম আমি এসে পড়িয়ে দিবো। সাদিয়া বললো হয়েছে ঢং করতে হবে না আর বলছি বলে এখন কখনোতো আর নিজের ইচ্ছেতে নিয়ে আসো না। আমি, আচ্ছা ভুল হয়েছে এখন থেকে নিয়ে আসবো বলে বাসা থেকে বের হলাম।
পথে যেতেই দেখতে পেলাম রাস্তায় বাচ্চা বাচ্চা ছেলে মেয়েরা ফুল বিক্রি করছে। আমি দুটো ফুলের মালা কিনে নিলাম। আর মনে মনে ভাবতে শুরু করলাম সত্যিই হয়তো আমার ভালবাসা কমে এসেছে। আমি আজকাল হয়তো একটু অবহেলায় করছি সাদিয়াকে, না এমনটা আর হতে দেয়া যাবে না। অফিসে বসে কাজ করছিলাম এর ভিতর মা ফোন দিয়ে বললো। বাবা তুই দ্রুত একটু হাসপাতালে আয়তো। আমি বললাম মা কি হয়েছে মা বললো তুই আয় তাহলেই বুঝতে পারবি। আমি আর কোন কিছু না বলেই দ্রুত অফিস থেকে বের হয়ে গেলাম। কয়েক বার সাদিয়ার নাম্বারের ফোন দিলাম কিন্তু ফোন ধরলো না। মনের ভিতর কেমন যেন ভয় লেগে গেল, সাদিয়ার কিছু হলো নাতো। হাসপাতালে যেয়ে যখন মাকে জিজ্ঞাসা করলাম মা কি হয়েছে, আমার সাদিয়া কোথায়, মা কান্না করতে করতে হাতের ঈশারায় সাদা কাপড়ে মুরানো সাদিয়ার দিকে হাতের ঈশারা করলো।
আমি কাপড়টা তুলতেই যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না, এটা আমার সাদিয়া। পুরো মুখটা রক্তে মাখা, আমার দুচোখ বন্ধ হয়ে আসছিল। সেদিন সাদিয়াকে কবর দিয়ে তার কবরের পাশে রেখে আসি বেলী ফুলের মালা দুটো। প্রাণ ঘাতী বাসের সাথে ধাক্কা লেগে আমার সব ভালবাসা হারিয়ে যায় সেদিন। সেদিনের পর থেকেই রাইসার বাবা, মা দুটোই আমি। আমি চাইনা কেউ কোন দিন সাদিয়ার জায়গা পাক, আমি চাইনা রাইসার জন্য ভালবাসা কমে যাক, তাই বিয়ে করার কোন প্রশ্নই আশে না।
পুরনো দিন গুলোর কথা ভাবতে ভাবতে সকাল হয়ে গেল। ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে রাইসাকে সঙ্গে নিয়ে নাস্তা করে নিলাম। মা খাবার টেবিলেই বললো রাইসাকে তুই স্কুলে দিয়া আসবি আমি পারবো না। আমি বললাম আচ্ছা আমিই দিয়ে অফিসে যাবো তোমার এতো রাগ করে থাকতে হবে না তুমি বরং যেয়ে নিয়ে এসো। মা বললো পারবো না, জানি মা নিয়ে আসবে সে তার নাতনীকে ছাড়া কিছুই বোঝে না। আমি আর কথা না বাড়িয়ে বের হয়ে পড়লাম বাসা থেকে। গেটের কাছে যেতেই রাইসা একজনকে বলে উঠলো হ্যালোও মৌ আন্টি গুড মরনিং, সেও বলে উঠলো গুড মরনিং রাইসা কেমন আছ? স্কুলে যাচ্ছ রাইসা, বললো জ্বি আন্টি তারপর উনি রাইসার কপালে একটা চুমু এঁটে দিয়ে বললো ওকে যাও এসে আমার কাছে চলে এসো দুজনে অনেক মজা করবো।
গাড়িতে বসে জিজ্ঞাসা করলাম মেয়েটা কে রাইসা? উনিতো মৌ আন্টি আমাদের বাড়ির বাড়িওয়ালী দাদীর মেয়ে। আমি বললাম তুমি কি করে চিনো? রাইসা বললো কেন? আমরা দুজনতো বন্ধু রোজ রোজ পুতুল খেলি কত মজা করি। আমি বললাম তুমিতো বাবাকে বলোনি কোন দিন তোমার বন্ধুর কথা। রাইসা, তুমিতো কখনো জিজ্ঞাসা করোনি তাই বলিনি। আমি আর কিছু বললাম না। মেয়ে যদি একটু খুশি থাকে একটু আনন্দে থাকে তাতে আমার কোন সমস্যা নেই। মা মরা মেয়েটা যদি হাসি খুশি থাকে তবেই আমার সুখ।
রাইসাকে স্কুলে দিয়ে আমি অফিসে চলে আসলাম। দুপুরের পর মা ফোন করে বললো সিয়াম তুই কি রাইসাকে নিয়ে গেছিস স্কুল থেকে, কথাটা শোনে আমি চমকে উঠলাম বললাম নাতো মা, আমি কি ওকে স্কুল থেকে নেই। মা বললো ওকেতো স্কুলে পাচ্ছি না, আমি বললাম ভাল করে খুঁজে দেখ। মা বললো সব জায়গায় খুঁজেছি কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না। আমি আর এক মুহূর্তও দেরী না করে অফিস থেকে বেড়িয়ে পড়লাম। মাকেকে বললাম বাসায় যেয়ে দেখতে ও একা চলে গেছে কিনা, কোথায় গেল মেয়েটা। স্কুলে যেয়ে দারোয়ানকে জিজ্ঞাসা করলাম সে রাইসাকে দেখেছে কিনা সে বললো না। আমার পুরো আকাশ যেন কালো হয়ে যাচ্ছিল আমি আরও একবার চোখে ঝাপসা দেখতে শুরু করলাম।
হঠাৎ করে আইসক্রিম হাতে রাইসা এসে পেছন থেকে বললো বাবা। আমি ঘুরে তাকিয়ে দেখি রাইসা আমি জড়িয়ে ধরে বলি মা কোথায় গিয়েছিলে তুমি। দাদী আমি কত টেনশন করেছি। মৌ এসে বললো সরি ভাইয়া না বলে নিয়ে গিয়েছিলাম, আসলে আপনার বা আন্টির নাম্বার ছিল না বলে বলতে পাড়িনি। আজ ভার্সিটির ক্লাশ ছিল না তাই ওকে নিয়ে একটু ঘুরতে বের হয়েছিলাম। আমি রেগে যেয়ে বললাম আর কখনোও এমনটা করবেন না। বলে রাইসাকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় আসার পর থেকেই রাইসার মন খারাপ আমি জিজ্ঞাসা করলাম কি হয়েছে আমার মায়ের মন খারাপ কেন? রাইসা, বাবা তুমি মৌ আন্টিকে কেন বকা দিলে তুমি পঁচা হয়ে গেছ। কথাটা শোনে অনেকটা আঘাত লাগলো। সত্যিই আমার মৌ এর সাথে খারাপ ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। তখন রাগের মাথায় বেশী রিয়াক্ট করে ফেলেছি।
ভাবতে ভাবতে কলিং বেলটা বেজে উঠলো, রাইসা বললো তুমি ভিতরে যাও মৌ আন্টি এসেছে তোমাকে দেখলে আমার সাথে খেলবে না। আমি রুমের দিকে যেতেই দেখি রাইসা দরজা খুলতে সত্যি সত্যিই মৌ এসেছে। আমি রুমে যেয়ে দরজা চাপিয়ে দিলাম। রাইসা মৌ এর সাথে খেলছে, আমি কিছু সময় পর বের হতেই মৌ আমাকে দেখে দাঁড়িয়ে পড়লো। আমি বললাম বসুন আর তাকে বললাম আমি দুঃখিত কিছু মনে করবেন না। আসলে তখন মাথা ঠিক ছিল না।
মৌ, না ঠিক আছে আসলে অন্যায় আমি করেছি তার জন্য আমি সরি, এভাবেই শুরু হলো আমাদের কথা বলা। দেখতে দেখতে প্রায় ছয় মাস হয়ে গেল আমাদের এ বাড়িতে আসার, মা একটু গ্রামে গিয়েছেন ফুপু অসুস্থ থাকার কারণে এমন সময় আমার প্রচন্ড জ্বর আসলো, রাইসা ছোট মানুষ কি করবে কিছু বুঝতে না পেরে মৌকে ডেকে নিয়ে আসলো, তখন জ্বরে আমার বেহুস অবস্থা কিছুই ভাল করে মনে নেই। মৌ মাথায় জল পট্রি, পানি দেয়া, ডাক্তার ডেকে আনা সব কিছু করলো চার পাঁচ দিনের ভিতর আমি সুস্থ হয়ে গেলাম মোটামুটি।
হঠাৎ মৌ এসে বললো এখন কেমন আছেন? আমি বললাম এখন অনেকটাই সুস্থ, আপনাকে ধন্যবাদ অনেক করেছেন আমার জন্য। মৌ হেসে বললো কফি খাবেন আমি খুব ভাল কফি বানাতে পাড়ি। আমি বললাম মন্দ হয়না অনেক দিন কফি খাওয়া হয় না। তারপর মৌ কফি নিয়ে আসলো দুজন বারান্দায় দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছি এমন সময় মৌ বলে উঠলো আপনাকে একটা কথা বলতে চাই। আমি বললাম বলে ফেলুন কোন সমস্যা নেই। মৌ বলে উঠলো আমি রাইসার মায়ের দ্বায়িত্ব নিতে চাই কথাটা শোনার সাথে সাথে আমার হাত থেকে কফির মগটা পড়ে গেল।
আমার এই মুহুর্তে কি বলা উচিৎ আর কি করা উচিৎ কিছুই যেন মাথায় আসছিল না। এর ভিতর মৌ আমার হাত চেঁপে ধরে বললো প্লিজ আপনি না করবেন না। আমি ওর হাতটা সরিয়ে বললাম আপনি ভাল কোন ডাক্তার দেখান আপনার মাথায় সমস্যা হয়েছে। আপনি শিক্ষিত একটা মেয়ে হয়ে কি সব পাগলের মত কথা বলছেন? আপনি এখুনি বেড়িয়ে যান আর কখনো আসবেন না আমার বাসায়। সেদিও ওকে রাগ করে বাসা থেকে তাড়িয়ে দিলাম। রাইসা ওদের বাসায় যেতে চাইলেও আমি যেতে দিতে চাইতাম না। বলতাম ওর পরীক্ষা চলছে আর মৌ ও সেদিনের পর আসতো না। চার দিন পর মৌ এর মা খুব সকালে আমার রুমে আসলো। আমি সালাম দিতেই উনি রেগে বললেন কেমন ছেলে তুমি তোমার লজ্জা শরম কিছু নেই। আমি বুঝতে পারলাম না উনি কেন এই কথা বললেন। আমি বললাম আন্টি আমি কি করেছি। উনি রেগে গিয়ে বললেন তুমি একটা বিবাহিত ছেলে তোমার একটা মেয়ে আছে তুমি কেন আমার এই ছোট মেয়েটার পেছনে পড়েছো? আমি কিছু বলার ভাষা পেলাম না প্রচন্ড রাগ উঠলো মৌ এর উপর।
তারপরেও আমি মাথা নিচু করে রাখলাম। উনি বললেন তোমরা এ মাসেই বাসা ছেড়ে দিবে। আমি বললাম আন্টি একটা মাস সময় দিলে খুব ভাল হতো এতো অল্প সময়ে কি করে ভাল বাসা খুঁজে পাবো। সে বললো তা আমার দেখার বিষয় না তোমাকে যা বলছি তা করবে। আমি বললাম ঠিক আছে।
এর ভিতর রাইসার প্রচন্ড জ্বর আসলো। মাকে ফোন দিয়ে নিয়ে আসলাম, তিন, চার দিন পর রাইসার জ্বর কমে আসলে আমি অফিসে চলে যাই, অফিসে থাকা অবস্থায় মা ফোন দিয়ে বলে তুই তাড়াতাড়ি বাসায় আয়। আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম রাইসার আবার কিছু হলো নাতো। আমি অফিস ফেলে ছুটে আসলাম বাসায়। বাসায় আসতেই দেখি অনেক লোকজন খুব ভয় পেয়ে গেলাম। বাড়িওয়ালী আর মা হাসতে হাসতে আমার কাছে এগিয়ে আসলেন, কিছু সময় পর দেখলাম রাইসাও আসছে সাথে লাল শাড়ি পড়ে মাথায় ঘুমটা দিয়ে কেউ একজন রাইসার হাত ধরে নেমে আসছে।
অল্প সময়ের ভিতর মা একটা পাঞ্জাবি নিয়ে এসে হাতে দিয়ে বললো যা এটা পড়ে আয়। আমি বললাম মানে কি? মা তোর এতো মানে বুঝতে হবে না, যা বলছি তাই কর। আমি বুঝে ফেললাম যে কি হতে যাচ্ছে কিন্তু এর জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত না। অবশেষে আমার আর মৌ এর বিয়েটা হয়ে গেল।
আমার কাছে কোন কিছুই ভাল লাগছিল না। একে একে সন্ধ্যার পর আমার রুম থেকে সবাই বেড়িয়ে গেল। রাতে আমি আমার রুমে ঢুকলাম যেখানে আগে থেকেই মৌ অপেক্ষা করছিল। আমি ঢুকে অবাক হয়ে গেলাম মৌ এর কোলে মাথা রেখে রাইসা ঘুমাচ্ছে। মৌ রাইসাকে নামিয়ে এসে আমাকে সালাম করলো।
আমি বললাম কেন এমন পাগলামী করলে। মৌ হেসে দিয়ে বললো এটা কোন পাগলামী না রাইসার মত একটা মেয়ে পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। আর আমি শিক্ষিত একটা মেয়ে সব জেনে বুঝেই করেছি। আমি বললাম তুমি হয়তো জানো না, রাইসার মাকে আমি ভালবেসে বিয়ে করেছিলাম, আর তাই তার জায়গাটা কোন দিনও তুমি পাবে না। মৌ মাথাটা নিচু করে বললো তার জায়গা আমার চাই না, আমাকে শুধু রাইসার মা হবার অধিকারটা দিলেই হবে। আমি ওর মাথাটা তুলে বললাম বেলা অবেলায় হারিয়ে যাবে নাতো এ ভালবাসা? মৌ আমার বুকে মাথা রেখে বললো, সময় যদি থমকে না যায় তবে কখনোই হারাবেনা এ ভালবাসা।।।