অফিস থেকে এসে বউ আমার টাই টা ঢিলা করতে করতে বললো “একটা কবিতা লিখেছি তোমার জন্য।শুনবা?” আমি এক পায়ে খাড়া হয়ে বললাম “অবশ্যই শুনবো।কোথায় তোমার কবিতা।তাড়াতাড়ি শোনাও আমাকে”
বউ এক দৌড়ে বেড রুম থেকে একটা চিরকুট এনে আমার সামনে দাঁড়ালো।প্রথমে মাথাটা ১০ ডিগ্রি এঙ্গেলে নিচু করে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।তারপর গলা ঝেড়ে পড়া শুরু করলো- “ওগো স্বামী,জীবন আমার বৃথা।জানো কি?বান্ধবী নিলিমার কথা? তাহার স্বামীর মনটা অনেক বড়, শুক্রবারে বলে তাকে,কি কিনবা বলো? শাড়ি কিনে,ব্লাউজ কিনে,কিনে গলার চেইন। শপিং শেষে স্বামীকে বলে,কি ভাবে শোধ করবো তোমার ঋণ? স্বামীটা তার মুচকি হেসে জড়িয়ে ধরে বলে, বউটা আমার শপিং করবে,না করালে কি চলে? আমার টাকা তোমার টাকা ঋণ কেনো গো বলো? হইছে এবার আর কি কিনবে তাড়াতাড়ি চলো।”
কবিতা শুনে আমি শিহরিত! পিছনের পকেট থেকে আসতে আসতে মানি ব্যাগটা গোপনে বেড় করলাম।তারপর বউয়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে মানিব্যাগ থেকে সব টাকা বেড় করে আলাদা পকেটে রাখলাম। তারপর হাত দিয়ে চোখ ঘষতে ঘষতে বললাম- “দুইটা না,চারটা না,একটাই আমার বউ; শুপিং মলে যাবো আজকে বলো কি গো মৌ? আমিও চাই বউটা আমার কতো কিছু কিনুক, শাড়ি,ব্লাউজ কিনে আমার পকেট খালি করুক। আল্লাহ আমার রাখলো না এ আশা, কি আর বলি ঘটনাটা হারিয়ে ফেলেছি ভাষা। অফিস থেকে আসার পথে ডাকাতের এক দল, সব টাকা মোর ছিনিয়ে নিলো খাটিয়ে অনেক বল। যাওয়ার পথে মানিব্যাগটা ফিরিয়ে দিয়ে গেলো, এই দেখো তার কি অবস্থা কি করি গো বলো?
বউ আমার কথা শুনে সাথে সাথে বললো “কিহ?সত্যি ডাকাতি হইছে?” আমি বিষণ্ণতা ভাব নিয়ে বললাম “হুম আসার পথে।” বউ আমার আর কিছু বললোনা।আমি মনে মনে একটা পিশাচী হাসি দিলাম। খাওয়ার টেবিলে তরকারি দিতে দিতে বউ আবার বললো “তোমার জন্য আরেকটা কবিতা লিখেছি শুনবা?”
আমি বাকা চোখে বউয়ের দিকে একবার তাকিয়ে বললাম “বলো।তাড়াতাড়ি শেষ করবা।” বউ আবার বেড রুম থেকে একটা চিরকুট এনে পড়া শুরু করলো- “সেদিন হঠাৎ দেখা হলো বান্ধবী সাদিয়ার সাথে, কি বলেছিলো ছোট্ট করে বলি আজ তোমাকে। ডেঙ্গু জ্বরে ভুগছিলো সেদিন সাদিয়ার স্বামি, তাও সাদিয়া শপিং করে আসলো ফিরে বাড়ি। এই দেখে তার স্বামী মহান অনেক খুশি হলো, নিজের অসুখ তাও বলে সে “কি কিনলে গো বলো?”
বউয়ের কবিতা শুনে রাগে আমার কান দিয়ে গরম বাতাস বেড় হচ্ছে।খাওয়ার টেবিল থেকে বিদ্যুৎ গতীতে উঠে বউয়ের উদ্দেশ্যে বললাম-“কি রেঁধেছ হারামজাদি ঝাল দিয়েছো বেশি, এবার না হয় তোরে মারমু,না হয় মরমু আমি। বাঁচতে চাইলে বউটা আমার শ্বশুর আব্বার বেটি, দৌড় শুরু কর দরজা খোলা পালা বাপের বাড়ি।