–বউ ও বউ
— কে তোর বউ?
— কে আবার তুই
— মাথা খারাপ আমি তোর বউ হতে যাবো কেন রে?
— তো কার হবি… তাহসানের? যা দেখ যদি সিরিয়ালে তোর চান্স হয়! অনেকেই তো খাড়ায় আছে
— মনে কর না লাইনের প্রথমটাই আমি (ওরে সাবা কি হারামি রে (মনে মনে))
— ও তো যা! আমাকে ডাকছিস ক্যান?
— তোকে তো গার্ড হিসাবে আনছি! এই পার্কে তো আর একা একা আসা যায়না
— দেখ আখি এবার কিন্তু আমাকে অপমান করছিস!
— হাহাহাহা
— একদম হাসবি না হাসলে তোকে একদম রাক্ষসী রানি কটকটির মত দেখায় ( যদিও মেয়েটি অনেক সুন্দর করেই হাসে)
— কি বললি তুই… (ডুম)
— ইসস… এই তুই মারলি কেন?
— আরেকটা কি দিবো
— না থাক! যা দিয়ে ছিস এতেই হবে! বাবারে তোর কি শক্তি রে! আরেকটু হলেই ওপরেই চলে যেতাম
— কি… কি বললি? আরেকটিবার বল
— কই কিছুনাতো হিহিহি নিরবতা
— কি জন্য ডেকেছিস এই অবেলাই? বল্লিনাতো?(আমি)
— এটা অবেলা?
–তা নয়তো কি?এই দুপুর বেলায় পার্কে তো পিপীলিকারাও আসেনা! আর আমি জান্ত একটা পুরুষ মানুষ
— ও আচ্ছা তাহলে.. এটা দুপুর তাইনা! তো বিকাল কোনটা শুনি?
— ওত কিছু জানিনা! কি জন্য ডেকেছিস সেটা বল! .
— এমনিতেই!
–ইসসস! ইচ্ছে করছে না
— কি
— গুলি করে যদি মাথাটা উড়িয়ে দিতে পারতাম! স্বাধের ঘুমটা নষ্ট করে আসলাম
— থাক সেটা আর এখন তুই পারবিনা!
— এই রাজ শোননা?
–কি?
— যা না আমার জন্য আইসক্রীম নিয়ে আই না
…কি হলো যা
— টাকা দে
— আমি কেন টাকা দিবো? তোর টাকা নেই নাকি
— আছে! কিন্তু আমার টাকা দিয়ে তোকে কেন আইসক্রীম খাওয়াবো
–ওই কেন খাওয়াবিনারে
— তুইতো আমার কেউই হসনা, যদি বউ হতিস তো খাওয়াতাম! মুখে তুলেই খাইয়ে ও দিতাম! তা তো আর হবিনা
–উহুহ সখ কত বাছাধোনের! যা নিয়ে আই
ধুর সালা কেন যে, এই জোখনি মেয়েটাকে ভালবাসতে গেছিলাম! যবে থেকে ভালবাসছি তবে থেকে মনের থেকেও বেশি আঘাত পাইছে আমার মানিব্যাগটটা একবছর দশমাস দশ দিন ধরে ওর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি আর ও আমাকে পাত্তাই দিচ্ছে না!কি মেয়ে রে বাবা? অন্য কোন মেয়ে হলে,,তো ,, মেয়ে কেন মেয়ের মা-খালা,ফুফু সব প্রেমে পরে যেত!
–এই শোনে যা..
–উফফ… কি হলো আবার?
— এই ধর (১০০টাকার নোট)
–না থাক লাগবেনা
— কেন লাগবেনা?
— এমনিতে..
— নিয়ে যা আর একটা আইসক্রীম আনবি
— একটা কেন?
— শুধু আমার জন্য
— আর আমি?
— সেটা তুই জানিস ওমোর খোদা,,,, আল্লাহ আমারে ওপরে তুইলা নেওনা ক্যা
–দাড়িয়ে আছিস কেন যা
–যাচ্ছি
ওর পরিচয়টা দেওয়া দরকার! হুম ওর নাম আখি, আমরা একই সাথে ভার্সাটিতে পরি! ভার্সিটিতে যেদিন প্রথম দেখছি সেইদিন থেকেই ওর পিছনে লেগে আছি! খুব ভালবেসে ফেলেছি ওকে! ভার্সিটির সকলেই জানে, মানে! শুধু ও ছাড়া! মেয়েটা কেন যে আমার ভালবাসা এইভাবে এড়িয়ে চলে বুঝিনা! না সব বুঝেও না বোঝার ভান করে তো কে জানে!. কিন্তু ও যে আমাকে ভালবাসে সেটা বুঝতে পারি! তবুও কেন যে এত কষ্ট দেয় আমাকে! এই মামা কর্নেটো আইসক্রীম দেন তো! আখির খুব প্রিয় আইসক্রীমটা! তাই আমারও খুবই প্রিয়!
–এই নে তোর আইসক্রীম
— হুম দে
এ বলেই খেতে শুরু করলো! আমি ওর পাশে বসে ওর খাওয়া দেখছি! আহ হা কি অপরুপ? বামহাত দিয়ে গাল বেয়ে পড়ে থাকা চুল গুলো সরিয়ে, কানে গুজে দিচ্ছে! এতে ওর সৌন্দর্য টা ফুটে ওঠছে! কেমন জানি বুকের বাম পাশটাই ধুকবুক ধুকবুক করছে! কেন যেন মেয়েটি আমার আশেপাশে থাকলেই বুকের ধুকবুকানিটা বেড়ে যায়! খালি ভালবাসতে মন চায়
— এইভাবে তাঁকিয়ে কি দেখা হচ্ছে শুনি কি রে
— তোকে
–কেন এর আগে কোনদিন দেখিস নাই নাকি
–না দেখছি কিন্তু আজকের মত এত সুন্দর না কিছু বলছে না শুধু আমার দিকে তাঁকিয়ে আছে! মুখখানা রাগি রাগি ভাব !তারপর বলল
— তোর আইসক্রীম কই
— আমি খাবোনা
— কেন?
–এমনিতেই
–তাহলে আমার দিকে এইভাবে তাঁকিয়ে থাকবিনা,,, বলা যায় না পেট খারাপ করতে পারে
–আখি একটা কথা বলবো খাওয়া থামিয়ে দিয়ে বলল
— ভালবাসা, বাসি বাদে কিছু বলার থাকলে বল কথা শেষ করেই আবার মুখে আইসক্রীম
— বিলিভ মি আখি আমি তোকে অনেক ভালো বাসি! তুই আমাকে আর এইভাবে ফিরাই দিস না প্লীজ! দেখিস আমি তোকে খুব সুখে রাখবো! খুব ভালবাসবো তোকে! কিহলো কিছুতো বল
— হুম কি যেন বললি?
–মানে তুই কিছু শুনিস নি
–নাতো
— আবার আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছিস
— চল এখন (আখি)
— যাবোনা
–তো এখানে বসে থাকবি
–হুম! কোন মেয়েকে দেখলেই প্রোপজ করবো
— কি? তোর তো সাহস কমনা!চল এইখান থেকে
আমার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে! এই মেয়েটাকে আজও বুঝলামনা! বুঝলামনা ওর মন, কি চাই ও! না দেয় অন্যর সাথে আমাকে পিরিত করতে না ও করে! ধুর বাবা আর ভাললাগে না! এভাবে আর কত দিন! সব কিছুরই একটা লিমিট থাকা দরকার! শুভ ফোন করেছে! আমার খুব কাছের বন্ধু
–হুম দোস্ত বল
— তুই কই রে?
— এইতো বাসায়! কেন কি হয়ছে?
— কি আবার হবে? তোর রানী তোকে খোজে বেরাচ্ছে পুরো ভার্সিটি আর বারবার করে তোর খবর নিতে বলছে! তুই কেমন আছিস? কি হয়ছে তোর?কেন ভার্সিটিতে আসছিস না? ইত্যাদি ইত্যাদি!
–তাই নাকি
–হুম! তুই বলে ওর ফোন ধরছিস না!
— ওকে দ্বারা দেখাচ্ছি! আর শোন এবার জিঙ্গাসা করলে বলবি -ও ওর নতুন জিএফ কে নিয়ে বিজি আছে! তাই ভার্সিটি আসতে পারছেনা
–ওকে বাই
–বাই
আজ 2দিন হল ভার্সিটি যায়না! এর মধ্যে আমার পরীটার অনেক কল, মেসেজ আসছে! একটারও কোন রেসপন্স করিনি! কেন করবো ও আমার কে? এতদিন ধরে মেয়েটা আগলে রাখছি! আঠার মত লেগে থাকছি! ভালবাসছি তাও আমার প্রতি একটু ভালবাসা জন্মেনা! হুহ সকালে ঘুমিয়ে আছি! বাসায় থাকলে এই একটা কাজই আমি ভাল পারি!.
–এই উঠ
–উউউ
–এই রাজ উঠ
–আর একটু মা প্লীজ
— ওঠ সালা, আমি তোর মা না
— তাহলে লাফ দিয়ে উঠে বসে পরলাম
— কি রে তুই? তুই এখানে হঠাৎ(চোখ ডলতে ডলতে)
–হুম তুই তো যাবিনা তাই আমি আসছি
— ওই তোর হাতে আমার লুঙ্গি ক্যা? দে
— তাড়াতাড়ি উঠ নয়লে দিবোনা
–দিবোনা মানে কি
–উঠবি না চাঁদরটাও নিয়ে নিবো
— ওমা এটা কোন ধরনের কথা.. লঙ্গি না দিলে উঠবো কেমনে?ওকে আমি এইভাবেই উঠে যাচ্ছি
— না না দাড়া দাড়া! এই নে তোর লুঙ্গি! ওয়াক কি গন্ধ, ধোতো করিস না নাকি
–না দে তুই! আমার দিকে ছুরে মারলো লুঙ্গিটা!
–এই তুই চোখ বন্ধ করবি না এইভাবেই পরবো ? তবে না করলেই আমার কোন আপত্তি নেই! তুইতো আর বাইরের কেউ না
–এই না না হাহাহাহা মেয়েটা ঘুরে চোখ বন্ধ করে দাড়ালো আমিতো হাসতেও পারছিনা লজ্জাও পারছিনা
–হয়েছে
–হুম এবার তুই ঘুরতে পারিস
— এই যা এখন ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি রেডি হো,নয়লে তোর খবর আছে
–ওকে বাবা যাচ্ছি, তুই বস আমি এই যাবো আর আসবো
–হুম
মেয়েটা হঠাৎ এইভাবে আমার বাড়িতে আসবে , ভাবতে পারছিনা ! আহ হা মেঘ না চাইতেই যেন জ্বল!মনে হয় ঔষধটা কাজ করছে! হিহি আমারতো খুব মজা লাগছে রুমে এসে দেখি,,,, আমার পেয়ারেলাল টা বসে বসে বই পরছে! গোলাপি থ্রি পিচ পরে আছে যা এর আগে খেয়ালই করিনি! কি সুন্দরী না লাগছে আমার পরীটাকে ? ওয়াও ঘরটাও কি সুন্দর করে সাজানো! একদম পয়-পরিষ্কার করা! মনে হচ্ছে এটা আমার রুমই না!
— কিরে লিস্তি! ঘর এমন অগোছালো করে রাখিস কেন? এমন করলে তো উঠতে-বসতে বউয়ের হাতে ঝাটা পিটা খাবি!
–খেতেই তো চাই! আর সেটা তুই হলে তো কথায় নেই (বিড়বিড় করে)
–এই কি বললি রে
–কই কিছুনাতো(মাথা চুলকিয়ে)! তুই এত সুন্দর করে গোছালি
–হুম খাইলি
–হুম!কিন্তু তুই হঠাৎ আমার বাড়ি
–কেন আসতে পারিনা?
— না পারিস না কারন এটা আমার বাড়ি
— তোর বাড়ি হলে এটা আমার শশুর বাড়ি তোর কোন সমস্যা (এইবলেই জিব্বাহতে কামড় দিলো)
–তুই কি কিছু বললি ( না বোঝার ভান,গভীর ব্যাপরটা )
— নাতো! চল এখন
–হুম চল!
–এই মামা ও রিক্সা ডাকলো! কিছুটা অবাক হলাম! অবাক না হওয়ার কিছু নেই! ও কখনো রিক্সা ডাকেনা… আমি সাথে গেলে আমিই ডাকি কিন্তু আজ হঠাৎ
–কি হলো উঠবি না দাঁড়িয়ে থাকবি ওঠে
ওর পাশে বসলাম,,, তবে আজ কেমন জানি অন্যরকম ফিলিংস হচ্ছে মনের মাঝে! কিছুটা ভয় ভয়ও কাজ করছে
তবে এর মাঝেও খুব ইচ্ছে করছে ওর হাতটা ধরতে,, হাতের ওপর হাত রাখতে! কিন্তু কোথায় জানি গিয়ে আটকে যাচ্ছি বাতাসে উড়ে এসে ওর গন্ধসিদ্ধ, খোলা চুল গুলো মুখে ছিটকে পরছে! বেশ ভালোলাগা কাজ করছে! ওকে দেখছি, চুলগুলো বার বার সরাচ্ছে! ফর্সা গালের সাদা সাদা লোমগুলো কেমন অপরুপ দেখাচ্ছে! নাকের ওপর জমে আচ্ছে বিন্দু বিন্দু ঘাম! ইচ্ছা করছে হাতের উলটো পিঠ দিয়ে গালটা ছুয়ে দেয়!.কিন্তু সাহসে কুলাচ্ছে না ও তাঁকিয়ে আছে সামনের দিকে! এ পযর্ন্ত একটা কথাও বলেনি হঠাৎ
— কোন সমস্যা
— নাতো (ভয়ে ভয়ে) রিক্সা চলছে তার নিজ গতিতে,! আর আমি তাঁকিয়ে, পাশের চলে যাওয়া গাড়ি দেখছি!
–ওই কি দেখোস ওই দিকে
— কই কিছুনাতো
— কিছুনা! ওই মেয়ের দিকে তাঁকিয়ে ছিলি কেন
— কোন মেয়ে ( যাহ বাবা একটা মেয়ের দিকে তাকাতেও পারবোনা?
— আমি মনে হয় কিছু দেখিনা তাইনা ( রাগে ফসফস করছে)
— আসলে
— থাক, আর কিছু বলা লাগবেনা ! মেয়ে দেখলেই তো খালি ছকচুকানি মামা এই দিকে চলেন
— এই দিকে কেন? ভার্সিটি তো এইদিকে
— চুপ একদম চুম
মনে হচ্ছে মেয়েটা পুরাই রেগে গেছে! হঠাৎ কি হলো ওর? রিক্সা সেই পার্কটাই এসে থামলো! ভাড়াটা দিতে গেলাম! আখি থামিয়ে দিল! ও ভাড়াটা দিয়ে রিক্সা ওয়ালাকে বিদায় করলো! কি হচ্ছে এসব কিছুই মাথায় আসছে না! ওর মুখোমুখি দাড়িয়ে! তবে মাথা নিচু করে! চোখে চোখ রাখার মত আপাতত কোন সাহস নেই! রেগে আছে কখন কি করবে বলা যায়না! আসলে এমন রাগতে ওকে কখনো দেখিনি! তাই ভয় হচ্ছে এবার ওর দিকে সাহস নিয়ে তাকালাম! কোমরে দুহাত দিয়ে দাড়িয়ে, রাগী লুক নিয়ে আমার দিকে তাঁকিয়ে !
এটা দেখে মাথা নামিয়ে নিলাম
–ভার্সিটি না গিয়ে এখানে আসলি কেন?(আমি)
–তুই এই দুদিন ভার্সিটি আসিস নি কেন? তুই জানিস কতটা টেনসন হচ্ছিলো আমার! দুরাত ঠিকমত ঘুমাতে পারিনি! তোকে ফোন দিয়েছি কতবার ফোন পযর্ন্ত ধরিস নাই!কেন? কেন করলি আমার সাথে এমন? খুব মজা পাইছিস তাই না এমন করে আমাকে কষ্ট দিয়ে! জানিস না তোর সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারিনা! বুঝিস না আমি তোকে কতটা ভালবাসি! তোকে ছাড়া কোন কিছু ভাবতে পারিনা, তোকে ছাড়া থাকতে পারিনা! বুঝিস না তুই বুঝিস না ( এক নাগারে এত গুলো কথা বলে গেল, কাদো কাদো গলায়) কথা গুলো শুনে আমার মাথাটা ঘুরপাক খাচ্ছে ! দুকান যেন বিশ্বাসই করতে চাইছে না, ও কাদছে
— আসলে আমি বুঝতে পারিনি আমার জন্য তুই এতটা কষ্ট পাবি! খারাপ লাগবে মেয়েটা দৌড়ে এসে আমাকে জাপটে ধরলো! এটার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না
–এই কি হচ্ছে এসব? আমারতো কুতুকুতু লাগে
–ধুর ফাজিল
আমিও এবার খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম! আর নিজে নিজেকে কথা দিলাম যত যায় হোক আর কাদতে দিবোনা তোকে!
–এই তুমি আমাকে এইভাবে সারাজীবন আগলে রাখবে তো!
— হঠাৎ তুমি করে বলা হচ্ছে
— হুম তুমিও আমাকে বলবা
— ওকে পাগলী ওকে
— পাগলী না পরী! আর তুমি অন্য কাউকে ভালবাসো নাতো
— না আর ভালবাসলেও তাতে কি
— কি মানে (আমাকে ধাক্কা দিয়ে) যেই আমার সতিন হবে তাকে সহ তোমাকে কেটে নদীর জ্বলে ভাসিয়ে দিবো
— হাহাহা ওকে তাই করও আবার ওকে বুকের কাছে টেনে নিলাম
–পরী
–হুম
— একটা পাপ্পি দাওনা
— যাহ দুষ্টু… ওটা বিয়ের পর