বড় আপুর সাথে প্রেম

বড় আপুর সাথে প্রেম

ফেসবুক চ্যাটিং করে ঘুমিয়ে গেলাম । প্রতিদিনের মতো একই স্বপ্ন দেখি ঘুমানো পর ! এরপর আমার কলেজের টাইম থাকে না। সেদিন ও একটু দেরি করে কলেজে যাই । কলেজ ছুটি হওয়ার পর আবারো পিছ থেকে আনিশার ডাক । এই সাইয়েদ ! তখন কি যে ভালো লাগছিলো, আমাকে আমার নাম ধরে ডাক দিয়েছিলো,বলে বুঝাতে পারব না । তখন ফিরে আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই! আমার নাম ধরে ডাকার জন্য । আমি দেখলাম আনিশা মুচকি হাসি দিলো! অনেক সুন্দর ছিল সেই হাসি । এরপর বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ফেসবুকে ঢুকলাম। আনিশার সাথে এইরকম চ্যাটিং, কথাবার্তায় ২ মাস পার হয়ে গেলো। আমার মনে একটাই প্রশ্ন জাগত! আমি কি বলব ,? আনিশা আমি তোমাকে ভালবাসি। আর কেউ যদি শুনে যে আমি আমার বড় এক মেয়ের প্রেমে পড়েছি তাহলে মানুষ কি বলবে ! এইভেবে আর ও কয়দিন যায় ।

এরপর আমি ভাবলাম, যা যাই বলুক, আমি আনিশাকে বলে দিবো যে আমি তোমাকে ভালবাসি! এক বছরের-ই তো বড়! জাফর ইকবাল স্যার ও তার ৪ বছর বড় এক মেয়েকে বিয়ে করে ! তখন তো কিছু হয় নি । এইভেবে গেলো দিন! আমি ফেসবুকে ঢুকে আনিশাকে বললাম যে, কতো দিন থেকে ছাদে যাওয়া হয় না, আর তোমাকে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলবো, তাই আজকে বিকালে ছাদে আসবা ! এরপর বিকাল বেলা ছাদে গিয়ে দেখি আনিশা এক কোণে বসে আছে ! তারপর – আমি- হ্যালো! আনিশা- হুম, কেমন আছো! আমি- এইতো ! এক বিষয় নিয়ে চিন্তিত! আনিশা- ওহ! কোন বিষয় নিয়ে ? আমার সাথে কি শেয়ার করবা? আমি- হুম! তোমার বিষয় নিয়েই তো চিন্তিত! আনিশা-আমার বিষয় নিয়ে মানে? আমি- আমি বলব নাকি না এই নিয়ে! আনিশা- আচ্ছা বলে ফেলো! আমি- না আজ থাক! আরেকদিন বলবো। আনিশা- না আজ বলো না, প্লিজ ! আমি- না আজকে থাক না প্লিজ! আনিশা- ওকে! যাও তোমার মার্জি! আমি- হুম চলো বাসায় চলে যাই সন্ধ্যা নেমে যাচ্ছে! আনিশা- হুম চলো। এরপর আমরা দু’জন বাসায় চলে গেলাম।

বাসায় গিয়ে বিছানায় পড়ে ভাবলাম,, ” এই কি করলাম! আমি আনিশাকে বলি নি কেন ! যে আমি তাকে ভালবাসি! ”এরপর ফ্রেশ হয়ে পড়তে বসি ! পড়া শেষে ফেসবুকে কিছুক্ষনের জন্য ঢুকি ! কিছু সময় চ্যাট করার পর আনিশাকে বললাম যে,, কালকে ছাদে আরেকবার আইসো! কিছু কথা আছে! আমি সাথে একটা গোলাপ ফুল নিয়ে বিকাল বেলা ছাদে গেলাম! আমি যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আনিশা ছাদে আসে! আনিশা- সরি! তোমাকে এতো সময় বসিয়ে রাখার জন্য ! আমি- ইটস ওকে! কেমন আছো! আনিশা- হুম ভালো। তুমি! আমি- ভাল! আনিশা- তুমি না কি বলার জন্য আমাকে ছাদে আসতে বলেছিলা ! এখন বলো! আমি- হুম আনিশা- ওকে বলে ফেলো! আমি- বলবো! আনিশা- বলো ! আমি- ( সিনেমার হিরোদের মতো করে প্রপোজ করলাম) ! I love u আনিশা- ( আশ্চর্য হয়ে ) কি ? আমি- আমি তোমাকে ভালবাসি ! আনিশা- তোমার সেন্স আছে ? আমি তোমার এক বছরের বড় । আমি- তো কি হল ! জাফর ইকবাল স্যার থেকে উনার স্ত্রী ৪ বছরের বড় ! তো কিছু হইছিলো? আগে বলো আমাকে লাভ করো নাকি ! আনিশা- না! তোমাকে আমি লাভ করবো কেন ? ( মুচকি হেসে ) আমি- ওহ ! ওকে যাও লাভ করা লাগবে না! আনিশা- হুম!

এরপর আমি ছাদের রেলিং-য়ের উপর উঠি তখন – আনিশা- এই কি করছো! আমি- লাফ দিবো এইখান থেকে! আনিশা- নামো বলছি! ঢং করো না ! আমি- আমমি ঢং করছি না ! আনিশা’ লাফ দিবা কেন ! আমি- তুমি আমাকে লাভ করো না ! আর বেচে থেকে কি করবো ! প্রথমে তোমার প্রেমে পড়েছিলাম ! কিন্তু তুমিই রিজেক্ট করে দিচ্ছ ! (আবেগে) আনিশা- আরে ওইখান থেকে নামো! আমি- আগে বলো লাভ করো নাকি! আনিশা- হুম করি এবার নামো! এরপর আমি নামার সময় আনিশা বলে উঠল ! –লাভ করি না ! তখনই আমি আবার রেলিং -য়ে উঠে যাই ! এরপর-আনিশা- আরে বাবা ফান করেছি! তোমাকে লাভ করি ! এবার নামো! আমি- সত্যি ? আনিশা- হুম ! এরপর নেমে যাই / তখন আনিশা এক চিলকে হাই দিলো! কি সুন্দর দেখাচ্ছিল ! আনিশা- তুমি আমাকে এতো লাভ করো?

আমি- ( ইমোশনাল হয়ে ) হুম বাবু ! আনিশা- ( আশ্চর্য হয়ে ) বাবু ! হা হা হা আমি- হি হি হি আনিশা- হু হু হু ! এইরকম করে আমাদের রিলেশনের কয়েকবছর চলে যায় আর সাথে আমার লেখাপড়া ও ভালো চলছিল! লেখাপড়া শেষ করেই আমি একটা ব্যাংক য়ে চাকুরী পাই ! চাকুরী পাওয়ার একমাস পর থেকে মা পাত্রী দেখা শুরু করে দিয়েছিল ! আমার মন খারাপ হয়ে যায় তখন! তাই আমার মন খারাপ দেখে মা জিজ্ঞেস করল – কি রে তোর মন খারাপ কেন ? আমি- মা! আমি একজনকে ভালবাসি ! আর আমি তাকেই বিয়ে করবো! মা- কি ? কাকে ! আমি- আমাদের পাশের বাসার মেয়ে – আনিশা। মা- ওহ।! আনিশার মা ও তো তার মেয়ের জন্য পাত্র দেখছে কিন্তু মেয়েটি সব ছেলেকে ‘ না ‘ বলে দিচ্ছে ! আমি- সে আমার জন্য না বলে দিচ্ছে ! তুমি বরং তার মায়ের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসো ! মা- আচ্ছা!

আনিশা না তোর একবছরের বড় ! আমি- তা দেখে তুমি কি করবা তুমি প্রস্তাব দিয়ে আসো,, আর বড় মেয়েকে কি বিয়ে করা যায় না হুম ! মা- ওকে যাচ্ছি ! প্রস্তাব দেওয়ার জন্য আনিশার ঘরে যায় মা! এবং বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসে ! আনিশার মা – কি রে সাইয়েদ তোর না ছোট ? আনিশা- হুম তো কি হলো ! আনিশার মা – মানুষ কি ভাববে ? আনিশা- মানুষ কি ভাববে ! আমি সেইটা দেখবো কেন ! আর শোনো সাইয়েদের সাথে আমার বিয়ে না দিলে আর বিয়ে করবো না বুঝলা ! আনিশার মা – ওকে যা! তোর ইচ্ছা মতো! আনিশা- ( খুশি হয়ে) আমার লক্ষ্মী মা ! এরপর আমাদের বিয়ের তারিখ ঠিক হয়ে গেলো এবং বিয়ে ও সমাপ্ত হয়ে গেলো ! তারপর থেকে ভালবেসে ও খুনশুটি করে বেশ ভালোই দিন কাটতেছে আমাদের দু’জনের।।।

(সমাপ্ত)

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত