কাজ সেসে বাসায় আসলাম।
সিরি দিয়ে উঠার সময় দেখালাম। একটা মেয়ে নামতেছে। হয়ত এই ফ্লাটেই থাকে। মেয়েটা বেশ সুন্দরি। চেহারা দেখার মত।
আমাকে হাই হেলো দিল। আমিও।ভাল মন্দ জিজ্ঞাসা করলাম। আমি চলে আসলাম বাসায়।
আমি মেঘ। একটা পার্ট টাইম জব করি। আজকের বাজারে চাকুরি যে কত কস্টের সেটা যারা খুজে তারাই বুঝে।
বি এস সি করারা পাশা পাশি এই জব টা করি।
বাসায় বাবা মা। আর একটা ছোট ভাই। খুশি ফ্যামিলি। বাবা
সরকারি চাকুরে করে। আর মা বাসায় বসে জলসা দেখবে আর
আমার কানের কাছে সারাদিন বিয়ে নিয়ে ঘ্যান ঘ্যান করবে।
আরে ভাই এখনই বিয়ে করে কি হবে। কিন্তু আমার মাকে এই কথা কে বুঝাবে।
বাসায় ঢুকে দেখালাম আমার ছোট ভাই ক্রিকেট খেলা দেখতেছে।
আমি বললাম … কিরে কি দেখিয়া পড়াশুনা নাই নাকি।
ছোট ভাই বলল…..
ভাই মাইশা আপুর খেলা দেখি।
আমি আবার এগুলা খেলা টেলা কিছু বুঝি না। হুদাই এইসব দেখে কি লাভ।
তাই আর কথা না বারাই রুমে আসলাম। আমার কাজ আমি করি।
পরের দিন ভার্সিটি যাব তাই রিক্সা খুজতেছিলাম। ভাগ্য প্রশন্য বলতে হবে পেয়েও গেলাম।
চরতে যাব এমন সময় দেখি
কালকের সেই মেয়ে।
আমাকে বলল ভাইয়া আমিও যাব । আমার একটু তারা আছে।
কি আর করা দিলাম ভাগ। আমি আবার মেয়েদের সাথে বেশি ইজি না তাই রিক্সের আক পার্শ্ব এ চাপাই আছি। মেয়ে তো আমাকে দেখে হাসতেছে।
ভাইয়া আপনার নাম কি???? (মেয়ে)
আমি মেঘ। আপনার নাম। (আমি)
—++ আমি মাইশা। ভাইয়া কি করেন। (মাইশা)
—– জি আমাই। বি এস সি কএতেছি। আর পাশা পাশি পার্ট টাইম জব করি। (আমি)
এগুলা বলত বলেতেই। আমার ভার্সিটি তে এসে গেলাম। আমি নেমে আসলাম আর মাইশা চলে গেল।
আমি ভার্সিটি তে ঢুক্তেছি। দেখি সবাই কেমন আজব ভাবে তাকাই আছে। আরে আমি কি এত ফেমাস হউএ গেলাম নাকি।
বন্ধুরা আমাকে ঘিরে ধরল।
কিরে মেঘ তলে তলে এত। কিছু।
বেটা প্রেম করতেছিস আমাদের বললি না। ( সাদ)
—- আরে কি বঅলিস আমি ক্যান প্রেম করব। (আমি)
—— ভাই প্রেম করতেছিস তাও আবার ক্রিকেটার এর সাথে। (রায়হান)
—- আরব কি বলতেছিস তোরা আমি তো কিছুই বুজতেছি না। (আমি)
—– আরে বেটা বুজবি না তো। বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটারের সাথে রিক্সায় ঘুরিস আবার কিছু বুজিস না। (সাদ)
—— তারকা ক্রিকেটার মানে। আরে ও তো আমাদের ফ্লাটেই থাকে। পাশাপাশি থাকি। (আমি)
—– আরে ভাই এই সেই মেয়ে বাংলাদেশের জাতিয় টিমে খেলে। মাইশা । তর কপাল টা খুব ভাল রে। (সাদ)
আমিও পরলাম বিড়াট ঝামেলায়। এ কোন মুসিবত। ক্লাস সেস করে বাসায় আসলাম।
বাসায় আসে দেখি। আমার ছোট ভাই আর সেই মেয়ে খেলতেছে। আমি দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেলাম।
.
.
বাট এই না দেখাটাই মনে হয় আমার কাল হল। মেয়ে দেখি হরদম আমাদের বাসায় আসে। মাকে হেলপ করে।
মাঝে মাঝে দেখি আমার ঘরের দিকে উঁকিঝুঁকি মারে। মা তো বেশ খুশি। আপাতত আমাকে বিয়ের কথা না বললে ই হল।
.
.
.
.
কিন্তু আসল ঘটনা ঘটল কিছুদিন পর। যখন মেয়েটা আমাকে প্রোপজ করল। আমি তো ডাইরেক্ট না করে দিলাম।
আরে ভাই এমনিতেই একটা প্রেম করে ব্যাকা হয়ে গেছিলাম।
তার উপর এ আবার তারকা ক্রিকেটার আমি নাই। কারন যে হারে তারকাদের ঘর ভাংতেছে। বুঝাই মুস্কিল।
আমার কথা শুনে মেয়েটা কাদতে কাদতে চলে গেল। আসলে মাইশাকে আমার ভাল লাগত। কেনই বা লাগবে না।
টানা টানা চোখ। ঠোট এর নিচে তিল। পুরাই মাথা খারাপ ব্যাপার। কিন্তু আমি একবারেই বুঝেছি প্রেম করার কি ঠেলা।
.
.
পরের দিন মা বলল… মেঘ তোর বিয়ে ঠিক করছি আমারা।
মাইশার সাথে। ওকে আমার খুব পছন্দ। (মা)
—— মা আমি আগেই বলেছি আমি বিয়ে করতে পারব না। আমার ভাল লাগে না। কেন বুঝ না তুমি। আমি বিয়ে করব না এটাই ফাইনাল। (আমি)
এই বলে কাজে চলে গেলাম। তারপর থেকে লক্ষ করি মা আমাকে খোচা মারা কথা বলে। আর মাইশা মন খারাপ করে
আমার দিকে তাকাই থাকে। আমি কোন গা করি না।
.
।
।
কয়েকদিন পর …..
আমার ছোট ভাই খেলা দেখতেছে। আমিও বসে পরলাম একটু দেখালাম মাইশা ব্যাট করতেছে। মেয়ে এতটুকু বয়সেই এত নাম করছে।
খেলা দেখে আমার ভাই আহ উহ করতেছে। কারন মাইশা আজ খেলতে পারতেছে না। মন খারাপ। সেস মেশ আউট হয়ে গেল।
আর এতে দর্শক এর আর আমার ভাইয়ের মন আরও খারাপ হয়ে গেল। আমার ক্যান জানি মন্টা খারাপ হয়ে গেল।
হাজার হোক মেয়েটা অনেক ভাল খেলে। হয়ত আমার কারনে। সেদিন অনেক কিছু বলে ফেলেছি। না এতটা বলা ঠিক হয় নি।
পরের দিন মাইশাকে ছাদে ডাক দিলাম…..
—– আচ্ছা তুমি কেন এইরকম পাগলামি করতেছ। আমি তো বড় কিছু না। তুমি ভাল খেলোয়াড় এই ভাবে ক্যারিয়ার কেন নষ্ট করবে।
আমি তো সামান্য ছেলে। তুমি আমার থেকেও অনেক ভাল ছেলে পাবে।(আমি)
—— মন একজনকে দিলে আর একজনকে দেওয়া যায় না। আমি কিছু বুঝি না। আর বুজতেও চাই না। (মাইশা)
—— দেখ এইগুলা আবেগের কথা নিজের কথা ভাব। ভাল করে খেল। একটা দেশের মান সম্মান আর অনেক মানুষের ভরসা তুমি। (আমি)
.
।
সেসে বাব মা আমার কথা শুনল না। জোর করেই বিয়ে দিয়ে দিল। আমার তো সেই রাগ উঠল। বিশেষ করে মাইশার কারনে।
তাই আমি অর সংগে কোন কথা বললাম না।
বিয়ের পরের দিন মাইশার ম্যাচ ছিল। আজকে ফাইনাল বাংলাদেশ আর ভারতের খেলা।
আমাকে যেতে বলল। আমি বললাম যাব না। মেয়ে মন খারাপ করে চলে গেল। বাব মা সবাই আজ গেল খেলা দেখতে।
আমি একাই টিভিতে দেখছি।
দেখলাম মাইশা খুব মন খারাপ করে খেলছে। একবার তো আউট হতে গিয়ে বেচে গেল।
আমি ভাব লাম আচ্ছা আমি কেন এইরকম করতেছি। যে আমাকে এত ভালবাসে তাকেই কিনা কষ্ট দিচ্ছি।
মেয়েটা আমার কারনে ভাল করেও খেলতে না পারে। না আমি আর থাকতে পারলাম না। সোজা স্টেডিয়াম এ চলে আসলাম।
মাইশা দেখি চার দিকে কাকে যেন খুজতেছে। মাঠে টান টান উত্তেজনা। কারণ ১ বলে ৪ রান লাগে। স্ট্রাইক প্রান্তে মাইশা।
সেস সময়ে মাইশা মনে হয় আমাকে দেখতে পেল। আর দেখেই মুখে হাসি ফুটে উঠল।
বদলে আমিও হাসি দিলাম।
..
.
.
.
চোখ বন্ধ করে হাজার লোকের ভিরে আমিও প্রার্থনা করতেছি।
আল্লাহ মাইশা যেন জিতে।
একসময় অনেক চিৎকার এ আমি চোখ খুললাম। দেখি বল হাওয়াই ভেসে মাঠের বাইরে এল।
আমিও চিৎকার মেরে লাফাই মাঠের ভিতরে চলে গেলাম। মাইশা দেখি ছল ছল চোখে আমার দিকে তাকাই আছে। আমি হাত বারাই দিলাম
সে দোউরে এসে আমার বুকে ঝাপাই পরল। আর কাদতেছে।
আর গোটা স্টেডিয়াম আনুন্দে মাতোয়ারা। আর আমার ক্রিকেটার বউ অনেক আনন্দেও কাদতেছে। আজক যে তার দুইটা জিত হল।
আপজনকে কাছে পাওয়া। এটাই তার বড় বিজয়। আমিও পরম মমতায় তাকে বুকে জরাই নিয়ে আছি। ছারব না কখন তাকে।