সৌভাগ্যবতী

সৌভাগ্যবতী

ফুল দিয়ে সাজানো বিছানার এক কোণে জড়সড় হয়ে বসে আছে মিলু।আজকেই ওর বিয়ে হয়েছে বাবার পছন্দের পাত্রের সাথে।
মিলু একজনকে ভালবাসত কিন্তু ছেলেটি এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি,ওর বড় আরো দুই ভাই আছে যারা এখনো বিয়ে করেনি।
বিয়ে ঠিক হওয়ার আগে ও মিলু আরিফকে বলেছিল কিছু একটা করার জন্য।
কিন্তু আরিফ মিলুকে সোজা জানিয়ে দিয়েছিল যে প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ও বিয়ে করতে পারবেনা।

রাহাত নিজের রুমে ঢুকল।
বাবা-মার পছন্দেই মিলুকে বিয়ে করেছে।
বিয়ের আগে মিলু রাহাতের সাথে দেখা করতে চেয়েছিল কিন্তু রাহাত দেখা করতে চায়নি।
রাহাত কাপড় চেঞ্জ করে এসে বিছানার এক পাশে বসল।
মিলুকে বলল আপনি এই আলখাল্লা(বিয়ের লেহেঙ্গা) চেঞ্জ করে আসতে পারেন আপনাকে এই পোশাকে দেখে আমার নিজেরই অস্বস্তি লাগছে।
মিলু বলল আপনাকে আমি কিছু বলতে চাই,বিয়ের আগে আমি দেখা করতে চেয়েছি কিন্তু আপনি দেখা করেননি যার জন্য কথাটা বলা হয়নি।
রাহাত খুব স্বাভাবিকভাবেই বলল আমি জানি আপনি কি বলতে চাচ্ছেন।
মিলু অবাক হয়ে বলল
কি জানেন আপনি?
-আসলে জানিনা অনুমান করছি। হয়তো আগে কাউকে ভালবাসতেন এরকম কিছু বলবেন।
-অনুমান ঠিকই আছে তাই আমি আপনাকে আগেই বলতে চেয়েছিলাম।
-আমি ও আগেই বুঝতে পেরেছিলাম তাই দেখা করিনি,আর বিয়েতে আপনার ইচ্ছা না থাকলে তো আপনি অবশ্যই বিয়েটা ভেঙ্গে দিতেন।
-বুঝতে পারার পরে ও এইরকম মেয়েকে বিয়ে করেছেন কেন?
-দেখুন মিলু বিয়ের আগে আপনি কয়টা প্রেম করেছেন আর কি করেছেন এই নিয়ে আমি কিছুই বলবনা।আপনাকে ও এসবের কৈফিয়ত দিতে হবেনা।

আজকে থেকে আপনি আমার স্ত্রী,আজকে থেকে আপনার ভালমন্দ সবকিছু দেখার দায়িত্ব আমার।
তাই আমি অতীত নয় আমাদের বর্তমান আর ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে চাই। আপনি যদি আমাকে নিজের মন থেকে মেনে নিতে পারেন তা

আমাদের দুজনের জন্যই ভালো হবে।
আর যদি বিয়েটা আপনার অনিচ্ছায় হয়ে থাকে তা ও আপনি আমাকে বলতে পারেন।
রাহাতের কথা শুনে মিলু অনেক বেশি অবাক হচ্ছে।মিলু বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকেই অস্বস্তির মধ্যে ছিল রাহাত

সবকিছু জানার পর বিষয়টাকে কিভাবে নিবে।
কিন্তু রাহাত স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টাকে নিচ্ছে।
মিলু রাহাতকে বলল
-আপনার কথা শুনে স্বামী সম্পর্কে আমার ধারনাই পাল্টে গিয়েছে।আপনি বিষয়টাকে এত স্বাভাবিকভাবে নিবেন আমি কল্পনাই করতে পারিনি।
আপনার স্ত্রী হওয়ায় যোগ্যতা আসলেই আমার নেই। হয়তো কোনো ভালো কাজ করেছিলাম

যার জন্য আপনাকে স্বামী হিসেবে পাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে।
রাহাত বলল আজকে থেকে আমাদের নতুন জীবন শুরু হয়েছে আমরা চাইলেই আমাদের জীবনটাকে অনেক সুন্দর করতে পারি।
বিয়ে একটা পবিত্র সম্পর্ক আর এই সম্পর্ককে বিশ্বাস,শ্রদ্বা আর ভালোবাসা অনেক বেশি দৃঢ় করে তোলে।
মিলু রাহাতকে যত দেখছে ততই মুগ্ধ হচ্ছে,রাহাতের সব কথা মুগ্ধ হয়ে শুনছে। রাহাত মিলুকে বলল অযু করে আসো একসাথে নামাজ পড়ব।
নামাজে মিলু আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছে। রাহাতের মত ভাল একজন স্বামী পেয়েছে একটি

মেয়ের জীবনে এর থেকে বড় চাওয়া আর কি হতে পারে।চোখ বন্ধ করে রাহাতের সাথে সারাজীবন কাটিয়ে দেয়া যায়।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত