ঘুমিয়ে আছি,,, ফোনের ভাইব্রেশনে ঘুম থেকে হঠাৎ লাফিয়ে উঠলাম,চোখ টলতে টলতে কোনরকমে ফোনের দিকে তাকালাম,ফোনের দিকে তাকিয়ে ভয়ে আমার চোখ কপালে,৬৭টা মিসডকল দিয়েছে পাগলিটা,,,আজকে আমার কপালে কি শাস্থি আছে আল্লাহ জানে,,
মনে মনে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলাম,আল্লাহ আজকের পরিস্থিতিটা যেনো সামাল দিতে পারি,এসব কথা চিন্তা করতে করতে আবার ও পাগলিটার কল, (ভয়ে ভয়ে কোনরকমে ফোনটা রিসিভ করলাম):- হ্যালো (আমি) এই কুত্তা,বিলাই,শিয়াল,হাতি, বান্দর,গন্ডার,তুই কোথায়,আর এতোক্ষন ধরে ফোন দিচ্ছি ফোন রিসিভ করছিস না কেনো,কালকে কি বলেছিলাম তোকে ভুলে গেছিস তুই(শারমিন) কালকে কি বলেছিলো মনে করার চেস্টা করছি,,ব্রেইনে সার্চ করলাম তবুও মনে করতে পারলাম না,আসলে আমার মাথার স্ক্রুটি একটু ঢিলা কেউ কিছু বল্লে খুব তারাতারি কিভাবে যেন ভুলে যায়,,
কি বলেছিলি মনে নেই রে দুস্ত(আমি) আসলেই তুই একটা গাধা,আজকে না আমাদের ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিলো (শারমিন) (ওকে রাগানোর জন্য বললাম,,,) আজকে না গেলে হয়না দুস্ত,আজকে আমার মামাতো বোনকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিলো,,,তোকে নিয়ে নাহয় অন্য একদিন ঘুরতে যাবো(আমি) ঠ্যাং ভেঙ্গে ফেলব,,তুই ১০মিনিটের মধ্যে কলেজের পুকুর পাড়টাই আসবি,নইলে বাসায় গিয়ে সবার সামনে কান টেনে ধরে আনব তোকে (শারমিন) বুজলাম খুব রেগে গেছে ও, না আর লেট করা ঠিক হবে না,কখন আবার বাসায় চলে আসে সেটার বিশ্বাস নেয়, ফ্রেশ হয়ে ওর দেওয়া নিল টিশার্টটা পরে কলেজের উদ্দ্যেশে রওনা দিলাম,কলেজে যেতে ১৫ মিনিট সময় লাগে,,,,
মামা কলেজ রোড চলেন(আমি) ভাড়া কিন্তু ২৫ টাকা দেওন লাগবো মামা(রিকসাওয়ালা) ১৫টাকার ভাড়া পঁচিশ টাকা চাইলেন,ব্যাপার কি (আমি) পোলাডার আজকা দুইদিন ধইরা শরীলডা ভালানা,আর বৃষ্টির লাইগ্গা কোন কাজ কাইম ও করতে পারিনা আমি,কাজ কাম না কল্লে ঔষুধ আনাম কেমনে (রিকসাওয়ালা) আচ্ছা ২৫টাকায় দিমু চলেন মামা আপনি(আমি) একটু কৌতুহল নিয়ে রিকসাওয়ালাকে আবারও জিঙ্গেস করলাম, মামা আপনার বাসায় কি আপনিই একমাত্র উপার্জনকারী আইমিন আপনার আর কোন ছেলে মেয়ে নেই(আমি) আসে মামা,আমার দুই পোলা,এক মেয়ে,বড় পোলাডা বিয়ে কইরা আলাদা হইয়া গেছে(রিকসাওয়ালা) কেনো বড় ছেলেটা আপনাদের দেখাশুনা করেনা(আমি) বিয়ার আগে কাজ কাম করলে সংসারে দিতো,তখন অনেক ভালা আছিলো আমার পোলাডা,অনেক লক্ষি ছিল যা কইতাম তাইই শুনত,কোন কথায় অমান্য করত না,এখন বিয়ে করে বউ পেয়ে আমাদের ভুলেই গেছে,এখন ভাল একটা কথা কইলেই ধমক দিয়ে উঠে,,টাকা পয়সা দেওয়া দূরে থাক,,,
দেখলাম রিকসাওয়ালা মামার চোখে পানি টলমল করছে,আমরা কতটা স্বার্থপর তাইনা,বাবা মা কত আদর যত্ন,স্নেহ মমতা ভালবাসা দিয়ে আমাদের লালন পালন করে বড় করেছেন,গায়ের চামড়া দিয়ে জুতা বানিয়ে দিলে ওতো বাবা মায়ের ঋন কখনোই সোধ হবে না,অথচ বউ পেয়ে সেই বাবা মাকেই ভুলে যাই আমরা,হায়রে পৃথিবী,,
মামা চলে আসছি কলেজ রোড(রিকসাওয়ালা) এই নিন ২৫টাকা আপনার ভাড়া,আর এই ৫০০ টাকা দিয়ে ছোট ভাইটার জন্য কিছু ঔষুধ নিয়ে যাবেন,আর আপনার মোবাইল নাম্বারটা দিন,সময় করে একদিন দেখে আসব আপনার ছেলেটাকে(আমি) টাকাটা পেয়ে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে,আল্লাহ আফনের মঙ্গল করব মামা,একদিন আফনে অনেক বড় হবেন,এসব বলে রিকসাওয়ালা চলে গেল,মানুষ অল্পতেই কতটা খুশি হয় তাইনা।
ফোনটা হঠাৎ বেজে উঠল শারমিন কল দিয়েছে,,পাগলিটা সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছে আমার জন্য,,এসব কথা ভাবতে ভাবতে ফোনটা কেটে গেল,,কলটা ব্যাক করলাম,;- হ্যালো (আমি) কিরে কোথায় তুই, আর কতক্ষন বসিয়ে রাখবি আমাকে,সেই ৮টা থেকে বসে আছি এখন বাজে ১০:২৫, (শারমিন) এইত চলে আসছি কলেজের গেইটে আমি(আমি) তুই ওখানেই দাড়া আমি আসছি(শারমিন), ওই তো একটা নিল পরী আমার দিকেই এগিয়ে আসছে,চোখে কাজল,নীল শাড়ী, নীল চুরি,নীল টিপ,এতোটা সুন্দর লাগছে ওকে ওর, পরীরা ও হার মানবে ওর সুন্দর্যে,, কিরে এভাবে হা করে কি দেখিস,মুখে মশা ঢুকবে তো(শারমিন) ওর কথায় কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম,মাথা নিচু করে বললাম।
কিছু না (আমি) ওহ,,,চল কোথাও বসি(শারমিন) কিছুক্ষন পিনপতন নিরবতা,,নিরবতা ভেঙ্গে শারমিনই প্রথমে বলল,,আমার চকলেট কোথায় (শারমিন) আনতে ভুলে গেছি(আমি) আমার সব কিছুই তুই ভুলে যাস,আমার কোনকিছুই তোর মনে থাকে না,আর মনে থাকবেই বা কেনো আমি তোর কে হয়,(শারমিন) মাথা নিচু করে কথা গুলো বলছে শারমিন,চোখের পানি আটকানোর বৃথা চেষ্টা করছে ও,আটকাটে পারছে,টপটপ করে চোখের পানি পড়ছে,,,
কিরে এভাবে কাদছিস কেনো,তোর চোখের কাজল লেপ্টে যাচ্ছে তো,মুখের আটা ময়দা সব উঠে যাচ্ছে তো(আমি)
যাক তাতে তোর কি (শারমিন) আমার অনেক কিছু,,দেখি আমার দিকে তাকাতো তুই(আমি) না তাকাবো না,আমাকে কষ্ট দিতে খুব ভালো লাগে তোর তাইনা(শারমিন) থাক তাকাতে হবে না তোকে,ডেইরি মিল্ক গুলো দেখি অন্য কোন সুন্দরী মেয়েকে দিতে পারি কিনা (আমি) এইকথা বলার সাথে সাথে হুটট করে হাত থেকে চকলেট গুলো নিয়ে খেতে শুরু করল,মেয়েরা বড় অদ্ভুত,মেয়েদের মন বুজা নয়ত সুজা,,
চকলেটের জন্য এভাবে কান্না করতে হয় তোর,কলেজের সবার সামনে(আমি) হুমম,তুই জানিস না আমি চকলেট কতটা ভালবাসি,,আর আমার প্রিয় জিনিসটা তুই কিভাবে ভুলে গেলি (শারমিন)
আমি তো ভুলে যাইনি,তুকে একটু রাগাতে চেয়েছিলাম।। (আমি) একমনে সে চকলেট খেয়েই যাচ্ছে,খেয়েই যাচ্ছে। তুই একাই খেয়ে যাচ্ছিস আমাকে দিবি না(আমি) আমি চকলেটের ভাগ অন্য কাউকে দেইনা(শারমিন) আমি চকলেট নয়,অন্য কিছু চাই দিবি (আমি) কি চাস বল(শারমিন) তোর ঠোটের লিপস্টিক গুলো চায় (আমি) (চোখ মুখ লাল করে)এই কুত্তা কি বল্লি তুই(শারমিন),,,খুব রেগে যাচ্ছে,পরিস্থিতি সিমানার বাইরে অতিক্রম করছে,কিছু একটা বলে ওকে শান্ত করতে হবে,,,
ভয়ে ভয়ে বললাম,,আরে আ ম ম মি ত মমমজা কররছিলাম তোর সাথে,তু তু তুই এভববাবে সিরিয়াস হচচচচ্ছিস কেককনো(আমি) আমার এই অবস্হা দেখে,শারমিন হঠাৎ ফিক করে হেসে দিলো,,,এতো ভয় পাস আমাকে তুই,আমি বাগ না ভাল্লুক যে তুকে খেয়ে ফেলব(শারমিন) ক ক ক কই কখখখন ভয় পেলাম তুকে,আমি কাউকে ভয় পাইনা (আমি) তাই,,তাহলে এভাবে তোতলাচ্ছিস কেনো(শারমিন) আমায় ভালবাসিস(শারমিন) হুমম(আমি) বলিস নি কেনো এতোদিন(শারমিন) খুব ভয় হত, যদি তোকে হারিয়ে ফেলি,তুই যদি বন্ধুত্ব টা নষ্ট করে দিস,যদি তোর সাথে আর কথা না বলতে পারি,এই ভয়ে কখনো বলিনি(আমি) ছেড়ে যাবো বলেতো এতোদিন তুকে আগলে রাখিনি,অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকাতে দিয়নি তুকে,কারো সাথে মিশতে দিতাম না তুকে,আর সেদিন যদি চুরি করে তুর ডাইরীটা না পরতাম,তাহলে কখনোই জানতে পারতাম না লুকিয়ে লুকিয়ে ঠিক কতটা ভালবাসিস তুই আমাকে,,,(শারমিন)
তুই ও কি ভালবাসিস আমায়(আমি) আমি কেনো তুর মত একটা গাধা কে ভালবাসতে যাবো (শারমিন) কেনো আমি কি দেখতে খারাপ(আমি) হুমম,তুর চেহারা দেখতে একটা গাধার মত,বাদরের মত(শারমিন) তাহলে বসে আসিছ কেনো গাধার কাছ চলে যা,(আমি) অতপর শারমিন আমায় জড়িয়ে ধরে বলল,,, আমি যে এই গাধাটার গাধী হতে চাই সারাজিবনের জন্য, রাখবি তোর গাধী করে আামায়,,,,