_এইযে শুনছেন? (বুশরা)
_ আমাকে ডাকছেন?
_ আশেপাশে তো কাউকে দেখছিনা। তাহলে আমি নিশ্চয় আপনার পাশের বটগাছকে ডাকছিনা!(বুশরা)
_ জ্বি বলুন কি বলবেন।
_ এভাবে কটকট করে তাকিয়ে আছেন কেন? সুন্দরী মেয়েদের সাথে ভদ্রতার সাথে কথা বলতে হয়। নম্রতার সাথে কথা বলতে হয় জানেন না।(বুশরা)
_ আপনি সুন্দরী? আপনি নিজেকে সুন্দরী ভাবেন! হাহাহা।
_ সুন্দরীরা নিজেকে সুন্দরীই ভাবে বান্দরীরা ভাবে না। যাকগে আপনি বড্ড বেশি বকবক করেন। যা বলতে ডেকেছি শুনুন। আপনি কিন্তু খুব সুন্দর গল্প লেখেন।(বুশরা)
_ যাক কিছু তো ভাল বললেন। ধন্যবাদ।
_ এতো বকবক করেন কেন! পুরোটা তো শুনবেন! আপনি ভাল লেখেন এইটা আমার ভাষ্য না আমার বয়ফ্রেন্ডের ভাষ্য।(বুশরা)
_ এটা বলতে ডেকেছেন? ওকে আপনার কিছু বলার থাকলে, আমি বকবক করি এই লাইন বাদে বলেন!
_ এতো ভাব কেন আপনার? এফবিতে কিছু ফলোয়ার জুটাইছেন। তাই এতো ভাব!(বুশরা)
_ শোনেন মেডাম আপনার কাজ না থাকলেও আমার অনেক কাজ আছে। দরকারি কিছু বলার থাকলে বলেন নাইলে যাই।
_ আইছেন প্রাইম মিনিস্টার! যতোরাজ্যের কাজ উনিই করেন! আমার বয়ফ্রেন্ডের জন্মদিন কাল।(বুশরা)
_ আজব পাগল মেয়ে তো আপনি। রাস্তাঘাটে দাড় করিয়ে বয়ফ্রেন্ডের জন্মদিনের দাওয়াত দিচ্ছেন!
_ কেন জ্বলে?(বুশরা)
_ মাত্রাতিরিক্ত কোন কিছুই ভাল না! আমার কেন জ্বলবে!
_ এইযে শোনেন ভাব নিয়েন না! আমি জানি আপনি আমারে লাইক করেন।(বুশরা)
_ আজব!
_ এইটা মেয়েদের ডায়লগ। আপনার মতো লেখকের মুখে মানাচ্ছেনা।(বুশরা)
_দেখেন আপনার ভুল ধারণা। আমি আপনাকে পছন্দ করিনা।
_ ওহ তাই! তাহলে পরশু আমাদের ক্লাস পার্টির দিন চুপি চুপি আসছিলেন কেন? আমি খেয়াল করছি আপনি লুকায়ে আমার তিন চারটা ছবিও তুলছেন। সিনিয়র পার্সন তাই কিছু বলিনি।(বুশরা)
_ ইয়ে মানে আপনার ছবি কই তুললাম আপনাদের স্টজের ছবি তুলছি সামনে আমাদেরও ক্লাস পার্টি তাই।
_ আইছে উনাদের ক্লাস পার্টির গল্প শোনাইতে!(বুশরা)
_ ওহ তাই না! আমার তো এখন মনে হচ্ছে আপনিই আমারে ফলো করেন। নাইলে আমি কি করতেছি না করতেছি আপনি খেয়াল করলেন কেমনে! আমার তো মনে হয় আপনিই আমারে লাইক করেন।
_ পাগলের সুখ মনে মনে। আচ্ছা আপনি ত অনেক ভালো লেখেন, তাই আমার বয় ফ্রেন্ডের জন্মদিনের জন্য আপনি কিছু লিখে দেবেন প্লিজ। সেজন্যই আপনাকে ডাকছি।(বুশরা)
_ এমনভাবে বলছেন যেন অর্ডার করছেন! আমার ঠ্যাকা পড়ছে আপনার বয় ফ্রেন্ডের জন্য কিছু লেখার।
_ লিখবেন লিখবেন আমি জানি আপনি লিখবেন। আচ্ছা এখন আপনার নাম্বারটা দেন তো।(বুশরা)
_ আজব পাগলের পাল্লায় পরলাম তো!! আমি কেন আপনাকে নাম্বার দেবো।
_ কেন সালমানের কাছে যখন আমার নাম্বার চাইছিলেন তখন তো কেউ বলেনি আমার নাম্বার দিয়ে আপনি কি করবেন। আমি নাম্বার চাইছি লেখা শেষ হইছে কিনা জানতে ফোন করবো।(বুশরা)
_ দেখেন সালমান হয়তো আপনাকে মিথ্যে বলেছে। আমি নাম্বার চাইনি। আর আমি আপনার বয়ফ্রেন্ডের জন্য লিখতে পারবোনা।
_ তা পারবেন কেন! জ্বলে তো।
যাইহোক কাল আমি আমার বয়ফ্রেন্ডকে প্রপোজ করবো। ও আমাকে অনেক আগেই একে তাকে দিয়ে প্রপোজ করাইছে এক্সেপ্ট করিনি। ওইটাইপ ভীতুর ডিমকে এক্সেপ্ট করাও যায়না। ভাবলাম নিজেই করবো আর কতো! আপনি তো আর লিখে দিলেন না আমিই লিখবো।(বুশরা)
_ ভীতুর ডিম কিন্তু আজীবন ভীতুই থাকে। যা করার ভেবে চিনতে করবেন। পরে না পস্তাতে হয়।
_ এতো কথা বলেন কেন! আমার আপনার সাথে কাজ শেষ। এখন আপনি আসতে পারেন।(বুশরা)
_ না বলছিলাম কি আরেকবার ভেবে দেখবেন।
_ এইযে একটু আগে বলছিলেন আপনার অনেক কাজ। এখন যান না কেন?(বুশরা)
_ জেনে শুনে একটা মেয়েকে জলে লাফ দিতে দেখেও কিছু বলবোনা এমন কাপুরুষ তো আমি না।
_ আইছে আমার সুপুরুষ! আমাকে নিয়ে আমার ভাবতে হবেনা। আমার বয়ফ্রেন্ড অনেক ভাল। আমাকে অনেক ভালবাসে। আপনাকে এসব ভাবতে হবেনা, আপনি এখন আসেন।(বুশরা)
_ বুশরা!
_ বাব্বাহ! আপনি আমার নামও জানেন।(বুশরা)
_ বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু।
_ কিসের বেশি!(বুশরা)
_ আপনি সব জেনেও নাটক করছেন।
_ আমি আবার কি জানি। কি বলছেন সবই তো মাথার উপর দিয়ে যায়। দেখেন ভাই আপনি লেখক তাই বলে যে আপনি ক বললেই সবাই কলম বুঝে যাবে তা তো না। বুঝিয়ে বলেন।(বুশরা)
_ আপনি কাউকে প্রপোজ করতে পারেন না।
_ কেন পারিনা? দুইবছর তো হয়ে গেল এই ক্যাম্পাসে। সবাই একটার জায়গায় দশটা প্রেম করে। আমি কেন পারবোনা।(বুশরা)
_ যখন বলছি পারেন না তো পারেন না। বুশরা এবার আমার শার্টের কলার ধরে বলে,
_ কেন পারিনা? বলো কেন পারিনা?
_ কারণ তুমি জানো আমি তোমাকে..
_ তুমি আমাকে কি বলো?(বুশরা)
_ আমি তোমাকে…
_ এই দুইবছরে লাট্টুর মতো পেছনে ঘুরতেছো আজ কাজল রে দিয়ে বলাও, কাল রাসেলরে দিয়ে বলাও। তুমি ছেলেমানুষ! খাটাশ একটা। (বুশরা)
_ তুমি তো জানোই তাহলে কেন প্রশ্ন করো?
_ জানি তো কি হইছে? সবকিছুর একটা সিস্টেম আছে। সিস্টেম মেইনটেইন না করতে পারলে দূরে হাঁটো। যাও তুমি আলাদা আমিও আলাদা।(বুশরা)
_ বুশরা প্লিজ এমন করোনা।
_ প্রপোজ করলে কি হয় ! (বুশরা)
_ ভয় করে তো। তুমি যে গুন্ডা টাইপ যদি না বলে দাও আমি তো শেষ। তাই দুই বছর ধরে ঘুরেই যাচ্ছি করতে আর পারছিনা। বুশরা আরো জোরে কলার ধরে হ্যাচকা টান দিয়ে বলে,
_ তাইলে তুই তোর ভয় নিয়েই থাক! আমি গেলাম। আমার বয়ফ্রেন্ডরেই প্রপোজ করবো।
_ কি কও তুমি তোমার কিসের বয়ফ্রেন্ড!
_ কেন তোর জি এফ নাই বলে আমার বি এফ থাকবেনা সেইটা কোন সংবিধানে লেখা আছে?(বুশরা)
_ ছিঃ এমন তুই তোকারি কেন করছো? কেউ দেখলে কি বলবে?
_ কি বলবে? সবাই তোরে হাড়ে হাড়ে চেনে। আমার পেছনে যখন লাট্টুর মতো ঘুরিস তখন ভাবিস না? বাই,,,,(বুশরা)
_ বুশরা আমি জানি তুমিও আমারে ভালবাসো। যেওনা প্লিজ। বুশরা হুট করেই ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে। তাই আমি বললাম,
_ কাঁদো কেন?
আচ্ছা বাবা আমারে একটা দিন টাইম দাও। আর ওই ছাগল যেইটার কাল জন্মদিন ওইটারে তুমি প্রপোজ কইরোনা দোহাই লাগে। প্লিজ একটু হাসো। কাল আমি পুরো ক্যাম্পাসের সামনে তোমারে প্রপোজ করবো একটু হাসো। বুশরা গটগট করে হেঁটে চলে যায়। আমার আর কোনে কথা শুনলোনা, আচ্ছা আমি ত বুশরাকে বললাম, কালকে সবার সামনে প্রপোজ করবো। কালকের প্রপোজের জন্য কি প্র্যাক্টিস করা উচিত? আচ্ছা বুশরা ওই ছেলেকে প্রপোজ করবেনা তো? তখন হুট করে বুশরা পেছনে তাকিয়ে চিৎকার করে বলে।
_ ঐ ছাগল!
বাড়ি গিয়ে ক্যালেন্ডার দেখিস নিজের জন্মদিন টাও মাথায় থাকেনা। যাইহোক কাল ঠিকঠাক প্রপোজ না করতে পারলে তুই সত্যিই ক্যানসেল বাড়ি যা প্র্যাক্টিস কর। তার মানি কাল আমার জন্মদিন!! বুশরা আমাকে ওকে এখন আর লেখা লেখি করে, সময় নষ্ট না করে বাড়িতে গিয়ে প্রেকটিস করি, না হলে আমি শেষ!!
সমাপ্ত