এইযে মিস্টার ঐ সিট টি আমার। একটু সরে বসবেন? এমন একটা মিষ্টি কন্ঠ শুনেই পাশে তাকায় নিলয়। তাকিয়ে যা দেখে তাতে অবাক হয়ে যায়। কতদিন পর সে সেই মানুষ টি কে দেখছে যার জন্য একসময় পাগল ছিলো এই নিলয়। যাকে চার বছর আগে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসতো। এখনও বাসে। কিন্তু হঠাৎ করেই ওর জীবন থেকে হারিয়ে যায় মেয়েটি। মেয়েটির নাম নীলাদ্রি। নিলয় জানালার পাশের সিট টি ছেরে নীলাদ্রি কে যায়গা করে দেয়। আর সেবসে পাশের সিটে।
নিলয় কে চিনতে পারেনি মনে হয় নীলাদ্রি। কারণ এই চার বছরে নিলয়ের চেহারায় অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে। মুখে খুঁচা খুঁচা দাড়ি, চোখে চশমা, আগের থেকে একটু চিকন ও হয়ে গিয়েছে নিলয়। নীলাদ্রি বসেই ফোনটা হাতে নিয়ে কাকে যেন কল দেয় নীলাদ্রি। কল দিয়ে বলে বাসে উঠে গিয়েছে সে। নিলয় তখন তাকিয়ে ছিলো নীলাদ্রির দিকে। নীলাদ্রি কেমন যেন হয়ে গিয়েছে। আগের সেই দুষ্টু হাসি মাখা মুখ আর নেই। চোখের চঞ্চলতা কাটিয়ে এখন শুধুই শুন্যতা দেখা যাচ্ছে। নীলাদ্রি কে দেখেই নিলয়ের মনে পরে যায় সেই চারবছর আগের কথা।
তখন নিলয় চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যায়ে পড়তো। যদিও নিজের বাড়ি ছিলো কুমিল্লায়। ঢাবি তে চান্স না পেয়ে চবি তে ভর্তি পরিক্ষায় চান্স পায় নিলয়। তাই চিটাগাং থেকেই পড়াশুনা শুরু করে নিলয়। চিটাগাং নিলয়ের খালার বাসা ছিলো। সেখানেই থাকতো সে। নিলিয়ের একটা কাজিন ছিলো। নাম হুমাইয়ারা। হুমাইয়ারা ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়তো। হুমাইয়ারার সবচেয়ে ভালো ও কাছের বান্ধবী ছিলো নীলাদ্রি। নীলাদ্রি প্রায় প্রতিদিন ই হুমাইয়ারার সাথে ওদের বাসায় আসতো। সেখানেই নীলাদ্রি কে দেখেছিলো নিলয়। প্রথম যেদিন দেখেছিলো সেদিন ছিলো হুমাইয়ারার জন্মদিন। কিন্তু নিলয় বাসায় ফিরতে একটু দেরি করছিলো।
এই কারণে বারবার নিলয় কে কল দিচ্ছিলো হুমাইয়ারা। তাই দ্রুত আসার জন্য রিক্সা ছেরে Cng দিয়ে যাচ্ছিলো নিলয়। এমন সময় একটা মেয়ে নিলয়ের Cng কে সিগন্যাল দেয় এবং নিলয় ড্রাইভার কে বলে সিএনজি থামায়। কারণ মেয়েটি কে দেখে মনে হচ্ছে খুব তারা আছে মেয়েটির। নিজের সাথে নিয়ে নেয় মেয়েটি কে। মেয়েটি সিএনজি তে উঠার পরই একটা কল আসে মেয়েটির ফোনে। নিলয় আড় চোখে মেয়েটির ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে ওর কাজিন হুমাইয়ারার নাম্বার। মেয়েটি কল রিসিভ করেই বলে “এইতো দোস্ত সিএনজি তে আছি। একটু অপেক্ষা কর”। এতক্ষনে নিলয় মেয়েটির দিকে একটু ভালো করে তাকায়। নীল একটা ড্রেস পরে আছে মেয়েটি। কানে ম্যাচিং করা দুল, হাতে ম্যাচিং চুরি। খুব ভালো লাগছে মেয়েটি কে। নিলয় এই প্রথম কোন মেয়ে কে এতটা ভালো করে লক্ষ করছে। হঠাৎ করেই নিলয় মেয়েটি কে প্রশ্ন করে
–কোথাও অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন?
–আপনি কি করে বুঝলেন?(ভ্রু কুচকে বলে মেয়েটি)
–না মানে আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে।(একটু দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে নিলয়)
–আমার মুখে কি লিখা আছে?(একটু বিরক্তি নিয়ে বলে মেয়েটি)
–না তা লেখা নেই। কিন্তু আপনার অস্থিরতা বলছে। বলতে বলতেই সিএনজি এসে থামে হুমাইয়ারার বাসার সামনে। নিলয় মেয়েটি কে বলে…
—এসে পরেছেন। নামুন।
–আপনি কি করে জানেন আমি এখানে নামবো? (অবাক হয়ে বলে মেয়েটি)
–আপনাকে দেখেই মনে হচ্ছে।
তারপর সিএনজি থেকে নেমে মেয়েটিভারা দিতে যায় এমন সময় নিলয় বলে উঠে, “লাগবে না ভারা। মনে করুন আমার সাথে আমাদের বাড়িতে এসেছেন।” আরো একবার অবাক হয় মেয়েটি। তারপর দুজনেই একসাথে ভেতরে ঢুকে। হুমাইয়ারা এসে যখন নিলয় কে বলে “ভাইয়া, তোমাকে কত করে বললাম তারাতারি আসবা। আর তুমি এখন আসছো? যাও কথা নেই তোমার সাথে।” কথাগুলো শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলো মেয়েটি। সেই অবাক হওয়া দেখেই নিলয় মেয়েটির প্রেমে পরে যায়। হুমাইয়ারা থেকে জানতে পারে মেয়েটির নাম নীলাদ্রি। আরো জানতে পারে যে সে ওর সবথেকে কাছের বান্ধবী। আর সবথেকে অবাক হয় এটা জেনে নীলাদ্রির বাড়ি কুমিল্লা এবং নিলয়দের বাড়ির খুব কাছেই। কিন্তু ও ছোট থেকে চিটাগাং থাকে। তারপর থেকে নিলয় হুমাইয়ারা থেকে নীলাদ্রির সব খবরাখবর নেয়।
নীলাদ্রি হুমাইয়ারার বাসায় আসলে প্রায়ই কথা হতো দুজনের। কিন্তু নীলাদ্রি নিলয়ের দিকে তাকাতো না। একসময় নিলয় পাগল হয়ে উঠে নীলাদ্রির ভালোবাসা পাবারজন্য। সব খুলে বলে হুমাইয়ারা কে। সব শুনে হুমাইয়ারা বলে যে নীলাদ্রি কে প্রপোজ করার জন্য। পরদিন নাকি হুমাইয়ারানীলাদ্রি নিয়ে আসবে ওদের বাসায়। আর তখন যেন নীলাদ্রি কে প্রপোজ করে নিলয়। পরদিন নীলাদ্রি কে নিয়ে বাসায় আসে হুমাইয়ারা। নিলয় সকাল থেকে এক্সাইটেড হয়ে আছে। বাসায় নীলাদ্রি কে দেখে যেন বুকটা ধুক ধুক করছে নিলয়ের। হুমাইয়ারা নীলাদ্রি কে নিয়ে ছাদে যায়। নিলয় আগে থেকেই ছাদে ছিলো। হুমাইয়ারা নীলাদ্রি রেখে চলে আসে নিচে। নিলয় আস্তে আস্তে নীলাদ্রির সামনে এসে দাড়ায়। ছাদের নীল গোলাপ গাছ থেকে একটা গোলাপ ছিরে নিয়েছিলো আগে থেকেই। হাতটা বাড়িয়ে গোলাপ টা নীলাদ্রির সামনে ধরে এক নিশ্বাসে বলে দেয় নিলয়ের মনের সব কথা। নীলাদ্রি কিছুক্ষন চুপ করে থাকে। তারপর বলে উঠে,
নীলাদ্রি –আপনার হাতে কি ফুল?
নিলয়– কেন? গোলাপ।
–কি রঙের?
–নীল।
–কষ্টের রং কি জানেন?
–নীল…(হাতের দিকে তাকিয়ে একটু চিন্তায় পরে যায় নিলয়)
–যে সম্পর্ক শুরুই করতে চাচ্ছেন কষ্টের রং দিয়ে। সেই সম্পর্কে অনেক কষ্ট আসতে পারে। সহ্য করতে পারবেন তো?
— তোমার একটু ভালোবাসা পেতে যদি আমাকে সারাজীবন কষ্ট করতে হয় আমি তাতেও রাজি।
কথাটা শুনেই ভালো লেগে যায় নীলাদ্রির। এক্সেপ্ট করে নিলয়ের ভালোবাসা। তারপর চলতে থাকে ওদের দুষ্টু মিষ্টি প্রেম। কিন্তু যে সম্পর্ক শুরু হয়েছে কষ্টের রং দিয়ে তা কি আর বেশিদিন টিকে? কিছুদিন পরেই নীলাদ্রি বদলে যেতে থাকে। এড়িয়ে চলতে থাকে নিলয় কে। তারপর থেকে আস্তে আস্তে কথা বলা বন্ধ করে দেয় নীলাদ্রি। একসময় ফোন, ও ফেসবুকেও ব্লক দেয় নিলয় কে।
নিলয় দিশেহারা হয়ে পরে। হুমাইয়ারা থেকে জানতে পারে নীলাদ্রি নাকি ইদানীং ওকে ও এড়িয়ে চলে। কলেজে আসে না ঠিক করে। ফোন এ রিসিভ করে না। এভাবে একদিন নিলয়ের জীবন থেকে হারিয়ে যায় নীলাদ্রি। জীবনটা উলটপালট হয়ে যায় নিলয়ের। নীলাদ্রি ছিলো ওর জীবনের প্রথম আর শেষ ভালোবাসা। কিন্তু সেই ছেরে চলে গিয়েছে? তারপর নিলয় চলে আসে ঢাকায়। কেটে যায় চারটি বছর। আর আজ বাড়ি যাওয়ার পথেই নীলাদ্রি কে দেখতে পায় নীল। কিন্তু নীলাদ্রির দিকে মুখটা তেমন ঘুরাচ্ছে না। নিলয়ের খুব ইচ্ছে করছে নীলাদ্রি কে জিজ্ঞেস করতে যে সে কেন এমন করলো? ওকে ধোকা দিয়ে সে সুখে আছে কিনা? কিন্তু নিলয় কিছু বলছে না। কথা বললেই হয়তো নীলাদ্রি ওকে চিনে ফেলবে। যদি চিনে ফেলে তাহলে হয়তো কন্ট্রাক্টার কে বলে অন্য সিটে চলে যাবে। তাই অন্যদিকে তাকিয়ে আছে নিলয়। নীলাদ্রি এক মনে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছে। কি যেন ভাবছে সে। হয়তো ওর নতুন বয়ফ্রেন্ডের কথাই ভাবছে।
একটু পর কন্ট্রাক্টার আসে টিকেট চেক করতে। কন্ট্রাক্টার কে টিকিট দিতে গিয়েই পাশের লোকটির দিকে নজর পরে নীলাদ্রির। খুব চেনা লাগছে এই মুখটি কে। অনেক্ষন ধরে তাকিয়ে থাকে নীলাদ্রি। কিন্তু নিলয় অন্য দিকে তাকিয়ে আছে যেন নীলাদ্রি বুঝতে না পারে। আর যতটা সম্ভব হাতের পেপারটা দিয়ে নিজেকে আড়াল করে রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু নিলয় আড় চোখে নীলাদ্রির দিকে তাকিয়ে দেখে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে তখন থেকে। কিন্তু এখন নীলাদ্রির চোখ থেকে পানি পরছে। চোখের পানির রঙ হয় না। হলে নিলয় বুঝতে পারতো কতটা কষ্টের কারণে এই পানি পরছে। নীলাদ্রির চোখের পানি দেখে নিলয়ের চোখের কোণেও একটু পানি চিকচিক করছে। মনে হচ্ছে এখনি বাঁধ ভেঙে ঝরে পরবে। এমন সময় নীলাদ্রি আস্তে ও খুব শান্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করে নিলয় কে…
নীলাদ্রি:- কেমন আছো নিলয়? নিলয় আর নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারেনি। নীলাদ্রির দিকে তাকিয়ে বলে
নিলয়:- যেমন রেখে গিয়েছিলেন।
–বিয়ে করেছো?
–একজন কে ভালোবেসেছিলাম। তাকে ছারা জীবনে আর কাউকে কল্পনা করতে পারি নি। তাই করা হয় নি। আপনি তো বেশ ভালোই আছেন। বিয়েও করেছেন শুনেছিলাম।
–হ্যা বিয়ে করেছিলাম। কথাটা শুনেই আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে নি নিলয়। নীলাদ্রির থেকে নিজের চোখের পানি লুকুতে আবার নিজেকে আড়াল করে নেয়। অন্য দিকে তাকিয়েই প্রশ্ন করে নীলাদ্রি কে।
–আমার সাথে এই অভিনয় করার কি প্রয়োজন ছিলো? (বলেই নিজের কান্না লুকুতে এই সিট থেকে উঠে যেতে চায় নিলয়)(হাতটা ধরে ফেলে নীলাদ্রি)
–কারণ টা জানতে চাও না? (প্রশ্ন করে নীলাদ্রি)
–.(চুপ করে থাকে নিলয়) তা দেখে নীলাদ্রি নিজ থেকেই বলতে থাকে
–তুমি তো জানো আমি কতটা রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে।
আর এটাও জানো আমি বাবা মা এর একমাত্র শন্তান। নিলয় তোমার সাথে যখন আমার রিলেশন হয় তখন আমি আম্মু কে সব খুলে বলেছিলাম। কারণ আম্মু আমার খুব ভালো বন্ধু ছিলো। আম্মু আব্বু কে সব জানিয়ে দেয়। তখনই আব্বু আমাদের জানায় যে ওনার কোন এক বন্ধুর ছেলের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করে রেখেছেন। কিন্তু এর আগে আমরা কেউ জানতাম না। আমিও তোমাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছিলাম। তাই আমি আব্বুর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি। কিন্তু আব্বু তা মেনে নিতে পারে নি। সেদিন ই স্টোক করেন। ডাক্তার জানায় আব্বু কে যেন কোন মানুষিক চাপ না দেয়া হয়। তাহলে ওনি মারাও যেতে পারেন। তখন আম্মু আমার সামনে এসে নিজের শাড়ির আচল মেলে দিয়ে নিজের স্বামীর জীবন ভিক্ষা চেয়েছিলো।
আমি ছিলাম তখন পৃথিবীর সবথেকে অসহায় শন্তান, আর নিষ্ঠুর প্রেমিকা। সেদিন ই মনে মনে নিজের ভালোবাসা কে কবর দেই। আর আব্বুর ঠিক করা পাত্রের সাথেই বিয়ে ঠিক হয়। কিন্তু বিধিবাম, বরযাত্রী আসার সময় সরক দুর্ঘটনায় পাত্র মারা যায়। আর সবাই আমাকে অলক্ষুণে, অপয়া বলে অপবাদ দিতে থাকে। বাবা কে ও অপমান করতে থাকে অনেকে। বাবা সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে আবার স্টোক করে। তবে এযাত্রায় আর ফিরে আসেন নি। চলে যান আমাদের ছেরে। এটুকু বলে নীলাদ্রি একটু থামে। গলা আটকে আসছে ওর। কথা বলতে পারছে না। নিলয় ও বুঝতে পারছে নিজের অজান্তেই ওর চোখ থেকে পানি ঝরছে। নিলয় ও কিছু বলতে পারছে না। শুধু তারপর কি হয়েছিলো এমন একটা জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে আছে নীলাদ্রির দিকে। একটু থেমে নীলাদ্রি আবার বলতে শুরু করে।
—তারপর বাবার মৃত্যু আর আমার এমন করুন পরিণতি দেখে আম্মু ও অসুস্থ হয়ে পরেন। আম্মু কিছুদিনের মাঝেই আমাকে একা করে চলে যায় না ফেরার দেশে। আমি নিসঃঙ্গ হয়ে যাই। একা হয়ে যাই জীবনে। তোমার সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর সাহস পাচ্ছিলাম না। কারণ যে মানুষ টা কে একসময় কষ্ট দিয়েছিলাম সেই মানুষটার সামনে কি করা দাঁড়াবো? তাই কাউকে কিছু না বলে চলে আসি গ্রামের বাড়ি।
সেখানে ও চাচি রা বিভিন্ন কথা শুনায়। নানান ভাবে অপমান করতে থাকে। তখন আমি আমার আব্বুর আরেকটা বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করি। তিনি ঢাকায় আমার একটা চাকরীর ব্যবস্থা করে দেন। আমি চলে আসি ঢাকায়। এখানে এসে হুমাইয়ারা কে কল দিয়ে জানতে পারি তুমিও ঢাকায়। আর এটাও জানতে পারি তুমি এখনো আমাকে খুব ভালোবাস। তবু সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর সাহস হয় নি। হুমাইয়ারা আমাকে তোমার ঠিকানা ও দেয় নি। তবু আমি মনে মনে তোমাকে খুঁজতে থাকি। কিন্তু এই চারবছরে ও তোমাকে খুঁজে পাই না। আজ ছুটি পেয়ে বাড়ি যাচ্ছিলাম। কিন্তু ভাগ্যের লীলাখেলা দেখো, যাকে এতদিনেও খুঁজে পাই নি আজ সে আমার সামনে। এতখন সব কথা শুনেছিলো নিলয়। কিছুক্ষন চুপ করে থেকে নিলয় বলে…
–আবার সবকিছু নতুন করে শুরু করা যায় না। কথাটা শুনেই নীলাদ্রি অন্যদিকে ফিরে তাকিয়ে বলে….
–আমি তো অপয়া। আমাকে বিয়ে করে কেন নিজের জীবন শেষ করবে?
–এসব কুসংস্কার আমি মানি না। আমি তোমার জীবনটা আবার নতুন করে সাজাতে চাই।
–কিন্তু তোমার বাবা মা?
–আমার বাবা মা সব জানেন। যেদিন প্রথম তোমাকে প্রপোজ করেছিলাম সেদিন ই আম্মু কে সব বলেছি। সব শুনে আম্মু রাজি হয়েছিলো। আব্বু তো আমি যা চাই তাই দেয়। তিনিও না করেন নি। কিন্তু তুমি চলে যাওয়ার পর ওনারা খুব কষ্ট পেয়েছিলেন।
–তাহলে একটা কথা বলবো?
–বলো?
–আমাকে তোমাদের বাড়িতে নিয়ে যাবে?
আমি আর বাড়ি ফিরতে চাই না। কথাটা শুনেই নিলয়ের মনে খুশির জোয়ার বয়ে যায়। সাথে সাথেই নিলিয় ওর বাসায় ফোন করে ওর আম্মু কে জানায় যে বৌ নিয়ে আসছে। আর সেই বৌ হচ্ছে নীলাদ্রি। কথাটা শুনে নিলয়ের মা ও খুব খুশি হয়। তা দেখে নীলাদ্রি অবাক হয়ে যায়। এত সহজেই সব আবার ঠিক হয়ে যাবে ভাবতে পারেনি নীলাদ্রি। বুঝতে পারেনি নিলয় ওকে আবার নিজের জীবনে গ্রহন করবে। নীলাদ্রির কাছে কেমন যেন কল্পনার মত লাগছে। তাই সে নিলয় কে বলে ওকে একটা চিমটি কাটতে। নিলয় ও চিমটি কাটে। নীলাদ্রি ব্যাথা পায়। তাই দেখে নিলয় মিষ্টি হেসে বলে “কল্পনা নয় সত্যি”।