– Hi রুপবান সুন্দরী!
> What???
– জী ম্যাম
> ইডিয়ট
– ফর ইউ
> একি! হাত ছাড়ুন বলছি
– যদি না ছাড়ি?
> দেখুনভাল হবেনা কিন্ত?
– না হোক
> কি চান আপনি?
– ভালবাসা চাই
> Shut Up লুইচ্চামি করার জায়গা পান না?
– এইতো পেয়েছি তোমার হাত ধরে
> অসভ্য শয়তান
ছাড়্ বলছি ছাড়্ কথাটি বলে মেয়েটি একটা ঝাকি দিয়ে হাত সরিয়ে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে কলেজে চলে এলো ক্লাসে বসে অঝর ধারাতে কাদতেছে মেয়েটি।
রাস্তায় এরকম খারাপ ছেলেদের থেকে, হয়রানির স্বীকার হলে, কার না কান্না আসবে??? যাহক সেই ক্লাসের একটা ডেঞ্জারাস মেয়ে, নাম, লাবণ্য সিনথিয়া রোজ যেমন দেখতে পরীর মত, তেমন বারুদের মতো রাগী,শুধু হাত আগে আগে চলে, সব সময় ছেলেদের বেশে ঘুড়ে বেড়ায়, শার্ট প্যান্ট পড়ে, চুলটা খোলা রেখে জুতা পড়ে বান্দবীদের নিয়ে ঘুড়ে বেড়ায় এলাকার যত বখাটে পোলাপাইন তাকে দেখে রাস্তা মাপে খুব ভয় করে তাকে আর হ্যা ওর বাবা একজন কলেজের প্রফেসর। আর সেজন্য সে কাউকে ভয় পায়না বরং সেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যাহক ক্লাসে ঢুকে কাঁদতে দেখেই রোজ বলল,
> কিরে মিলি কাঁদছিস কেন?
> (কান্না বেড়ে গেলো)
> আরে বলবি তো কি হয়েছে?
> কলেজে আসার সময়…
> কি বল্?
> উত্তর পাড়ার ট্যারা সামাদ আমারে ইভটিজিং করেছে
> হোয়াট?
এত্তবড় সাহস ওর? চল্ আমার সাথে কথাটি বলে রোজ মিলির হাত ধরে, টেনে নিয়ে গেলো এদিকে ট্যারা সামাদ ও তার দলবল, রাস্তার ধারে আড্ডা দিচ্ছে, দূর থেকে রোজকে আসতে দেখেই, একজন বলে উঠল
– ওস্তাদ! ওই দেখ প্রফেসরের মেয়ে আসছে
– ব.ব.বলিস কি?
– আরে হ্যা সাথে ওই মেয়েটিও আসছে যাকে তুমি একটু আগে ইভটিজিং করেছ
– তাইতো দেখছি খায়ছে এবার
– জানিনা ওস্তাদ, কপালে আজ কি আছে! আজও পরলাম এই ডাইনি মেয়ের পাল্লায়। অতঃপর রোজ কাছে এলে, ট্যারা সামাদ ভয়ে বলল,
– আ.আ.আরে রোজ আপু আ.আ.আ.আপনি এখানে? আপনি কষ্ট করে এখানে এসেছেন কেন? আমাকে খবর দিলেই তো চলে যেতাম
> ও তাই
– জী। তা কি মনে করে এলেন?
> ভাবলাম তোর সাথে একটু প্রেম করব তাই এলাম
– এ.এ.একি বলছেন আপু!
> কি সব আপু আপু করছিস? আমার মতো সুন্দরীকে আপু বলতে ইচ্ছে করছে তোর?
– ইয়ে মানে ছরি
> হুম ।তবে তুই তো খুব হ্যান্ডসাম রে সামাদ (রোজ সামনে গিয়ে, সামাদের শার্টের বোতাম লাগাতে লাগাতে বললো)
– সত্যি আমাকে লাইক হয়েছে রোজ?
> আরে হ্যা কি সুন্দর তোর চুল (চুলে হাত দিয়ে)
– রোজ লজ্জা পাচ্ছি তো হেহেহে
> ঠাসসসস্ ঠাসসস্ ঠাসসস শালা হারামজাদা লুইচ্চা বদমাস প্রেম করবি? নে নে আমার হাতটা ধর্ আমি তো তোর রুপবান সুন্দরী ধর বলছি কুত্তা
– ইয়ে মানে ছরি রোজ আপু
> রাস্তায় মেয়ে দেখলে লুইচ্চামী করতে ইচ্ছে করে? কান ধর্
> শোন্ আর যদি কোনো মেয়েকে বিরক্ত করিস তাহলে তোরে চার রাস্তার মোড়ে গাছের সাথে উপুর করে টাঙ্গিয়ে নিচে আগুন জ্বালিয়ে দেব। কথাটা মনে রাখিস
– জী.জী আপু অতঃপর রোজ চলে এলো এদিকে বান্ধবীরা বল্ল,
> শয়তানটার ঊচিত শিক্ষা হয়েছে
> হুম থ্যাংকু রোজ (মিলি বল্ল)
> হয়ছে আর থ্যাংস দিতে হবেনা।
> আচ্ছা রোজ তোকে একটা কথা বলি?
> বল্
> তুই যে এভাবে ছেলেদের সাথে টক্কর দিস, তোর ভয় করেনা?
> না
> একটা প্রোবলেম আছে
> কি?
> এভাবে মারামারি করলে খারাপ দেখায় না?
> তাতে কি?
> ছেলেরা তোকে যে হারে ভয় পায় তাতে কোনো ছেলে তো তোকে বিয়েই করবেনা রোজ?
> না করুক এবার বান্ধবীরা সবাই বলল,
> তুই ঠিকি বলেছিস মিলি,
ও কোনোদিন বর পাবেনা, চির কুমারি মাস্তান থেকে যাবে কথাটি বলেই সবাই খিলখিল করে হেসে উঠল। এদিকে রোজ রেগে বলল
> কুত্তির দল তোরা যাবি এখান থেকে, নাকি সবকটার মাথা ফাটাব?
> যাচ্ছি যাচ্ছি হিহিহি
সবাই চলে গেলো। রোজ এবার ক্লাসে যাওয়ার জন্য, সিড়ি বেয়ে ওপরে উঠতেই, একটা ছেলের সাথে ধাক্কা খেলো রোজ ভাবল, এই হাবলটা আবার কে? একে তো কলেজে নতুন দেখছি ছেলেটি খুব সরল সোজা, আর হাবাগোবা টাইপের। চোখে বড় ফ্রেমের একটা চশমা পড়া, দেখতে বেশ সুন্দর টি.সি নিয়ে আজ ই এই কলেজে এসেছে যাহক ধাক্কা খাওয়ার পর রোজ রেগে বল্ল
> এই মদন চোখে দেখো না?
– জী আমি মদন না
> তো কি নায়ক মিঠন?
– না আমি পিকু
> তো তুমি পিকু হও আর ডাকু হও চোখে দেখনা?
– দেখি তো
> মনে তো হয়না অথচ চোখে তো বৃদ্ধ মানুষের চশমার মতো চশমা পড়েছ
– জী আমি দেখতে পাই
> তো ধাক্কা দিলে ক্যান?
– সরি ইচ্ছা করে দিইনি
> Shut Up ধাক্কা মারার পর সবাই তাই বলে। ইডিয়ট একটা
– সরি ম্যাম, আর হবেনা এই কান ধরছি ছেলেটির এরকম সরলতা দেখে রোজ মুচকি হাসি দিয়ে বলল,
> ইটস ওকে এবার কানটা ছাড়ো
– থ্যাংকু
> হুম তা তুমি কি নতুন এসেছ?
– জী
> কোন ডিপার্টমেন্ট?
– ম্যানেজমেন্ট এ
> আরে আমিও তো সেম
– ভাল। আমি এখন আসি
> ওকে বাই
ছেলেটিকে খুব ভাল লাগলো রোজের এখনও এত সরল প্রকৃতির ছেলে আছে? পরের দিন রোজ ক্লাসে বসে আছে এমন সময় তার একটা বান্ধবী এসে বলল,
> রোজ রোজ
> কিরে কি হয়েছে?
> কলেজ গেটের সামনে একদল বখাটে ছেলের দলমেয়েদের উত্তক্ত করছে
> চল তো দেখি
রোজ একটা হকস্টিক হাতে নিলো। গিয়ে দেখল, সেই ট্যারা সামাদ কিছু গূন্ডা ভাড়া করে নিয়ে এসেছে সেই গুন্ডাদের লিডার পেদুর আলী, রোজকে দেখামাত্র তার চোখ কপালে উঠল, কারণ ট্যারা সামাদ যেই গুন্ডাদের ভাড়া করেছে, রোজ সেই পেদুর আলীকেই একদিন উদমা কেলিয়েছিলো তাই সে রোজকে দেখামাত্র ই ভ্রু কুচকে বলল,
– আ.আ.আরে আপু আপনি এখানে?
> হ্যা সেদিনের মতো, আজও একটু ঢোল পিটাতে হবে তাই এখানে আসা! পেদুর আলী ভয়ে ঢোক গিলে বলল,
– মা.মা.মা.মানে?
> বলছি তার আগে একটা সিগারেট দে
– আ.আ আপু আপনি সিগারেট খাবেন?
> দিতে বলছি দে
– ওকে ওকে
সিগারেটটি ধরিয়ে রোজ একটা টান দিয়ে, ধোয়া আকাশ মুখ ছেড়ে দিলো, সবার মনে ভয় আরো বেড়ে গেলো এরপর ট্যারা সামাদের কাছে যেতেই যেন, ভয়ে সামাদের প্রাণ উড়ে গেলো শার্টের কলার ধরে, রোজ বল্ল,
> কিরে শালা ট্যারা সামাদ? তোরে আমি কি বলেছিলাম? আর তুই আমাকে জব্দ করতে, পেদুরকে ভাড়া করেছিস?
– আ.আ.আ.আপামণি এ.এ.এই শেষ বারের মতো মাফ চাইছি ছরি ছরি ছরি
> শালা ছরি?
আজ তোর ছরির মিটার বক্স বাষ্ট করে দেবো কথাটি বলেই রোজ হকস্টিক দিয়ে ট্যারা সামাদকে মারতেই, পেদুর সহ সব গুন্ডারা ছুটে পালালো এদিকে সামাদেরও ১৩ টা বাজিয়ে ছাড়লো যাহক গেটের এক কোণে পিকু এতক্ষণ চুপিচুপি সব দেখছিল আর ভাবছে, ওরে বা বা রে! কি গুন্ডি মেয়েরে বাবা! হঠাৎ রোজের চোখ পড়লো পিকুর ওপর,
> এই তুমি ওখানে কেন? এদিকে এসো বলছি
– জী আমাকে ডাকছেন?
> তো কি তোমার বউকে ডাকছি?
– আমি তো বিয়ে করিনি এখনও? বউ আসবে কথা থেকে? মা বলছে পড়াশুনা শেষ করে চাকরি করব, তারপর বিয়ে
> উফফ! এই ছেলে এই? তুমি এত বেশি বকো কেন?
– কই নাতো!
> একদম চুপ
– ওকে
> প্রেম করো?
>কি হলো? চুপ করে আছ যে?
– আপনি ই তো বল্লেন চুপ করতে?
> উফ আল্লাহ!
– কি হলো ম্যাম?
> তোমার মাথা, প্রেম করো তাই বলো?
– নাহ
> সত্যি তো?
– সত্যি
> ভালো। আমার বন্ধু হবে?
– না
> কেন? (রোজ রেগে)
– আপনাকে আমার খুব ভয় করে
> কেন আমি কি বাঘ?
– না, তবে ছেলে পিটানোর ওস্তাদ
> হ্যা
তবে এখন তুমি যদি আমার বন্ধু না হও, এই লাঠি দিয়ে তোমাকে ক্যালাবো এবার পিকু ভয়ে ঢোক গিলে বলল,
– এ.এ.এ.এটা কিন্তু ঠিক না
> চুপ। দিলাম পিঠের ওপর বারি?
– হবো হবো হবো
> কি হবে?
– আপনার বন্ধু
> তাহলে এখন থেকে আমাকে তুমি করে বলবে ওকে
– জী
> হিহিহি
– একটা কথা বলি
> বলো
– আপনার ছরি তোমার হাসি অনেক সুন্দর
> পছন্দ হয়েছে?
– অনেক
> তাহলে চলো ফুচকা খাওয়াবে
– ওকে চলো
আর এভাবেই দুজনার মধ্যে ফ্রেন্ডশীপ গড়ে ওঠেএভাবেই চলছে তাদের দিনকাল। রোজ এতদিনে পিকুকে ভালবেসে ফেলেছে, শুধু মুখে বলা হয়নি। তাই একদিন পার্কে
> আচ্ছা পিকুবাবু একটা কথা
– বলো
> আমাকে তোমার কেমন লাগে?
– উম ভালই তবে
> তবে কি?
– ছেলেদের মতো
> হোয়াট?
– হ্যা ।
ছেলেদের শার্ট প্যান্ট পড়ে থাকলে ছেলেদের মতো তো লাগবেই, আমি তো প্রথম দিন দেখে মনে করেছিলাম, তুমি আর দশটা ছেলেদের মতো ছেলেই
> কিই??? কি বললে তুমি?
– রেগে যাচ্ছ কেন? তোমাকে থ্রি পিচ কিংবা গোলাপি শাড়িতে হেব্বি মানাবে
> ইস
– সত্যি
যাহক পরেরদিন রোজ, একটা গোলাপী শাড়ি পড়ে, সেজে গুজে পিকুর সাথে দেখা করল,
– ওয়া*****ও
> কি হলো?
– এ আমি কাকে দেখছি, স্বপ্ন দেখছি নাতো?
> জী না বাস্তবে দেখছেন স্যার
– আচ্ছা হাতে একটা কামড় দাওতো (হাত বাড়িয়ে দিয়ে)
> ওকে দিচ্ছি
– আ.আ.আ.আ ছা****ড়ো জেগে আছি জেগে আছি
> হিহিহি
– ইস শাড়িতে তোমাকে যা মানিয়েছে না!
> হুম এবার বলো
– কি?
> আমাকে তোমার কেমন লাগে?
– খুব ভালো
রোজ এবার পিকুর চোখের চশমাটা খুলে,চশমাটা মুছতে মুছতে মাথা নিচু করে বলল,
> শুধু ই কি আমাকে ভাল লাগে? নাকি অন্যকিছু?
– অন্যকিছু বলতে তোমাকে আমার বোন বোন লাগে
> ঠাসসসস….
– মারলে কেন?
> কুত্তা আমারে কি বোনের মতো লাগে?
– হ্যা
> ঠাসসস
রোজ আর কিছু না বলে কাদতে কাদতে একটা গাছের তলে গিয়ে বসল পিকু এর কিছুই বুঝতে পারল না।পরে অনেক ভেবে রোজের পাশে গিয়ে দাড়ালো আর সাহস করে বলল,
– বোন যখন হবেনা, বউ তো হতে পারো?
> (রোজ অবাক হয়ে ফিরে তাকালো)
– এভাবে তাকাচ্ছ কেন? (পিকু মাথা নিচু করে)
> তোমার মতো গাধার বউ হতে আমার তো বয়ে গেছে
– কি আমি গাধা?
> জী
– ওকে তোমার মতো গুন্ডীমেয়েকে বউ করতে আমারও তো বয়ে গেছে!
> ঐ কই যাও?
– জাহান্নামে
> আমাকেও নাও
– নো নিড
> কেন নেবেনা?
– কোনো গুন্ডী মেয়েকে সাথে নিতে চাইনা
> ঠিকি আছে,
এবার তাহলে ভাল করে তোমাকে গুন্ডামী দেখাবো। কথাটি বলে রোজ পিকুর হাতে ধরলো এক কামড়। পিকু ব্যথাতে চিৎকার দিয়ে বলে উঠল,
– বউ বউ বঊ রাজি রাজি রাজি
> কি রাজী
– তুমি যা বলবে তাতেই রাজী
> তাহলে চলো
– কই
> বৃষ্টিতে ভিজব
– বৃষ্টি তো এখনও নামেনি
> ঐ দেখ বলতে বলতে বৃষ্টি নেমে গেছে হিহি কি মজা
– বাট আমি ভিজবনা
> কেন
– শীত লাগছে
> তাতে কি? তোমাকে মনের গরম ফ্রিজে আবদ্ধ করব
– তবুও যাবোনা
> যাবেনা?
– না
অতঃপরআবার চিৎকারের ধ্বনি উঠল রোজ তাকে আবার কামড়ে দিয়েছে
সমাপ্ত