অফিস শেষ করেই আশিক কল করল
— হুম, বল। (ওপাস থেকে)
— এখন কি দেখা করা যাবে তোমার সাথে?
— কেন? কি এমন হল, যে এখন দেখা করতে হবে?
— না এমনি, তোমায় খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।
— সরি, এখন দেখা করতে পারবোনা।
— তাহলে কাল সকালে, প্লিজ প্লিজ।
— ওকে, তাহলে এখন রাখছি, বাই।।
— ওকে, বাই।
আশিক খুব ভালবাসে মেয়েটিকে। যাকে প্রথম দেখাতেই ভাল লেগে যায়। কি সুন্দর মায়াবী চেহারা, বাদামী রঙের দুটি চোখ। এলোমেলো চুল। ওহ, আপনাদের বলাই হল না মেয়েটির নাম। মেয়েটির নাম হচ্ছে আনিকা। আনিকা আর আশিকের ভালবাসার সম্পর্ক আজ প্রায় ৩ বছর। পারিবারিক ভাবে ওদের বিয়েও ঠিক হয়ে আছে। ওদের প্রথম দেখা হয় এই ভাবে –সকাল ৬ টা ৩০ বাজে। মোবাইল এর অ্যালার্ম এ ঘুম থেকে জেগে উঠলো আশিক। নাস্তা পানি খেয়ে প্রতিদিনকার মত মায়ের কাছ থেকে দোয়া নিয়ে বেরিয়ে পরল অফিসের উদ্দেশ্যে। বাসে উঠে দেখে একটি মাত্র সিট খালি আছে। সিটের কাছে যেয়েই দেখে একটি সুন্দরি মেয়ে বসা আছে। আশিক কিছুক্ষণের জন্য কল্পনার জগতে চলে গেল, বাস্তবে ফিরে —
— Can i have a sit? (খালি সিটে ব্যাগ থাকায়)
— Yes, of course, why not. (ব্যাগ সরিয়ে)
— Thanks..
— Welcome..
আশিক বসে পড়ল। কিন্তু ওর মন মানছে না, যেভাবেই হোক একটু কথা বলা দরকার। কিন্তু কি উপায়ে? এমন সময় আশিকের এক বন্ধু কল করল আশিককে।
— হ্যালো (আশিক)
— আশিক, তুই না বলেছিলি তোর ছোট বোনের জন্য একজন প্রাইভেট টিউটর লাগবে? (আলামিন)
— হুম। পাইছিস?
— হরে দোস্ত পাইছি। নাম্বারটা নে।
— অই বেটা, আমি বাসে আছি, কাগজ কলম কই পামু?
— দোস্ত প্লিজ মেনেজ কর।
— দাড়া, লাইনে থাকিস।
এ সময় আশিকের মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো। মেয়েটির কাছ থেকে তার মোবাইল চেয়ে কথা বলতে পারে। যেই ভাবা সেই কাজ। মেয়েটির সাথে —
— Excuse me?
— Yes…
— আপনার মোবাইল টা একটু দিবেন, একটা নাম্বার নিব তো।
— ওহ, এই নিন।
— ধন্যবাদ।
— হুম। এবার আলামিন এর সাথে —
— আলামিন, নাম্বারটা বল
— ০১****
— হুম, তারপর।
— ২৩***
— অকে,
— তুই ফোন দে, বুঝলি।
— ওকে দোস্ত, ধনবাদ।
আশিক ফোন কেটে দিয়ে নিজের মোবাইল এ নাম্বার টি উঠিয়ে নিল। তারপর
— Excuse me? মোবাইল টা।
— ওহ, কাজ হয়েছে?
— জি, ধন্যবাদ।
— ওকে।
— আপনি কোথায় যাচ্ছেন?
— জি?
— মানে, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?
— কলেজ এ, আপনি?
— অফিস এ। কিসে পড়েন আপনি?
— ইন্টার ২য় বর্ষ।
— আমি আশিক, আপনার নাম?
— আমি আনিকা।
এভাবেই ওদের জানাজানি হল। আনিকার গন্তব্য এসে যাওয়ায় নেমে গেল। আর আশিকের একটি ভুল হয়ে গেল। ভুলটি হল আনিকার নাম্বার টা নেয়া হল না। আশিক অফিস পৌছে আলামিন এর দেয়া প্রাইভেট টিউটর এর নাম্বারে কল দিল। ফোনটি একটি মেয়ে তুলল।
— আসসালামু আলাইকুম। (ওপাস থেকে)
— ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আপনি কি প্রাইভেট টিউটর বলছেন?
— জি বলছি।
— ধন্যবাদ, আমি আমার ছোট বোনকে পড়াতে চাচ্ছি।
— কোন ক্লাসে পড়ে আপনার বোন?
— ৮ম শ্রেণীতে।
— জী পারব।
— দেখা করা যাবে, সামনা সামনি কথা বলতাম?
— কোথায় আসব বলেন?
— আপনার বাসা কোথায়? আমি গিয়ে দেখা করব।
— মিরপুর শেওড়াপাড়া।
— Really. আমার বাসা ওখানেই।
— ওহ, তাহলে তো ভালোই হল।
— আপনার নামটা?
— আনিকা।
–Oh Shit. আপনি।
— কেন? চিনেন নাকি আমাকে?
— আপনি ইন্টার ২য় বর্ষে পড়েন। Right….
— আপনি জানলেন কিভাবে?
— ভুলে গেলেন, আজ কিছুক্ষণ আগের একই বাসে পাশাপাশি বসে আসলাম।
— ওওও। আপনিই?
— হুম, তাহলে সন্ধায় দেখা হচ্ছে, ওকে।
— ওকে, বাই।
— বাই।
ashisash02 ,আশিকের অফিস শেষ হয় ৬ টা ৩০ এ। কিন্তু আজ ওর স্যরকে বলে ৫ টায় বের হয়ে গেল। সন্ধা ৭ টা নাগাদ মিরপুর পৌছে গেল। তারপর কল করল আনিকাকে।
— আসসালামু আলাইকুম। (আনিকা)
— ওয়া আলাইকুমুস সালাম। কোথায় আপনি?
— আমিতো এখন পীরের বাগ আছি, ছাত্র পড়াচ্ছি।
— ও, তা কখন ফ্রি হবেন?
— আর আধ ঘন্টা পর।
— আচ্ছা তাহলে আমি আধ ঘন্টা পর কল দিচ্ছি।
— জি, ধন্যবাদ।
— বাই।
ফোনটি রেখে দিল আশিক। এখন ভাবছে আধ ঘন্টা কিভাবে কাটাবে। আশিকের একটা বদ অভ্যাস আছে, সেটি হল সিগারেট। একটি চায়ের দোকানে গিয়ে স্টার নেক্সট সিগারেট ধরালো আশিক। আর বসে বসে আনিকার চেহারা কল্পনায় ভাবছে। কখন যে আধ ঘন্টা হয়ে পৌনে ১ ঘন্টা হয়ে গেল টেরই পেল না আশিক। সম্বীত ফিরলেই কল করে আনিকাকে।
— হ্যালো, আপনি কোথায়? ফোন করছি ধরছেন না যে?
— সরি, একটু বিজি ছিলাম। Don’t mind..
— Ok, No problem. কোথায় আসব বলুন?
— আপনি কোথায় আছেন বলেন? আমি আসছি।
— আমি ইকবাল রোডে আছি।
— আচ্ছা, আপনি থাকুন। আমি আসছি।
ফোন রেখে ইকবাল রোডের উদ্দেশ্যে হাটা ধরল আশিক। পৌছে দেখল আনিকা একটি বাড়ির গেটের সামনে দাড়িয়ে আছে।
— হায় (আশিক)
— হায়, কেমন আছেন?
— হুম ভাল, আপনি?
— ভাল।
— তাহলে চলুন আমাদের বাসায়।
— ঠিক আছে, চলুন।
বাসায় গিয়েই মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে কথা বলে নিতে বলল আশিক। আর আশিক রুমে ঢুকে
ফ্রেশ হচ্ছে। হটাৎ করে আশিকের মাথায় একটা প্ল্যান আসল। আশিকের মা আশিকের সব আবদার রাখে, তাই আশিক মাকে ডাকল।
— কিরে ডাকিস কেন? (মা)
— কথা আছে, বস।
— কি কথা বলবি তো?
— ম্যাডাম আছে নাকি চলে গেছে?
— না, যায়নি। আছে।
— আচ্ছা মা, ওনাকে কেমন লাগে তোমার কাছে?
— ও আচ্ছা, এই ব্যাপার। তো সরাসরি বললেই পারিস।
— মা, তুমি বুঝলে কিভাবে?
— আমিতো তোর মা, তাই বুঝে গেছি।
— Thank you মা, love you…..
— ঠিক আছে ওর বাড়ি গিয়ে কথা বলছি!! বাদর একটা।
— হুম, বল তারাতারি।
তারপর দুই পরিবার একমত হয়ে গেল। কিন্তু বাধা পড়ল আনিকার পড়ালেখা। আনিকার শর্ত ওর পড়ালেখা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিচ্ছু হবে না। আশিক তাই মেনে নিল। ,তারপর থেকেই চলছে ওদের প্রেমলীলা।।