বড় আপুর বাড়ি এসেছি ৷ তার ননদের বিয়ে! মেয়েটা আমাকে অনেকবার প্রোপস করলেও পাত্তা দেইনি, শেষপর্যন্ত বিয়ে করে নিচ্ছে বাবা মায়ের পছন্দমত ৷ যাহোক, আমার জন্য ভালই হয়েছে ৷ তার যন্ত্রণা আর সইতে হবেনা ৷ বোনের বাড়ি এসে লাভই হয়েছে ৷
এসে দেখি বারান্দায় চকচকে একটা ১০০০ টাকার নোট পড়ে আছে, নিলাম তুলে ৷ আপুর বাড়িতে আসার মূল্য লক্ষ্য সুইটি বেয়াইনটার বিয়ে খাওয়া এবং বিয়ে বাড়িতে সুন্দরী কোন মেয়ে পেলে তাকে পটিয়ে চুটিয়ে প্রেম করা তারপর পালিয়ে বিয়ে করা! ঘুরঘুর করতে লাগলাম বিয়ে বাড়ি দিয়ে ৷ পেলাম না সুন্দরী মেয়ে, যাদেরই পাই তারা সবাই আমার বোনের ননদ হয় ৷ যার বিয়ে হচ্ছে তার ছোট বোন লাবন্য সে তারচেয়ে বেশি সুন্দরী ৷ এই মেয়েটাও পাগল আমার জন্য৷ কিন্তু আমি তো এদের সাথে কখনোই প্রেম করবোনা ৷ যাহোক, অবশেষে একটা মেয়েকে পেলাম হয়তো বরপক্ষের মেয়ে সে ৷ বরপক্ষ মাত্র কুঁড়ি মিনিট হলো আসছে ৷ মেয়েটাকে প্রথমবার দেখেই প্রেম জেগে গেল মনে, তার রুপে ঘায়েল হয়ে সুখের সাগরে ভাসতে লাগলাম; মনে হচ্ছিল চারপাশে গান বাজছে ৷ সিনেমার নায়ক নায়িকাকে প্রথমবার দেখলে যেমন গান বাজে সেভাবে বাজতেছে! মেয়ের কাছাকাছি গেলাম ৷ সাহস করে বললাম,
___কেমন আছেন বেয়াইন?
___আপনি কে ?
___আমি পাত্রীর বড় ভাই নিলয়!
___ওহ, খুব ভাল ৷ তো, আমার কাছে কি চান ?
___চাওয়ার মত কিছুই নাই ৷ জানতে চাচ্ছি আপনি কি সিঙ্গেল?
___চোখ নাই? দেখতেই পাচ্ছেন আমি একা! তবুও জিজ্ঞেসা করছেন!
___না,সেটা বলিনি; বলছি যে কারো সাথে রিলেশন আছে কিনা!
___সেটা আপনাকে বলবো কেন ?
___না, আপনি বেয়াইন হউন তাই একটু জেনে নিতাম আর কি!
___বলবো না, আমাকে একা থাকতে দিন ৷
ভাবলাম এটারে এভাবে পটানো যাবেনা ট্রিকস পাল্টাতে হবে! মেয়েটার কাছ থেকে চলে যাবার আগে বললাম,
___আপনাকে শাড়ীতে নায়িকা ঐশ্যরিয়ার মত লাগছে , আমি তো মনে করি তারচেয়ে বেশি কিছু; স্বর্গের পরী আপনার কাছে ধরা! এবার দেখি মেয়েটা মিটমিট করে হাসে ৷ বুঝলাম ঔষুধ কিছুটা কাজে দিচ্ছে! প্রশংসা করেই চলে এলাম! একটু পর মেয়েটা দেখি আরো কয়েকটা মেয়েকে সাথে নিয়ে আমার বোনের রুমে ঢুকলো ৷ আমিও সিদ্ধান্ত নিলাম এখনই পটানোর সঠিক সময়! রুমে ঢুকলাম ৷ মোট চারটা মেয়ে তার সাথে, প্রত্যেকেই খাটে বসে পড়েছে! আমি চেয়ারে বসে পড়লাম ৷ আপু ভেতরে ঢুকলো! আমি আপুকে ইয়ার্কি করে বললাম,
___আপু, আমি বিয়ে করবো; পাত্রী দেখো!
___কি?
___হুম, সত্যিই ৷
___কেমন মেয়ে চাস ?
___এই ধরো, পিংক কালারের শাড়ী পড়লে এইযে বসা মেয়েটা আছে না তার মত দেখতে হবে ৷
চুলগুলো এই মেয়েটার মতই লম্বা হবে ৷ গায়ের রং আর হাইট তার মত হলেই চলবে৷ এমন একটা মেয়ে পেলে বিয়েটা করেই ফেলবো! আপু দেখি হাসছিল মিটমিট করে ৷ ঐ মেয়েটার মুখেও মিষ্টি হাসি ৷ আপু আমাকে বলল,
___তাহলে এই মেয়েটারেই বিয়ে করে ফেল! আমি লজ্জায় লজ্জাবতীর মত চুপসে গেলাম ৷ মেয়েটাও দেখি লজ্জা পাচ্ছিল! আমি রুম থেকে চলে এলাম শরমে! খাবার সময় ঐ মেয়েটা আমার পাশে বসলো ৷ তার থেকে নামটা জেনে নিলাম ৷ তার নাম সুমি! নামটা পছন্দ হলো ৷ আবারো পটানো শুরু করলাম! মনে হলো সে অনেকটাই পটে গেছে ৷ খাওয়া দাওয়া পর দুজনে আপুর রুমে গিয়ে অনেকক্ষণ ধরে কথা বললাম ৷ একপর্যায়ে মেয়েটা পটেই গেল ৷ আমাদের দুজনের কীর্তিকালাপ দেখছিল আমার সেই বেয়াইন লাবন্য! সুমির সাথে কথা শেষ হলে লাবন্য আমাকে বলে,
___এই মেয়ের সাথে রিলেশন করে তোমার কোন লাভ হবেনা ৷ সময় হলে সঠিকটা জানতে পারবে ৷ তখন আর কোমড় সোজা করে দাঁড়াতে পারবে না!
___তোমারে আমি চিনিনা ? পাত্তা পাচ্ছোনা আমার কাছে ৷ তোমার বোন যেমন পাত্তা না পেয়ে বিয়ে করে নিল,তোমারও সেরকম হবে ৷ আমি প্রেম করতে যাচ্ছি দেখে তোমার হিংসা হচ্ছে তাইনা ? হিংসা করে লাভ নাই সুমি আমার প্রেমে পাগল, সে সত্যিই ভালবাসে আমাকে ৷ আমরা কন্টাক্ট নাম্বার নিয়েছি কাল থেকে ফোনে কথা বলবো! তুমি জ্বলতে থাকো বিরহে. লাবন্য ভেংচি কেটে চলে গেল! বিয়ে সম্পন্ন হলে বরযাত্রীর রওনা দেওয়ার সময় হয়ে যায়৷ তখন সুমি আমার কাছে এসে বলে,
___জান, কালকে কথা হবে ৷ কিন্তু জান আমার না ফোনে টাকা নেই ৷ তুমি যদি ফেক্সিলোড করার মত কিছু টাকা দিতে তবে রাস্তা থেকে ফেক্সিলোড করে নিতাম ৷ আমার কাছে টাকা ছিল শেষ হয়ে গেছে!
___জানু, তুমি এভাবে বলছো কেন ? তুমি তো আমার গার্লফ্রেন্ডই হও, আমার টাকা মানেই তোমার টাকা ৷ এই নাও টাকা! আমার পকেটে ১০০০ টাকার নোট ছিল, টাকাটা হয়তো দুলাভাইয়ের, পড়ে পাওয়া টাকা ৷৷ আর এটাই সুমিকে দিয়ে দিলাম! সে চলে গেল বরযাত্রীর সাথে, যাবার আগে তার কোমল আর নরম হাতে একটা চুম্বন দিয়ে দিলাম! পরদিন সকালে অনেকবার সুমির নাম্বারে ফোন দিলাম ৷ বারবার বলে নম্বরটি বন্ধ আছে ৷ ধুরো,মেজাজটা গরম হয়ে গেল ৷ সেই যে সকাল থেকে ফোন দিচ্ছি ফোন বন্ধ! আমার সেই বেয়াইন লাবন্য এসে বলে,
___কি নাম্বার বন্ধ তাইতো?
___তাতে তোমার কি? এখান থেকে চলে যাও!
___ঐ মেয়েটা ফ্রড ৷
সে তো বিবাহিতা ৷ তোমার সাথে নাটক করে ১০০০ টা টাকা হাতিয়ে নিয়েছে! এটা শুনে আমার মাথা ঘুরছিল ৷ সে ফ্রড এবং আমার সাথে দুই নাম্বারি করছে এজন্য কষ্ট হচ্ছিলনা, কষ্ট হচ্ছিল চকচকে ১০০০ টাকার নোটের জন্য! ইশ ঐ টাকা দিয়ে কত কি করা যেতো! কি না ভুল করলাম রে? দূঃখে আমি বাচ্চাদের মত করে কাঁদতে লাগলাম! আমার কান্না শুনে আপু এসে হাজির ৷ আপু বললো,
___কাঁদছিস কেন ? কি হয়েছে?
___তোমাকে বলা যাবেনা ৷
___ঠিকআছে, তোর যত ইচ্ছা কাঁদতে থাক!
তার আগে বল আমার রুমে ১০০০ টাকার নোট পেয়েছিস কিনা ? ঐ টাকাটা তোর দুলাভাইয়ের! টাকাটা জাল ছিল! দোকানে কোন এক ক্রেতা তাকে দিয়ে গেছে তোর দুলাভাই ধরতেই পারেনি! আপু যখনই বলল “টাকাটা জাল” তখনই আমি খুশিতে লাফিয়ে উঠি! যাক ভন্ড মেয়েটা সরি মহিলাটা আমার টাকা আত্মস্বাদ করতে পারবেনা! এদিকে আমার খুশি দেখে লাবন্যও খুশি, খুশিতে লাজুক ভঙ্গিতে হাসছিল! একপর্যায়ে কি সুন্দর করে আমাকে চোখ মারলো! আমি মনে মনে বললাম এর প্রেমে পড়লে মন্দ হয়না!