জালের গহীনে

জালের গহীনে

আমি নিজে যে এতো সুন্দর করে মেহেদী দিতে পারি জানা ছিলো না। যতোই দেখছি অবাক হচ্ছি।
ফেসবুকে মেহেদী পড়া হাতের ছবি আপলোড দিয়ে ক্যাপশন দিলাম- হাত মেহেদী দিয়ে সাজানোর পর ইদের আনন্দ হাজারগুণে বৃদ্ধি পায়।

ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট চেক করতে গিয়ে নিজের অজান্তেই স্ক্রিনে টাচ লেগে *তামজিদুল আবরার *নামে অচেনা আইডির রিকুয়েস্ট একসেপ্ট হয়ে গেলো।

এদিকে মনে হলো মা ডাকছে।
– দোলা, দোলা…
– আসছি মা.!
ডাটা কানেকশন অফ করে প্রায় ছুটে রান্নাঘরে গেলাম।
বিকালবেলা আমি আর মা বারান্দায় বসে চা খাচ্ছি। মা বাবার সাথে মোবাইলে কথা বলছেন।
এখন একটু সময় পেয়ে মোবাইলের ডাটা অন করলাম।

সকালের পোস্টে ভালোই কমেন্ট পরেছে। একি লিখেছে তাও সেই অচেনা আইডি থেকেই কমেন্ট টা এসেছে।
লিখেছে – নিজে একটা পেত্নি আর মেহেদী দিয়ে সেজে অপ্সরা হতে চায়।
মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। এতো বড় অপমান তাও পাব্লিক পোস্টে।
আমি কমেন্টের রিপ্লে দিলাম
– আমি কি পোস্টে লিখেছি যে,আমি অপ্সরা হতে চাই?? আর আমি পেত্নি??
কিছুক্ষণ পর রিপ্লে আসলো
– উইযে মেহেদী হাতে দিয়ে সেজেছেন। আর প্রোফাইল পিকটা তো একজন পেত্নির??
প্রোফাইল পিক পেত্নির মানে? প্রোফাইল পিক টা তো মূলত একটা ডিজনির চরিত্র যে জিহ্বা বের করে ভ্যাংচানো মুডে আছে।
আমি রিপ্লে দিলাম
– এটি ডিজনির চরিত্র, পেত্নি না। আর আপনার এতো সমস্যা হচ্ছে কেনো?
রিপ্লে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি কিন্তু রিপ্লে আর আসছে না।
রাতের খাবার খাওয়ার পর বিছানায় শুয়ে চ্যাটিং করছি। সবাইকে – ইদ মোবারক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
অচেনা আইডি থেকে মেসেজ আসলো পরাপর দুটো
– ঈদ মোবারক।
আর মাইন্ড করলে sorry!
আমি রিপ্লে দিলাম
– ইদ মোবারক। আমি মাইন্ড করিনি।
– তাহলে তো আপনার প্রেস্টিজ বলতে কিছুই নাই। কারণ কমেন্ট বক্সে যে অপমান টা করেছি।
এই মেসেজ দেখে আমার মেজাজ আরো বিগড়ে গেলো। তারপরও ভদ্রভাবে মেসেজ লিখলাম
– আমি ফান হিসেবেই নিয়েছি।
– আমার অনেক ফ্রেন্ড দেখলাম আপনার আইডির সাথে এড আছে। তাই রিকুয়েস্ট দিলাম।
ইনফ্যাক্ট ফ্রেন্ডের ফ্রেন্ডই তো ফ্রেন্ড হয়। তাই না??

আজাইরা প্যাঁচাল পারাতে এই পাব্লিক বেশ পটু। আমি লিখলাম
– জি।
– আপনি তো ঢাকারই??
– জি।
– এইচএসসি ২০১৪???
– জি।
– আচ্ছা আপনি জি জি করেন কেনো? এই পৃথিবীতে জি ছাড়া কোনো শব্দ নাই?
এই মেসেজ টা দেখে আমি হাসতে শুরু করলাম। এতক্ষণ এই মানুষ টাই আমার মেজাজ খারাপ করে দিচ্ছিলো আর এখনি আমাকে হাসতে বাধ্য করলো।
– জি আছে…..

এভাবেই কেটে যাচ্ছিলো সময়গুলো।খুব অল্প সময়ের মাঝে আমাদের মধ্যে খুব সুন্দর একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। রাত জেগে চ্যাটিং করা, একসাথে একই গান শোনা একে অপরকে খোঁচানো।একদিন রাতে আবরার এর সাথে চ্যাট করছি। আবরার মেসেজ লিখলো
– আমরা দেখা কেনো করি না?
– জানি না।
– চলো না কাল দেখা করি?
– জি। সময়?
– বিকাল ৪ টায়। আমার ফোন নাম্বার তো আছে তোমার কাছে?
– জি। পার্কের নাম বললাম ওকে।

মোবাইল নাম্বার আছে কিন্তু কখনো কল করা হয়নি। ওর নাম্বারে কল দিয়ে চুপচাপ কানের কাছে ধরে রাখলাম। ওপাশ থেকে ও হ্যালো হ্যালো করছে। কেমন যেন জড়তা কাজ করছে কথা বলতে। ফেসবুকে তো প্রচুর কথা হয় কিন্তু মোবাইলে পারছি না।
৪.০৫ এ আমি পার্কে পৌছালাম। মেইন গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।বেশ শুকনা আর লম্বা একজন ছেলে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। চেনাচেনা লাগছে। কাছে আসতেই চিনতে পারলাম আবরার। এতো শুকনা আর এতো লম্বা?
আবরার বলল
– hi দোলা।
আমি ওর মুখের দিকে তাকাতে পারলাম না। মাথা নিচু করে বললাম
– hlw.
– চলো ভিতরে যাওয়া যাক।
ওর পাশে হাঁটতে লজ্জা লাগছিলো।এতো লম্বা আর আমি তো ওর তুলনায় বেশ খাটো। দূরে দূরে হাঁটছিলাম বলে ও জিজ্ঞেস করলো
– এমন কেনো করছো?
– আরে তুমি এতো লম্বা বলবা না? আমি হাই হিল পড়ে আসতাম।
আবরার আমার এই কথা শুনে হাসতে শুরু করলো। হাসতে হাসতেই বললো
– পিকুলিয়ার তো তুমি।
ওর হাসিটা এতো সুন্দর যে আমি হা করে তাকিয়ে দেখছিলাম।
প্রায় ৩০ মিনিট কেটে গেলো কিন্তু ও কোনো কথাই বললো না।আমি বললাম
– আচ্ছা তুমি শিওর আবরার?
আবরার বলল
– সন্দেহ হচ্ছে?
– ফেসবুকে তো তোমার একটা ম্যাসেজের রিপ্লে দিতে দিতেই তুমি আরো ২-৩ টা ম্যাসেজ দিয়ে বসো। কিন্তু এখানে তো মুখ দিয়ে কোনো কথাই বের হচ্ছে না।

– আসলে দোলা আমি কোনো টপিক খুঁজে পাচ্ছি না। আর তোমার সাথে সামনাসামনি কথা বলতে আনইজি লাগছে।
সেদিন বাসায় আসার পর খুব খারাপ লাগছিলো।আমি তো স্বাভাবিক ছিলাম কিন্তু ও এমন কেনো করলো?
হয়তোবা প্রথম সাক্ষাৎ তাই। প্রতিনিয়ত কথা বলাতে ওর প্রতি আমার অনুভূতি গুলো চেঞ্জ হতে লাগলো।
নিজের অজান্তেই ওকে ঘিরে আলাদা একটা জগত তৈরি করতে লাগলাম।
ছোটোখাটো জিনিষ গুলোকেও ভালো লাগতে শুরু হলো। মনে হতো কোনো এক অদৃশ্য মিষ্টি হাওয়া আমাকে বারবার ছুঁয়ে যাচ্ছে।

বাসা থেকে বের হয়ে আবরারকে ফোন দিলাম। রিসিভ হলো। আমি বললাম
– কই তুমি?
– এইতো বাসায়। কেনো?
– শুনোনা একটা ঝামেলায় পড়েছি। তুমি জলদি করে ফ্যান্টাসি কিংডম এর সামনে চলে আসো ।
কথাটা বলেই ফোন কেটে দিলাম। এখন শুধু অপেক্ষা করা।
প্রায় ৩০ মিনিট পর দেখলাম, খুব চিন্তিত মুখ নিয়ে সাইকেল চালিয়ে তিনি আসছে। তারপর সাইকেল একপাশে রেখে পকেট থেকে ফোন বের করে কী যেন করছে। আমার ফোনও বেজে উঠলো।ফোন হাতে নিয়েই ওর দিকে এগিয়ে গেলাম।
আমাকে দেখে বলল
– কী ঝামেলায় পড়েছো?
– ভিতরে গিয়েই বুঝতে পারবে।

রীতিমতো টেনে হিচড়ে ভিতরে নিয়ে গেলাম। অনেকক্ষণ ঘুরাঘুরি করলাম। খাওয়া দাওয়া করলাম, কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করার পর রোলার কোস্টার এর সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লাম।
– চলো ওঠা যাক।
– তোমার ভয় না লাগলে সমস্যা নাই। আর টাকা আমি দিবো। এতক্ষণ সবকিছুর বিল তুমি দিছো।
– ওকে। চলোই না।
রোলার কোস্টার যখন চালু হলো আমার চিৎকার ও শুরু হলো। ওর হাত শক্ত করে ধরে শুরু করলাম চিল্লানো। ও তো রীতিমত ভয় পেয়ে আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।
নামার পর বলল
– ভয় পাও, তাহলে উঠলা কেনো? চিল্লাইয়া আমার কান বয়ড়া করতে?
– ইয়াপ। তুমি যেভাবে তাকিয়ে ছিলে, তাতে লজ্জাও লাগছিলো।
আবরার আমার এই কথা শুনে আর কোনো কথা বললো না।
বাসায় আসার পর ওর ইনবক্সে মেসেজ দিলাম
– আমার আজকে বার্থডে, তাই তোমাকে জোড় করে ঘুরতে নিয়েছিলাম।
রাতে ফেসবুকে ঢুকবো তখন ওর কল আসলো। রিসিভ করলাম। আবরার বলল
– এই একটু বাইরে আসো।
– এতো রাতে??
– প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ……….!
– আচ্ছা, দেখছি।

মা এখন টিভি দেখায় ব্যস্ত তার রুমে। আমি চোরের মতো বাসা থেকে বের হয়ে মেইন গেটের বাইরে এসে দাঁড়ালাম। দারোয়ান এইসময় রাতের খাবার খেতে পাশে তার বাসায় যায়। আবরার দুহাত পিছনে দিয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। তারপর বলল
– দোলা তোমায় যায় না ভোলা। কিন্তু বার্থডে টা ভুলে গেছি।
ও আমার সব খুঁটিনাটি মনে রাখে।
– তুমি মেন্টাল প্রেশারে আছো?
– হ্যা। পরে বলবো। আগে আমার Sorry একসেপ্ট করো।
– করলাম।
ফুলেরতোড়া বের করলো আর বলল
– হ্যাপি বার্থডে মহারাণী।
ফুলেরতোড়া হাতে নিয়ে বললাম
– তুমি এখন বাসায় যাও আর ধন্যবাদ এত্তোগুলা।
– না থাকি না একটু, ভালো লাগছে। রাতের এই অন্ধকারে কারো সাথে দাঁড়িয়ে গল্প করতে ভালো লাগছে।
– কেউ দেখে ফেললে কী হতে পারে??
আবরার আমার এই কথা শুনে হেসে ফেলল।তারপর বলল
– আচ্ছা যাচ্ছি।

রাতেও ওকে চ্যাটে পেলাম না। ফোন দিলাম না এইভেবে যে হয়তোবা ব্যস্ত আছে।
তারপরের দিনও পেলাম না। খারাপ লাগা বাড়তেই লাগলো।
বাসায় আমার বিয়ের কথা চলছে। কেনো যেন অন্য কাউকে বিয়ে করবো সেটা ভালো লাগছিল না। বারবার আবরার কথাটা চলে আসছে।

আমি যে ওকে ভালবাসি সেটা এখন ফিল করতে পারছি। ভালোলাগাটা শুরু প্রথম দেখাতেই। সেই ভালোলাগাটাই ভালবাসার সৃষ্টি করেছে।

ওকে গতকাল দেখেই মনে হয়েছিলো ও কিছু বলতে চায়। আমাকে ভালবেসে সেটা বলতে পারছে না। ভালবাসি তো দুজনই তাহলে যেকোনো একজন প্রথমে বললেই হয়। আমিই বলে দেই।

কীভাবে জানাবো? ফোনে?? হ্যা ফোনেই জানাই। ৩-৪ বার রিং বাজার পর ও রিসিভ করলো। ও প্রথমে বলল
– কিছু বলবা?
– মানে বাসায় আমার বিয়ের কথা চলছে।
– হ্যা তো?
– আবরার আমাদের মাঝের সম্পর্কটা??
– তুমি কি বলতে চাচ্ছো যে,আমাদের মাঝে ভালবাসা আছে??
– হ্যা, আছেই তো।
– তোমার কি মাথা খারাপ? তোমাকে একটু বেশি প্রাধান্য দিয়েছি বলে, সেটা যে ভালবাসা বা প্রেম ভাবা ঠিক না।
– আবরার তুমি না আমাকে খুব পছন্দ করো?
– হ্যা বাট এজ এ ফ্রেন্ড। একটু চিন্তা করো, সামনাসামনি আমাদের মাঝে জমে না। আমি তো তোমার সাথে কথাই বলতে পারি না। ভালবাসার যে অনুভূতি, যেই ফিলিংস সেটা তোমার সাথে কথা বললে বা চিন্তা করলেও আসেনা।
– আচ্ছা আবরার রাখি।

ফোন কেটে দিয়ে, ফোন বন্ধ করে রাখলাম। সত্যি আমি কী পাগল! ও তো ঠিকি বলেছে। শুধুই আমি বোকার মতো ফ্রেন্ডশিপকে লাভ মনে করেছি।

তারপর থেকে ওর সাথে সকল যোগাযোগ আমি বন্ধ করে দিলাম। ওর জন্য সৃষ্ট অনুভূতিগুলোকে আমি আর প্রশ্রয় দিতে চাই না।ওর সাথে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করা আর নিজেকে মেরে ফেলা সমান। ফেসবুক আইডি ডিএক্টিভেট করে দিলাম। ও আর যোগাযোগ করার চেষ্টা করেনি।

প্রায় ২ মাস পর মার সাথে মার্কেট থেকে বাসায় ফেরার সময় জ্যামে পড়লাম।আমাদের পাশের রিক্সায় আবরার। ও আমাকে খেয়াল করেছে। চোখেচোখ পড়াতে আমি দ্রুত চোখ সরিয়ে নিলাম।

অনুভূতি গুলো আবার জেগে বসলো। সারারাত ঘুমাতে পারিনি। এই ঘটনার ২-৩ দিন পর অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসলো।
রিসিভ করেই ওপাশ থেকে বলল
– প্লিজ দোলা ফোন কেটো না।
কণ্ঠ শুনেই বুঝতে পেরেছি আবরার।
– কী বলবা বলো?
– আজকে বিকালে একটু দেখা করতে পারবা?
– না, সম্ভব না। ফোনেই বলো।
– প্লিজ মাত্র ১০ মিনিটের জন্য।
– কোথায় আসতে হবে?
– প্রথম যেদিন যেখানে দেখা করেছিলাম, ঠিক সেই সময়ে।
পার্কে আমি আর আবরার বসে আছি। আবরার বলল
– চেহারার কী অবস্থা করেছো?
– বাদ দাও, কী কারণে ডেকেছো??
– আমি তোমার সাথে আর নিজের সাথে অনেক বড় অন্যায় করেছি। আমি বুঝতে পারিনি নিজেকে।আমি ভাবতাম আমার যুক্তি গুলোই সঠিক।
– হ্যা সঠিক।
– নাহ ভুল। আসলে তুমি যখন আমাকে জানালে বিষয় টা ওইসময় আমি খুব মানসিক চাপে ছিলাম। স্কলারশিপ পেয়েও হাত থেকে ছুটে গেলো। বাবা আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিলেন। আমি তখন বুঝিনি আমাদের সম্পর্ক টা ফ্রেন্ডশিপ থেকে অন্যদিকে চলে গেছে।

কথা গুলো শুনছিলাম আর চোখ দিয়ে ফোটায় ফোটায় পানি পরছিল।
আবরার বলল
– আসলে তোমার সাথে এতোটা জড়িয়ে পড়েছিলাম যে আমি ভেবে বসেছিলাম ফ্রেন্ডশিপ মনে হয় এমনও হয়। আমি যদি সামনাসামনি কথা নাও বলতে পারি তাও আমার তোমাকে দরকার।
– আবোলতাবোল কথা বলো না।
– সত্যি তোমাকে সাথে নিয়ে আমি সারাজীবন নিশ্চুপ হয়েও বসে থাকতে পারবো। ২ টা মাস ভেবেছি ফ্রেন্ড নাই তাই খারাপ লাগছে। কিন্তু সেদিন দেখার পর থেকে বুঝতে পেরেছি শুধু ফ্রেন্ডকে হারাইনি আমার ভালবাসাকে হারিয়েছি। প্লিজ ফরগিভ মি!
– ক্ষমা চাওয়ার মতোই কিছুই করোনি। ভুল আমার ছিলো, তোমার না।
– দোলা, সত্যি তোমাকে আমার সারাজীবনের জন্য চাই।
– আবরার আমাদের মাঝের সম্পর্ক টা ভারচুয়াল।
– আমার চিন্তাভাবনা, লজিক ভুল ছিলো। কিন্তু….
– আবরার আমি যাই। আমার পক্ষে নিজেকে আবার
আর বলতে পারলাম না। হুহু করে কেঁদে ফেললাম।
আবরার আমার কাছে এসে বলল
– অনেক বড় ভুল করেছি আমাকে মারো, গালি দাও কিন্তু কেদো না।
উঠে চলে আসতে লাগলাম, আবরার আমার হাত টেনে ধরে বলল
– আমাকে ছেড়ে যেও না। তুমিও তো আমাকে ভালবাসো, তাহলে….
– তুমি যা করেছো সেটা খুব সামান্য ছিলো না আবরার।
– হ্যা আমি বুঝতে পারিনি যে, ভালবাসা ভারচুয়াল আর রিয়েল এদুটো শব্দে বাধে না। ভালবাসা যেকোনোভাবে হয়ে যেতে পারে।
– তখন কথাগুলো বলার আগে ভেবে নেয়া দরকার ছিলো।

কথাটা বলে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। ওকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করলাম।
এটাই ছিলো আমাদের মাঝের প্রথম আর শেষ ঝগড়া বা ঝামেলা। যেটা এতোটাই কষ্ট দিয়েছিলো যে, ভুলেও আমরা কোনো ঝামেলায় জড়াতে চাইনা। আসলে মানুষ ভুল করে তাই বলে যে তাকে ২য় সুযোগ দেয়াটা ভুল না।ভুল করে যদি কেউ সেটা বুঝতে পারে তাহলে তাকে ক্ষমা করে দেয়াটা ভুল না।। ওর ওপর আমার বিশ্বাস টা প্রখর ছিলো। আমার ভালবাসার উপর বিশ্বাস করেই ওকে দ্বিতীয় সুযোগ দিয়েছিলাম। এবং আমি সঠিক টাই করেছিলাম।

আমি আমার প্রথম ভালবাসাকে হেরে যেতে দেইনি। সেও আমাকে উজাড় করেই ভালবেসেছে।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত