: এই যে। আপনি কিন্তু আমাকে আমার অনুমতি ছাড়া টাচ করবেন না।
: মানে, কি বুঝলাম না।
: বুঝতে হবে না। আপনি আমাকে টাচ করবেন না। করলে কিন্তু আমি কান্না করবো।
: ওকে। তাও কান্না করতে হবে না। এখন একটু সরে বসেন, আমি ঘুমাবো। এভাবে বিছানার মাঝখানে বসে থাকলে আমি ঘুমাবো কি ভাবে।
: শোনেন আমি আপনার ৫ বছরের ছোট। তাই আমাকে আপনি বলবেন না। আমাকে আপনি তুমি করে বলবেন। আর আমি আপনাকে আপনি করে বলবো।
: কেনো এমনটা হবে। হয় দুজনে তুমি বলবো না হয় আপনি।
: দেখুন কথা না শুনলে কিন্তু কান্না করবো।
: কি আজব,,,, কথায় কথায় কাঁদতে হবে নাকি।
: না। আগে বলেন রাজি কিনা।
: ওকে, রাজি। তুমি ঘুমাবে না।
: শোনেন আজ রাতে আমি আপনি কেউ ঘুমাবো না।
: কেনো।
: আমি না সারা জীবন কোন প্রেম করিনি। সব সময় ভেবেছি, যাকে বিয়ে করবো, তার সাথেই প্রেম করবো। আর যত দিন তাকে ভালবাসতে পারবো না তত দিন তাকে টাস করতে দিব না।
: ওহহ আচ্ছা। এর সাথে না ঘুমানোর কি কারণ বুঝলাম না।
: আপনি আজ ঘুমাবেন না। আজ সারা রাত আপনার সাথে গল্প করবো।
: কি গল্প।
: আমার বরকে নিয়ে আমি যত স্বপ্ন দেখছি,,,, সেই গল্প।
: এমা,,,,, আমি না আজ খুব ক্লান্ত। কাল গল্প করি।
: না,,,,, আজকেই। আপনি ঘুমালে কিন্তু আপনার গায়ে পানি ঢেলে দিবো।
: কয় কি (এই শীতের রাতে) । না থাক তার চেয়ে বরং গল্প করি। বলো কি বলবে।
: আপনি তো আচ্ছা বরিং মানুষ। কথা বলতেও পারেন না ঠিক ভাবে। আমার নাম জিজ্ঞেস করেন।
: ওহহ আচ্ছা তোমার নামতো রাইসা, তাই না।
: আরে ধুর এভাবে কি কেউ জিজ্ঞেস করে।
: তাহলে কি ভাবে জিজ্ঞেস করে।
: বলবেন,,,, “তোমার নাম কি। ”
: কিন্তু আমি তো তোমার নাম জানি।
: ইহহহহ,,,,, আপনাকে কিন্তু। যা বলতে বলছি তাই বলেন।
: ওকে,,,, তোমার নাম কি?
: আমি রাইসা।
: কিসে পড়ো?
: অনার্স ২য় বর্ষ।
: আর কি?
: ধুর ছাই,,,, কি বরিং মানুষ আপনি।
: আবার কি করলাম।
: ওকে আপনার প্রশ্ন করতে হবে না। আমি নিজে থেকেই বলছি।
: যানেন আমার সব ফ্রেন্ড রা রিলেশন করতো। কিন্তু আমি করতাম না।
: কেনো।
: কারণ আমি আমার বরের দুষ্ট মিষ্টি বউ হতে চাইছি সব সময়।
: কি রকম।
: আমি সব সময় চাইছি,,,, আমার সব ভালোবাসা আমি আমার বরকে দিবো। আর ওকে খুব জ্বালাবো।
: কি রকম?
: জানেন আমার চাহিদা গুলো খুব সামান্য। আমার বাড়ি, গাড়ি, ভালো পোশাক, দামি ফার্নিচার কিছুই চাইনা।
: তাহলে কি চাই।
: রোজ সকালে আপনি যখন অফিসে যাবেন, তখন আমার কপালে একটা চুমু দিবেন।
: আর।
: দুপুরে খাবার আগে যেখানেই থাকেন, আমাকে একটা কল দিবেন। না হলে আমি না খেয়েই থাকবো।
: ওকে দিবো। আর।
: অফিস থেকে ফেরার সময় আমার জন্য, চকলেট, আইসক্রিম, ফুসকা, কিছু না কিছু আনতে হবে।
: আর।
: যদি কখনো ভুলে যান তবে আবার বাইরে পাঠাই দিবো।
: ওকে আনবো। আর।
: ভালবাসা দিবষ, মেরেজ ডে, সহ সব ভালো ভালো দিনে আমায় নতুন করে প্রপোজ করতে হবে। কিন্তু কোন ফুল দেওয়া যাবে না।
: এটা কেমন কথা।
: জী এমনি কথা।
: আর।
: আমার কুয়াশা, চাদনী রাত, ঠান্ডা খুব ভালো লাগে। তাই মাঝে মাঝে ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে। ব্যস্ত থাকলে বলবো না।
: ওকে।
: মাঝে মাঝে চাদনী রাতে, বেল কোনিতে বসে এক কাপে দুজন কফি খাবো।
: এক কাপে কেন?
: হুম এক কাপেই খাবো।
: ওকে, আর
: মাঝে মাঝে বৃষ্টির রাতে ছাদে গিয়ে দুজন ভিজবো। আর তুমি কদম ফুল দিয়ে আমায় প্রপোজ করবে।
: এই শহরে কদম ফুল কই পাবো।
: আমি জানি না। আর রাগ করলেও কদম ফুল দিয়ে রাগ ভাঙ্গাতে হবে।
: এটাতো রিতিমত টর্চার। সারা বছর কদম ফুল কই পাবো।
: আমি জানি না।
: আচ্ছা অন্য ফুলের কথা বলো।
: না। কদম ফুল না দিতে পারলে আমায় কোলে নিতে হবে। যতখন মন ভালো হয়নি ততখন কোলে নিয়ে থাকতে হবে।
: এই ৪৮ কেজির বস্তা কোলে নিলে আমি বাচবো।
: আমি জানি না। কদিন পর আরো মোটা হবো। তবুও কোলে নিতে হবে।
: বলেকি। প্রথমের গুলাইতো ভালো ছিল।
: সব গুলাই ভালো, কোলে নিবে কিনা বলেন।
: ওকে বাবা নিবো।
: শোনেন।
: হুম বলো।
: আপনার এই বোকা বোকা চশমাটা একটু খুলবেন।
: কেনো।
: আপনাকে দেখবো। এত মোটা ফ্রেমের চশমা পড়েন, এখনো ভালো করে আপনাকে দেখি নাই।
: আচ্ছা আমি ঘুমাবো,,,, কাল কথা হবে গুড নাইট।
: এই যে শোনেন এখানে তো একটা বালিশ, আমি কোথায় ঘুমাবো।
: আমার বুকের উপর।
: মানে?
: তোমার যেমন আমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন।
ঠিক তেমন তোমাকে নিয়ে আমার একটা স্বপ্ন। আমার বউ সব সময় আমার বুকে মাথা দিয়ে ঘুমাবে। সারদিন যত রাগ ঝগড়াই হোক , রাতের বেলা যেন কেউ কখনো অন্যজনকে ছাড়া না ঘুমাতে পারে।