মেসের প্রথম দিন।আমি গ্রাম থেকে এসেছি।মেসে প্রথম এসেছি।তাই মন অনেক খারাপ।আসাদের মেসটা ছিল দুই তলা।আমি জানালার পাশে বসে আছি।জানালার সামনেই আরেকটা বিলডিং।আমার রুমে দুই জন থাকি।আমার রুমমেট আমার থেকে সিনিয়ার।তো আমি চেয়ারে বসে আছি এর মধ্যে আমার রুমেমেট এসে একটা ঢ়িল নিয়ে পাসের বিলডিং এর আমাদের জনালা সোজাসুজি যে বাসাটা ওই টাই মেরে রুম থেকে চলে গেল।কিছুক্ষণ পর দেখি একটা মেয়ে বারান্দায় এসে কে ঢ়িল মেরেছে বলে বকাবকি করতে থাকলো। তারপর আবার রুমে চলে গেল। তার কিছুক্ষণ পর আমার রুমমেট এসে আসলো।
-মেয়েটাকে দেখার জন্য ঢ়িল মেরেছিরাম পরের দিন কলেজ থেকে আসছি।তো পেছন থেকে কে যেন ডাকতে থাকলো।
-এই ছেলে। এই ছেলে
-জ্বী আমি?
-হ্যা তুমিই।
-কিছু বলবেন?
-তুমি তো আচ্ছা বিয়াদপ।কাল রাতে আমার রুমে ঢ়িল মারছিলে কেন?
-আমি আপনার রুমে আবার ঢ়িল মাররাম?
-সাধু সাজা হচ্ছে এখন।এক থাপ্পরে তোমার দাত হাতে ধরিয়ে দেব।
-ওহ! আমি না আমার রুমমেট মেরেছিল।
-আবার মিথ্যা কথা।নিজে মেরে আবার অন্যকে দোষ দাও।আবার যদি কোনদিন মেরেছো তো সোজা তোমাদের বাড়ির মালিকের কাছে কমপ্লেন করবো।যাও এখন কি মসিবতে পররাম রে।কিছু না করেই মাগনা মাগনা এতগুলা ঝাড়ি খেলাম। পরের দিন কলেজ থেকে আসছি আবার ওই মেয়েটা ডাকলো
-তোমার সাহস তো কম না তুমি কাল আবার ঢ়িল মেরেছো
-দেখেন আপনি শুধু শুধু আমাকে দেষ দিচ্ছেন। আমি কিছুই করিনি।
-থাপ্পর মেরে তোমার দাত খুলে দেব।আবার মিথ্যা কথা।
-আরে অনেকক্ষন আপনাকে সহ্য করছি।হ্যা আমি ঢ়িল মেরেছি। তো কি করবেন আপনি।যা ইচ্ছা করেন।ফাজিল মেয়ে।
আমি আর মেয়েটাকে কোন কথা না বলার সুযোগ দিয়ে ওখান থেকে চলে আসি রাতে চেয়ারে বসে পড়ছি।এমন সময় কোথথেকে একটা একটা ডিম এসে পড়লো আমার টেবিলে।আর পড়তেই ডিম ভেঙ্গে যা তা অবস্থা হয়ে গেল।জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি মেয়েটা হাসছে
-কেমন লাগলো? ঢ়িল মারলে কাচা ডিম খেতে হয়।
মেয়েটার উপর এত রাগ হলো হাতের কাছে পেলে কয়েকটা কাচা ডিম খাওয়াই দিতাম। আমার কাছে কয়েকটা টমেটো ছিলো।ওই গুলোই ওই মেয়ের দিকে ছুড়তে মাররাম।একটা গিয়ে মেয়েটার কপালে লেগে ফেটে গেল।
-ডিম মারলে টমেটো খেতে হয়।অনেক স্বুসাদু না টমেটো গুলো?
এবার মেয়েটা আমার দিকে ডিম ছুড়তে লাগলো।একটা আমার মাথায় লেগে ফেটে গেল।
-টমেটো মারলে ডিম থেতে হয়।কেমন লাগলো কাচা ডিম খেতে?
-আপনার টমেটো খেতে যেমন লেগেছে তার চেয়ে খারাপ।আপনারা বাসায় কি পচা ডিম খান?
-আমরা ভাল ডিমই খায়।তুমি তো পচা টমোটো খাও। সবগুলা পচা টমোটো।
-আপনি একটা ফাজিল মেয়ে।
-তুমি একটা বেয়াদপ ছেলে।
পরের দিন ছাদে বসে আছি।অনেক দিন হয়ে গেছে মেসে আসছি।একটা গোলাপ ফুল গাছ লাগিয়েছিলা।আজ দেখি আমার গাছে একটা ফুল ফুটেছে।কালো গোলাপ এমন সময় মেয়েটাও ওদের ছাদে এলো
-ওয়াও কালো গোলাপ।সো কিউট।কোথায় পেলে ওটা।
-যেখানেই পাই তাতে আপনার কি।আমার গাছের দিকে একদম নজর দিবেন না।
-বলনা আমিও কিনবো একটা।
-কেন বলবো আপনাকে।কোন ফাজিল মেয়ের সাথে আমার কথা বলার ইচ্ছা নেই।
-ওকে ওকে। শোন এখন থেকে নো ঝগড়া।ক্যান উই বি ফ্রেন্ড?
-ওকে।ফ্রেন্ড।
-তো এখন বলো কোথায় পেলে এটা।
-সিলেট থেকে আসার ফ্রেন্ড নিয়ে আসছিল।
-ওহ তাহলে তো আর হলো না।আচ্ছা তোমার নাম কি?
-আশিক। আপনার?
-মেঘলা। তুমি করে বলো।কোন ক্লাসে পড়ো
-ইন্টার ফাস্ট ইয়ার।তুমি?
-সেম টু ইউ। পরের দিন কলেজে যাচ্ছি।এমন সময়
-এই আশিক দাড়াও। কলেজে যাচ্ছো?
-হ্যা।
-চলো একসাথে যাই।তাহলে রিকসা ভাড়া হাফ করে দেব দুই জন।
-ওকে।
এভাবে প্রায় প্রতিদিনই মেঘলার সাথে যাওয়া হতো। এভাবে আমাদের বন্ধুত্ব আরো গভীর হতে থাকলো। রাতে আমরা চিঠিতে কথা বলতাম।ও চিঠি লিখে আমার রুমে ছুড়ে দিতো।আর আমি চিঠি লিখে ওর রুমে ছুড়ে মারতাম।এভাবে প্রতিদিনই আমরা রাতে কথা বলতাম। একদিন রাতে ১২ টার দিকে মেঘলা চিঠি লিখে আমার রুমে ছুড়ে মারলো।তাতে লেখা
-চল এইসক্রিম খেয়ে আসি
-এখন? কয়টা বাজে এখন সে খেয়াল আছে?
-মাত্রো তো ১২ টা।।তুই যাবি, না আবার ডিম ছুড়তে হবে।
-মাফ কর তুই।কিন্তু যাবো কি ভাবে গেট বন্ধো তো।
-ছাদ দিয়ে নিচে নামবি।আমার কাছে দড়ি আছে।দড়ি বেয়ে নিচে নামবি।
-ওকে।। কি আর করা।মানকার চিপায় পড়ে গেছি।আচ্ছা দে।…..
-এত রাতে কি দোকান খোলা থাকবে?
-আরে থাকবে চল তো তুই।
-ওই যে একটা দোকান খোলা আছে মামা দুইটা আইচক্রিম দেন তো। টাকা দে এখন
-আমি কেন দেব। তুই দে।আমি তো টাকা আনি নাই
-মামা দিয়ে দেও।সারাজীবন তো দিতে হবে। আগে থেকেই অভ্যাস শুরু কররো (দোকানি)
-কি আর করা।এই নেন।
-মামা দুজনকে কিন্তু সেই মানাইছে।পারফেক্ট জুটি।(দোকানি)
-আরে আপনি আপনার কাজে মন দেন।যা ভাবছেন তা না।….
-তুই কখনও প্রেম করেছিস। (মেঘলা)
-না তো।মাত্র তো ইন্টার পড়ছি।তুই করেছিস?
-নাহ।কাউকে ভালো লাগেনি কখনও?
-নাহ।আসলে কখনও কাউকে ওই ভাবে দেখিনি।
-কিস করেছিস কাউকে?
-ছি ছি কি বলিস।
-চোখ বন্ধ কর তো।
-কেন?
-যা বলছি তাই কর।
-ওকে।। যা আমার কল্পনাতেউ ছিল না মেঘলা তাই করলো।আমার জীবনের প্রথম কিস।
-অনেক ইচ্ছা করছিল তোকে কিস করতে।তাই করলাম। এখন চল অনেক রাত হয়েছে। অন্য একদিন রাতে চিঠিতে
-আমাদের ছাদে আসতে পারবি?(মেঘলা)
-এত রাতে কিভাবে আসবো?
-দড়ি দিয়ো নিচে আয়।দেন আমাদের বাড়ির পাচিল টপকে আমাদের বাসার গেটের সামনে আয়।আমি গেট খুলে রেখেছি।সিড়ি দিয়ে শব্দ না করে সোজা সাদে আয়।আমি সাদে থাকবো।
-তুই কি আমাকে স্পাইডারম্যান পাইছোস?? আমি পারবো না।
-তার থেকে ও বেশি।সুপারম্যান।তুই আসবি না আবার ডিম ছুড়বো?
-ওকে ওকে আসছি।আল্লাহ বাচাও আমারে এই মেয়ের হাত থেকে। অনেক কষ্টে ছাদ থেকে নেমে পাচিল টপকে ওদের সাদে গেলাম।
-তুই কি আমাকে মারার প্লান করছিস?
-তুই ডুয়েট ডান্স করেছিস কখনও?
-হ্যা।কেন?
-এই ভিডিও দেখ।আমরা এখন ঠিক এইভাবে ডান্স করবো।পারবি তো?
-হ্যা।পারবো।তুই তাহলে এই ডাস্ন করার জন্য আমাকে এত কষ্ট করালি?
-তুই ছাড়া আর কে করবে বল।
-বয়ফ্রেন্ড বানায় নে। তাহলে সেই করবে সব।যা বলবি সব করবে।
-হুম ঠিক বলেছিস।আমিও ভাবছি কয়েকদিন ধরে।।
-আহারে কোন হতভাগার যে কপাল পুড়বে।
-কপাল পুড়বে মানে?
-তোর যে বয়ফ্রেন্ড হবে তার তো কপাল পুড়বে।
-শুধু কপাল না ইচ্ছা হলে সারা বডি পোড়াবো।তোর কোন প্রবলেম?
-না তো।
– সারা জীবনের জন্য ডান্স পার্টনার হবি আমার?
-কি????????
-শুনতে পাস নি?
তোকে সারা জীবনের জন্য নিয়ে নিলাম আমি।এখন থেকে তোর জীবনটা আমার। ভালবাসি তোকে অনেক। অনেক অনেক বেশি।( চিতকার করে) এখন শুনেছিস?
-কিন্তু আমি তো এখনও তোর প্রস্তাবে হ্যা কিংবা না বলিনি।
-না বললে একদম এখান থেকে নিচে ফেলে দেব।বললাম না এখন থেকে তোর জিবনটা আমার।তুই শুধু আমার। বাপরে যে গুন্ডি মেয়ে তাতে ভালোনা বেসে কোন উপায় আছে।আপনারা কি বলেন?