আট দশটা মানুষের মত আমিও ভাবছি কি করব তাকে কি আর একটা সুযোগ দেব। নাকি সে আবার আমার সাথে খেলা করবে।
না আর ভাবতে পারছি না। সব কিছু এলোমেলো হয়ে আসছে। আজো সে আমাকে অপেহ্মাই রাকল।
কলেজ থেকে ফিরছিলাম প্রতিদিনের মত আজও ছেলেটা আমার পিচু পিচু আসছে। আজ তো কিছু একটা বলতেই হবে
তিন মাস যাবত দেখছি আমার পিচু নিচে। কিছু বলে না শুধু পিচু পিচু আমার বাসা পর্যন্ত আসবে আমি বাসায় চলে আসার পর সে চলে যায়।
:- এই ছেলে এই। (আমি)
:- জ্বী। (ছেলেটি)
:- এই দিকে আসো।
ছেলেটি হেটে আমার পাশে আসল।
:- কি নাম তোমার।
:- জ্বী ফারাবি।
:- কি কর।
:- আপতত কিছু না কিন্তু জব খুজতাছি।
:- প্রতিদিন আমার পিচু নাও কেন।
:- চুপ
:- কি হল কথা বলছ না যে।
:- না মানে।
:- কি মানে মানে করছ।
:- চুপ।
:- কাল থেকে যেন না দেখি।
:- চুপ।
:- কি হল কথা বলছ না যে।
:- চুপ
ছেলেটি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে। প্রচুন্ড রাগ হল। কিন্তু নিজেকে কানট্রুল করে চলে আসলাম।
বই পড়ছিলাম এমন সময় ভাইয়ার আগমন।
:- কিরে কি করিস? (ভাইয়া)
:- আরে ভাইয়া কিছু না বই পড়ছিলাম।
:- খেয়েচিস কিছু।
:- না একনো খায়নি খাব একটু পর।
:- হুম। আচ্ছা তুর একা থাকতে খারাপ লাগে না প্রেম ট্রেম তো করতে পারিস একটা।
তুর ফ্রেন্ডরা দেখ কত খুশি। আর তুই সারাদিন বই আর বই।
:- ছোট বেলায় বাবা মাকে হারিয়ে অনেক কষ্ট পায়ছি তারপর তেকে তুমি আমাকে বড় করছ।
বাবা মাকে হারিয়ে আমি যে কষ্টটা পেয়েছি সেরখম কষ্ট আমি আর পেতে চায়না।
:- একটা প্রম তো কর জীবন চলতে গেলে ভালোবাসার দরকার।
:- না ভাইয়া আর তুমিও তো বিয়ে করছ না কেন করছ না।
:- তুর জন্যে আরকি। তুকে বিয়ে দিয়ে তারপর আমি বিয়ে করব।
:- ওওও তাই।
:- আচ্ছা চল কিছু খাবো খোদা পেয়েছে অনেক।
:- হা হা হা চল।
তারপর কিচু খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
:- কিরে কলেজে যাবি না। কয় টা বাজে। (ভাইয়া)
:- যাবো তো কয়টা বাজে? (আমি)
:- ৯:৩০।
:- কি? তুমি আগে ডাকবা না উপপপ।
তাড়াতাড়ি করে সিং শাসন ছেড়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। অনেক ইম্পর্টেনট একটা ক্লাস আছে।
:- ঐ নাস্তা তো করে যা। (ভাইয়া)
:- পরে করব।
এই বলে বাসা থেকে রওনা দিলাম। গলিতে আসতে দেখি রিক্সা একটা দাড়িয়ে আছে। যাক যুদ্ধে নামার আগে হাতিয়ার দরকার পেয়ে গেলাম।
:- মামা যাবা (আমি)
:- উটে বসেন আপা আপনার জন্য অনেক আগে থেকে দাড়িয়ে আছি। (রিক্সা মামা)
:- আমার জন্যে মানে।
:- আগে রিক্সায় উটে বসেন তারপর বলছি আর আপনার ক্লাসের মাএ ১৫ মিনিট বাকি আছে।
ঘড়ির দিকে তাকালাম আসলেই তো সময় বেশি নেয়। আর কিছু না ভেবে রিক্সায় উটে পড়লাম।
:- হুম মামা বলেন আমার জন্যে কেন দাড়িয়ে ছিলেন।
:- আসলে আপা আপনার জন্য আধা ঘন্টা ধরে দাড়ায় আছি আপনার নাকি অনেক ইম্পর্টেনট ক্লাস আছে সে জন্যে।
:- আমার ইম্পর্টেন্ট ক্লাস আছে এটা আপনাকে কে বলল।
:- সেটা তো বলা যাইবো না।
:- কেন?
:- ভার্সিটি চলে আইছি আপা।
:- আমার উওর।
:- সেটা অন্য দিন দিমো।
:- অন্য দিন আপনাকে কোথায় পাবো।
:- আজ থেকে তো আমি আপনার ড্রাইবার।
:- কে বলল।
:- ভাইয়া।
:- ও।
:- ধরেন আপনার ভাড়া।
:- না আপা ভাইয়া দিইয়া দিছে।
:- ওও।
এরপর আমি ক্লাসে চলে আসি। বন্ধুদের সাথে বের হলাম। তাদের সাথে কিছুহ্মন আড্ডা দিলাম।
এরপর তাদের থেকে বিদায় নিয়ে বাসার যাওয়ার জন্য বিদায় নিলাম। ভার্সিটির বাহিরে এসে দাড়ালাম।
দেখলাম রিক্সা মামা দাড়িয়ে আছে।
:- আপা আইয়েন। (আমি)
:- না মামা আজ যেতে ইচ্ছে করছে না। আপনি চলে যান। এরপর থেকে ওনি আমাকে আনতেন আমাকে নিয়ে যেতেন।
না আজ গাড়ি নিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে না। হাটা শুরু করলাম। আজ কিছু একটা যন নেই মনে হচ্ছে।
ছেলেটা কে না আজ ছেলেটার কথা মনে পড়ছে। এদিক ওদিক তাকালাম না ছেলেটা বুঝি কালকে ভয় পাইছে।
যাক ভালোই হল আমি আবার আমার মত করে হাঁটা শুরু করলাম। কিছুদূর যাওয়ার পর মনে হল কেউ আমার পিচু নিয়েছে।
পিচনে ফিরতেই দেখলাম ছেলেটা। আমার ভিষন রাগ হল।
:- কাল না বলেছিলাম আমার পিচু পিচু না ঘুরতে। (আমি)
:- আসলে আপনাকে একটা কথা বলার আছে। (ফারাবি)
:- আমার ভালো করে জানা কি বলবা।
:- জানাই যখন তাহলে আমাকে এত কষ্ট দিচ্ছেন কেন।
:- তোমাকে কষ্ট করতে কে বলছে।
:- তোমার জন্যই করতে হচ্ছে। তুমি রাজি হয়ে গেলে আর কষ্ট করব না। প্লীজ রাজি হয়ে যাও।
:- তুমি আমাকে ভালোবাসো এটার প্রমান কি।
:- অন্য সবার মত হাত কেটে বলব না যে আমাকে ভালোবাসতে হবে না হলে আমি মরে যাব।
আর প্রমান? প্রমান করার মত হলে আমি প্রমান করে দিতাম। কিন্তু ভালোবাসা কখনো প্রমান করা যায় না শুধু অনূভব করা যায়।
আমি আমার মনের কথা বলে দিলাম আপনি যদি রাজি হন তো হলেন না হলে ভালো থাকবেন।
আল্লাহ হাফেজ। আর কাল ৪ টার সময় আমি ডিসি হিলে থাকব যদি ইচ্ছে হয় তাহলে আসবেন অপেহ্মায় থাকব।
ছেলেটা এত কথা শুনিয়ে দিয়ে গেল। আর আমি কিছুই বলতে পারলাম না। ছেলেটার কথায় আমার একটুও খারাপ লাগছেনা।
আমি আর দাড়িয়ে না থেকে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় এসে ছেলেটার কথাগুলো ভাবতে লাগলাম
আসলেই ছেলেটা তো খারাপ কিছু বলেনি শুধু তো ভালোবাসাই চেয়েছে। এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ি।
সকালে আর কলেজে যায় নি। বাসায় সারাটাদিন কাটিয়ে দিই। বিকালে পার্কে যায় দেখি ফারাবি আমার আগে এসে বসে আছে।
মুখটা ফ্যাকাশে করে রেখেছে। তার পাশে কিছু ফুল রাখা আছে। আমাকে গেইট দিয়ে ডুকতে দেখে
পেকাশে মুখটা আনন্দেভরপুর হয়ে উটল। আমি আস্তে আস্তে তার দিকে এগুয়ে যায়।
:- কেমন আছো? (ফারাবি)
:- আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুমি? (আমি)
:- ভালো। বস দাড়িয়ে আছো কেন?
:- হুম। তুমিও বস।
:- হুম।
একটু দূরুত্ব রেখে বসল।
:- এত দূরে কেন কাছে এসে বস।
:- না ঠিক আছে।
:- তুমি কি আমাকে সত্যি ভালোবাসো?
:- হুম।
:- কিন্তু আমি তো তোমার সম্পর্কে কিছুই জানিনা।
: আমার সম্পর্কে পড়ালেখা শেষ করে এখন চাকরির জন্য যুদ্ধ করছি।
বাবা মা বোন নিয়ে আমার পরিবার। বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। এই হল আমার পরিচয়।
:- তোমার নাম্বার টা দাও তো।
:- কেন?
:- কেন আবার প্রেম করব কি দিয়ে।
:- ওওও।
:- দাও।
:- ০১৮২৬৪…..
তার পাশে যায় তার হাতটা জড়িয়ে ধরলাম। প্রথমে একটু ইতস্ত বোদ করল পরে ট আর সূর্যের দিকে তাকালাম
সূর্যটা লালিমা ধারন করেছে। রুদে তেমন তেজ নেয়।
এভাবে শুরু হয় আমার আর ফারাবির পথ চলা হঠাৎ একদিন অসুস্থ হয়ে পড়ি। ফারাবি আমার বাসায় আসে।
বাহিরে বেরওয়ে দেখি ভাইয়া আর ফারাবি কথা বলছে
:- আরে টাকাটা রাখ। এটার জন্যই তো তুমি কাজ টা জরলা। (ভাইয়া)
:- না ভাইয়া আমি টাকাটা নিতে পারব না।
:- কেন?
:- আমি অধরার সাথে কাজটা ভালো করিনি। অধরাকে টকিয়ে আমি কাজ টা ভালো করিনি।
আমি আস্তে আস্তে তাদের দিকে এগুলাম। ফারাবি আমাকে দেখে বসা থেকে উটা দাড়ায়।
:- তুমি তাহলে আমার সাথে এতদিন অভিনয় করেছ। (আমি)
:- না মানে। (ফারাবি)
:- তুমি কাজটা ভালো করনি।
:- আসলে তুই যা ভাবতাচছ তানা ওর টাকার প্রয়োজন তাই তাকে টাকা দিচ্ছি। (ভাইয়া)
আমি আর এক মিনিট ও সেখানে দাড়ালাম রুমে এসে দরজা বন্দ করে দিলাম। ফারাবি আমার সাথে এমনটা কেন করল।
বাহিরে ফারাবি আর ভাইয়া ডাকছে। আমার তাদের দিকে কোনো খেয়াল নেয় আমার মাথায় শুধু একটা কথায় আসছে
ফারাবি আমার সাথে কেন এমন করল। এভাবে এক সপ্তাহ কেটে গেল কিন্তু আমি এক মূহুর্থে জন্যেও ফারাবিকে ভুলে তাকতে পারিনি।
কলেজে যাওয়ার জন্য বের হয়ে দেখি রিক্সা মামা দাড়িয়ে আছে।
:- কি আপা কই ছিলেন এত দিন? (রিক্সা মামা)
:- কেন বাসায়। কেন তোমাকে ভাইয়া বলেনি? (আমি)
:- ভাইয়াি তো এসে জিগ্গাই ভাইয়া এসে বলল। সে এমনটা করতে চাইনি ভাইয়াই নাকি তাকে জোর করেছে। সত্যি বলতে ও
নাকি আমাকে সত্যি ভালোবাসে। আমি আর কিছু বলিনি। ভাইয়া চলে যায়। সকালে ঘুম থেকে উটে কফির মগটা নিয়ে বেলকনিতে গেলাম।
নিচে দেখি ফারাবি দাড়িয়ে আছে হাতে একটা কার্ড আর একহাত তার কানে। কার্ডে লেখা আছে সরি। আমি রুমে চলে আসলাম। নিচে যেতেই ভাইয়া বলে।
:- ধর এটা (ভাইয়া)
:- কি এইটা?(আমি)
:- চিটি।
:- কে দিছে?
:- ফারাবি। তুকে নাকি কল দিছে মেসেজ দিছে তুই নাকি কোনো রিপ্লাই দিতাচছ না।
:- দাও
চিটি টা রুমে চলে আসলাম। একপাশে রেখে দিলাম। রাতে খাওয়া দাওয়া করে রুমে গেলাম। চিঠিটা হাতে নিলাম।
“জানি আমি যেটা করেছি ভুল করেছি আমাকে মাপ করে দিও আমাকে আর একবার সুযোগ দাও প্লীজ আমার তোমাকে কিছু কথা বলার আছে ”
চিঠিটা রেখে দিলাম। কাল সকালে তার সাথে দেখা করব।