অভিমানী বউ

অভিমানী বউ

রাত ১০:২৫ মিনিট বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম, হঠাৎ ফোনের Message tone বেজে উঠলো, Message টা Seen করলাম, তুই যদি ১৫ মিনিটের ভিতরে বাসায় না আসিস, আমি আজকে আবার হাত কাটবো ( পাগলীটা ৯ টার পর থেকেই ফোন দিচ্ছিলো, একবার রিসিভ করেজ্ঞবলেছি একটু পর আসছি তারপর আরজ্ঞরিসিভ করিনি, তাই রাগ করে Message টা করেছিল,ও যা বলে তাই করে, খুব রাগি, এর আগেও অনেকবার আমার উপর রাগ করে হাত কেটেছে, তাই আর এক মুহুর্ত দেরী না করে বাড়ির দিকে দৌড় দিলাম) দরজায় একবার নক করতেই পাগলীটা একটা মোমবাতি হাতে বেরিয়ে এলো…(তখন কারেন্ট ছিল”না) এই তুই এতক্ষন বাইরে কি করলি, কখন থেকে তোকে ফোন দিচ্ছি….? সত্যি করে বল কোথায় ছিলি?

রাশেদ — ওইতো বন্ধুদের সাথে ছিলাম, অনেকদিন পরজ্ঞওদের সাথে দেখা হলো তাই একটু আড্ডা দিলাম। আমার চেয়ে তোর আড্ডায় বড় হয়ে গেল…? তুই জানিস না বাসায় একা একা আমার ভয় করে। বলেই কান্না শুরু করে দিয়েছে, ( ওর কান্নাটা আমি একদম সহ্য করতে পারি না)

রাশেদ : আচ্ছা সোনা আমি আর কখনও রাতে বাইরে থাকবো””””না, এবারের মত ক্ষমা করে দে। তুই এর আগেও অনেকবার একথা বলেছিস, কিন্তু পরে আর মনে থাকে না, তুই আমার সাথে
কথা বলবি”না।

রাশেদ : -আমার সোনাটা দেখি আমার উপর খুব রাগ করেছে, আমার সাথে কথা না বলে আমার রাগী বউ””টা কি থাকতেজ্ঞপারবে? হ্যা পারবো, তুই আমার সাথে কথা বলবি না ভাল করে বলে দিচ্ছি, ( কথা গুলো বলার সময় আমার বউ”টার প্রতি খুব মায়া হচ্ছিলো, চোখ দিয়ে অঝরে পানি পড়ছিলো, মেয়েটা খুব অভিমানী)

রাশেদ : আচ্ছা ঠিক আছে কতক্ষন থাকতে পারিস দেখাই যাবে ,খেয়েছিস….? কুত্তা, বান্দর, সঝাড়ু ( আমার চুল গুলো একটু খাড়া খাড়া, তাই পাগলীটা আমাকে সজাড়ু বলে ক্ষ্যাপায়, পাগলীটা আমাকে ছাড়া কখনও খাইনি, তাই এসব বলছিল)

রাশেদ : জানি, আমার জানটা আমাকে ছাড়া খেতেই পারে না, চল খাই যা তুই একাই গিল,আমি খাবোনা,( বলেই শোবার ঘরে চলে গেল) প্লেটে কিছু ভাত নিয়ে ঘরে গিয়ে ওকে বোঝানো শুরু করলাম, কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। এক সময়

রাশেদ : জান, আমার না খুব খিদে লাগছে। খিদে লাগছে তো খা, আমাকে কেন বলছিস?

রাশেদ : তুই একটু খাইয়ে দে না। পারব না, ,, যা তো এখান থেকে। ( পাগলী আজকে খুবই রাগ করে আছে) প্লেটটা টেবিলে রেখে শুয়ে পড়লাম, কেবল চোখে ঘুম ঘুম ভাব তখনি দেখি পাগলী”টা ভাতের প্লেট হাতে নিয়ে আমাকে ডাকছে, এই ওঠ, নে গিল, আমি ছাড়া তো আর খাবি না…

রাশেদ : তোকে ছাড়া আমি কি করে খাবো বল? মুখ ভেটকি দিয়ে বলে উঠলো, তোকে ছাড়া কি করে খাবো বল,কুত্তা আর একদিন যদি বাসায় আমাকে একা ফেলে বাইরে থাকিস তোকে আমি মেরেই ফেলবো।

রাশেদ – আচ্ছা ঠিক আছে, দে খিদে লাগছে,ও আমাকে তুলে খাওয়াচ্ছিলো, (আসলে বউ এর হাতে খাওয়ার মজাই আলাদা) আমিও পাগলীটাকে খাইয়ে দিলাম, তারপর দুজনে শুয়ে পড়লাম কিছুক্ষন পর এই শুনছিস, ওঠ না একটু কিরে শুনতে পাচ্ছিস না,কান্না ভরা কন্ঠ আমার কানে ভেসে উঠল এই কুত্তা, এই বান্দর ওঠ বলছি

রাশেদ : কিরে, কি হইছে ডাকছিস কেন? ঘুমাতেও দিবি না নাকি? আমাকে একটু বুকে জড়িয়ে নিবি, আমার না খুব ভয় করছে ( বাইরে খুব বৃষ্টি আর বজ্রপাতের শব্দ শোনা যাচ্ছে , বজ্রপাতের শব্দ পাগলী খুব ভয় করে) পাগলীটাকে বুকে জড়িয়ে নিলাম শক্ত করে, ও আমার বুকে ছোট বাচ্চাদের মতো লুকিয়ে গেল,,, ( আসলেই ওর সব কিছু ছোট বাচ্চাদের মতই) বাচ্চাদের মত ঠোট ফুলিয়ে বলতে লাগলো,, তোকে কখন থেকে ডাকছি,এতক্ষন উঠলি না কেন….?

রাশেদ :- ঘুমিয়ে পড়েছিলাম সোনা,,, ঘুমাবিই তো আমাকে তুই একটুও ভালবাসিস না, আমার কথা তোর একটুও মনে থাকে না, আমি যেদিন মরে যাবো, সেদিন ঠিকই আমাকে মনে করে কাঁদবি…

রাশেদ : না সোনা এভাবে বলিস না, তুই ছাড়া আমি ভাল থাকতে পারবো নারে, তোর যদি কিছু হয় আমি প্রতিদিন মৃত্তুর যন্ত্রনা ভোগ করবরে। ( চোখ থেকে দু ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো, পাগলীটার গালে) মাথাটা একটু উঠিয়ে, কিরে কাদছিস কেন?

রাশেদ : তোকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো নারে, প্লিজ আমাকে ছেড়ে তুই কোথাও যাস না না সোনা, তোকে ছেড়ে আমি কোথায় যাবো না, আমি তোর উপর রাগ করি ঠিক আছে, কিন্তু আমি তোকে অনেক ভালবাসিরে, অনেক ভালবাসি।

রাশেদ :- আমি জানি,আমার আপন মানুষ আমাকে অনেক ভালবাসে, তা এখন একটু ঘুমাও

—- হ্যা ঘুমাচ্ছি, সারারাত জড়িয়ে ধরে থাকবি কিন্তু, একটুও ছাড়বি না, না হলে সকালে আমি খুব কান্না করবো।

রাশেদ ; – আচ্ছা সোনা,তোকে আমি আমার বুক থেকে কখনই আলাদা করবো না, অনেক রাত হয়েছে এখন একটু ঘুমা আচ্ছা, উম্মাহ্ ( আমার গালে একটা চুমু দিয়ে পাগলীটা ঘুমিয়ে পড়লো) আমি ওকে জেগে জেগে বুকে জড়িয়ে পাহারা দিচ্ছিলাম,আমাদের ভালবাসা দেখে মনে হয় বৃষ্টিরাও আজকে অনেক হিংসে করছিল,হঠাৎ চোখের পাতাটা ভারি হয়ে এলো, আমার জান”টার আজ ডেলিভারি পেইন শুরু হয়েছে,,,

আমি তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আছি, খুব ছটফট করছিল আর কান্না করছিল পাগলীটা, আমি আমার জানটার কষ্ট একদমই সহ্য করতে পারি না, ওর সামান্য খারাপ লাগাটুকু আমার কাছে মৃত্যুর চেয়ে ভয়াবহ। এককথাই নিজেরজীবন নিজের দেহে আছে তা কখনোই ভাবিনা। ওকে বিয়ে করার পর কোনো কিছুর অভাব,কষ্ট কি ওকে বুঝতে দিই নি,কোনো চাওয়া অপূর্ন রাখি নি, সে খুব অভিমানী ছিল, অল্পতেই অভিমান করতো আর কাঁদতো, আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে ওর কান্না থামাতাম,কিন্তু আজ ওর কষ্টের কান্না থামানোর মত কোনো উপায় জানা নেই আমার, চোখের পানি আটকাতে পারলাম না) দেরী না করে খুব তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলাম সময় যতই যাচ্ছে পাগলীটার যন্ত্রনার পরিমান ততই বাড়ছে,চিৎকার করে কাদছিল আমারবউ(জীবন আমার)আর আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে।

আমার জানটা আজ একটা কথাওবলেনি আমার সাথে, কারন অসহ্য যন্ত্রনায় তার জানটা বেরিয়ে যাচ্ছিল, (আসলে মা হতে হলে একটা মেয়েকে কতটা কষ্ট আর ত্যাগ স্বীকার করতে হয় সেদিন আমি আমার জানটা”কে দেখে বুঝেছি) ডাক্তার তাকে ডেলীভারি রুমে নিয়ে যাচ্ছে,,,,সাথে আমিও কিন্তু ডাক্তার আমাকে রুমে ডুকতে দিল না,ডাক্তার”কে অনেকবার অনুরোধ করলাম, ডাক্তার আমার জানটা খুব ভিতু, আমার ওর সাথে থাকা খুব দরকার, প্লীজ আমাকে সাথে নিন ডাক্তার কোনো কথায় শুনলো না, এই দিকে আমার জানটা চোখ বন্ধ করে যন্ত্রনায় ছটফট করছিল,,,,আমাকে বাইরে রেখে ওরা আমার জানটা”কে ভেতরে নিয়ে গেলো, যাওয়ার সময় আমার লক্ষি সোনাটা চোখ মেলে একবার আমার দিকে তাকালো কি মায়ায় বলে বুঝাতে পারবোনা। বাইরে অপেক্ষা করছি, আল্লাহকে ডাকছি আর কাদছি আধা ঘন্টা পর ডাক্তার বেরিয়ে আসলেন, এসে বললেন,আপনি একটু আমার চেম্বারে আসেন….

ডাক্তার :- আপনার স্ত্রীর অবস্থা খুব একটা ভাল না, দুঃখের সাথে বলছি আমরা যেকোনো একজনকে বাচাতে পারবো, হয় মা,,, অথবা সন্তান, এখন আপনিই বলুন কাকে চান? আমি কি বলবো ভেবে পাচ্ছি না,কারন আমি পাগলীটাকে ছাড়াও থাকতে পারব না, আবার ডাক্তারের হাত ধরে বলেছিলাম ডাক্তার আমি দুজনকেই চাই, যত টাকা লাগে ডাক্তার আমি আপনাকে দিব, দরকার হয় আমার ঘর বাড়ি, জমি,,,এমনকি আমার দুটো কিডনী সব কিছু বিক্রি করে দিয়ে আপনাকে টাকা দেব, প্লিজ ডাক্তার…

—- আচ্ছা আপনি ভেঙ্গে পড়বেন না, আমরা দেখছি,আল্লাহকে ডাকুন ডাক্তার আবার ডেলীভারি রুমে ঢুকলেন, বাইরে আমি, আমার জানা সবগুলো দোয়া কালেমা পড়ছিলাম, আর আল্লাহকে ডাকছিলাম। প্রায় ১ ঘন্টা পরডাক্তার বেরিয়ে আসলেন,আমি উঠে দাড়িয়ে ডাক্তারকে বললাম ডাক্তার আমার জানটার এখন কি অবস্থা, আমার সন্তান কেমন আছে…? আমি কি এখন একটু আমার জানটার সাথে দেখা করতে পারি,কেবল একনজর আমার সন্তানকে দেখতে পারি? ডাক্তার নীরব দুচোখে দুফোটা বেদনার জল নিয়ে বলতে লাগলো,

— আপনার স্ত্রীর কন্যা সন্তান হয়েছে, কিন্তু…
— কিন্তু কি ডক্টর…. ?
—-আমরা খুব দুঃখিত, আমরা মা মেয়ে কাউকেই বাচাতে পারিনি….

ডাক্তারের মুখে কথাটা শোনার পর আমার কেন জানি মনে হলো,আকাশ তার নিজের জায়গা”য় নেই, মাটিও আমার পায়ের নিচ থেকে সরে গেল, চারিদিকে অন্ধকার হতে থাকলো,নিস্বাস টা বন্ধ হয়ে এলো, শেষবারের মত একটাবার নিস্বাস নেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না, মনে হচ্ছে আমি মরে যাচ্ছি জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম,,জ্ঞান ফিরে আসার পর বাবা মাকে পাশে পেলাম সবাই কাদছিল আর একটা অন্ধকার ঘরে আমার নিস্পাপ মেয়ে আর আমার জানটাকে রাখা আছে, আমি আমার জানটার কাছে গিয়ে দেখি একটা সাদা চাদর দিয়ে তাকে ঢেকে রেখেছে, পাশেআমার নিস্পাপ সন্তান, চাদরটা সরালাম, আমার জানটা মেয়েকে নিয়ে ঘুমিয়ে আছে, আমার মেয়েটা খুব সুন্দর, একবারে মায়ের মতো,, আস্তে করে ডাকদিলাম,জান জান ওঠ আমি এসেছি,কিরে, মেয়ে পেয়ে আমাকে ভুলে গেলি নাকি….? ওঠ না, ওঠ না সোনা, একটু কথা বল আমার সাথে,,,, দেখ, আমি কিন্তু কেঁদে ফেলবো ওঠ বলছি,,,,আমার পেছনে আমাকে দেখে আমার মা হাউ মাউ করে কেদে উঠলো, বাবারে বউমা আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেছে, ও আর কোনোদিন উঠবে না।

রাশেদ :-এ হতে পারে না মা, পাগলীটা প্রমিজ করেছে আমাকে ছেড়ে ও কোথাও যাবে না। দেখ, ও এখনই উঠে পড়বে, উঠেই আমাকে বলবে, কুত্তা, বান্দর, সজাড়ু,,,তুই এতক্ষন কৈ ছিলি, তুই জানিস না অন্ধকারে একা একা আমার ভয় করে আমি আবার ডাকলাম, কিন্তু আমার জানটা উঠছে না, একটাবার আমাকে দেখলো না, একটাবার আমার সাথে কথা বললো না। বলবে কি করে, আমার জানটা যেসত্যি সত্যিই তার প্রমিজ ভঙ্গ করে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে অনেক দুরে আমার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চিৎকার করে কাদছিলাম, আজ থেকে আমি একা, আমি বড়ই একা হয়ে গেলাম, আমার জান আমাকে ছেড়ে চলে গেছে জ্ঞান ফিরে নিজেকে বাড়িতে আবিস্কার করলাম, আমার মেয়ে আর আমার জানটাকে সবাই গোসল করাচ্ছে, (এটাই শেষ গোসল) এইদিকে সবাই আমাকে বোঝাচ্ছিল, বাস্তবতা বড়ই নিষ্ঠুর বড়ই পাষাণ, কেঁদে আর কি হবে,নিজেকে শক্ত কর,,,, নিজেকে আমি কিভাবে শক্ত করবো? নিজেকে শক্ত করার কোনো কিছু জানা নেই আমার।

জনমের মত একবার দুচোখ ভরে দেখলাম আমার মেয়েটা আর পাগলী অভিমানী_বউ কে, কথা বলার বাকশক্তি অনেক আগেই হারিয়ে ফেলেছি, কথা বলার কোনো শক্তিই নেই আমার, আছে শুধু দুচোখের ক্ষীণ দৃষ্টি সন্ধা হয়ে এলো, মা মেয়েকে পাশাপাশি কবর দিলাম আমাদের আমবাগানে স্বার্থপরের মত আমার ভীতু বউটা”কে একাকি অন্ধকার ঘরে রেখে আসলাম। ওকে ছেড়ে আসতে মন চাইছিল না, সবাই জোর করে টেনে হেচড়ে ঘরে নিয়ে আসলো আমাকে অনেক রাত হয়ে গেছে, গতকাল রাতে আমার পাশে আমার জানটা ছিল,কালকে কেন জানি, আমাকে একটু বেশীই আদর করেছিল। সারারাত আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়েছিল

— কিন্তুু আমার পাশে আজ পাগলীটা নেই, আজ আমি একা চোখে ঘুম নামের কোনো অস্তিত্বই আমার নেই, লাইট”টা জালালাম, সারা ঘর জড়িয়ে ছিল পাগলীটার স্মৃতি, যেদিকেই তাকাচ্ছি ওকেই দেখতে পাচ্ছি,

— এই আয়নার সামনে পাগলীটা সাজতো, আর আমি ওকে জালিয়ে মারতাম, মাথা আচড়ানোর সময় কতবার যে চুল এলোমেলো করে দিছি,,,,,কিন্তুু আজ থেকে পাগলীটাকে আর জ্বালাতে পারব না, শত ইচ্ছে করলেও তাকে আর দেখতে পারবো না, তাকে ছুতে পারব না, হাজার ইচ্ছে করলেও তাকে বুকে জড়িয়ে একটু আদর
করতে পারব না। আমার সব কিছু এলোমেলো করে দিয়ে স্বার্থপরের মতো ও আমাকে একা ফেলে চলে গেছে… আজ থেকে সারারাত বাইরে থাকলেও কেউ বলবে না,

— কুত্তা, বান্দর এতক্ষন কোথায় ছিলি….?সারাদিন না খেয়ে থাকলেও কেউ এসে বলবে না,
— নে গিল, আমাকে ছাড়া তো আর খাবি”””না।

আল্লাহ্ নিজেকে আমি কি করে শান্তনা দেব তুমিই বলো শুনি। আমি এখন কি নিয়ে বেঁচে থাকবো…? এত বড় শাস্তি কেন দিলে আমাকে,কি অপরাধ ছিলো আমার…? তার ব্যবহৃত সব জিনিস নাড়াচাড়া করছিলাম, হঠাৎ ডাইরীর শেষপাতায় চোখ আটকে গেল, “”জান, আমি জানি তুই আমাকে অনেক ভালবাসিস।

আমাকে ছাড়া থাকতে তোর অনেক কষ্ট হবে, আমিও তোকে অনেক ভালবাসি সোনা, আমার জীবনের থেকেও বেশী। mকিছুদিন পর আমি তো মা হতে চলেছি, শুনেছি মা হওয়ার সময় নাকি অনেক কষ্ট হয়, অনেকে মারাও যায়, আমি যদি মরে যাই, তাহলে একটুও কাদবি না কিন্তুু, আমার সন্তানকে দেখে রাখিস, ওকে অনেক আদর করিস, ঠিক মত খাস, শরীরের যত্ন নিস, আর হ্যা রাতে একদম বাসার বাইরে থাকবি না, তুই অনেক ভালরে, আমি তোর উপর অনেক রাগ করেছি, তোকে কষ্ট দিয়েছি, আমাকে ক্ষমা করে দিস সোনা, আমি যদি মরে যায় তুই একটা সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করবি, দেখিস ও আমার থেকেও তোকে বেশী ভালবাসবে। আমাকে তুই কথা দে, সব সময় ভাল থাকবি, এটা মনে রাখিস, আমি সব সময় তোকে দেখবো, তুই যদি ভাল থাকিস আমিও ভাল থাকবো, যদি কষ্টে থাকিস মনেরাখিস আমিও কষ্টে থাকবো, ভাল থাকিস সোনা,

ইতি

তোর

অভিমানী বউ

লেখাটা পড়ার সময় কখন যে ডাইরীর পাতাটা চোখের পানিতে ভিজে একাকার হয়ে গেছে বুঝতেই পারি নি। ডাইরীটা বুকে নিয়ে শুয়ে শুয়ে কাদতে লাগলাম। বাইরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, সাথে হালকা বজ্রপাতের শব্দ, পাগলীটা এই বুঝি বলে উঠলো, জান, ওঠ আমার না খুব ভয় করছে, আমাকে একটু বুকে জড়িয়ে নিবি…..

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত