দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসা

দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসা

– বাবু উঠতো! অনেক বেলা হয়ে গেছে। এবার উঠে পর!(নিশি)
– ওই! কানের নিচে পেনের পেনের করিসনাতো ঘুমাইতে দে! (উজ্জ্বল)
– সারা রাত আমারে ঘুমাইতে দিলিনা আর এখন তুই আরামে ঘুমাইবি? এ কেমন বিচার? (নিশি)
– তোর বিচারে গুষ্টি কিলাই! এখন যাতো ঘুমাইতেছি।(উজ্জ্বল)
– এখন উঠবি না পানি আনব?
– যাবি তুই? ঘুমাইতে দে!

৫ মিনিট পর হঠাৎ উজ্জ্বল অনুভব করলো যে ছাদ ভেঙ্গে মনেহয় বৃষ্টি পরতেছে। চোখ খুলে দেখল যে নিশি বালতি হাতে দাড়িয়ে মুচকি মুচকি হাসতেছে! সব বুঝার পর উজ্জ্বলের দেমাগটাই খারাপ হয়ে গেছে, এক লাফ দিয়ে নিশিকে ধরতে যাবে, এমন সময় নিশি বালতিতে থাকা আরো অর্ধকটা পানি উজ্জ্বলের গায়ে ছুরে দিলো ভৌ দৌড় ! আর উজ্জ্বল রেগে তার মাকে ডাক দিল, উজ্জ্বলের মা উজ্জ্বলের এই অবস্থা দেখে হাসতে হাসতে অবস্থা খারার। মার পেছনে নিশি দাড়িয়ে থেকে নিশিও হাসতেছে পরিচয়টা দেই – উজ্জ্বল হলো বাবা মার একমাত্র সন্তান। অনার্স ২এ পড়ে। আর নিশি ছিল উজ্জ্বলের খালাতো বোন কিন্তু এখন বৌ। নিশি পড়ড়ে ইন্টার ১ এ। ওদের বিয়েটা হয় ৬ মাস আগে। বিয়ে হয়ে ছিল বিরাট একটা কাহানির মদ্ধে। কাহানিটা আর একদিন বলব! সকালেই উজ্জ্বল নিশির কাছথেকে এমন একটা উপহার পাবার পড় রেগে সে না খেয়েই বাইক নিয়ে কলেজে চলে গেল।অন্য দিন নিশি আর উজ্জ্বল একসাথেই কলেজে জেত।আজ সে একাই চলে গেল। খুব খারাপ লাগতেছে।

মেয়েটা সব সময় ওর সাথে ফাজলামো করে। উজ্জ্বলের সারা শরিলে অনেক চিমটি আর কামরের দাগ রয়েছে যা নিশির ফাজলামোর কারণে হয়েছে। উজ্জ্বল জানেই যে মাকে বললে কোন লাভ হবেনা! কারণ মাও নিশির দলেই। আর উজ্জলের বাবা থাকে বিদেশে! তাই সে রাগে মোবাইলটা ওফ করে ক্লাসে চলে যায়। একটা ক্লাস করে কেন্টিন থেকে নাস্তা করে। মনে মনে ভাবতে থাকে যে আজ বাসাই যাবেনা। সে দুপুরবেলা এক বন্ধুর বাড়ীতে যায়, বন্ধুর মা উজ্জ্বলকে নিজের ছেলের মতোনই দেখেন। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর দুই বন্ধু গল্প করতে করতে বিকেল হয়ে যায়। উজ্জ্বলের রাগটাও কমতে থাকে। একসময় সে তার মোবাইলটা অন করে। অন করার সাথে সাথে উজ্জ্বলের খালা মানে শাশুরি মার ফোন….

– বাবা কৈ রে তুই?তোর ফোন বন্ধ কেন? (খালা)
– কেন কি হইছে (রাগ দেখিয়ে)
– তুই একটু হাসপাতালে আয়তো নিশির শরির খুব খারাপ। (খালা)

একথা শুনার পর উজ্জ্বলের মাথা ঘুরে যায়। তারা তারি তার বন্ধুকে নিয়ে হাসপাতালে যায়। যাবার মাত্রই তার মা তার গালে ঠাস করে একটা মারল। আর বলল যে,”তুই না খেয়ে থাকলে যে মোয়েটাও না খেয়ে থাকে তুই জানিস না।” বলেই কান্না করতে লাগল। কারণ নিশিকে উজ্জ্বলের মা নিজের মেয়ের মতোই ভাবে।এমন সমন তার খালা এসে উজ্জ্বলকে বলে যে,” চিন্তা করিস না, না খেয়ে শরির দূর্বল হয়ে গেছিল তাই মাথা ঘুরে পরে যায়। উজ্জ্বল গালে হাত রেখেই ভাবতে থাকে যে,নিশি সামান্য মাথা ঘুরে পরা যাওয়াতেই এতো কিছু, আর ওর মাথায় নিশি যদি বাশও ভাঙ্গে তবুও কারো খুজ থাকবেনা। উজ্জ্বলকে নিশির কেবিনে নিয়ে যাওয়া হলো। নিশির ডান হাতে সেলাইন লাগানো।

উজ্জ্বল দেখা মাত্রই নিশির মুখে একটা বাচ্চা টাইপের হাসি ফুটে উঠলো। এই মুখটা দেখে উজ্জ্বল আবারো ক্রাশ। নিশি যতটুকু উজ্জ্বলকে ভালবাসে তার থেকেও বেশি উজ্জ্বল ভালবাসে নিশিকে। কিন্তু সে এই ভালবাসা প্রকাশ করেনা। কারণ প্রকাশ করলেই নিশির পাগলামি দ্বিগুণ বেড়ে যাবে!!! নিশির পাশে বসতেই নিশি তাকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে থাকে। আর বলতে থাকে, “আমি আর কোনদিকে তোর সাথে দুষ্টমি করবো না। তবুও আমাকে আর ছেরে আর জাসনা প্লিজ! তোকো ছারা আমি অচল।সত্তি বলতেছি আর কোনদিন দুষ্টমি করবনা।

উজ্জ্বলও তাকে জরিয়ে ধরে বলতে থাকে, তুই দুষ্টমি করবি নাতো কে করবে বল। সত্তি কথা বলতেকি আমিও তোর ফাজলামো গুলা অনেক অনেক ভালবাসি। প্রতিদিন সকালে আমি ঘুমের ভান করে সুয়ে থাকি কখন তুই এসে আমার ঘুম ভাঙ্গাবি, তোকে বাসায় দেখেও না দেখার ভান করি তুই এসে জরিয়ে ধরিস তাই! আমার বেচে থাকার প্রেরণাই হলো তোর দুষ্টমি গুলা। তুই দুষ্টমি করবি না তো কে করবে বল?? এমনেই জরিয়ে থাকা অবস্থাই নিশি উজ্জ্বলের কাধে দিল এক কামড়।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত