পাগলী মেয়ের প্রেম কাহিনি

পাগলী মেয়ের প্রেম কাহিনি

-কলেজ থেকে হেটে হেটে বাসায় আসছি টাকা না থাকায় তাই হেটেই আসছি একদিক দিয়ে আবার ভালোই লাগছে।এমন সময় পিছন থেকে কেউ ডাক দিলো।

-আকাশ ওই আকাশ দাঁড়াও একটু।
-পিছনে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই ওমা হায় হায় আজকাল আমার পিছনে আবার পেত্নী লাগলো নাকি!!আমি এই সব আবার হেব্বি ভয় করি।
-ঐ এদিক ও দিক কী দেখো?আমি উপরে!
-উপরে তাকাতেই দেখি রিয়া মুচকি মুচকি হাসছে।ওহহহহ এই মেয়েটা যে আমাকে কি পাইছে কে জানে আর সে জানে।
-আকাশ তুমি নিচে থাকো আমি আসছি.
-দূর আমারতো আর খেয়ে দেয়ে কাজ নাই দাঁড়িয়ে থাকবো তাই বাসার উদ্দেশ্য হাটা দিলাম একটু পর আবার পিছন থেকে ডাক
-ওই তোমারে না দাঁড়াতে বল্লাম।
-কী আর করার দাঁড়িয়ে গেলাম।
-দোড়ে চলে আসলো আর হাপাতে হাপাতে বললো ওটা আমাদের বাসা।
-হুমমম বেশ বড়
-হুমমমম
-আচ্ছা তোমারে একটা কথা বলি।
-হুমমমম
-ওই তোমার আমি বড় না ছোট এমন আকাশ আকাশ করে চিল্লাইতেছো।বাহারে আমি তোমাকে ভালোবাসি আপনি করে বলতে যাবো কেনো?

-কিহ??তোমার মাথা না পুরাই গেছে।
-হুম তোমার জন্য।
-দূর থাকো।
-ঐ ফোন নাম্বারটা দিয়া যাও।
-না দিবো না।
-দিবানা না???তাহলে কিন্তু…
-তাহলে কিন্তু কি??ওই কি করবা হুম।
-চিল্লাবো সবাইরে বলবো তুমি আমারে খারাপ কথা বলছো।
-হুমমম ওকে বলো।
-আহহহহহহহহহহহহহ
-হায় হায় যে মেয়ে সত্যি সত্যি কিনা আবাল তাবল বলে দেয়…তাই মনের অজান্তে রিয়ার মুখ চেপে ধরলাম আর চিল্লানি বন্ধ হয়ে গেলো!
-ঐ ছেড়ে দিওনা কিন্তু দরেই থাকো(আমি তো মুখ চেপে ধরে আছি তাই চাপা কন্ঠে বলল কথাটা)
-ধ্যাত..আচ্ছা থাকো তুমি গেলাম আমি।(ওকে ছেরে দিয়ে)
-নাম্বার না দিলে কিন্তু আবার চিল্লাবো।
-ধ্যাত এতো দেখছি মস্ত ঝামেলা!! ওকে ফাইন এই নাও ০১৭৬০১০**** হইছে শান্তি এবার।
-না আমিও তোমার সাথে যাবো।
-এই যে তোমার বাবা আসছে অন্য দিকে তাকাতেই দোড়।
-এই মেয়ে কে নিয়ে যে কি করি যখন তখন যেখানে সেখানে বলে ভালোবাসি! দেখতে খারাপ না ওনেক সুন্দরি বড় লোকের মেয়ে কেমন বাচ্চা বাচ্চা টাইপের ওনেক কিউট।যে দিন থেকে ট্রেনে এক সাথে আসছি সে দিন থেকে বলেই চলেছে ভালোবাসি ভালোবাসি।আমার দিকে না পুরো পথ তাকিয়ে ছিলো।

-আমি ওকে ভালোবাসি না সেটা কিন্তু না। আমিও ওকে অনেক ভালোবাসি কিন্তু মুখে বলি না।
-কারন আমি ওর যোগ্য না ও কতো বড় ঘরের মেয়ে আর আমার কাছে কিবা আছে??

শুধু ভালোবাসা দিয়ে কি জীবন চলে?? কোনদিন চাকরি পাবো কি না তাও জানি না। শুধু শুধু দুইদিন ভালোবাসি বলে একটা ফুলের মতো মন নস্ট করার কোনো মানে হয় না।আর আমি তেমন ছেলে না। কী করে যে রিয়ার মাথা থেকে ভূতটা নামাই সেটা ভাবছি।

-এমন সময় বাবা আসলো আকাশ কাল তোর মায়ের বান্ধবীর মেয়ের বিয়ে।
-আমি যেতে পারবো না তুই যাবি।
-ঠিক আছে বাবা। পরেরদিন বিয়ে বাড়িতে গেলাম.
-অনেক বড় একটা বাড়ি মনে হয় অনেক বড়োলাক হবে।
-বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই একটা মহিলা বললো।
-কে তুমি বাবা???তোমাকে তো চিনলাম না।
-আন্টি আমি ঝর্ণা এর ছেলে।
-ও বাবা এসো ভিতরে এসো।
-মামি দেখেন কে এসেছে।
-কে?
-আপনার ছোট বেলার বান্ধবী ছেলে।
-তুমি আকাশ???
-হুম আনটি….(মনে মনে ভাবছি আমার নাম কেমনে জানলো)
-কী ভাবছো তোমার নাম কেমন করে জানলাম এটাইতো?
-হুমমমম
-তোমার মা ছোট থেকে বলতো ওর একটা ছেলে হলে আকাশ রাখবে। নামটাও ঠিক করে রেখেছিল। কিন্তু তোমাকে নামটা দিয়ে যেতে পারলো না। আকাশ নামে সে তোমাকে ডাকতে পারল না।

-আরে কী করছো ছেলেটা আসছে খেতে দিবে তা না’কী সব শুরু করলে।(আংকেল)
-চলো বাবা তোমাকে খেতে দিই।
-একটা কথা বলবো। (আমি)
-হুমমমম বলো।(আন্টি)
-মা খুব ভালো ছিলো তাই না।
-হুম অনেক।আরে কাঁদছো কেনো।
-মা কে খুব মিছ করছি। জানালায় চোখ পড়তে দেখি রিয়া তার চোখেও পানি কেমন টলমল করছে।
-আন্টি রিয়া কে দেখতে পেয়ে রিয়া মা এ দিকে আয়তো।আকাশ কে খেতে দে তো। ওহ হ্যা আকাশ, ও হলো আমার মেয়ের বান্ধুবী রিয়া।

-রিয়া ওকে খেতে দে আমি গেলাম।
-ওই আগে বলোনি কেনো মা নেই।(রিয়া)
-মা মানে।
-তোমার মা মানে আমার মা।
-আবার শুরু হয়ে গেলো। আমি তোমাকে ভালোবাসি বুঝলে?
-খেয়ে দেয়ে আস্তে করে কেটে পড়লাম।
-ভাবছি কী করা যায়….মাথায় একটা বুদ্ধি এলো…সিগেরেট হাতে নিয়ে থাকবো আর রিয়া দেখলে আমাকে খারাপ ভাববে। প্লান অনুযায়ী কাজ চলছে রিয়া ও আসলো। তুমি সিগরেট খাও????

-হুমমমম প্রতিদিন ১০ টা। না না ২০ টা করে হুমমম।
-বাহ্ আমার সামনে খাও দেখি।
-দূর ফেসে গেলাম মনে হয়।
-কী হলো খাও???
-একবার একটা টান দিতেই আমি শেষ।
-হা হা হা হা এই খাও তাই না বুদ্ধুরাম??? বলো না ভালোবাসো??
-রিয়া তোমাকে কিছু কথা বলার আছে আমার।
-হুমমম বলো??
-আমি তোমার সাথে এমন করি তার মানে এই না যে আমি তোমাকে ভালোবাসি না।

তবে কোন মুখে ভালোবাসি বলবো আমার ভবিষ্যৎ কী আমি নিজে সেটা নিজে ও জানি না”আমার বাবার আমি ছাড়া আর কোন সম্পত্তি নাই।মানলাম তোমাকে ভালোবাসলাম বিয়ে করলাম তারপরে কি হবে? এটা নাই ওটা নাই তখন আর ভালোবাসা থাকবে না আমাদের মাঝে সব সময় ঝগড়া হবে’আর তুমি আমাকে পদে পদে তুলনা দিবে। আমাদের ভালোবাসার শেষ এইভাবে হবে।

-তুমি এখন বলতো তোমার বাবা অনেক বড়লোক উনি তোমাকে অনেক ভালোবাসে।কিন্তু আমার মতো ছেলে কে উনি কখনো মেনে নিবে না।
-কেন মেনে নিবে না? আমার বাবা তো আমাকে অনেক ভালোবাসে।
-হুম জানি তোমার বাবা তোমাকে অনেক ভালোবাসে কিন্তু সে আমার হাতে তোমাকে তুলে দেবে না। তার থেকে তুমি আমাকে ভুলে যাও। কথাটা বলে আমি রিয়ার সামনে থেকে চলে আসলাম। পরদিন বাসায় চলে আসলাম। রুমে শুয়ে আছি এর মধ্য রিয়ার ফোন।

-হ্যালো, আকাশ তুমি আমার সাথে একটু দেখা করতে পারবা?
-কেন?
-পারবা কি না বলো? একটু দরকার আছে।
-ওকে কোথায় আসতে হবে আর কখন?
-আমি মেসেজ করে দিচ্ছি।
-ওকে।

রিয়ার কথা মতো গন্তব্য স্থানে চলে গেলাম। গিয়ে দেখি মেয়েটা কান্না করে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও জল টা আমি মুছে দিতে পারলাম না।

-রিয়া? তুমি কান্না করছো কেন?
-আকাশ, আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।
-কিন্তু দেখ এইটা সম্ভব না।তোমার বাবা কখনওই মেনে নিবে না।
-না মেনে নিলে চলো দূরে কোথাও পালিয়ে যায়?????
-পাগল নাকি তুমি?

দূরে কোথায় যাবো? কি খাওয়াবো তোমাকে ? কোথায় রাখবো? এইসব চিন্তা বাদ দাও। যাও বাসায় চলে যাও। কথাটা বলার সাথে সাথেই দেখলাম রিয়া কান্নাটা আরও বাড়িয়ে দিল। ওর কান্না দেখে আমার বুকটা ফেটে যেতে লাগলো। রিয়া কান্না করছে আর বলছে আকাশ আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারব না। ও কান্না জড়িত কণ্ঠে ব্যাগ থেকে ফোন বের করে কাকে যেন কল করল।

-কী হলো কাকে ফোন করছো?
-চুপ করে দাঁড়াই থাকো। হ্যালো বাবা…
-তুমি আমাকে ভালোবাসো???
-হুমমম মা অনেক।কি হয়েছে তোর। কান্না করছিস কেন? বল মা আমাকে।
-বাবা আমি একজন কে ভালোবাসি তার কোনো কিছু নেই সে আমাকে ভালোবাসে আমিও তাকে ভালোবাসি।
-তারপরে আমি রিয়া কে যা যা বলছি সব তার বাবা কে বললো।
-ওর বাবা হাসছে লাউডস্পিকার দেওয়া ছিলো তাই আমি শুনছিলাম।
-এমন কিচ্ছু হবেনা সোনামণি। আমার মেয়ের আমি কিচ্ছু হতে দিবো না। তুই ছেলেটাকে নিয়ে বাসায় আয়। আমি ওর সাথে কথা বলবো।
-ওকে বাবা লাভ ইউ।
-আমি আকাশ কে না পেলে মরেই যাবো। ঠিকআছে মা আকাশ কে এনে দেবো এবার একটি হাসো।
-ঠিকআছে বাবা রাখছি। কথা বলা শেষ করেই রিয়া এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো…..মনে মনে ভাবছি আসলে মেয়েটা পাগলী।
-আন্টি বলেছিলো মা ও নাকি এমন ছিলো রিয়ার মধ্য হয়তো সৃষ্টিকর্তা মা এর একটা গুণ পাঠিয়েছে তা না হলে এত্ত ভালোবাসে কেনো???

-ঐ এবার তো জড়িয়ে ধরো??
-হুমমমমমম।
-সব সময় জড়িয়ে ধরে থাকবা এমন।
-হি হি হি ঠিক আছে পাগলী।
-হা হা হা ঠিক আছে পাগল। এটাই হলো একটা পাগলী মেয়ের প্রেম কাহিনি।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত