রাতে আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরছি। পিছন থেকে মেয়েলি কন্ঠের ডাক।
:- এই যে শুনছেন।(একটা বোরখা পরা মেয়ে)
:- জি আমাকে বলছেন।
:- হুম আপনাকে বলছি।
:- বলেন।
:- আমাকে একটু হেল্প করতে পারবেন।
:- কি হেল্প।
:- আজ রাতটা থাকতে দিবেন।
মেয়েটা মনে হয় সত্যি বিপদে পড়ছে। আর এত রাতে একটা মেয়ে যদি কোনো বিপদ হয়। আর দেখে মনে হচ্ছে ভদ্র ঘরের মেয়ে।
:ঠিক আছে আসেন আমার সাঙ্গে।
মেয়েটা পিছু পিছু আসলো। একটু পর বাসায় চলে এলাম।
:- এত বড় বাসায় আপনি একা থাকেন।
:- না আমার বাবা মা আর ছোট একটা বোন আছে।
:- ওহ ওনারা কোথায়?
:- বউ খুজতে গ্রামে গেছে।
:- ওহ।
ওনাকে ছোট বোনে রুমে থাকতে দিয়ে আমি আমার রুমে চলে এলাম। রাতে কখন ঘুমাইছি জানি না। সকালে ওনার ডাকে ঘুম ভাংলো।
:- এই নেন চা।
:আপনে চা নিয়ে আসলে কেন বাসায় কাজের লোকের অভাব পরছে।
:- আরে না আমি ওদের ছুটি দিয়েছি।
:- কি!
:- হুম আমি এখানে যে কয়েক দিন আছি সব কাজ আমি করবো।
:- কয়েক দিন মানে কী আপনার তো আজ চলে জাওয়ার কথা।
:- কাল আমার ফোনটাও চুরি হয়ে গেছে। তাই আমার আত্বীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিনা। এখান থেকে চলে গেলে কোথায় থাকবো।(কান্নার সুরে)
:- আরে ঠিক আছে কান্না করতে হবে না এখানেই থাকেন তবে সাত দিনের বেশি না। কারন সাত দিন পর বাবা মা চলে আসবে।
:- ঠিক আছে ধন্যোবাদ।
একটু পর মেয়েটা খেতে ডাকলো। খেতে গেলাম ওনার রান্না গুলো দেখে একটু অবাক হলাম। রান্না খাবার গুল আমার পছন্দের। তাই আর দেরি না করে খেতে বসলাম।
:- আপনে নামটা তো জানা হয়নি।
:- আমার নাম নিহা।
:- ওহ আপনার নামের মতই আপনার রান্না করা খাবার গুল সুন্দর।
:- ওহ তাই।
:- হুম তো আপনে কি ভাবে জানলেন যে এসব খাবার আমার পছন্দ।
:- আন্টি বলেছিল।
:- মানে আম্মুর দেখা কই পেলেন।
:- না মানে ফ্রিজে রাখাছিল তাই একটা একটা করে রান্না করেছি।
:- ওহ তাই বলেন।
খাওয়া সেরে একটু রেস্ট নিচ্ছি। এই সময় অফিস থেকে ফোন দিয়ে ম্যানেজার বলো কারখানায় সমস্যা হয়েছে। বাবা বাসায় নেই তাই আমাকেই যেতে হচ্ছে। তারা হুরা করে বেরিয়ে গেলাম। গিয়ে দেখি একটা মেশিনে
সমস্যা হয়েছে। ইন্জিনিয়ার ছুটিতে তাই আমাকেই মেশিনে হাত দিতে হল। অনেক কষ্টের পর মেশিনটা ঠিক করালাম। তখন রাত দশটা বাজে। তারাতারি করে বাসায় চলে গেলাম।
:- আপনি কি মানুষ?
:- কোনো?
:- আমাকে বাসায় একটা রেখে গেছেন আর
ফিরলেন রাতে।
:- একটু কাজ ছিল।
:- ওহ ফ্রেশ হয়ে আসেন তারা তারি খিদায়
পেঠ জ্বলছে।
:- কি আপনি এখনো খান নি।
:- না
:- কোনো খান নি?
:- বর না খেলে কি খাওয়া যায়।
:- মানে কি বল্লেন আপনি।
:- মানে বয়সের বড় দের ছেরে খাওয়া যায় না।
:- ওহ তাই বলেন।
ফ্রেশ হয়ে খাওয়া করলাম। খাওয়া সেরে উঠতে জাবো তখনি চোখ আটকে গেল নিহার উপরে। শাড়ি পরেছে খুব সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে। যেন কোন পরী। কিছু না বলে রুমে এসে একটা ঘুম দিলাম।bএ ভাবে কেটে গেল দুই দিন মেয়েটার প্রতি আমার মায়া বারছে দিন দিন। কিছু বুজতেও পারছি না এটা কি আমার ঠিক হচ্ছে নাকি ভুল।
আজ আফিসের কাজে একটু বাইরে এসেছি।
হঠাৎ ছোট বোনের ফোন দিয়ে বল্লো ওরা
আজ বাসায় আসছে। পরে গেলাম একটা গভির চিন্তায় নিহা বাসায় আছে। আব্বু আম্মু ওকে বাসায় দেখলে তো খবর আছে। আর আমি এখন যেখানে আছি এখান থেকে বাসা যেতে প্রায় চার ঘন্টা লাগবে। তাই সব কিছু আল্লাহ উপর ছেরে দিলাম। রাতে কাজ সেরে বাসায় গেলাম। গিয়ে দেখি
রাতে কাজ সেরে বাসায় গেলাম। গিয়ে দেখি বাবা মা খেতে বসেছে আর নিহা খাবার দিচ্ছে। ছোট বোনটা দরজা খুলে দিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরে বলো ভাইয়া ভাবি কিন্তু অনেক সুন্দর। ওকে একটা ধমক দিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেতে বসলাম। খেতে খেতে আব্বু বলো।
:- বউমা কিন্তু অনেক ভালো রান্না করে। কথাটা সুনে চোখ কপালে উঠে গেল
:- আব্বু ও তোমাদের বউ মা নয়।
:- দেখেছেন আব্বু ও আমাকে আবার অস্বিকার করছে।
:- ওই আপনি আমার আব্বুকে আব্বু বলছেন কোনো?
:- শশুর কে বুঝি আব্বু বলা যায় না।
:- বউ মা তুমি আমাকে আব্বু বলেই ডাকবে। আর তোমার বাবা মাকে কাল ডাকবে। তোমরা লুকিয়ে বিয়ে করেছ আমি তোমাদের বিয়েটা আবার দিতে চাই।
:- ঠিক আছে আব্বু।
আব্বু কথা শুনে খাওয়া ছেরে রুমে চলে আসলাম। কিসের বিয়ে কিসের কি হুর ভাল লাগে না। একটা সিগারেট ধরিয়ে বসে আছি। একটু পরbনিহা রুমে আসলো।
:- যত সিগারেট খাওয়ার আজ খেয়ে নিন
বিয়ের পর আর খেতে পারবেন না।
:- মানে।
:- হুম মিষ্টার বিয়ের পর সব নেশা বাদ দিতে হবে।
:- এই মেয়ে একটু আগে বলেন আমাদের বিয়ে হয়েছে আবার এখন বলছেন বিয়ে হবে।
:- আপনি বুজবেন না।
:ওহ
ওনার সঙ্গে কথা না বলে ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে ঘুম ভাংলো নিহার চিল্লানিতে। একটা পান্জাবি হাতে ধরিয়ে দিয়ে। পাচ মিনিটের মধ্যে নিচে যেতে বলো। বিয়ের আগে এত অত্যাচার করছে না জানি বিয়ের পর কি করবে। পান্জাবি পরে নিচে গেলেম।নিচে গিয়ে তো পুরায় অবাক। অনেক মানুষ আমাদের বাসায়। আজ ক্যান জানি মনে হচ্ছে এই অনুষ্ঠানটা পুর্ব পরিকল্পিত ছিল। আর একটা কাহিনি দেখে অবাক হলাম। যে নাহিদ আঙ্কেলের বাবার সঙ্গে ব্যাবসার গন্ডগোল হওয়ায় এতদিন কোন যোগাযোগ হয়নি তিনি বাবার সঙ্গে বসে।
আঙ্কেল কে সালাম দিলাম।
:- আঙ্গেল ছোঁয়া কোথায়?
:- সে কি বাবা ছোঁয়া তো চার দিন আগে এখানে আসছে।
আমার বুজতে বাকি রইলোনা নিহাই ছোঁয়া। ছোয়া আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে আর
দৌরে রুমে গেল।
:- ওই তুই আগে বলিসনি কোনো তুই ছোঁয়া।
:- তোকে একটু যাচাই করে নিলাম।
:- যাচাই করে কি বুজলি?
:- তুই একটা সলিট প্রেমিক এখনো আমায় ভালোবাসিস।
:- ওহ তাই।
:- হুম।
:- তো বাবার আর আঙ্কেলের ভাব হল কিভাবে।
:- তোকে যখন আঙ্গেল বার বার বিয়ের কথা বলার পর ও তুই বিয়ে করছিলি না তখন আন্টি আমার কথা আঙ্গেল কে বলে আর আঙ্কেল আব্বুর সঙ্গে কথা বলে আমাদের বিয়ে ঠিক করে।
:- ওহ তাই।
:- হুম আঙ্কেল আমাকেঐ দিনেই নিয়ে আসতে চেয়ে ছিলো। কিন্তু আমি আসিনি
তোকে যাচাই করার জন্য আর আন্টি
আঙ্কেলের গ্রামে যাওয়া সব আমার প্লানে
হয়েছে।
:- ওহ ভালো খুব ভালো।
:- হুম তবে আজ আমি অনেক খুশি।
:- আমি জানি তুই আজ কোনো খুশি।
:- বলতো।
:- অবশেষে তোর আর আমার বিয়ে হচ্ছে তাই।
:- নারে হাদারাম আব্বু আর আঙ্কেল এর আবার আগের মত ভাব হয়েছে তাই।
:- ওহ তার মানে তুই আমার সঙ্গে বিয়েতে খুশি না।
:- না
:- তাহলে বিয়েটা ভেঙ্গে দেই।
তখনি ছোঁয়া আমার মুখটা চেপে ধরে বিছানায় সুইয়ে দিলো।
পরে শুনতে পারি আগামি সপ্তাহে আমাদের
বিয়ে।
।।।।।।।।সমাপ্ত।।।।।।।