ভালাবাসা বড়ই অবুঝ। মানুষ যে কখন এই গুলোর ভিতর জড়িয়ে পরে সেটা সে নিজেও জানে না।
…সময়টা ২০১৬ এর দিকে। লিমন তখন ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়াশুনা করে। লিমন খুব একটা ভাল ছেলে ছিল।
সারাদিন শুধু পড়াশুনা নিয়েব্যস্ত রাখতে পছন্দ করতো। একারণে সবাই তাকে ভালবাসতো।
.একদিন লিমনের ক্লাসের সামনে কিছু মেয়ে আসে। মেয়েগুলো অনেক কথা বলতেছিল। তাই লিমন একবার মেয়েদের দিকে একটু তাকালো।
তখনি হঠাৎ একটি মেয়েকে দেখে ধমকে দাঁড়ায়। আর তখনি মেয়েটির চোখে চোখ পরে লিমনের।
মানে মেয়েটিও লিমনের দিকে তাকায় এবং লিমনতো মেয়েটির দিকে তাকিয়েই ছিল।
তখন থেকেই মেয়েটির প্রতি লিমনের একটি একটি ভাললাগা অনুভব করতে শুরু করে।
তার সব সময় ইচ্ছা করতো যদি সে মেয়েটিকে সারাদিন দেখতে পারতো।
কিন্ত সবকিছু চাইলেও সম্ভব নয়।
.অন্য দিকে ব্যাপারটি ওর বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করতে পারছে না। কারণ ক্লাসের সবাই জানে লিমন এই ধরনের ছেলে না।
.আসলেই মানুষ যে কখন নিজের মনের অজান্তে ভালবাসতে পারে সেটা লিমন তখন বুঝতে পারল। ও আস্তে আস্তে মেয়েটির উপর দুর্বল হতে লাগল।
কিন্তু লিমন মেয়েটির নাম জানতো না অতঃপর অনেক কষ্টে লিমন মেয়েটির নাম জানতে পারল। মেয়েটির নাম ছিল মাহফুজা।
এর পর থেকেই লিমন একটি অন্য মনষ্ক হতে লাগলো। সবার চোখ থেকে ব্যাপারটা কেটে গেলেও বন্ধুদের চোখ এড়ানো এতো সহজ না।
বন্ধুরা বুঝতে পারল লিমন মনে হয় কাউকে ভালবাসে। তখন ওরা সব সময় লিমন কে জিজ্ঞাসা করতো..
“লিমন তুই কাকে পছন্দ করো আমাদের বল?” লিমন শুধু বলতো সময় হলেই বলবো।
এর পর থেকে লিমন শুধু মেয়েটির নামের প্রথম অক্ষর বন্ধুদের বললো। সবাই খুজতে লাগল।
অতঃপর একদিন কলেজের পাঠাগারে স্বাক্ষর করার খাতায় লিমনের বন্ধু শাকিল M দ্বারা কয়েকটি নাম দেখায়।
তখন শাকিল মাহফুজা নামটি উচ্চারণ করল। আর তখনি লিমন হেসে দিল।
শাকিল আর বুঝতে বাকি রইল না যে মেয়েটি কে। তারপর লিমন শাকিলের কাছে সব কিছু শেয়ার করে।
এরপর আস্তে আস্তে ক্লাসের সবাই ব্যাপারটি জেনে যায়। এরপরই শুরু হল আসল ঘটনা।
.এরপর লিমন তার এক বন্ধুর মাধ্যমে মাহফুজার এক বান্ধুবিকে তার ভালবাসার কথাটি বলে যাতে মাহফুজার বান্ধুবি তার কাছে শেয়ার করে।
প্রথমত সব ঠিক ঠাক ছিল। মাহফুজা লিমনের দিকে তাকাতো। লিমনও তাকাতো।
আর লিমনের বন্ধুরা মাহফুজাকে লিমন এবং মাহফুজার বান্ধুবিরা লিমনকে ডাকতো। হঠাত একদিন নেমে আসলঝড়।
যে ঝড়ে তছনছ হয়ে যায় সব কিছু।
কিছু দিন যাবত লিমন দেখতে ছিল মাহফুজা তাকে এড়িয়ে চলছে। হ্যা, মাহফুজা লিমনকে না বলে দেয়।
লিমন অনেক চেষ্ঠা করে মাহফুজাকে বুঝাতে, কিন্তু সব কিছুই ব্যর্থ হয়ে দাড়ায়। লিমনের মনের ভিতর চলতে শুরু করে একটি ঝর।
সব সময় একা একা বসে থাকতে। চুপি চুপি নির্জনের কান্না করতো। যার কান্নার আওয়াজ আর পানি শুধু লিমনই দেখতে পেত।
আর কেউ পেত না। এমনিভাবে কেটে যায় কয়েকটি মাস। একদিন লিমন নিজে মাহফুজাকে প্রোপজ করে।
কারণ এর আগে লিমন তার ভালবাসার কথা তার বন্ধুদের মাধ্যমে জানিয়েছিল।
এবার সে নিজেই বলে ফেলল, আর সেদিনই লিমন মাহফুজার প্রথম কথা।
কিন্তু মাহফুজা তাকে তখন সরাসরি আবার না বলে দেয়। লিমন আস্তে আস্তে ভেঙ্গে পরতে শুরু করল।
মাহফুজা লিমনের সামনে পরতো না। তাই লিমন ফ্রেন্ডদের মাধ্যমে মাহফ্যজার সব খোজ খবর নিত।
হঠাত একদিন লিমন জানতে পারল মাহফুজার বয়ফ্রেন্ড রয়েছে। কথাটি লিমন বিশ্বাস করতে চাইতো না।
লিমনের বন্ধু রবিউল এই ব্যাপারে লিমনকে অনেক সাহায্য করে। লিমনকে তার বন্ধুরা এতো সহজ ভেঙ্গে পরতে দিল না।
দিন যতই যাচ্ছিল মাহফুজা লিমনকে ততই এড়িয়ে চলতে লাগল। সবশেষে লিমন চেয়েছিল সবকিছু দুঃস্বপ্ন ভেবে ভুলে যাবে। কিন্তু তা পারেনি।
এর কিছুদিন পর লিমন নিশ্চিত হয় মাহফুজার বয়ফ্রন্ড আছে। এটি ছিল লিমনের জীবনের প্রথম ভালবাসা।
কিন্তু এই ভালবাসা যে এই ভাবে তাকে এতো কষ্ট দিবে তা সে কখনই ভাবতে পারেনি। ক্লাসে যারা রিলেশন করতো তা দেখে লিমনের খুব কষ্ট হত।
শুধু চিন্তা করতো কি এমন দোষ ছিল ওর যার কারণে এতোটা শাস্তি ভোগ করতে হচ্ছে তাকে?
এখনো লিমন মাঝে মাঝে মাহফুজার কথা ভাবে এবং রাতের বেলায় ওই রাতের আকাশের তারার দিকে তাকিয়ে ভাবে
“রাতের উজ্জল তারাটি মাহফুজা।” আর তার পাশেই যে তারাটি রয়েছে সেটা হল মাহফুজার বয়ফ্রেন্ড।
আর কিছু দূরে যে আংশিক তারাটি দেখা যাচ্ছে সেটা হল লিমন।
উজ্জল তারা মানে মাহফুজার পাশে যে অনুজ্জ্বল তারাগুলোর পাশে যে তারাগুলো রয়েছে সেগুলো হচ্ছে লিমনের অস্তিত্ব।
আর আস্তে আস্তে আংশিক অনুজ্জল তারাটি অনুজ্জল তারাদের সাথে মিশে যাচ্ছে তার সাথে হারিয়ে যাচ্ছে ফিরে না পাওয়া ভালবাসা।
অন্যদিকে উজ্জল তারাটি ঠিকই ফুটফুটে রয়ে গেছে আকাশের মাঝে। হেরে গেল লিমনের অবুঝ ভালবাসা।..