অভীমানি পাগলী

অভীমানি পাগলী

:”ভাইয়া” “এই ভাইয়া”ওঠ না?
:উমমম
:উমমম কি হুম উঠ তারাতারি।
:হুম।
:কিরে উঠবি?
:উমম
:মানে কি ..উঠবিনা ওকে দাড়া।
:ওই কে কে?(চিৎকার করে)।
:কে মানে এতোক্ষন ধরে ডাকছি উঠার কোন নামই নাই।
:তাই বলে চুল ধরে টানবি?
:এহহহ.. এতোক্ষন ধরে ডাকছি উঠার কোন নামই নাই আর চুল টানলেই দোষ?
:ওকে ওকে কি জন্য ডাকছিস সেটা বল বলে সর এখান থেকে।
:সর মানে উঠে ফ্রেস হ তারাতারি?
:কেনরে কোথাও যেতে হবে নাকি?
:হুম.. শপিংয়ে।

:কি আমি পারব না ।
:পারবি না দারা আম্মুকে ডাকছি।
:ডাক ডাক যা তাতে আমার কি হুম..ওরা কি কি কিনবে আর আমাকে অদের পিছে পিছে ঘুরতে হবে পারব না যা।
:আরে রাগ হচ্ছিস কেন আমাকে নিয়ে যেতে বলছি না তো।
:তো কাকে নিয়ে যেতে হবে?
:ভাবিকে।
:ভাবি মানে ..কোন ভাবি?
:বাহরে তোর আবার কয়টা বউ?
:ধুর আমার বউ কোত্থেকে আসবে (একটাও বিয়ে করি নাই পর্যন্ত)।
:আরে পরী ভাবির কথা বলছি?
:কিহহ আগে বলবি না?যা ভাগ আমি আসছি।
:ইহহ..এখনত আমি যাবোই এখন ভাবি পাইছে না।
:এই তুই যাবি??
:হুম যাচ্ছি যাচ্ছি..

এতোক্ষন যার সাথে কথা বললাম ও আমার দুষ্টু কিউট বোন জেরিন।আর যাকে নিয়ে শপিংয়ে যেতে হবে সে হলো পরী।আমার হবু বউ।ঈদের ৫ দিন পরে আমাদের বিয়ে (যদিও অনেকদিন প্রেম করেছি)।
ফ্রেস হয়ে ওই জেরিন পরী কই?ও জেরিন?

:ইসস ..বৌয়েকে এতো খুজাখুজি।হারাই যাবে না।
:অতো কথা না বলে বল পরী কই?
:উপরে আম্মুর কাছে।যা
:ওকে আমার কিউট বোন।(গাল টেনে)
:এহহ পরে দেখে নিবো (ভেংচি কেটে)।

উঠে আম্মুর রুমে গিয়ে দেখি পরী আর আম্মু বসে গল্প করছে।আম্মু আমাকে দেখে মুচকি হেসে বলল যা ওকে শপিংয়ে নিয়ে যা। পরীকে নিয়ে বাইরে বের হলাম।আহ কি গরম আর রোদ।এমনিতেই রোযা মাস।আর এত্ত গরম তাও আবার শপিংয়ে (যদিও আমি রোযা দিতে পারি না তাই দিও না)। হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল..

:হ্যালো কে? (আমি)
:কে মানে ?তুমি কই?
:এই কে আপনি?আর কই থাকি থাকি তাতে আপনার কি?
:ওই ফাজলামি রাখো..তারাতারি চলে আসো।
:মানে কে আপনি আপু?
:ওই কানের নিচে দিবো একটা প্রেমিকারে কেউ আপু ডাকে।
:ধুর..
:তারাতারি আসো নাহলে খবর আছে।
:আচ্ছা

আচ্ছা বলে ফোনটা কেটে দিলাম।রং নাম্বার ছিলো।যদি উল্টাপাল্টা কিছু বলে তাই ওর কথায় সায় দিলাম।আর পাশে এমনিতেই পরী আছে।না হলে ইচ্ছা মতো ঝারি দিতাম। যাহোক একটা রিক্সা ডেকে উঠে পরলাম দুজনেই।সে কিছু বলছেনা সেই কখন থেকেই ।

:কি হলো কিছু বলছ না যে?
:কি বলব যাও তুমি তোমার প্রেমিকার সাথে ফোনে কথা বলো।
:আরে পাগলী তখন ওইটা রং নাম্বার ছিলো তো।এতে রাগ করার কি আছে?
:ইইহ আমি বুঝিনা কি ছিলো এটা?
:আরে বাবা সত্যি বলছি ওইটা রং নাম্বার ছিলো।
:সত্যিতো?
:হুম..সত্যি সত্যি..আর আমি আমার বউটাকে ছেরে অন্য কারো সাথে কথা বলি ?
:হইছে হইছে…নামো চলে আসছি।
:হুম। রিক্সা থেকে নেমে আইসক্রিম ওয়ালাকে দেখতে পেলাম।আর এমনিতেই গরম তাই ওকে বললাম আইসক্রিম খাবা?
:ওই রোজার দিনে খেতে বলছ রোজা আছি না?
:ও..তাইতো তুমি রোজা।
:আর তুমি রোজা নাই?
:না।
:কিহহ আজও রোজা নাই তাইতো বলি আইসক্রিমের দিকে চোখ যায় কেন?

বাসায় গিয়ে দেখাবো মজা কেমন রোজা নাই। তারপর শপিংমলে ঢুকে পরলাম।অনেক কিছুই কিনল মেয়েটা আমার জন্য,ওর জন্য,মায়ের জন্য,জেরিনের জন্যে । আরও কি যেন কি যেন কিনবে বলে কোথায় যেন হারিয়ে গেল। অনেক খুজাখুজির পরও খুজে পেলামনা ওকে। একটু দাড়িয়ে থাকতেই মেঘলাকে (আমার কলেজ লাইফের ফ্রেন্ড) দেখতে পেলাম আমার দিকেই আসছে।

:কিরে জাহিদ কেমন আছিস(মেঘলা)?
:এতোদিন পর..ভালো তুই।
:ভালো।

এইভাবে অনেক কথা বলছিলাম ও ওর বরের ছবি দেখালো আরো অনেক কথা বলছিলাম হেসে হেসে। সামনে থেকে দেখলাম পরী কি যেন নিয়ে এসেছে আমাকে দেখাতে কিনবে বলে।কিন্তু আমার সাথে মেঘলাকে দেখে আবার চলে গেল।আর বাড়ির দিকে যেতে লাগল। অনেকবার ডাকলাম কিন্তু শুনলো না।মনে হয় রাগ করেছে মেঘলার সাথে ওভাবে কথা বলতে দেখে।ব্যাপারটা বুঝতে পেরে মেঘলাকে বিদায় জানিয়ে পরীর পিছে পিছে ছুটলাম। কিন্তু কোন লাভ হলো না।তার অগেই একটা রিক্সা নিয়ে বাড়ির দিকে চলে গেল। আমি আর কি করার একটা রিক্সা নিয়ে আমিও চললাম বাড়ির দিকে।কিন্তু রাস্তায় রাফি আর সাকিবের দেখা হয়ে গেল ।আড্ডা দিতে দিতে বিকেল হয়ে গেল তাই বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। বাড়িতে এসে অবাক কান্ড কেউ আমার সাথে কথা বলছে না।ব্যাপার কি? অনেক্ষন আম্মুকে ডেকেও কোন লাভ হলো না। তারপর জেরিনের কাছে গেলাম।সেও কোন কথা বলছে না।

:কিরে কথা বলছিস না ক্যান?
:দ্যাখ ভাইয়া আমার কাজ আছে ডিস্টার্ব করিস না।
:ওই কি বলছিস তুই আমি তোকে ডিস্টার্ব করছি? (এমন সময় আম্মু আসল)
:দ্যাখ বাবা তুই অন্য কাউকে ভালোবাসিস আমাকে বললেই পারতিস।শুধু শুধু মানসম্মানটা ধুলোয় মিশিয়ে দিলি।
:আম্মু কি বলছো তোমরা আমি কিছুই বুঝতেছি না।
:এখন তো কিছুই বুঝবিনা আর শপিংমলে যখন অন্য মেয়ের সাথে প্রেম করছিস তখন কিছু না না (জেরিন)?

ও তাইলে এই কথা।তোমরা বিশ্বাস করো শপিংমলে আমার ফ্রেন্ড মেঘলার সাথে কথা বলছি
এর বেশি কিছু না।

:হুম জানি জানি যখন ধরা পরে তখন প্রেমিকাও ফ্রেন্ড হয়ে যায়। ওই তুই থামবি।বিশ্বাস না করলে আমি কি করব ?আর মেঘলা বিবাহিত।
:কিন্তু পরী ভাবি তো তোকে ভুল বুঝে কান্না করতে করতে বাড়ি চলে গেছে।আর বলেছে তুই নাকি প্রেম করিস আর এ বিয়ে ক্যানসেল করে দিতে।
:কিহহ…আচ্ছা আমি দেখছি তারপর সোজা পরীদের বাড়িতে চলে আসলাম। দেখি মেয়েটা রুমে শুয়ে শুয়ে কাঁদতেছে। আমাকে দেখা মাত্রই বলা শুরু করল..

:তুমি এখানে কেন ? যাও তোমার প্রেমিকার কাছে চলে যাও।(অভীমানের শুরে)
:দ্যাখো তুমি যা দেখেছো ভুল দেখেছো ..আর ওই মেয়েটা আমার প্রেমিকা তুমি ভাবলে কি করে হুম? আমি শুধুই তোমাকে ভালোবেসেছি আর তোমাকেই ভালোবাসি ওকে।

:তাহলে ওই মেয়েটা কে ছিলো?
:ওটা আমার ফ্রেন্ড মেঘলা..আর ও এখন বিবাহিত ও বটে।
:সরি.
:হুম.
:সরি বলছি তো।
:আমাকে ভালোবাসো (আমি)?
:হুম অনেক।
:তাহলে একটা ইয়ে দাও।
:এহহ দুষ্টু এখন না সব বিয়ের পর।
:আরেহ দাওনা তোমার জন্য একটা সারপ্রাইসজ আছে?
:আচ্ছা উম্ম্ম্ম্ম্মাহ..হইছে এবার কি সারপ্রাইসজ দাও।
:তোমার হাতটা দাও আর চোখ বন্ধ করো।
:নাও তারাতারি।
:তারপর পকেট থেকে চুরির কক্সটা বের করে পরিয়ে দিলাম।
: Wow!!! তুমি জানলে কি করে এটা আমার পছন্দ।
:অরে আমার অভীমানি পাগলী তুমিইতো এইটা হাতে করেই আমাকে ডাকতে গেছিলে।
:আমাকে ভালোবাসো? (পরী)
:হুম অনেক।
:তাহলে একটা ইয়ে দেই।
:আচ্ছা দেও কিন্তু এর পরেরটা কিন্তু আমি দিবো (হিহিহি)।

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত