বিগত কয়েকদিনে পরিস্থিতি পুরো ঘোলাটে হয়ে পড়েছে।রাফিন কী যে করবে কিছুই বুঝতে পারছে না।
বন্ধুকে সাহায্য করতে গিয়ে বড় ধরণের বিপদে পড়লো সে নিজেই।খুব শীঘ্রই এর সমাধান করা লাগবে।
নাহয় তিন পক্ষের থেকেই উত্তম-মধ্যম জুটতে পারে কপালে।
ঝামেলার শুরুটা হয়েছিলো ১ সপ্তাহ অাগে…
>>দোস্ত ঈশিতাকে অামার অনেক পছন্দ তুই তো জানিস।(সাদমান)
>>তো কী হইছে ও তো তোকে তেমন পছন্দ করে না।(রাফিন)
>>তুই কিছু একটা কর না।তুই তো এসব প্রেম টেমের ব্যাপারে ওস্তাদ।(সাদমান)
>>ঐ ব্যাটা!! ওস্তাদ মানে কী??অামি কী ডজন ডজন প্রেম করছি নাকি।জীবনে একটা মাত্র প্রেম করতাছি।(রাফিন)
>>তবুও দোস্ত তুই একটু হেল্প কর।ওরে না পাইলে অামি মরেই যাবো মনে হয়।
>>যা।তুই মরেই যা।
>>দেখ দোস্ত এমন করিস না।কিছু একটা কর।দরকার হইলে ফারিয়ার সাহায্য নে।
>>এইটা ভুলেও সম্ভব না।এই মেয়েঘটিত ব্যাপারে অামারে পাইলে অামার বারোটা বাজিয়ে দিবে ফারিয়া।
তারচেয়ে বরং অামি দেখি কিছু করা যায় কি না।
>>দেখ ভাই দেখ একটু প্লিজ।
সাদমান অনেক দিন থেকেই ঈশিতাকে পছন্দ করে।অনেকবার বলেছেও।কিন্তু ঈশিতা গুরুত্ব দেয় নি।
রাফিন ঈশিতার নাম্বার নিলো সাদমানের কাছ থেকে।
একদিন দেখা করে সাদমানের কথাটা ভালোভাবে বুঝিয়ে বললো ঈশিতাকে।সাদমানের যত ভালো গুণাবলি অাছে সব বললো।যেগুলা নেই সেগুলোও বললো বানিয়ে।বন্ধু বলে কথা।
ঈশিতা সব মনোযোগ দিয়ে শুনলো।কিন্তু কিছুই বললো না।
পরেরদিনই ঘটলো বিপত্তি।ঈশিতা হঠাৎ করে এসে রাফিনকে প্রপোজ করে বসলো।রাফিনের মাথায় যেনো
অাকাশ ভেঙে পড়লো।এসেছিলো বন্ধুর জন্য,অার এই মেয়ে কী না তাকেই প্রপোজ করে বসলো।রাফিন তো কোন কিছু না ভেবে ঈশিতাকে কতক্ষণ কথা শুনিয়ে দিলো।মেয়েটা রাগে গজ গজ করতে করতে চলে গেলো
এইদিকে ফারিয়া দেখে ফেললো রাফিন অার ঈশিতাকে।মূলত ফারিয়া দেখে ফেলাতেই মেয়েটাকে এতো বকাঝকা করলো।তারপরেও কাজের কাজ কিছুই হলো না।ফারিয়া সেই তাকে ভুলই বুঝলো।
৫ দিন হয় ফারিয়া তার সাথে যোগাযোগ করছে না।অার সাদমানও ভুল বুঝছে রাফিনকে।স্বাভাবিকভাবে ভুল বোঝারই কথা।বন্ধুর জন্য কোন মেয়েকে কনভেন্স করতে গিয়ে ঐ মেয়ে যদি উল্টা অামাকেই প্রপোজ করে বসে তাহলে ভুল বোঝাটা স্বাভাবিকই।
ফারিয়া,সাদমান অার ঈশিতাকে একসাথে ডেকেছে রাফিন।ফারিয়া তো অাসতেই চাচ্ছিলো না।এটাই শেষ দেখা এই হুমকি দিয়ে তারপর এসেছে।
>>এই মেয়ে তুমি অামাকে পছন্দ করো?(রাফিন)
>>জ্বি হ্যাঁ।(ঈশিতা)
>>অামি তোমাকে করি?(রাফিন)
>>জ্বি না।(ঈশিতা)
>>অামি তোমার সাথে কাকে নিয়ে কথা বলেছিলাম?(রাফিন)
>>সাদমানকে নিয়ে।(ঈশিতা)
সবাইকে সবকিছু খুলে বলার পর রাফিন চলে যাচ্ছে।
পিছন থেকে সাদমান অার ফারিয়া ডাকছে।কিন্তু রাফিন অার তাকাবে না পেছনে।এবার তার একটু মুড নেয়ার পালা।গত কয়েকদিন এদের সাথে কথাই বলা যায় নি।কতবার বুঝাতে চেয়েছে কিন্তু একজনও বুঝে নি।
>>তুমি অামাকে এভয়েড করছো কেনো?(ফারিয়া)
>>অার একটা প্রেম করবো তাই।(রাফিন)
>>মেরে হাত-পা ভেঙে দিবো।(ফারিয়া)
>>হ্যাঁ ওটাই পারবে কেবল।(রাফিন)
>>কিছু বললে নাকি??
>> নাহ্ কিছু বলি নি অামি।
এভাবেই অাবার স্বাভাবিক হয়ে যায় ফারিয়া অার রাফিনের সম্পর্কটা।
কিছুদিন পর ফারিয়ার বার্থডে চলে অাসে।রাফিন একটা পায়েল কিনে ফারিয়ার বার্থডে গিফট দেয়ার জন্য।
তারপর কী হয় চাচ্চু বলো না(রাইসা)
>>তারপর ফারিয়া তার বার্থডের দিনই মারা যায় রোড এক্সিডেন্টে।রাফিনের অার গিফটটা দেয়া হয়ে উঠে না।
এদিকে এতোদিনে সাদমানকে ঈশিতা পছন্দ করতে শুরু করে।কয়েক বছর পর তাদের বিয়ে হয়ে যায়।
তাদের একটা মেয়েও অাছে নাম রাইসা।
>>চাচ্চু তোমার হাতে কী ওটা দেখাও তো দেখি।(রাইসা)
রাফিন হাতের মুঠোটা খুললো।
তার হাতে একটা পায়েল।
>> সরি চাচ্চু!! তোমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য।(রাইসা)
>> ধুর বোকা মেয়ে অামি মোটেও কষ্ট পাই নি। অার বুঝলি মা ভালোবাসা হলো একটা অন্তহীন বিবর্তন। ভালোবাসার কোন রং নেই,বর্ণ নেই। তবুও মানুষ ভালোবাসে।ভালোবাসার মানুষটা হয়ত মরে যেতে পারে কিন্তু ভালোবাসা যে কখনো মরে না।