–এই পিচ্ছি ছেলে
–(নিশ্চুপ)
–এই যে
— ___
–(একেবারে কলার চেপে ধরেছে) কথা কি কানে যায় না!
–কি করছেন কি?
–এতক্ষণ ধরে ডাকছি, আর আপনি শুনতে পারছেন না
–কাকে ডাকছেন
–কেন,আপনাকে
–আমি শুনলাম, আপনি কোনো পিচ্ছি ছেলেকে ডাকছেন
–হ্যা,পিচ্ছিই তো
–আমি পিচ্ছি নয়
চলে আসলাম, বলে কি এ মেয়ে,আমি পিচ্ছি। একটা সাড়ে ৫ ফুট লম্বা ছেলেকে বলে কি না পিচ্ছি।
মেজাজ পুরাই খারাপ করে দিয়েছে এ মাইয়ায়।
ভার্সিটি ক্লাস শেষ করে বাসায় এসেছি, তখনই মোবাইলটা বেজে উঠল,, একটা অপরিচিত নাম্বার
–হ্যালো, কে বলছেন
–আমি যেই হই,আপনি কি পিচ্ছি ছেলে(মেয়েলি কন্ঠ)
–(সঙ্গে সঙ্গে কলটা কেটে দিয়েছি)
এ মেয়ে আমার নাম্বার পেল কোথায়,
নিতেই পারে যেহেতু এক সঙ্গে পড়ছি, কোন ফ্রেন্ড হয়ত দিয়েছে,কিন্তু পিচ্ছি ডাকে কেন???
পরেরদিন!!!!!
ভার্সিটি ক্লাসে বসে আছি,ঠিক তখন মেয়েটার আগমন
–কেমন আছেন, মি. পিচ্ছি ছেলে
–(নিশ্চুপ)
–কি হল বয়রা না কি?
–(নিশ্চুপ)
–(ধাক্কা দিয়ে)কথা কি কানে যায়না।
–না
বলেই চলে আসলাম।
আমি শেখ আফরান,, এবার অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র।
পরিবার বলতে আমরা ত্রিমাতৃক,,
মানে আমি, বাবা ও মা, এই তিন জনের পরিবার।
এই ত্রিমাতৃক পরিবারে আমরা সবাই বন্ধুর মত, তবে সবসময় প্রযোজ্য নয়।
এখন আসি সেই মেয়েটার বেপারে, সে কে আমি জানি না। শুধু এইটুকু জানি ওই মেয়ে আমার সাথেই পড়ে।
আমার ক্লাসমেট,,,,,,,,
ভার্সিটি গেইট থেকে বের হয়েছি, কিন্তু পথ আটকে সেই মেয়েটা দাড়িয়ে আছে।
–কি বেপার, পিচ্ছি ছেলে
–চুপ (ধমক দিয়ে)
–আমাকে ধমকাচ্ছেন কেন?
–কে পিচ্ছি, হ্যা,কে পিচ্ছি
–আপনি (বলেই দৌড়)
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে, বারান্দায় গিটার হাতে বসে আছি। কিন্তু গান কিংবা গিটার কোনো কিছুই করছিনা।
ঠিক তখন মোবাইলের বিকট শব্দে আমার ভাবনার অঘটন ঘটল। (অপরিচিত নাম্বার)
–হ্যালো
–গিটার বাজাচ্ছেন না কেন?(মেয়েলি কন্ঠ)
–(আশেপাশে তাকালাম, এই তো পাশের বাসার ছাদে মেয়েটা দাড়িয়ে আছে) সেটা আমার ইচ্ছে
–তাহলে বারান্দা থেকে, গিয়ে পানি খান
–কেন?
–মাথা ঠান্ডা করার জন্য
–চুপ একদম, চুপ
–সেটা আপনি থাকেন(কলটা কেটে দিয়েছি)
বারান্দা থেকে চলে এসেছি, এ মেয়ে তো আচ্ছা জ্বালা দিচ্ছে,যে দিকেই যাই সে দিকেই এই মাইয়া, কিন্তু পিচ্ছি
ছেলে ডাকে কেন! অন্য কিছু ডাকতে পারে না।
রাত প্রায় ১১:০০টা বাজে,
যান্ত্রিকতার শহরে প্রবেশ, ঠিক তখনই সেই মেন্টাল
মেয়েটার কল__
–হ্যালো
–কার সাথে চ্যাট করছেন
–সেটা আপনাকে কেন বলব, আর আমি ফেইসবুকে আছি, সেটা আপনাকে কে বলল
–এসব বলা লাগে না
–কলটা কেটে মাথাটা পানিতে ডুবিয়ে রাখেন,
–কেন?
–মাথায় সব আবর্জনা আছে, এসব দূর করতে হবে
–কি?
–হ্যা, (কলটা কেটে দিয়েছি)
এ মেয়ে দুদিনে আমার মাথাটা পুরাই হ্যাক করে দিয়েছে। সব চিন্তা মাথা থেকে ফেলে ঘুমের রাজ্যে যাওয়ার প্লানিং করেছি।
তখনই একটা মেসেজ ওই মেয়েটার নাম্বার থেকে
__গুড নাইট___
মেসেজটা ঘুমটা কেড়ে নিল।তাই মোবাইল নিয়ে ফেইসবুকে লগইন করেছি, ঠিক সেই সময় চোখ গেল
আমার আইডির নামের উপর, Sheikh Afran (পিচ্ছি ছেলে)। এবার অংক পুরাই মেলাতে পারছি। তাহলে তো
মেয়েটা আমার ফ্রেন্ড লিস্টে আছে,কিন্তু আমাকে চিনল
কিভাবে? ছবি তো দেয়া নায়।
দূর মেয়েটা কে অনেক কিছু বলে ফেলেছি না বুঝে,
না দেখে। না,পরের বার ক্ষমা চেয়ে নেব।
ভার্সিটি গিয়েই সব দিকে খুজলাম, কিন্তু না আজ পাইনি। না পেয়ে ক্লাস না করেই বাসায় চলে আসলাম।
কিন্তু কেন, আমি তো এমন ছিলাম না। হঠাৎ এমন পরিবর্তন। তা ও একটা মেয়ের জন্য।
নিজের কাছেই কেমন অপরাধি অপরাধি মনে হচ্ছে,
নিজেকে অসম্পূর্ণ লাগছে, কিন্তু কেন???
প্রায় ছয়দিন,ভার্সিটি যাই, কিন্তু ক্লাস করিনা। কারণ মেয়েটাকে খুঁজে পাইনা। মোবাইলে অনেকবার চেস্টা করেছি,
কিন্তু সংযোগ বিচ্ছিন্ন। কোনো কিছু জানতে পারছিনা,জানব কিভাবে, নামটা ও জানি না,
আজ সপ্তমী,, মানে সপ্তন দিন????
ভার্সিটি জাচ্ছি,কিন্তু মাথায় একটা চিন্তা, আসবে তো!
যদি না আসে।
কিন্তু এ মেয়ের কথা আমি এত ভাবছি কেন? তাহলে কি আমি মেয়েটাকে,,,,,,,
না! না ! না!?? মাথায় কিছু ঢুকছে না
ভার্সিটি গেইটে ঢোকার সাথে সাথেই সেই কন্ঠ!
–মি.পিচ্ছি ছেলে
(দৌড়ে ওর সামনে গিয়ে দাড়িয়ে আছি)
–এতদিন কোথায় ছিলে
–কেন,খুঁজেছেন
–বল (ধমক দিয়ে)
–গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম
–তাহলে মোবাইল বন্ধ কেন?
–ওখানে বিদ্যুৎ নেই, তাই!
–ওহ,,,,,,,দূঃখিত
–কেন
–খারাপ ব্যবহারের জন্য
–সেটা তো আমার দেয়া উচিৎ,দোষী তো আমি
—ভালবাসি
–কাকে
–তোমাকে
–ওহ,
–উত্তরটা
–কিসের
–প্রপোজের
–সেটা তো অনেক আগে থেকেই
–কি?
–ভালবাসি!!!!
–ওহ,,,কিন্তু তোমার নাম!
–কি???
–তোমার নাম কি?
–আমাকে ভালবাস আর আমার নাম জাননা
–না,
–আনিকা,,,,,,
–ফেইসবুক আইডির নাম
–পিচ্ছির বউ
–কি????
–হ্যা,,,,,,
শুরু আরো একটা নতুন জিবনের,
আরো একটা ভালবাসার ____