বাসায় শুয়ে শুয়ে ল্যাপটপে নাটক দেখছি হঠাৎ ফোনটা বেঁজে উঠলো!! তাই ফোনটা হাতে নিয়েই চমকে উঠলাম– মিম হঠাৎ ফোন করলো কাহিনিটা কি!! মিম হলো আমার গার্লফ্রেন্ড। তাই কিছুটা কৌতূহল নিয়ে ফোনটা রিসিভ করলাম।
মিমঃ জানু আজকে আমাদের বাসা ফাঁকা!! তুমি চাইলে আমাদের বাসায় এখন আসতে পারো।…(চিৎকার দিয়ে) মিমের কথাটা শুনে ধাপ করে বিছানা থেকে নিচে নামলাম!!
আমিঃ সত্যি!! (খুশিতে)
মিমঃ হুম এখনি চলে আসো!! তোমাকে এখন খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। প্লিজ…
আমিঃ ঠিক আছে আমি এখনি আসছি।
বলেই কিছুক্ষণ নাগিন ডান্স দিয়ে তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে বাইকটা নিয়ে চলে গেলাম মিমদের বাসায়। বাইকটা কোনো রকম লক করে মিমদের বাসার ভিতরে গিয়েদরজায় লক করলাম। কিছুক্ষণ পরেই মিম দরজাটা খুলে দিলো!! আমিতো তখন খুশিতে আত্নহারা তাই রুমের ভিতরে গিয়েই মিমকে জড়িয়ে ধরলাম।
মিমঃ ওই কি করছো ছাড়ো!! এইসব পরে হবে এখন তুমি বসো আমি তোমার জন্য কফি নিয়ে আসছি। বলেই মিম কফি আনতে চলে গেলো!! আর আমিতো এইদিকে পুরাই খুশিতে ডিগডিগা। ইশশ্ আমিতো খুশিতে পাগল হয়ে যাচ্ছিরে!! তাই খুশির ঠেলায় কিছুক্ষণ নাগিন ডান্স দিলাম। কখনো ভাবিনি মিমকে এইরকম ফাঁকা বাসায় একা পাবো!! কি ব্যাপার মিম এখনো কফি নিয়ে আসছে না কেনো। তো হঠাৎ মিম কফি নিয়ে চলে আসলো!!…
মিমঃ এই নাও কফি!! আমি নিজ হাতে তোমার জন্য বানিয়েছি। খেয়ে বলো কেমন হয়েছে…
আমিঃ হুম দাও!! বলেই মিমের হাত থেকে কফিটা নিয়ে একটা চুমুক দিলাম!!…
আমিঃ আওওও তুমি এতো ভালো করে কফি বানাতে পারো আগে তো কখনো বলোনি!! ( এটা কফি নারে পাগলা এইটা শরবত) মিম আমার কথা শুনে দেখলাম খুশিতে ডিগডিগা!! আমি ওকে আর তেমন কিছুই বললাম না কফির ব্যাপারে। আমি চাইনা সামান্য এই শরবত মানে কফির জন্য মিম কষ্ট পাক। যতো পারছি মিমকে পাম দিয়েই চলেছি!!
আমিঃ ওই তুমি কিন্তু আগের থেকে অনেক সুন্দর হয়ে গেছো!! আমার কিন্তু তোমাকে এখন দেখলে কিছু করতে ইচ্ছে করে।
মিমঃ থ্যাংকস কিন্তু কি করতে ইচ্ছে করে তোমার!! কি হলো বলো।…(লজ্জা পেয়ে)আমিও আর মিমকে কিছু না বলে ঠাস করে মিমকে বিছানায় ফেলে ওর ঠোঁটে আমার ঠোঁট বসিয়ে দিলাম। মিমও দেখি কিছু বলছে না!! তো যখনি মিমকে আরেকটা চুমু দিতে যাবো তখনই মিমের ফোনটা বেঁজে উঠলো। তাই মিমকে ছেড়ে দিলাম!! মিমও কিছুটা লজ্জা পেয়ে কোনো রকম ফোনটা রিসিভ করতেই আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালো।
আমিঃ কি হয়েছে!!…(কিছুটা ভয় পেয়ে)
মিমঃ আম্মু বাসায় চলে আসছে। এখন কি হবে ওই তোমার বাইক কোথায় রেখে আসছো!!…(কান্না কান্না কন্ঠে) মিমের কথা শুনেতো আমি এক লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে কোথায় লুকাবো!! সেই জায়গা খুঁজতে লাগলাম।
মিমঃ ওই তুমি এমন করছো কেনো!! পাগল হয়ে গেলে নাকি।
আমিঃ আরে তোমার আম্মু যে ডাইনির ডাইনি!! আমাকে আজকে পাইলে তো কাঁচা গিলে খেয়ে ফেলবে। কেনে তোমার সেদিনের কথা মনে নেই!! ( মুখ ফসকে কথাটা বেড়িয়ে গেলো)
মিমঃ কি বললা তুমি আমার আম্মু ডাইনি না!!
আজকে তোকে মজা দেখাবে। তুই একটু দাঁড়া বলেই মিম দরজার কাছে চলে গেলো!! আর এইদিকে আমার অবস্থাতো পুরাই শেষ। হায় হায় কেনো যে ওর আম্মুকে ডাইনি বলতে গেলাম!! কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই মিম দরজাটা খুলে দিলো। আমিও তখন এক দৌড়ে মিমের দরজার পাশে লুকিয়ে পড়লাম!! এইদিকে তো ভয়ে আমার মুখ দিয়ে কথাও বের হচ্ছে না। দরজার ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে দেখলাম মিম ও মিমের আম্মু রাগি লুক নিয়ে মিমের রুমের দিকে এগিয়ে আসছে!! আর আমিতো এখন মিমের রুমের দরজার পাশেই লুকিয়ে আছি। তাই ভয়ে আমার কাঁপা-কাঁপি শুরু হয়ে গেছে!! মিম ও ডাইনি মানে মিমের আম্মু চিল্লাইতে চিল্লাইতে রুমে ঢুকে পড়লো।…
ডাইনিঃ কোথায় গেলো আমার জামাইটা!!
আজকে তোর বারোটা বাজিয়ে দিবো। আমাকে ডাইনি বলা না!! বলেই মিম আর ডাইনি মানে মিমের আম্মু যেই খাটের নিচে আমাকে খুঁজতে গেছে!! ওমনি আমি কোনো রকম উরাধুরা দৌড় দিয়ে কাঁপতে-কাঁপতে বাইকের কাছে চলে আসলাম।
আর ওইদিকে তো মিম আর ডাইনি মানে মিমের আম্মু চিল্লাইতে চিল্লাইতে আমার পিছন পিছন আসছে!! তাই কোনো রকম বাইকটা স্টাট দিয়ে যেই গেট সামনে এলাম তখনি দাঁড়োয়ান গেট লক করে দিছে। হায় হায় বান্দির বাঁচ্চা দাঁড়োয়ান করছে কিরে!! দাঁড়োয়ানকে অনেক অনুরোধ করলাম গেট টা খুলে দিতে। কিন্তু বান্দির বাঁচ্চা টাকাখোর ৫০০০ টাকা চেয়ে বসলো!! তখন আমার ও মাথা ঠিক ছিলো না তাই সাথে সাথে মানিব্যাগটা বান্দির বাচ্চাকে দিয়ে দিলাম। সালা বান্দির বাঁচ্চা গেট খুলে দেওয়ার সাথে সাথেই বাইকের টান ৮০ তে উঠিয়ে এক টানে আমাদের বাসার গেটের সামনে এসে ঠাস্ করে বাইক নিয়ে পড়ে গেলাম!!
তো এখন আমি হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছি!! আর এইদিকে আমার পরিবারের সবাই & মিম ও মিমের আম্মু & সালার বান্ধির বাঁচা দাড়োয়ান সবাই আমার পাশে বসে আছে। আমিতো সবাইকে একসাথে দেখে রীতিমতো চমকে উঠলাম!! হঠাৎ আব্বু-আম্মু দুজনে আমার দিকে তাকিয়ে একসাথে বলে উঠলেন শাশুড়িকে ডাইনি বলার মজা পাইছো তো এখন!!….